আলোচনায় বা লেখনীতে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ইসমে যাত বা নাম মুবারক বারবার বলা ও লেখা সম্পূর্ণ আদবের খিলাফ (৩)
, ২৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০:০০ এএম ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ
‘তাফসীরে ত্ববারানী’ উনার মধ্যে উল্লেখ রয়েছে-
أي ادْعُوهُ بالْخُضوعِ والتعظيمِ وقولوا يَا رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ويَا نَبيَّ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ في لِيْنٍ وتواضعٍ وخَفْضِ صوتٍ ولا تقولُوا يا مُحَمَّدُ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ولا يا أبَا القَاسِمِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كما يدعُو بعضُهم بعضاً باسْمهِ
অর্থ: “অর্থাৎ তোমরা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে অত্যন্ত বিনয় ও তা’যীমের সাথে সম্বোধন মুবারক করো। তোমরা অত্যন্ত নমনীয়তা ও বিনয়ের সাথে কন্ঠস্বর নিচু করে বলবে, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! ইয়া নাবিইয়াল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আর উনার সম্মানিত নাম মুবারক ধরে এভাবে ইয়া মুহম্মদ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! অথবা ইয়া আবাল ক্বাসিম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! বলে সম্বোধন করবে না। যেমনিভাবে তোমরা একে অপরকে নাম ধরে সম্বোধন করে থাকো। ” (তাফসীরুল কুরআনীল আযীম লিত ত্ববারানী)
কিতাবে আরো বর্ণিত রয়েছে-
نَهَاهُمُ اللَّهُ أَنْ يُنَادُوهُ كَمَا يُنَادِي بَعْضُهُمْ بَعْضًا وَأَمَرَهُمْ أَنْ يُشَرِّفُوهُ وَأَنْ يُعَظِّمُوهُ وَيَدْعُوهُ إِذَا دَعَوْهُ بِاسْمِ النُّبُوَّةِ
অর্থ: “তারা পরস্পর একে অপরকে যেভাবে সম্বোধন করে মহান আল্লাহ পাক তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সেভাবে সম্বোধন করতে নিষেধ করেছেন। মহান আল্লাহ পাক তিনি মু’মিনদেরকে আদেশ মুবারক করেছেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে অত্যন্ত তা’যীম ও সম্মানের সাথে সম্বোধন মুবারক করার জন্য। এবং তারা যখন উনাকে সম্বোধন করবে তখন উনার সম্মানিত নুবুওওয়াত মুবারক উনার নামে অর্থাৎ ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! ইয়া নাবিইয়াল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! বলে সম্বোধন করতে আদেশ মুবারক করেছেন। ” সুবহানাল্লাহ! (তা’যীমু ক্বদরিছ ছলাত ২/৬৬৪)
মূল কথা হচ্ছে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্বোধন মুবারক করার সময় উনার মহাসম্মানিত নাম মুবারক ধরে সম্বোধন করা যাবে না। বরং উনার মহাসম্মানিত লক্বব মুবারক দ্বারা সম্বোধন করতে হবে।
এক্ষেত্রে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের আমল মুবারক দেখলে বিষয়টা আরো স্পষ্ট হয়ে যাবে। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জমীনে অবস্থান মুবারককালীন সময়তো রয়েছেই। যখন তিনি দুনিয়া থেকে পর্দা মুবারক করেছেন তখনও উনারা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত নাম মুবারক ধরে সম্বোধন করেননি। এর সবচেয়ে বড় উদাহরণ হচ্ছে- হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা যে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ বর্ণনা করেছেন, সেখানে কিন্তু কখনোই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত নাম মুবারক ধরে সম্বোধন করেননি। উনারা এভাবে বর্ণনা করেছেন-
১.قال رسول الله صلى الله عليه وسلم
২.قال النبى صلى الله عليه وسلم
৩.سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول
৪.سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ
উনারা কিন্তু বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া কখনোই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত নাম মুবারক ধরে সম্বোধন করেননি। লেখার ক্ষেত্রেও না, বলার ক্ষেত্রেও না।
তাহলে পরবর্তী উম্মত কিভাবে কথা বলার সময়, লেখার সময় বারবার নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মুবারক নিতে পারে? আর এটা কিভাবে আদব হতে পারে? এটা কখনোই আদব হবে না। বরং চরম পর্যায়ের বেয়াদবী হবে, ঈমান নষ্ট হওয়ার কারণ হবে। নাঊযুবিল্লাহ!
