বুলন্দী শান মুবারক
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত আহবান মুবারক-এ সাড়া দেয়া প্রত্যেক উম্মতের জন্য ফরয; এমনকি পবিত্র নামাযে থাকাকালীন সময়েও (১)
, ১৪ জুমাদাল উলা শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ৩১ সাদিস ১৩৯১ শামসী সন , ২৯ নভেম্বর, ২০২৩ খ্রি:, ১৩ অগ্রহায়ণ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ
يٰاَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوا اسْتَجِيْبُوْا لِلّٰهِ وَلِلرَّسُوْلِ اِذَا دَعَاكُمْ
অর্থ: “হে ঈমানদারগণ! মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রসূল, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অর্থাৎ উনারা যখন তোমাদেরকে সম্মানিত আহবান মুবারক করবেন, তখন অবশ্যই তোমরা উনাদের সম্মানিত আহবান মুবারক-এ সাড়া দিবে।” (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা আনফাল শরীফ: সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ২৪)
এই সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মাধ্যমে মহান আল্লাহ পাক তিনি সমস্ত ঈমানদার, মু’মিন-মুসলমান উনাদের জন্য সর্বাবস্থায় ছাহিবু লাওলাক, ছাহিবু ক্বাবা কাওসাইনি আও আদনা, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত আহবান মুবারক-এ সাড়া দেয়া ফরয করে দিয়েছেন। এমনকি পবিত্র নামাযে থাকাকালীন সময়েও পবিত্র নামায ছেড়ে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত আহবান মুবারক-এ সাড়া দেয়া ফরয। সুবহানাল্লাহ!
যেমন এ বিষয়ে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছেন-
عَنْ حَضْرَتْ اَبِىْ سَعِيْدِ بْنِ الْمُعَلّٰى رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ كُنْتُ اُصَلِّىْ فَمَرَّ بِىْ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَدَعَانِىْ فَلَمْ اٰتِهٖ حَتّٰى صَلَّيْتُ ثُمَّ اَتَيْتُه فَقَالَ مَا مَنَعَكَ اَنْ تَأْتِىَ اَلَمْ يَقُلِ اللهُ (يٰاَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوا اسْتَجِيْبُوْا لِلّٰهِ وَلِلرَّسُوْلِ اِذَا دَعَاكُمْ)
অর্থ: “হযরত আবূ সাঈদ ইবনে মু‘আল্লা রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি একবার পবিত্র নামায আদায় করছিলাম। এমতাবস্থায় নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমার পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় আমাকে ডাকলেন। কিন্তু আমি পবিত্র নামায শেষ না করা পর্যন্ত উনার খিদমত মুবারক-এ যাইনি। তারপর (পবিত্র নামায শেষ করে) উনার মহাসম্মানিত খিদমত মুবারক-এ গেলাম, তিনি আমাকে বললেন, আমার নিকট আসতে আপনাকে কিসে বাধা দিলো? মহান আল্লাহ পাক তিনি কি ইরশাদ মুবারক করেননি- ‘মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রসূল, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অর্থাৎ উনারা যখন তোমাদেরকে সম্মানিত আহবান মুবারক করবেন, তখন অবশ্যই তোমরা উনাদের সম্মানিত আহবান মুবারক-এ সাড়া দিবে’।” (বুখারী শরীফ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ নং ৪৬৪৭, মুসনাদে আহমদ ৩/৪৫০, সুনানুল কুবরা লিন নাসায়ী ৭/২৫৫ ইত্যাদি)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো বর্ণিত রয়েছেন-
عَنْ حَضْرَتْ اَبِىْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ خَرَجَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلٰى حَضْرَتْ اُبَىِّ بْنِ كَعْبٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ وَهُوَ يُصَلِّىْ فَقَالَ يَا حَضْرَتْ اُبَىُّ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ فَالْتَفَتَ فَلَمْ يُجِبْهُ ثُمَّ صَلّٰى حَضْرَتْ اُبَىٌّ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ فَخَفَّفَ ثُمَّ انْصَرَفَ اِلٰى رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ اَلسَّلَامُ عَلَيْكَ اَىْ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ وَعَلَيْكَ قَالَ مَا مَنَعَكَ اَىْ اُبَىُّ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ اِذْ دَعَوْتُكَ اَنْ تُجِيْبَنِىْ قَالَ اَىْ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كُنْتُ فِى الصَّلٰوةِ قَالَ اَفَلَسْتَ تَجِدُ فِيْمَا اَوْحَى اللهُ اِلَىَّ اَنِ اسْتَجِيْبُوْا لِلّٰهِ وَلِلرَّسُوْلِ اِذَا دَعَاكُمْ لِمَا يُحْيِيْكُمْ قَالَ بَلٰى اَىْ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَا اَعُوْدُ
