আওয়ামী জাল পরিসংখ্যানে ভর করে এলডিসি উত্তরণ -শিল্প উৎপাদনের পরিসংখ্যানে করা হয় জালিয়াতি -রপ্তানি আয়ের হিসাবে গরমিল -চ্যালেঞ্জে পড়ার শঙ্কা অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীদের -উত্তরন ৩ থেকে ৬ বছর পেছানোর দাবি
, ২৮ রবীউল আউওয়াল শরীফ, ১৪৪৭ হিজরী সন, ২৪ রবি’, ১৩৯৩ শামসী সন , ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রি:, ০৮ আশ্বিন, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) তাজা খবর
নিজস্ব প্রতিবেদক:
আওয়ামী আমলের ভুয়া পরিসংখ্যান ও বিভ্রান্তিকর তথ্যের ওপর ভর করেই স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উত্তরণের পথে রয়েছে বাংলাদেশ। রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে শেখ হাসিনা দেশের অর্থনীতি ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে দেখিয়েছিলেন, যা তার আমলেই প্রকাশ্যে আসে।
এখন সেই জাল পরিসংখ্যানের ওপর ভর করেই এলডিসি থেকে উত্তরণের পথে হাঁটছে সরকার। প্রক্রিয়াটি পেছানো না হলে তা দেশের অর্থনীতির জন্য বিপজ্জনক হবে বলে মত বিশেষজ্ঞদের। তাদের মতে, এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন এখনো পেছানোর সুযোগ রয়েছে।
বিবিএসের আওয়ামী আমলের তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, দেশের উন্নয়নের ভিত্তি হিসেবে যে কটি সূচকের অগ্রগতিকে ধরা হয়, সেগুলোর বেশিরভাগ তথ্যই ছিল জালিয়াতির শিকার। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো জিডিপি ও মাথাপিছু আয়ের হিসাব। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০০৫-০৬ ভিত্তি বছরের সর্বশেষ সিরিজ ২০১৯-২০ অর্থবছরে চলতি মূল্যে জিডিপির আকার ছিল ২৭ হাজার ৩৯৩ বিলিয়ন টাকা। ২০১৫-১৬ ভিত্তি বছর অনুযায়ী ২০২০-২১ অর্থবছরে জিডিপি দাঁড়ায় ৩৫ হাজার ৩০২ বিলিয়ন টাকা, যেখানে ২৮.৮৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি দেখানো হয়। তবে ভিত্তি বছর পরিবর্তনের নামে উন্নয়নের গল্প তৈরির জন্য অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে এই ‘মনগড়া প্রবৃদ্ধি’ ধরে জিডিপি প্রাক্কলন করা হয়েছে, যা সর্বশেষ ২০২৪-২৫ অর্থবছরেও চলমান ছিল। এর ফলে ২০১৯-২০ অর্থবছরে যখন মাথাপিছু আয় ছিল প্রায় ১ লাখ ৭১ হাজার ৬০৮ টাকা ২০২০-২১ অর্থবছরে তা বেড়ে দাঁড়ায় ২ লাখ ১৯ হাজার ৭৩৮ টাকা। অর্থাৎ, এক বছরের ব্যবধানে মাথাপিছু আয় বেড়ে যায় ২৮ শতাংশ, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম ও অবাস্তব।
রপ্তানি আয় নিয়ে আওয়ামী আমলেই হাসিনা সরকারের পরিসংখ্যান জালিয়াতির বড় ঘটনা নজরে আসে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের ১০ মাসের রপ্তানি আয় প্রকৃত পরিমাণের চেয়ে ১৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বেশি দেখানোর ঘটনা বিভিন্ন মহলে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দেয়। ইপিবির তথ্যে বলা হয়, দশ মাসে পণ্য রপ্তানি হয়েছে মোট ৪৭.৭৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের। অন্যদিকে, বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে দেখা যায়, ওই একই সময়ে রপ্তানি আয় এসেছে ৩৩.৬৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। তীব্র সমালোচনার মুখে তড়িঘড়ি করে সে সময় তথ্য সংশোধনের উদ্যোগ নেয় ইপিবি। এর জেরে তখন টানা তিন মাস রপ্তানির তথ্য প্রকাশও বন্ধ থাকে।
পরিসংখ্যান জালিয়াতির এমন প্রেক্ষাপটে দেশের এলডিসি উত্তরণ বিপজ্জনক সিদ্ধান্ত হতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এ বিষয়ে সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড পিস স্টাডিজের (সিএসপিএস) নির্বাহী পরিচালক অর্থনীতিবিদ ড. মিজানুর রহমান বলেন, আমাদের পরিসংখ্যান ব্যুরো একটা ভুয়া তথ্য তৈরির কারখানা। আমাদের মাথাপিছু আয় ও জিডিপি এতটাই বাড়িয়ে দেখানো হয়েছিল যে দাতা সংস্থাগুলো তা মেনে নেয়নি। বিবিএসের ভুয়া তথ্যের ওপর ভিত্তি করে আমরা যদি এলডিসি উত্তরণে যাই তবে আমাদের অনেক চ্যালেঞ্জ আছে। মনে রাখতে হবে আমরা জিএসপি থেকে বঞ্চিত হব, অনেক ট্যাক্স ফ্রি সুবিধা বাতিল হয়ে যাবে। আমাদের ব্যাংকিং খাত, পুঁজিবাজার, ইস্যুরেন্স খাত, শিল্পের জ্বালানি নিরাপত্তার মতো আর্থিক খাতের সব খানেই দুর্বল ভিত্তি। গোঁজামিল দেখিয়ে অন্তত এ ধরনের একটি সিদ্ধান্তে যাওয়া মোটেও কাম্য নয়। এলডিসি উত্তরণ ২ থেকে ৩ বছর পিছিয়ে আর্থিক খাতের সব সংস্কার আগে শেষ করা উচিত।
ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স (আইসিসি) বাংলাদেশ-এর সভাপতি মাহবুবুর রহমান বলেন, জাতিসংঘের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বাংলাদেশের হাতে মাত্র ১৪ থেকে ১৫ মাস সময় রয়েছে। ২০২৬ সালের ২৪ নভেম্বর বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিকভাবে এলডিসি থেকে উত্তরণ করবে। কিন্তু এই স্বল্প সময়ে এত বড় প্রক্রিয়ার প্রস্তুতি নেওয়া সম্ভব নয়। এলডিসি উত্তরণের ফলে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্যসহ বড় বড় বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর ১২ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ হতে পারে, যা রপ্তানি ৬ থেকে ১৪ শতাংশ পর্যন্ত কমিয়ে দিতে পারে।
নিট পোশাক রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিকেএমইএর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, ব্যবসায়ীদের অন্ধকারে রেখে সরকার এলডিসি উত্তরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়নি, কোনো প্রস্তুতিও নেওয়া হয়নি। ইউরোপীয় ইউনিয়নের বর্তমান আইনে গ্র্যাজুয়েশন হলে বাংলাদেশ জিএসপি প্লাস সুবিধা হারাবে। আমাদের দাবি, এলডিসি উত্তরণ কমপক্ষে তিন বছর পিছিয়ে দেওয়া হোক।
তবে সম্প্রতি ঢাকায় ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের এক সেমিনারে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আনিসুজ্জামান চৌধুরী বলেন, এলডিসি উত্তরণ এখন আর সরকারের হাতে নেই। এটি জাতিসংঘ নির্ধারিত প্রক্রিয়া। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে বাংলাদেশ, নেপাল ও লাওসকে নিয়ে সিদ্ধান্ত হবে।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
৬৭ শতাংশ ভোটকেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ, বলছে গোয়েন্দা প্রতিবেদন
১১ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সরকারি সফরের বেশিরভাগ দেশ থেকে বিনিয়োগ কমেছে
১১ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
নবজাতকের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে প্রাণঘাতী ছত্রাক
১১ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মেট্রোরেলের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সব ছুটি বাতিল, বাড়তি সতর্কতা জারি
১১ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
‘আজ রাতেই কারফিউ দিয়ে ওদের শেষ করে দিন’
১১ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ফের ভোজ্য তেলের দাম লিটারে ৯.২৭ টাকা বাড়ানোর সুপারিশ
১১ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ঢাকা লকডাউন নিয়ে কোনো শঙ্কা নেই -স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
১১ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সিনিয়র অফিসারকে ফাঁকি দেন না এসআই মহিউদ্দিন!
১১ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
-বাংলাদেশ সীমান্তের পাশে তিন সেনা ঘাঁটি স্থাপন করেছে ভারত
১০ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
বাংলাদেশ সফরে পাকিস্তান নৌবাহিনীর প্রধান
১০ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
চট্টগ্রাম বন্দরের নতুন মাশুল আদায় এক মাসের জন্য স্থগিত
১০ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
৯৭ মিলিয়ন ডলার পাচারের মামলায় সালমানের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল
১০ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)