সাধারণভাবে একজন সন্তান তার পিতা-মাতার নাম ধরে ডাকে না, একজন ছাত্র তার শিক্ষকের নাম ধরে সম্বোধন করে না। কেউ যদি ডাকে বা নাম ধরে সম্বোধন করে তাহলে তাকে বেয়াদব বলা হয়। অথচ পিতা-মাতা, শিক্ষক তারা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নগন্য উম্মত। তাদের ক্ষেত্রে যদি এভাবে আদব বজায় রাখতে হয় তাহলে যিনি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, যাকে সৃষ্টি না করলে মহান আল্লাহ পাক তিনি কিছুই সৃষ্টি করতেন না। উনার মহাসম্মানিত নাম মুবারক ধরে সম্বোধন করলে সেটা কত বড় বেয়াদবী হবে? কতটা আদবের খিলাফ হবে? সেটা বান্দা-বান্দী, উম্মতকে অবশ্যই চিন্তা করতে হবে। মূলত তারা সবচেয়ে বড় বেয়াদব হবে। নাঊযুবিল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে-
ومن كان له ابن فسماه محمدا فليكرمه ولا يضربه أما يستحى أحدكم أن يقول يا محمد ثم يضربه (نجا)
অর্থ: কোনো ব্যক্তির একজন ছেলে সন্তান জন্মগ্রহণ করলো। সে তার নাম রাখলো মুহম্মদ। তাহলে তার দায়িত্ব হচ্ছে ঐ সন্তানকে সম্মান করা, প্রহার না করা। জেনে রাখুন! কোনো ব্যক্তি যদি ঐ সন্তানকে ইয়া মুহম্মদ বলে সম্বোধন করতে লজ্জা বোধ করে এবং তাকে প্রহার না করে তাহলে সে নাজাত লাভ করবে। সুবহানাল্লাহ! (তানযীহুশ শরীয়াতীল মারফূয়াহ ১/২২৬)
চিন্তা ও ফিকিরের বিষয়, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত নাম মুবারকে একজন সন্তানের নাম রাখার কারণে তাকে যদি সম্মান করতে হয়, কোনো প্রহার করা না যায়। এবং তাকে ঐ নামে ডাকতে লজ্জাবোধ করলে, প্রহার না করলে যদি নাজাত লাভ করা যায় তাহলে সরাসরি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে কতটুকু সম্মান করতে হবে, কত তা’যীম-তাকরীম মুবারক করতে হবে। উনার মহাসম্মানিত নাম মুবারক উনাকে সম্মান করার কারণে বান্দা-বান্দী, উম্মত কত বেমেছাল ফযীলত মুবারক লাভ করবে এবং নাজাত লাভ করবে। সেটা বলার অপেক্ষাই রাখে না। মহান আল্লাহ পাক তিনি সকলকে ছহীহ সমঝ দান করুন। আমীন! (অসমাপ্ত)
-মুহম্মদ ইমামুল হুদা।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সর্বোচ্চ সম্মানিত ভাষায় সম্বোধন মুবারক করতে হবে
২৩ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
আজ সাইয়্যিদুনা হযরত মুআবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার পবিত্র বিছাল শরীফ গ্রহণ দিবস
২৩ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
আজ খাজা আবূ ত্বালিব উনার পবিত্র বিছাল শরীফ দিবস
২৩ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুল খুলাফা, আবুল খুলাফা, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিস সালাম তিনি বাংলাদেশতো অবশ্যই; এমনকি সারা পৃথিবীতে, সারা কায়িনাতে সম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ্ মুবারক প্রতিষ্ঠা করবেনই করবেন ইনশাআল্লাহ
২৩ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুল খুলাফা, আবুল খুলাফা, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিস সালাম তিনি বাংলাদেশতো অবশ্যই; এমনকি সারা পৃথিবীতে, সারা কায়িনাতে সম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ্ মুবারক প্রতিষ্ঠা করবেনই করবেন ইনশাআল্লাহ
২২ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মা’ছূম হওয়া, রহমতের সমস্ত দরজা খুলে যাওয়া, শাফা‘আত মুবারক লাভ এবং হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদের অনুরূপ নাজাত লাভ করার একমাত্র মাধ্যম হচ্ছেন হাক্বীক্বীভাবে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করা
২২ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ উনার সম্মানার্থে মাত্র এক দিরহাম খরচ করার মাধ্যমে ৭০টি সম্মানিত মক্ববূল হজ্জ মুবারক আদায় করার সমপরিমাণ ফযীলত মুবারক লাভ
২২ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারকে শব্দ ব্যবহারে কতটুকু আদব রক্ষা করা আবশ্যক (১)
২২ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাইয়্যিদুল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালীন, রহমাতুল্লিল আলামীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে নিয়ে ব্যঙ্গচিত্র প্রকাশকারী, কটাক্ষকারী, অবমাননাকারীদেরকে শরঈ শাস্তি প্রদান করা ওয়াজিব
২১ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুল খুলাফা, আবুল খুলাফা, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিস সালাম তিনিই হচ্ছেন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ এবং পূর্ববর্তী সম্মানিত আসমানী কিতাব মুবারক উনাদের মধ্যে বর্ণিত ১০ম খলীফা
২১ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ উনার সম্মানার্থে মাত্র এক দিরহাম খরচ করার মাধ্যমে মহান আল্লাহ পাক উনার রাস্তায় এক পাহাড় পরিমাণ লাল স্বর্ণ দান করার সমপরিমাণ ফযীলত মুবারক লাভ
২১ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুল খুলাফা, আবুল খুলাফা, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিস সালাম তিনিই হচ্ছেন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ এবং পূর্ববর্তী সম্মানিত আসমানী কিতাব মুবারক উনাদের মধ্যে বর্ণিত ১০ম খলীফা
২০ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)