পর্দা পালন করা ফরজ:
অন্যের ঘরে প্রবেশ করার সুন্নতী তারতীব
, ১৭ রবীউল আউওয়াল শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ২৪ রবি , ১৩৯২ শামসী সন , ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রি:, ০৬ আশ্বিন, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) মহিলাদের পাতা
অন্যের ঘরে প্রবেশের লক্ষ্যে অনুমতি তলবের জন্য তিন বার সালাম করা
উলামায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিমগণ বলেন, নিশ্চয়ই তিনবারকেই অনুমতির জন্য খাছ করা হয়েছে। কেননা, এটাই উত্তম কালাম। যখন তিনবার বলা হবে, শ্রবণের জন্য ও বুঝের জন্য সহজ হবে। সেহেতু নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যখন কথা বলতেন, তা পুনরাবৃত্তি করে তিনবার বলতেন, যাতে তা সহজে বোধগম্য হয়। যখন তিনি কোন সম্প্রদায়কে সালাম দিতেন, তখন তিনবার সালাম দিতেন। এটাই বিজয়ী ছিল। স্পষ্টভাবে তিনবারের পরেও যদি তাকে অনুমতি না দেয়, বুঝতে হবে নিশ্চয়ই বাড়ীর মালিক অনুমতির ইচ্ছা করে না অথবা সে জাওয়াব দেয়া থেকে ফিরে থাকার বিষয়ে কোন ওযর আছে, সে চায় না এ অবস্থায় তাদের সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন হোক। এ অবস্থায় অনুমতি প্রার্থনাকারীর ফিরে যাওয়াই উচিত। কেননা তিনের অধিক করার জন্য ঘর ওয়ালার অসুবিধা হবে। বেশী কাকুতি-মিনতির কারণে ক্ষতি হতে পারে এমনকি সে যে কাজে ব্যস্ত ছিল তাতেও ব্যাঘাত ঘটতে পারে। যেমন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হযরত আবূ আইউব আনছারী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে বললেন, যখন তিনি উনার কাছে অনুমতি চেয়েছিলেন তিনি উনার জন্য তাড়াতাড়ি করে বের হলেন এবং বললেন, “আমি আপনার জন্য তাড়াতাড়ি করেছি। ” (হাদীছ শরীফ)।
হযরত উক্বাইল রহমতুল্লাহি আলাইহি হযরত ইবনু শিহাব রহমতুল্লাহি আলাইহি থেকে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, অনুমতির সালাম তিনবার সুন্নত। নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি একদা হযরত সা’দ ইবনু উবাদাহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার কাছে আসলেন এবং বললেনঃ السلام عليكم ‘আপনাদের প্রতি শান্তি বর্ষিত হোক। ’ উনাদের কাছ থেকে কোন জবাব আসলো না। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আবার বললেন, السلام عليكم ‘আপনাদের উপর শান্তি বর্ষিত হোক’ এবারো কোন উত্তর আসলো না। তাই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ফিরে যেতে ধরলেন। হযরত সা’দ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু সালামের জবাব লুকিয়ে দিতে ছিলেন। হযরত সা’দ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বাড়ী থেকে বের হয়ে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পিছনে গেলেন এমনকি উনাকে সবকিছু জানালেন। বললেন, وعليكم السلام يا رسول الله ‘ওয়া আলাইকুমুস্ সালাম ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ আমরা আকাঙ্খা করেছিলাম যে, আপনার সালাম মুবারক দোয়া অধিক পরিমাণে আমাদের উপর বর্ষিত হোক। (এজন্য আস্তে জবাব দিয়েছিলাম)। মহান আল্লাহ পাক উনার কসম! আমরা আপনার সালাম মুবারকের বরকতময় শব্দ শুনেছিলাম। তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হযরত সা’দ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার সাথে ফিরে আসলেন এবং উনার বাড়ীতে এসে প্রবেশ করলেন।
হযরত ইবনু শিহাব রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, তিনি উক্ত ঘটনার সময় তিনবার সালাম গ্রহণ করেছিলেন।
হযরত ওয়ালীদ ইবনু মুসলিম রহমতুল্লাহি আলাইহি হযরত আওযায়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি থেকে রিওয়ায়েত করেন।
