পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
(আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ থেকে সংকলিত)
, ৯ই রজবুল হারাম শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ১৩ ছামিন, ১৩৯২ শামসী সন , ১০ জানুয়ারী, ২০২৫ খ্রি:, ২৫ পৌষ , ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) মহিলাদের পাতা
সন্তানের হক্ব যে কত, সন্তান যদি পিতা মাতার সহিত সদ্ব্যবহার করে, তবে মহান আল্লাহ পাক তিনি তার জাযা-খায়ের যে কতটুকু দান করেন, এ প্রসঙ্গে পবিত্র হাদীছ শরীফে উল্লেখ করা হয়-
عَنْ حَضْرَتْ أَبِى سَعِيدٍ الْخُدْرِىِّ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ: أَنَّ رَجُلاً هَاجَرَ إِلٰى رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنَ الْيَمَنِ فَقَالَ: هَلْ لَكَ أَحَدٌ بِالْيَمَنِ قَالَ: أَبَوَاىَ قَالَ أَذِنَا لَكَ قَالَ: لاَ قَالَ: ارْجِعْ إِلَيْهِمَا فَاسْتَأْذِنْهُمَا فَإِنْ أَذِنَا لَكَ فَجَاهِدْ وَإِلاَّ فَبِرَّهُمَا
অর্থ : হযরত আবু সাঈদ খুদরী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বর্ণনা করেন, এক ব্যক্তি ইয়েমেন থেকে হিজরত করে আসলেন আখেরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খতামুন নাবিয়্যীন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কাছে। আসার পর
فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: هَلْ لَكَ أَحَدٌ بِالْيَمَنِ
মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তাকে বললেন, ‘ইয়েমেনে কি আপনার জন্য কেউ রয়েছেন? অর্থাৎ আপনি যে হিজরত করে আসলেন, সেখানে আপনার কে রয়েছেন?
قَالَ: أَبَوَاىَ
তিনি বললেন, ‘আমার পিতা-মাতা সেখানে রয়েছেন। ’ যখন সে ব্যক্তি এ কথা বললেন, তখন মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খতামুন নাবিয়্যীন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন-
قَالَ أَذِنَا لَكَ
‘আপনার কি অনুমতি রয়েছে? আপনার কি অনুমতি রয়েছে আপনার পিতা-মাতার তরফ থেকে?’
قَالَ: لاَ قَالَ: اِرْجِعْ إِلَيْهِمَا فَاسْتَأْذِنْهُمَا فَإِنْ أَذِنَا لَكَ فَجَاهِدْ وَإِلاَّ فَبِرَّهُمَا
সে ব্যক্তি বললেন, ‘আমার মাতা-পিতার তো অনুমতি আমি নেইনি। ’ তাহলে অনুমতি যদি না নিয়ে থাকেন, আপনি ফিরে যান-
اِرْجِعْ إِلَيْهِمَا فَاسْتَأْذِنْهُمَا فَإِنْ أَذِنَا لَكَ فَجَاهِدْ وَإِلاَّ فَبِرَّهُمَا
আপনি ফিরে যান পিতা-মাতার কাছে। যদি উনারা আপনাকে অনুমতি দেন তাহলে আপনি জিহাদে আসবেন, হিজরত করবেন অন্যথায় আপনি আপনার পিতা-মাতার সহিত সদ্ব্যবহার করুন, তাতে মহান আল্লাহ পাক তিনি আপনাকে জাযা-খায়ের দান করবেন। ‘যেহেতু সে ব্যক্তি ছাড়া উনার পিতা-মাতার খেদমত করার মত আর কোন লোক ছিলেন না। ’ আপনার অনুপস্থিতিতে আপনার পিতা-মাতা সদ্ব্যবহার পাওয়ার মতো অর্থাৎ খেদমত পাওয়ার মতো আর কোন লোক নেই। কাজেই আপনি হিজরত না করে, এখানে না এসে, আপনি আপনার পিতা-মাতার খিদমতে চলে যান। সেখানে মহান আল্লাহ পাক তিনি আপনাকে জাযা-খায়ের দান করবেন। ’
কাজেই প্রত্যেক সন্তানের দায়িত্ব তার পিতা-মাতার প্রতি সদ্ব্যবহার করা। যেটা ইহ্সান সেটা তাকে অবশ্যই করতে হবে। যতটুকু তার দায়িত্ব রয়েছে ঠিক ততটুকু সে করবে। যদি কেউ তার পিতা-মাতার সহিত সদ্ব্যবহার না করে; তার জন্য কঠিন শাস্তি, কঠিন পরিণতিও রয়েছে।
যেটা হাদীছ শরীফে রয়েছে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন-
رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنْ حَضْرَتْ أَبِى بَكْرَةَ
অর্থ : আবু বাকরাহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বর্ণনা করেন, উনার থেকে দু’টা হাদীছ শরীফ রেওয়ায়েত রয়েছে। একটা বায়হাক্বী শরীফে, একটা মুসতাদরেকে হাকেমের মধ্যে। দু’টার মধ্যে কিছু ব্যতিক্রম রয়েছে। সেটা হচ্ছে যে, ‘মহান আল্লাহ পাক তিনি ঐ সমস্ত সন্তানদেরকে অর্থাৎ যারা পিতা-মাতার সহিত সদ্ব্যবহার করেনা, তাদের সহিত অসদাচরণ করার কারণে, পিতা-মাতার সহিত খারাপ ব্যবহার করার কারণে বা পিতা-মাতাকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করার কারণে অথবা খাওয়া-পরার জরুরত থাকলে, খাওয়া-পরা না দেয়ার কারণে তাদেরকে যে শাস্তি দিবেন সে শাস্তিটা কিছু তার জমিনে হবে অর্থাৎ কিছু তার দুনিয়াতে বা হায়াতে হবে আর কিছুটা তার পরকালে হবে।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
মহান আল্লাহ পাক তিনি তওবাকারীকে পছন্দ করেন (২)
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ক্বলবী যিকির জারী না থাকলে শয়তানের ওয়াসওয়াসা থেকে বেঁচে থাকা সম্ভব নয়
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
দোযখে বেপর্দা হওয়া নারীদের শাস্তির বর্ণনা (৯)
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
জামায়াতের জন্য মহিলাদের মসজিদে ও ঈদগাহে যাওয়া হারাম ও কুফরী (৩)
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্বোধন মুবারক করার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ আদব-শরাফত বজায় রাখতে হবে
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথেই হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের বিষয় উল্লেখ থাকা উচিত
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক ছেড়ে দেয়া মানেই পথভ্রষ্ট হওয়া। নাউযুবিল্লাহ!
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
খছম বা ঝগড়া কু-স্বভাবটি পরিহার করা অপরিহার্য কর্তব্য
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
যে ৪ শ্রেণীর লোকদের জন্য ক্বিয়ামতের দিন সুপারিশ ওয়াজিব হবে
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মুসলমান পুরুষ ও মহিলা সকলের জন্যই ফরযে আইন হচ্ছে- যথাযথভাবে ৫ ওয়াক্ত নামায তারতীব অনুযায়ী যথাসময়ে আদায় করে নেয়া
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা বেমেছাল ফযীলত মুবারকের অধিকারী
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)












