খসড়া চূড়ান্ত:
কৃষিজমি বাণিজ্যিক আবাসন বা অকৃষি কাজে ব্যবহারে পেতে হবে শাস্তি - প্রযোজ্য হবে তিন পার্বত্য জেলা ব্যতীত সারাদেশে
, ০১ জুমাদাল ঊখরা শরীফ, ১৪৪৭ হিজরী সন, ২৫ সাদিস, ১৩৯৩ শামসী সন , ২৩ নভেম্বর, ২০২৫ খ্রি:, ০৮ অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) তাজা খবর
নিজস্ব সংবাদদাতা:
‘ভূমি ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ ও কৃষি ভূমি সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৫’ প্রণয়ন করেছে সরকার। এ অধ্যাদেশ অনুযায়ী অনুমোদন ব্যতীত কৃষিভূমি অকৃষিকাজে ব্যবহার ও কৃষিজমিতে বাণিজ্যিক আবাসন, রিসোর্ট, শিল্পপ্রতিষ্ঠান বা কারখানা নির্মাণ হবে অপরাধ। যার জন্য পেতে হবে শাস্তি।
সম্প্রতি ভূমি মন্ত্রণালয় এ অধ্যাদেশের খসড়া চূড়ান্ত করেছে। উপদেষ্টা পরিষদের অনুমোদনের পর গেজেট জারির মাধ্যমে এটি কার্যকর হবে।
এই অধ্যাদেশ রাঙ্গামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি তিনটি পার্বত্য জেলা ব্যতীত সমগ্র বাংলাদেশে প্রযোজ্য হবে।
অধ্যাদেশের ৬ নম্বর ধারা অনুযায়ী সরকার ভূমিকে ১৮ শ্রেণিভুক্ত করবে। এই ধারায় বলা হয়েছে, সরকার জোনিং ম্যাপ প্রণয়নের উদ্দেশ্যে ভূমিকে ১৮ শ্রেণিভুক্ত করবে এবং জাতীয় স্বার্থে খাদ্য নিরাপত্তা ও পরিবেশ সংরক্ষণ বিবেচনায় প্রয়োজনে নতুন জোন সৃজন, বিদ্যমান জোন একত্রীকরণ, পৃথকীকরণ ও বিলুপ্ত করতে পারবে।
শ্রেণিগুলো হলো- ১. কৃষি অঞ্চল, ২. বিশেষ কৃষি অঞ্চল, ৩. কৃষি-মৎস্য চাষ অঞ্চল, ৪. নদী ও খাল, ৫. পানিশয়, পানিধার ও পানিভূমি, ৬. পরিবহন ও যোগাযোগ অঞ্চল, ৭. শহরে আবাসিক অঞ্চল, ৮. গ্রামীণ বসতি অঞ্চল, ৯. মিশ্র ব্যবহার, ১০. বাণিজ্যিক অঞ্চল, ১১. শিল্প অঞ্চল, ১২. প্রাতিষ্ঠানিক ও নাগরিক সুবিধা অঞ্চল, ১৩. বন ও রক্ষিত এলাকা অঞ্চল, ১৪. পরিবেশগতভাবে সংকটাপন্ন এলাকা/পরিবেশগতভাবে সংবেদনশীল এলাকা, ১৫. সাংস্কৃতিক-ঐতিহ্য অঞ্চল, ১৬. পাহাড়-টিলা, ১৭. পতিত এবং ১৮. অন্যান্য।
অধ্যাদেশের ৭ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে, সরকার সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থাগুলো ও জেলা প্রশাসন ভূমির প্রকৃতি ও বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী ব্যবহারভিত্তিক শ্রেণিবিন্যাসের ভিত্তিতে ভূমি সুরক্ষার ব্যবস্থা করবে। সর্বশেষ প্রকাশিত বা বলবৎ ভূমি জরিপের স্বত্বলিপি ও সরেজমিন পরিদর্শনের ভিত্তিতে নিচের শ্রেণিগুলোর ভূমি কৃষিভূমি হিসেবে গণ্য করা যাবে- নাল, বিলান, ধানি জমি, বোরো, বালুচর, চর ভূমি, বীজতলা, বাগান, পান বরজ, ঘাসবন, পতিত, লায়েক পতিত, হোগলবন, নলবন, বাইদ, চালা, হর্টিকালচার, মৎস্য চাষ, নার্সারি, মাঠ, বেড়, দলা, বেগুন টিলা, মরিচ টিলা, ভিটি, ভিটা, ডাঙ্গা, ছোণখোলা, ভাগার, বাঁশঝাড়, গো-চারণ ভূমি, পুকুর পাড়, সহুরী, সাটিউড়া, আছারউরা, গভীর নলকূপ ও সমজাতীয় আবাদি ভূমি এবং সরকার থেকে সময়ে সময়ে নির্ধারিত যেকোনো শ্রেণির ভূমি।
রাষ্ট্রীয় অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব আইন, ১৯৫০-এর ৮৩ ধারায় যা কিছুই থাকুক না কেন এই অধ্যাদেশের অধীনে সংজ্ঞায়িত সব কৃষিভূমি সুরক্ষা করতে হবে। এই অধ্যাদেশ জারির পর সরকার দ্রুততম সময়ের মধ্যে কৃষিভূমি চিহ্নিত করে ভূমি ম্যাপিংয়ের কাজ শুরু করবে এবং সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকদের কাছ থেকে কৃষিভূমির তালিকা ও বিবরণ সংগ্রহ করবে।
কোনো আবাসন কোম্পানি, শিল্পপ্রতিষ্ঠান, কারখানা বা অন্য কোনো ব্যক্তি কৃষিভূমি, পানিধার ও পানিভূমি ভরাট করলে বা কোনো স্থাপনা নির্মাণ করলে তা শাস্তিযোগ্য অপরাধ হবে এবং আইনি প্রক্রিয়ার অতিরিক্ত হিসেবে দায়ী ব্যক্তি কর্তৃপক্ষের নির্দেশ অনুসারে ভরাট করা মাটি ও স্থাপনা অপসারণ করতে বাধ্য থাকবেন।
অধ্যাদেশের ১০ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি স্থানীয় প্রশাসনের অনুমতি সাপেক্ষে নিজস্ব কৃষিভূমিতে বসতবাড়ি, উপাসনালয়, কবরস্থান, সমাধি, গুদামঘর, পারিবারিক ব্যবহারের জন্য পুকুর, কুটির শিল্পসহ বসতবাড়ির সাথে সম্পর্কিত স্থাপনাদি নির্মাণ করতে পারবেন। অনুমতি গ্রহণ না করে কৃষিভূমিতে স্থাপনা বা অবকাঠামো নির্মাণ করলে বা কৃষিভূমি অকৃষি কাজে ব্যবহার করলে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এ স্থাপনা, অবকাঠামো বা উপকরণ অপসারণের আদেশ দিতে পারবেন এবং এমন আদেশ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির ওপর বাধ্যতামূলক হবে। জনস্বার্থে এবং অনুমোদনের শর্তাবলি লঙ্ঘন করলে কর্তৃপক্ষ অনুমোদন বাতিল করতে পারবে।
১১ ধারায় বলা হয়েছে, কৃষিভূমি, পাহাড়-টিলা, পানিধার, পানিভূমি ব্যতীত বিদ্যমান অন্যান্য ভূমিরূপ অথবা জোনিংয়ে উল্লিখিত ভূমিরূপ পরিবর্তন করতে চাইলে বা জোনিং শ্রেণি বহির্ভূত কাজে ভূমি ব্যবহার করতে চাইলে এই অধ্যাদেশের অধীনে প্রণীত বিধিমালা অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তার অনুমোদন গ্রহণ করতে হবে। শ্রেণি বা ব্যবহার পরিবর্তনের কোনো অনুমতি প্রদানের ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষকে এই অধ্যাদেশের উদ্দেশ্য ব্যাহত হবে না এবং জনস্বার্থ, প্রকৃতি ও পরিবেশের ওপর এর বিরূপ প্রতিক্রিয়া পড়বে না মর্মে নিশ্চিত হতে হবে।
অধ্যাদেশের ১৪ ধারায় অপরাধ ও দ-ের বিষয়ে বিস্তারিত বলা হয়েছে। এতে বলা হয়, অনুমোদন ব্যতীত জোনিং ম্যাপে উল্লিখিত ভূমির শ্রেণি পরিবর্তনের শাস্তি সর্বোচ্চ ছয় মাস বিনাশ্রম কারাদ- অথবা ১ লাখ টাকা পর্যন্ত অর্থদ- বা উভয়দ-; অনুমোদন ব্যতীত কৃষিভূমি অকৃষিকাজে ব্যবহারের শাস্তি সর্বোচ্চ ১ বছর বিনাশ্রম কারাদ- অথবা ২ লাখ টাকা পর্যন্ত অর্থদ- বা উভয়দ-; কৃষিভূমিতে বাণিজ্যিক আবাসন, রিসোর্ট, শিল্পপ্রতিষ্ঠান, কারখানা বা অনুরূপ স্থাপনা বা অবকাঠামো নির্মাণের শাস্তি সর্বোচ্চ ২ বছর বিনাশ্রম কারাদ- অথবা ৪ লাখ টাকা পর্যন্ত অর্থদ- বা উভয়দ-; ইটভাটায় কৃষিজমির উপরিভাগ বা পাহাড়-টিলার মাটি ব্যবহারের শাস্তি সর্বোচ্চ ২ বছর বিনাশ্রম কারাদ- অথবা ৪ লাখ টাকা পর্যন্ত অর্থদ- বা উভয়দ-।
বিশেষ কৃষি অঞ্চলের ক্ষতিসাধনের শাস্তি সর্বোচ্চ ৩ বছর বিনাশ্রম কারাদ- অথবা ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত অর্থদ- বা উভয়দ- এবং অতিরিক্ত হিসাবে ক্ষতিপূরণ ও সংশোধনমূলক ব্যবস্থার নির্দেশ; পানিধার, পানিভূমি, পাহাড়-টিলা ও বনের ক্ষতিসাধন ও ভূমিরূপ পরিবর্তনের শাস্তি হিসেবে প্রচলিত আইনের শাস্তির বিধান অনুসৃত হবে। তবে অতিরিক্ত হিসাবে ক্ষতিপূরণ, ভূমির প্রকৃতি পুনঃস্থাপন, অবৈধভাবে ভরাটকৃত মাটি ও স্থাপনা অপসারণ, বৃক্ষরোপণসহ প্রয়োজনীয় সংশোধনমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করার নির্দেশ দেওয়া যাবে।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
ইসরাইলী গুপ্তচর গ্যাং নেতাসহ নিহত
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ঘোষিত আসনে প্রার্থী পরিবর্তনের সম্ভাবনা খুবই কম -ফখরুল
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ভারতীয় গোয়েন্দা নিয়ে হত্যার পরিকল্পনা তাপসের অফিসে
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
চট্টগ্রাম বন্দর বিদেশিদের দেয়া যাবে না -স্টুডেন্টস ফর সভরেন্টি
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
‘১৫ বছরের মধ্যে সেনাবাহিনী যেন দাঁড়াতে না পারে’
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সীমান্তপথে ঢোকে, ছড়ায় ট্রেনে
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
চট্টগ্রাম বন্দর পরিচালনা প্রশ্নে হাইকোর্টের ‘দ্বিধাবিভক্ত’ রায়
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
পুলিশ কমিশন অধ্যাদেশ অনুমোদন
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
পুলিশ কমিশন অধ্যাদেশ অনুমোদন
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’দাদ ১২ই শরীফ উনার সম্মানার্থে অনন্য আয়োজন
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
‘রাজাকার-আল বদরদের জন্য আ.লীগই ঠিক ছিল’
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে এই বিচার নয় -চিফ প্রসিকিউটর
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার)