তিনি বলেন, আমি হযরত ইয়াহ্ইয়া ইবনু আবূ কাছীর রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার কাছ থেকে শুনেছি। তিনি বলেছেন, আমার কাছে হাদীছ শরীফ বর্ণনা করেছেন হযরত মুহম্মদ বিন আব্দুর রহমান ইবনু আসয়াদ বিন যুরারাহ্ রহমতুল্লাহি আলাইহি। (তিনি হযরত কাইস্ বিন সা’দ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে, যিনি হযরত সা’দ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার ছেলে) তিনি বলেনঃ একদা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমাদের বাড়ীতে আসলেন এবং বললেন, السلام عليكم ورحمة الله ‘আপনাদের উপর শান্তি এবং মহান আল্লাহ পাক উনার রহমত’। তিনি বলেনঃ (আমার পিতা) হযরত সা’দ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু সালামের জবাব অল্প আওয়াজে দিলেন। হযরত কাইস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, আমি বললাম, আপনি কি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে প্রবেশের অনুমতি দিচ্ছেন না? উত্তরে তিনি বললেন, উনাকে আমাদের উপর বেশী পরিমাণে সালাম, দোয়া মুবারক দেয়ার সুযোগ দিন... (হাদীছ শরীফ)।
অন্যের ঘরে প্রবেশের লক্ষ্যে অনুমতি নেয়ার জন্যে কড়া নাড়া বা গলা খাকড়ানোর চেয়ে সালাম দেয়াই আফযল ও উত্তম:
হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনু আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বর্ণনা করেন, নিশ্চয়ই অনুমতির আমলটি মানুষেরা ছেড়ে দিয়েছে। আমাদের উলামা-ই-কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিমগণ বলেন, মানুষেরা দরজাকে এবং গলা খাকড়ানোকে গ্রহণ করেছে। মহান আল্লাহ পাক তিনি অধিক জ্ঞাত। হযরত আবূ দাউদ রহমতুল্লাহি আলাইহি হযরত আব্দুল্লাহ বিন বুছর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি কোন গোত্রের বাড়ীতে গেলে দরজাকে উনার মুখোমুখি করে দাঁড়াতেন না, বরং দরজার ডান পার্শ্বে অথবা বাম পার্শ্বে দাঁড়াতেন এবং বলতেন السلام عليكم السلام عليكم ‘আস্সালামু আলাইকুম, আস্সালামু আলাইকুম। এরূপ এজন্য করতেন যে, সেসময় ঘরের দরজায় পর্দা দেয়া থাকতো না।
.....
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সম্মানিতা মহিলা আউলিয়া-ই কিরাম উনাদের পরিচিতি
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আল হাদিয়াহ আশার আলাইহাস সালাম উনার অনন্য এক ঘটনা মুবারক
০২ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
দ্বিতীয় মাসে শিশুর যে পরিবর্তনগুলো লক্ষণীয়
০১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
যিনি আল্লাহওয়ালা হয়েছেন উনার পথ অনুসরণ করে চলো
০১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
নারী নির্যাতনের অন্যতম একটি কারণ : মিডিয়ার অশ্লীলতা
৩০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের বেমেছাল দানশীলতা মুবারক (৫)
৩০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সন্তান সম্ভবা মায়ের ফযীলত
২৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার ই’জায শরীফ
২৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মুসলমানদের সবচেয়ে বড় শত্রু ইহুদী ও মূর্তিপূজারী মুশরিকরা
২৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
মহিলাদের ইলিম-তালিমের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা
২৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
২৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
প্রসঙ্গ আহাল ও আহালিয়ার একসাথে নামায আদায়
২৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)