তরজমাতুল মুজাদ্দিদিল আ’যম আলাইহিস সালাম পবিত্র কুরআন শরীফ উনার ছহীহ্ তরজমা
(পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনার আলোকে সংক্ষিপ্ত তাফসীরসহ)
, ১৭ই রজবুল হারাম শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ২১ ছামিন, ১৩৯২ শামসী সন , ১৮ জানুয়ারী, ২০২৫ খ্রি:, ০৪ মাঘ, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা

পবিত্র সূরা কুরাঈশ শরীফ উনার সংক্ষিপ্ত ছহীহ্ তাফসীর বা ব্যাখ্যা মুবারক
মহান আল্লাহ পাক তিনি ‘পবিত্র সূরা কুরাঈশ শরীফ’ উনার মধ্যে কুরাঈশগণ উনাদের কিছু খুছূছিয়ত বর্ণনা করেছেন। কারণ মহান আল্লাহ পাক তিনি কুরাঈশ উনাদেরকে খাছভাবে মনোনীত করেছেন। কুরাঈশদের প্রতি যে মহান আল্লাহ পাক উনার রহমত, বরকত, সাকীনা মুবারক ইত্যাদি রয়েছে তা উল্লেখ করেন। যার কারণে উনাদেরকে ব্যবসা-বাণিজ্য করার ও কুদরতী রিযিক দেয়ার কথা এবং কুদরতী নিরাপত্তা দেয়ার কথা বলা হয়েছে। সেজন্য মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি কুরাঈশ উনাদেরকে গালি দিতে ও খারাপ বলতে নিষেধ করেছেন।
যেহেতু কুরাঈশ উনাদেরকে মনোনীত করা হয়েছে সেহেতু পবিত্র কা’বা শরীফ উনার দায়িত্ব কুরাঈশ উনাদের কাছে থাকবে। সেজন্য মহান আল্লাহ পাক তিনি কুরাঈশ উনাদেরকে পবিত্র কা’বা শরীফ উনার যিনি মহান রব উনার ইবাদত-বন্দিগী করার জন্য নির্দেশ মুবারক দিয়েছেন।
মহান আল্লাহ পাক তিনি এ ‘পবিত্র সূরা কুরাঈশ শরীফ’ উনার মধ্যে খাছভাবে কুরাঈশ উনাদের ও আমভাবে সমস্ত বান্দাদেরকে রিযিক দেয়ার ও নিরাপত্তা দান করার বিষয়টি স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন।
এ সম্পর্কে মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, ‘মহান আল্লাহ পাক তিনি দাতা আর স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বন্টনকারী। ’ এ রিযিক তারা কিভাবে লাভ করবে সেটাও বলে দিয়েছেন। তাহলো- চাকুরি, ব্যবসার মাধ্যমে হাছিল করবে। বিশেষ করে ব্যবসার মাধ্যমে রিযিক বেশি হাছিল হয়ে থাকে। এ সম্পর্কে নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন, রিযিকের দশ ভাগের নয় ভাগ রয়েছে ব্যবসার মধ্যে। সুতরাং বান্দাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য হলো, তারা যেন মহান আল্লাহ পাক উনার রুবূবিয়ত স্বীকার করে মহান আল্লাহ পাক উনাকে মহান রব মেনে খাছভাবে উনার ইবাদত-বন্দিগী করে।
নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ঊর্ধ্বতম পনেরতম পূর্ব পুরুষ হযরত কিনান আলাইহিস সালাম উনার ছেলে হযরত নযর আলাইহিস সালাম উনাকে ‘কুরাঈশ’ লক্বব মুবারকে ভূষিত করা হয়। অতঃপর উনার বংশধর উনাদেরকে ‘কুরাঈশ’ নামে অভিহিত করা হয়। নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, উনার খলীফাগণ কুরাঈশ বংশের হবেন। যেমন খুলাফায়ে রাশিদার চারজন খলীফা-ই কুরাঈশ বংশীয়। পবিত্র কা’বা শরীফ উনার খাদিম ও তত্ত্বাবধায়ক উনারাও কুরাঈশ বংশ থেকে হবেন।
এক বর্ণনায় রয়েছে, কুরাঈশ শব্দ ‘কারশ’ শব্দ থেকে উৎপন্ন হয়েছে। যার অর্থ হচ্ছে সংগ্রহ করা। কুরাঈশ উনারা ব্যবসা করে অর্থ সংগ্রহ করতেন সেজন্য কুরাঈশ নামে অভিহিত হয়েছেন। অপর এক বর্ণনায় রয়েছে, কুরাঈশ উনারা বিচ্ছিন্নভাবে অবস্থান করতেন। হযরত কিলাব আলাইহি সালাম উনার ছেলে হযরত কুসাই আলাইহিস সালাম তিনি সবাইকে পবিত্র মক্কা শরীফ উনার এক স্থানে একত্রিত করেছিলেন। এটাও উনাদের কুরাঈশ নামে অভিহিত হওয়ার একটা কারণ।