অর্থ: “হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হযরত উবাই ইবনে কা’ব রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার পাশ দিয়ে অতিক্রম করছিলেন। তখন হযরত উবাই ইবনে কা’ব রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি পবিত্র নামাযরত ছিলেন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনাকে ডাকলেন। হযরত উবাই ইবনে কা’ব রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি বিষয়টা লক্ষ্য করলেন কিন্তু কোনো জবাব দিলেন না। এরপর হযরত উবাই ইবনে কা’ব রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি সংক্ষেপে পবিত্র নামায শেষ করে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত খিদমত মুবারক-এ উপস্থিত হয়ে বললেন, আস সালামু আলাইকা ইয়া রাসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, ওয়া আলাইকা অর্থাৎ আপনার উপরও সালাম! হে হযরত উবাই ইবনে কা’ব রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু! যখন আমি আপনাকে ডাকলাম তখন কোন্ বিষয় আপনাকে আমার সম্মানিত আহ্বান মুবারক-এ সাড়া দিতে নিষেধ করলো? তিনি বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমি নামাযে ছিলাম। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, আপনি কি এটা পাননি মহান আল্লাহ পাক তিনি আমার প্রতি সম্মানিত ওহী মুবারক করেছেন যে, ‘মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রসূল, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অর্থাৎ উনারা যখন তোমাদেরকে সম্মানিত আহবান মুবারক করবেন, তখন অবশ্যই তোমরা উনাদের সম্মানিত আহবান মুবারক-এ সাড়া দিবে, যা তোমাদেরকে জীবন দান করে।’ তিনি বললেন, হ্যাঁ অবশ্যই পেয়েছি; ইয়া রাসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমি আর কখনোই এই কাজের পুনরাবৃত্তি করবো না অর্থাৎ যখনই আপনি আমাকে সম্মানিত আহবান মুবারক করবেন, আমি পবিত্র নামাযরত অবস্থায় থাকলেও আপনার সম্মানিত আহবান মুবারক-এ অবশ্যই সাড়া দিবো।” সুবহানাল্লাহ! )মুসনাদে আহমদ ২/৪১২, মুসনাদুছ ছাহাবাহ ফিল কুতুবিত তিস‘আহ ৬/১১১)
(চলবে)
-হাফিয মুহম্মদ ইমামুল হুদা।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ ব্যাপকভাবে পালনের ব্যাপারে আল্লামা হযরত মোল্লা আলী ক্বারী হানাফী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার প্রত্যাশা
০৬ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করার কারণে সর্বোচ্চ নৈকট্য মুবারক এবং বেমেছাল মহাসম্মানিত নিসবত মুবারক ও মর্যাদা মুবারক উনাদের বহিঃপ্রকাশ
০৬ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
এক নযরে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বৎসর ভিত্তিক মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় জিবনী মুবারক (১)
০৬ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত নাম মুবারক লেখার সময় পবিত্র দুরূদ শরীফ লেখার বেমেছাল ফযীলত মুবারক (২)
০৬ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ উপলক্ষে বিশিষ্ট বুযূর্গ আল্লামা হযরত ইমাম ইবনে জামা‘আহ্ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার আমল মুবারক এবং প্রত্যাশা
০৫ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ উনার সম্মানার্থে মহান আল্লাহ পাক উনার রহমত-বরকত প্রাধান্য বিস্তার করেন, শান্তি-নিরাপত্তা বিরাজমান থাকে এবং তাৎক্ষণিকভাবে মক্বছূদ হাছিল হয়
০৫ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি শুধু মহান আল্লাহ পাক তিনি নন; এছাড়া সমস্ত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনাদের মালিক হচ্ছেন তিনি (৫)
০৫ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত নাম মুবারক লেখার সময় পবিত্র দুরূদ শরীফ লেখার বেমেছাল ফযীলত মুবারক (১)
০৫ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ উনার সম্মানার্থে ছিদ্দীক্ব, শহীদ ও ছালেহ্ উনাদের সাথে হাশর-নশর
০৪ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ হচ্ছেন অত্যন্ত মর্যাদা সম্পন্ন আমল মুবারক, যা কখনও বৃথা যাবে না
০৪ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ হচ্ছেন অত্যন্ত মর্যাদা সম্পন্ন আমল মুবারক, যা কখনও বৃথা যাবে না
০৪ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ উনার সম্মানার্থে খাদ্যাভাব, মহামারী, অগ্নিকান্ড, ডুবে মরা এবং চুরি-ডাকাতি ইত্যাদি বালা-মুছীবত থেকে মুক্তি লাভ
০৪ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার)