তাছাউফ
انابة (ইনাবত) মাক্বাম হাছিলকারীগণের হালত বা অবস্থা
, ২৪ রজবুল হারাম শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ০৮ তাসি’, ১৩৯১ শামসী সন , ০৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ খ্রি:, ২২ মাঘ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) ইলমে তাছাউফ

অধিক ইবাদত করেছো বলেও অহংকার করো না। কারণ, ইবলিস ৬ লক্ষ বছর ইবাদত-বন্দেগী করেছিলো। ভেবে দেখো তার কি পরিণতি হয়েছিল। অধিক ইলিম শিক্ষা করেছো বলেও অহংকার-গর্বে ফেটে পড়ো না। কেননা বালয়াম বিন বাউরা এতো ইলিম শিক্ষা করেছিলো যে, যুগশ্রেষ্ঠ ১০ হাজার আলিম তার কাছে তা’লীম নিতো। সেছিলো মুস্তাজাবুদ দাওয়াত। সে যা দোয়া করতো মহান আল্লাহ পাক তিনি তাই কবুল করতেন। ৩০০ বছর সাধনা করে ‘ইসমে আ’যম’ আয়ত্ব করেছিলো। অথচ তার নিন্দায় কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, “সে কুকুরের ন্যায়। কুকুরের উপর বোঝা চাপিয়ে দিলে হাঁপাতে থাকে। আর না চাপালেও হাঁপাতে থাকে।” (পবিত্র সূরা আ’রাফ শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ১৭৬)
বুযূর্গ ব্যক্তিদের ছোহবত ও দর্শন লাভ করেও গর্বিত হবে না। কারণ, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র দর্শন ও ছোহবত মুবারক লাভ করেছিল আবু জাহিল, আবু লাহাব, উবাই ইবনে সুলুল প্রমুখ। কিন্তু ঈমান নিয়ে যেতে পারেনি।
এক ব্যক্তি ইমামুশ শরীয়ত ওয়াত তরীক্বত হযরত হাসান বছরী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে জিজ্ঞাসা করলেন- আপনি কেমন আছেন?
উনি বললেন- সমুদ্রে নৌকা ভেঙে গেলে আরোহীদের যেরূপ অবস্থা হয় আমার অবস্থাও সেরূপ। তিনি অন্যত্র বলেছেন, পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত আছে যে, ‘এক ব্যক্তিকে হাজার বছর পরে জাহান্নাম থেকে বের করা হবে।” এ কথা বলে তিনি আবার বললেন- হায়! এ ব্যক্তি হয়তো আমিই হবো।”
হযরত উমর ইবনুল আব্দুল আজীজ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার খাদিম একদিন উনাকে বললেন, “হে আমীরুল মু’মিনীন! আমি এক বিস্ময়কর স্বপ্ন দেখেছি। তিনি স্বপ্নের কথা ব্যক্ত করতে বললেন।
খাদিম বললেন, আমি দেখলাম জাহান্নামের আগুন প্রজ্জলিত করত: তার উপর পুলছিরাতকে স্থাপন করা হয়েছে। হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালামগণ খলীফাদেরকে পুলছিরাতের নিকট উপস্থিত করছেন। সর্বপ্রথমে খলীফা আব্দুল মালিক ইবনে মারওয়ানকে পুলছিরাত পার হওয়ার নির্দেশ দেয়া হলো। সে পুলছিরাতের উপর উঠলো। কিছুদূর যেতে না যেতেই দোযখে পড়ে গেলো।
উনি বললেন, তাড়াতাড়ি বলো, তারপর কি হলো? খাদিম বললেন, তারপর আব্দুল মালিকের ছেলে ওয়ালিদকে আনা হলো। সেও পিতার ন্যায় জাহান্নামে পড়ে গেলো।
তিনি বললেন, তারপর কি হলো? খাদিম বললেন- তারপর আব্দুল মালিকের পুত্র সুলায়মানকে আনা হলো। সেও পূর্ববর্তীদের ন্যায় জাহান্নামে পড়ে গেলো। তারপর?
খাদিম বললেন, হে আমীরুল মু’মিনীন! তারপর আপনাকে আনা হলো। এতটুকু বলা মাত্রই হযরত উমর ইবনুল আব্দুল আজীজ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি মাটিতে পড়ে গেলেন। খাদিম উচ্চস্বরে বলতে লাগলেন- হে আমীরুল মু’মিনীন! মহান আল্লাহ পাক উনার কসম! আপনাকে নিরাপদে পুলছিরাত পার হয়ে যেতে দেখেছি।” খাদিম চিৎকার করতেই লাগলেন কিন্তু কোনোক্রমেই উনার সংজ্ঞা ফিরে আসছে না। হাত-পা মুবারক আছড়াতে থাকলেন আর মাটিতে গড়াগড়ি করতে লাগলেন। (কিমিয়ায়ে সা’য়াদাত, ১৩২)
(মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ থেকে সংকলিত)
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
হযরত শায়েখ আবূ বকর শিবলী রহমতুল্লাহি আলাইহি (৪)
২৩ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
হযরত শায়েখ আবূ বকর শিবলী রহমতুল্লাহি আলাইহি (২)
২১ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
হযরত শায়েখ আবূ বকর শিবলী রহমতুল্লাহি আলাইহি (১)
২০ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
মুর্শিদ ক্বিবলা ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে (৩৬)
০৮ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
মুর্শিদ ক্বিবলা ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে (৩৫)
০৭ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মুর্শিদ ক্বিবলা ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে (৩৪)
০৬ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
মুর্শিদ ক্বিবলা ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে (৩৩)
২০ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মুর্শিদ ক্বিবলা ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে (৩২)
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পবিত্র ছোহবত মুবারক গ্রহণের ফাযায়িল-ফযীলত, গুরুত্ব-তাৎপর্য ও আবশ্যকতা
০৯ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
প্রসঙ্গ: ইলমে তাছাউফ উনার দৃষ্টিতে বাইয়াত হওয়া সম্পর্কে
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
পবিত্র ছোহবত মুবারক গ্রহণের ফাযায়িল-ফযীলত, গুরুত্ব-তাৎপর্য ও আবশ্যকতা
০২ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
ইলমে তাছাউফ
২৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)