হযরত ইবনে আব্বাস রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, সমুদ্রে কুরাঈশ নামে এক বিরাট আকৃতির প্রাণী রয়েছে। এটা সামুদ্রিক প্রাণীর মধ্যে সর্বাপেক্ষা বৃহৎ ও শক্তিশালী। সামনে ছোট-বড় যে কোন সামুদ্রিক প্রাণী পেলে তাকে গ্রাস করে ফেলে। কিন্তু অন্য কোন প্রাণী এটাকে গ্রাস করতে পারে না। সেরূপ আরব দেশের কুরাঈশ বংশের লোক উনারাও সর্বাপেক্ষা সম্পদশালী, শক্তিশালী, জ্ঞানী-গুনী ছিলেন। এটাও একটা কারণ কুরাঈশ নামে অভিহিত হওয়ার।
কুরাঈশ উনাদের বিরোধীদের উপর সর্ব দিক থেকে সর্ব বিষয়ে কামিয়াবী হাছিল করার কারণে উনাদের খুছূছিয়ত বর্ণনা করার জন্য মহান আল্লাহ পাক তিনি এ ‘পবিত্র সূরা কুরাঈশ শরীফ’ নাযিল করেছেন।
‘পবিত্র সূরা কুরাঈশ শরীফ’ থেকে সকলকে এই ইবরত ও নছীহত হাছিল করতে হবে যে, মহান আল্লাহ পাক উনার খাছ ও মনোনীত বান্দা হতে হলে এবং নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খাছ ও মনোনীত উম্মত হতে হলে খালিছভাবে মহান আল্লাহ পাক উনার ইবাদত-বন্দিগী করতে হবে ও নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ইতায়াত বা পায়রবি করতে হবে। তা বদনী ও মালী উভয়দিক থেকেই। তাহলে মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, নূরে মাজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ওয়াসীলায় বান্দাদেরকে কুদরতী রিযিক দান করবেন এবং সর্ব বিষয়ে সর্ব দিক থেকে কুদরতীভাবে নিরাপত্তা ও কামিয়াবী দান করবেন। আর মনোনীত বান্দা ও উম্মত হতে হলে রূহানী কুওওয়াত মুবারক হাছিল করতে হবে। রূহানী কুওওয়াত মুবারক হাছিল করতে হলে হক্কানী-রব্বানী শায়খ উনার নিকট বাইয়াত গ্রহণ করে ক্বল্বী যিকির ও ছোহবত ইখতিয়ার করার মাধ্যমে ফয়েজ-তাওয়াজ্জুহ মুবারক হাছিল করতে হবে। (তাফসীরে ইবনে জারীর তাবারী শরীফ, তাফসীরে কবীর শরীফ, তাফসীরে ইবনে কাছীর শরীফ, তাফসীরে খাযিন শরীফ, তাফসীরে বাগবী শরীফ, তাফসীরে মুনীর শরীফ, তাফসীরে মুয়ালিম শরীফ, তাফসীরে দুররে মানছূর শরীফ, তাফসীরে রূহুল বয়ান শরীফ, তাফসীরে মাযহারী শরীফ, তাফসীরে আযীযী শরীফ, তাফসীরে আমীনিয়া শরীফ ইত্যাদি)
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
পবিত্র ছহীহ হাদীছ শরীফ দ্বারাই শবে বরাত প্রমাণিত (৪)
১২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
১২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
হালালকে হারাম করা মহান আল্লাহ পাক উনার সাথে র্শিক করার শামিল
১২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন হাসান চীশতী আজমিরী সাঞ্জারী রহমতুল্লাহি আলাইহি (৪৯)
১২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানার্থে ক্বিয়াম করা পবিত্র আয়াতে কুরআন মাজীদ দ্বারা প্রমাণিত
১২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
পবিত্র ছহীহ হাদীছ শরীফ দ্বারাই শবে বরাত প্রমাণিত (৩)
১১ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ছবি তোলা হারাম, যা জাহান্নামী হওয়ার কারণ
১১ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১১ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
প্রসঙ্গ: হক্ব তালাশীদের জন্য সার্বিক দিক-নির্দেশনা রয়েছে পবিত্র সূরা ফাতিহা শরীফ উনার মধ্যেই
১১ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পবিত্র ছহীহ হাদীছ শরীফ দ্বারাই শবে বরাত প্রমাণিত (২)
১০ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
পর্দা পালন করা নারী-পুরুষ সকলের জন্যই শান্তি ও পবিত্রতা হাছিলের কারণ
১০ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)