প্রসঙ্গ : পারিবারিক বন্ধন ধ্বংস, পর্নোগ্রাফির রাজত্ব এবং ইসলামী মূল্যবোধের গুরুত্ব।
, ০৯ শাওওয়াল শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ২০ হাদী আশার, ১৩৯১ শামসী সন , ১৯ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রি:, ০৬ বৈশাখ, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) সম্পাদকীয়
![প্রসঙ্গ : পারিবারিক বন্ধন ধ্বংস, পর্নোগ্রাফির রাজত্ব এবং ইসলামী মূল্যবোধের গুরুত্ব।](https://www.al-ihsan.net/uploads/1713465471_Editor.jpg)
সব প্রশংসা মুবারক খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য; যিনি সকল সার্বভৌম ক্ষমতার মালিক। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নবী আলাইহিমুস সালাম উনাদের নবী, রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি অফুরন্ত দুরূদ শরীফ ও সালাম মুবারক।
এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, শুধু রাজধানীতে প্রতিবছর প্রায় লাখখানেক তালাক হচ্ছে। অর্থাৎ প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৩০০ সংসার ভাঙছে। নাঊযুবিল্লাহ!
অপরদিকে সরাসরি তালাক না হলেও অপসংস্কৃতির বেড়াজালে তথা অনলাইন অশ্লীলতার প্রভাবে স্বামী-স্ত্রী-সন্তানদের মধ্যকার বন্ধন দিন দিন ভঙ্গুর ও ঠুনকো হচ্ছে। পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ তথা আদব তমিজ-শরাফত সব বিলুপ্ত হচ্ছে। ফলত দৃশ্যতঃ না হলেও সত্যিকার অর্থে পারিবারিক বন্ধন ভেঙ্গে যাচ্ছে প্রায় স্রোতের মতো।
কিন্তু তারপরেও এ বিষয়গুলো পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার আলোকে আলোচিত হচ্ছে না। হচ্ছে ‘পারিবারিক বন্ধন ভঙ্গ’, ‘মূল্যবোধের অবক্ষয়’, সামাজিক ভারসাম্য নষ্ট ইত্যাদি শিরোনামে। ধর্মনিরপেক্ষ স্টাইলে আলোচনা যা হচ্ছে, তাতে সমাধানের কিছুই নেই। মূলত সমাধান পেতে হলে হাক্বীক্বতে পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার খুব কাছাকাছি যেতে হবে- এক কথায় এসব সমস্যার ক্ষেত্রে পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে বর্ণিত পর্দা প্রচলনের কথা বললে সব সমাধানই এসে যায়।
কিন্তু এখন ধর্মনিরপেক্ষতা শব্দ দিয়েও ঠেক দেয়া যাচ্ছে না। প্রিন্ট মিডিয়া, ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায়, ছাপার বক্তব্যে অথবা টকশোতে জোরালোভাবেই আলোচনা এসেছে মাদক, এনার্জি ড্রিংক, পর্নো- এগুলো নিয়ে জনতার একটা বড় অংশ শুধু বেসামাল নয়, উন্মাতাল হয়ে উঠছে। শিশু-কিশোররাও ডিজে-পার্টিতে যোগদান করছে। রাজধানীর ইস্টার্ন প্লাজা, ইস্টার্ন প্লাসসহ শুধু সব বড় মার্কেটই নয়, রাজধানীর অলি-গলিতেও পর্নো সিডি হাজারো নামে বিক্রি হচ্ছে। স্কুলের কোমলমতি কিশোররা ৩০/৪০ টাকায় পেনড্রাইভে ডাউনলোড করে নিয়ে যাচ্ছে। প্রাপ্ত সংবাদে জানা গেছে, সাম্রাজ্যবাদী ও ইহুদীদের কুটকৌশলে এখন মা-ছেলে, বাবা-মেয়ে, ভাই-বোন, খালা-ভাগ্নে, মামা-ভাগ্নি শিরোনামেও পশ্বাধম পর্নোগ্রাফি দেদারছে চলছে। নাঊযুবিল্লাহ! নাঊযুবিল্লাহ! নাঊযুবিল্লাহ!
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মুতাবেক যে পিতা-মাতার দিকে সম্মানের দৃষ্টিতে তাকালে প্রতি নজরে মক্ববুল হজ্জের সাওয়াব পাওয়া যায় সে পিতা-মাতা এবং ছেলে-মেয়ে এখন পরস্পরের প্রতি বদ নজরে তাকাচ্ছে। নাঊযুবিল্লাহ! নাঊযুবিল্লাহ! নাঊযুবিল্লাহ!
বিভিন্ন জেলা-উপজেলা এমনকি গ্রাম-গঞ্জের শিশু, কিশোরদের মধ্যেও ভয়াবহ আকারে ছড়িয়ে পড়ছে পর্নো আগ্রাসন। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা হুমড়ি খেয়ে পড়ছে ভিডিও দোকানে এসব ডাউনলোড করার জন্য। এমনকি পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থীর মোবাইলেও পর্নোগ্রাফি ধরা পড়ার খবর বেরিয়েছে। জেলা-উপজেলা এবং গ্রাম-গঞ্জের হাট-বাজারে ১০ টাকায় মিলছে মোবাইল ভর্তি পর্নোগ্রাফি। অলিগলিতে নির্জনে বসে বসে ক্লাস ফাঁকি দিয়ে শিক্ষার্থীরা দেখছে এসব ভিডিও।
গবেষণায় দেখা গেছে, সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন এবং ইন্টারনেট ট্যাগিংয়ের কারণে ৭৭ শতাংশ শিশু কিশোরদের ইন্টারনেট ব্যবহারের সময় ইনডেক্স করা ৪৫০ মিলিয়ন পর্নোসাইটের পেজগুলো সাজেশন্স হিসেবে চলে আসছে। অর্থাৎ সাধারণ উদ্দেশ্যে তারা ইন্টারনেট ব্যবহার করলেও এসব চরম অশ্লীল ছবি তথা পর্নোসাইটের বিজ্ঞাপন চলে আসছে বা দৃশ্যমান হচ্ছে। এতে শিশু-কিশোররা কৌতুহলবশত সেসব বিজ্ঞাপনে ক্লিক করছে। আর ক্লিক করলেই তারা প্রবেশ করছে পর্নোগ্রাফির অবাধ রাজ্যে। আর এর ফলে শিশু-কিশোরদের মন অভ্যস্ত হচ্ছে পর্নোগ্রাফি নামক ভয়াল মানসিক বিকারের সাথে।
ফলে বিপর্যস্ত ও বিধ্বস্ত হচ্ছে পারিবারিক বন্ধন। ইউরোপ-আমেরিকায় যা চলতো বা চলে পর্নোগ্রাফির কারণে এখন বাংলাদেশেই তা হচ্ছে। এবং দিন দিন তা জঘন্যভাবে বিস্তার লাভ করছে। অর্থাৎ ইহুদীবাদী ষড়যন্ত্রে দ্বিতীয় বৃহত্তম মুসলিম দেশ বাংলাদেশ এখন ফ্রি সেক্সের দেশ হতে যাচ্ছে। নাঊযুবিল্লাহ! নাঊযুবিল্লাহ! নাঊযুবিল্লাহ!
অথচ তথাকথিত ইসলামপন্থীরা এই মহানিকৃষ্ট নীরব মহামারি সম্পর্কে কেউই মুখ খুলছে না। প্রতিবাদ করছে না। পরিবার সন্তান উচ্ছন্নে যাচ্ছে তা একবারও ফিকির করছে না।
বলার অপেক্ষা রাখেনা, এসব পশ্বাধম নিকৃষ্ট বিষয় থেকে আমাদের সন্তানদের সুরক্ষার জন্য, সমাজ এবং রাষ্ট্রের সুনির্দিষ্ট দায়িত্ব রয়েছে। এক্ষেত্রে রাষ্ট্রের দায়িত্বই মৌলিক ভূমিকা হিসেবে কাজ করবে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পর্নোগ্রাফির সাথে সম্পর্কিত ২০০ শব্দের উপর সংবরণ দেয়া আছে। কেউ ওই শব্দগুলো লিখে সার্চ দিলে সার্ভারে নোটিফিকেশন যায়। অনুমোদন ছাড়া ওইসব সাইটে ঢোকা যায় না। বিশ্বের অন্যন্য দেশের দিকে তাকালে দেখতে পাই, চীনে পর্নোগ্রাফি ব্যবস্থাপনা রয়েছে, সিঙ্গাপুরে নিজস্ব নীতিমালা রয়েছে, মালয়েশিয়ায় সমাজোপযোগী ফিল্টারিং ব্যবস্থা, সউদী আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের আরব মুসলিম সমাজে নেতিবাচক সাইট ব্যবহার কঠোরভাবে নিষিদ্ধ এবং ইন্টারনেটভিত্তিক সংশ্লিষ্ট ওয়েবসাইটসমূহ প্রবেশের অগ্রহণযোগ্য। আধুনিক তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহারে বাংলাদেশ এগিয়ে থাকলেও নেতিবাচক সাইটগুলোকে সরকার কেন ফিল্টারিং করছে না- সে প্রশ্ন অত্যন্ত গুরুতর।
প্রসঙ্গত, সরকার দাবি করে থাকে, বাংলাদেশ খুব শীঘ্রই আন্তর্জাতিক খাতগুলোতে অন্যান্য দেশগুলোর নেতৃত্ব প্রদান করবে। যা কোনোক্রমেই দেশের সুঠাম ও সবল ও সক্ষম এবং সুস্থ মস্তিষ্কের যুবশক্তি ছাড়া সম্ভব নয়। তাই সরকারকে অবশ্যই দেশে পর্নোগ্রাফি দূরীকরণ করতে মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে এবং তার ত্বরিৎ বাস্তবায়ন করতে হবে। ইন্টারনেট ব্যবহারে শৃঙ্খলা আনতে সরকারকে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। বিশেষ করে কামোদ্দীপক ও সংবেদনশীলতা সৃষ্টিকারী পর্নো বই, সিডি, ভিডিও তৈরি ও প্রচার কিংবা ডাউনলোড করে যারা সরবরাহ করছে তাদেরকে অনুসন্ধান করে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি তথা মৃত্যুদন্ডের শাস্তি নির্ধারণ ও প্রদান করতে হবে।
তার পাশাপাশি সবাইকে হযরত আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের সম্মানিত জীবনী এবং আদর্শ মুবারক সম্পর্কে অবহিত করতে হবে। খাছ করে যামানার ইমাম সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার এবং উনার হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের ছোহবত মুবারক ইখতিয়ারের জন্য রাষ্ট্রীয়ভাবে নির্দেশ দিতে হবে এবং সার্বিক পৃষ্ঠপোষকতা করতে হবে।
মূলত, এসব অনুভূতি ও দায়িত্ববোধ আসে পবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ অনন্তকালব্যাপী পালন করার ইলম ও জজবা থেকে। আর তার জন্য চাই নেক ছোহবত অর্থাৎ মুবারক ফয়েয-তাওয়াজ্জুহ।
ছহিবে সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ মুর্র্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার নেক ছোহবত মুবারক-এ কেবলমাত্র তা লাভ করা সম্ভব। খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে তা নছীব করুন। আমীন!
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
পাঁচ হাজার পৃষ্ঠার বিশাল নথিতে ২ লাখ ৫৭ হাজার একর বনভূমি দখলদার ১ লাখ ৬০ হাজার নাম এসেছে শুধু নাম সর্বস্ব না করে বনভূমি উদ্ধারের বাস্তব নজীর চাই
২৭ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
কৃষি যান্ত্রিকীকরণের মাধ্যমে আরো সোনালী সমৃদ্ধি সম্ভব ইনশাআল্লাহ
২৭ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
প্রসঙ্গ : পারিবারিক বন্ধন ধ্বংস, পর্নোগ্রাফির রাজত্ব এবং ইসলামী মূল্যবোধের গুরুত্ব।
২৬ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
প্রসঙ্গ : পারিবারিক বন্ধন ধ্বংস, পর্নোগ্রাফির রাজত্ব এবং ইসলামী মূল্যবোধের গুরুত্ব।
২৬ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
প্রসঙ্গ : পারিবারিক বন্ধন ধ্বংস, পর্নোগ্রাফির রাজত্ব এবং ইসলামী মূল্যবোধের গুরুত্ব।
২৬ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
প্রসঙ্গ : পারিবারিক বন্ধন ধ্বংস, পর্নোগ্রাফির রাজত্ব এবং ইসলামী মূল্যবোধের গুরুত্ব।
২৬ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
প্রসঙ্গ : পারিবারিক বন্ধন ধ্বংস, পর্নোগ্রাফির রাজত্ব এবং ইসলামী মূল্যবোধের গুরুত্ব।
২৬ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
প্রসঙ্গ : পারিবারিক বন্ধন ধ্বংস, পর্নোগ্রাফির রাজত্ব এবং ইসলামী মূল্যবোধের গুরুত্ব।
২৬ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
কারফিউতে দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতিতে আরো আগুন। ধারদেনায় চলছে শ্রমজীবী মানুষ। তাদের প্রতি দায়িত্ব পালন করবে কে? সরকারকেই সবকিছু নিশ্চিত করতে হবে ইনশাআল্লাহ
২৬ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
দেশের উদ্যোক্তারা ব্যাংক ঋণসহ বহুবিধ সমস্যায় জর্জরিত সরকারের উচিত- উদ্যোক্তাদের উন্নয়নে সার্বিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
২৫ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
অপুষ্টির কারণে প্রতিবছর বাংলাদেশের আর্থিক ক্ষতি প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা; দেশের ৫০ ভাগ শিশুমৃত্যুর কারণ অপুষ্টি; অপুষ্টিতে শিশুদের মধ্যে ব্যাপকভাবে বাড়ছে স্থুলতা। দেশের জনগণের প্রতি রাষ্ট্রযন্ত্রের কি কোনই দায়বদ্ধতা নেই?
২৫ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সিবতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল খমিস, সাইয়্যিদুশ শুহাদা, শহীদে কারবালা, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র শাহাদাতী শান মুবারক প্রকাশ দিবস। ঐতিহাসিক পবিত্র আশূরা মিনাল মুহররমুল হারাম শরীফ।
১৭ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)