ফানা ফির রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বেমেছাল দৃষ্টান্ত মুবারক (১)
, ৩ রা জুমাদাল ঊখরা শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ০৮ সাবি’, ১৩৯২ শামসী সন , ০৬ ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রি:, ২১ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ
সাইয়্যিদুনা হযরত বিলাল রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি যখন সম্মানিত দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করেন, তখন তিনি স্বাধীন ছিলেন না। উনাকে কাট্টা কাফির উমাইয়া বিন খালফ যে কঠিন যুলুম-নির্যাতন করেছে, তা বর্ণনার দ্বারা প্রকাশ করা কস্মিনকালেও সম্ভব নয়। মরুভূমির টগবগে ফুটন্ত বালির উপরে খালি গায়ে শোয়ায়ে উনার বুকের উপর অনেক ওযনের বিশালাকারের পাথর চাপা দিয়ে মহান আল্লাহ পাক উনাকে এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে অর্থাৎ উনাদেরকে এবং সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনাকে অস্বীকার করার জন্য ব্যর্থ চেষ্টা করা হতো। উনার জিসিম মুবারক-এ ফোসকা পড়ে যেত; এমনকি কোথাও কোথাও বড় ধরনের গর্ত হয়ে যেত। সাইয়্যিদুনা হযরত বিলাল রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি ব্যাথার কারণে ছটফট করতেন। তারপরেও তিনি বিন্দুমাত্র বিচলিত হতেন না। সর্বদা উনার যবান মুবারক দিয়ে আপনা আপনিই, অনায়াসে উচ্চারিত হতেন ‘আহাদ, আহাদ, আহাদ অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক তিনি একক, মহান আল্লাহ পাক তিনি একক, মহান আল্লাহ পাক তিনি একক’। সুবহানাল্লাহ! কি অপূর্ব ফানা ও বাক্বা! সুবহানাল্লাহ!
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশের পর সাইয়্যিদুনা হযরত বিলাল রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার অলিগলিতে একথা বলে বেড়াতেন যে, ‘ভাইগণ! আপনারা কি কোথাও নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে দেখতে পেয়েছেন? আমাকেও একটু দেখান না!’ এরপর তিনি বলেন, ‘নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যেহেতু দুনিয়ার যমীনে এখন আর নেই, তাই আমার পক্ষে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার মধ্যে অবস্থান করা সম্ভব নয়। ’ তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনাকে উদ্দেশ্য করে বলেন,
اني لا أريد المدينة بدون رسول الله صلى الله عليه وسلم وأتحمل مقام رسول الله صلى الله عليه وسلم خاليا عنه
অর্থ: “নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ব্যতীত আমি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার মধ্যে থাকতে চাচ্ছি না অর্থাৎ আমার পক্ষে থাকা সম্ভব হচ্ছে না এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র অবস্থান স্থল মুবারক উনার থেকে খালি এটা দেখে আমি বরদাশত করতে পারছি না। ” (আল কাওয়াকিবুদ দুরারী ফী শরহি ছহীহিল বুখারী ১৫/২৪, মিনহাতুল বারী বি শরহি ছহীহিল বুখারী ৭/৮০, উমদাতুল ক্বারী ২৪/৩৯৩, আল লামিউছ ছবীহ্ ১০/৩২৬ ইত্যাদি)
কাজেই আমার পক্ষে এখানে অবস্থান করা সম্ভব হচ্ছে না। এটা বলে তিনি সিরিয়ার ‘হালব’ নামক শহরে চলে গেলেন। সেখানে অবস্থান মুবারক করতে থাকেন। সেখান অবস্থান মুবারক করা অবস্থায় একবার তিনি স্বপ্ন মুবারক-এ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বিশেষ যিয়ারত মুবারক লাভ করলেন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনাকে উদ্দেশ্য করে ইরশাদ মুবারক করলেন,
مَا هَذِهِ الْجَفْوَةُ يَا حضرت بِلالُ رضى الله تعالى عنه أَما أَن لَكَ أَنْ تَزُورَنَا
‘হে হযরত বিলাল রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু! এটা কেমন কঠোরতা? (সাক্ষাত করা তো ছেড়ে দিলেন। ) আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র যিয়ারত মুবারক করার সময় কি আপনার এখনো আসেনি?’ (সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ, মিরআতুয যামান, সীরাতে হালাবিয়্যাহ্ ইত্যাদি)
সাথে সাথেই সাইয়্যিদুনা হযরত বিলাল রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি বলে উঠলেন-
لَبَّيْكَ يَا سَيِّدِىْ يَا رَسُولَ الله صلى الله عليه وسلم
‘ইয়া সাইয়্যিদী! ইয়া রাসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমি হাযির, উপস্থিত। ’ সুবহানাল্লাহ!
অতঃপর তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিলেন। মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার মধ্যে যখন প্রবেশ করলেন, তখন সর্বপ্রথম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদে নববী শরীফ উনার মধ্যে পৌঁছেই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে খুঁজতে লাগলেন। একবার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদে নববী শরীফ উনার মধ্যে দেখেন আবার খুঁজতে যান মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হুজরা শরীফ উনার মধ্যে। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে কোথাও না পেয়ে পরিশেষে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রওযা শরীফ উনার উপর মাথা মুবারক রেখে কান্না মুবারক শুরু করে দিলেন, আর আরযী পেশ করলেন- ‘ইয়া রাসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি আমাকে বলেছিলেন, ‘এসে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র যিয়ারত মুবারক করে যাওয়ার জন্য। ’ আমি ‘হালব’ থেকে শুধুমাত্র আপনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র যিয়ারত মুবারক করার প্রত্যাশায় এসেছি। ’ এ কথা বলেই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রওযা শরীফ উনার পাশে অচেতন হয়ে যান। সুবহানাল্লাহ!
-মুহাদ্দিছ মুহম্মদ আমীন।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সাইয়্যিদুল খুলাফা, আবুল খুলাফা, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিস সালাম তিনি সারা পৃথিবীতে, সারা কায়িনাতে সম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ্ মুবারক প্রতিষ্ঠা করবেনই করবেন ইনশাআল্লাহ
১৩ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পক্ষ থেকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করার বিষয়ে উদ্বুদ্ধকরণ এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নির্দেশ মুবারক প্রদান
১৩ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খতামুন্ নাবিয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিশেষ বুলন্দী শান মুবারক
১৩ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
ছাহিবে কা’বা কাওসাইনে আও আদনা, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আযিমুশ শান মি’রাজ শরীফ উনার বর্ণনা মুবারক (৩)
১৩ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মালিকুত তামাম, ক্বাসিমুন নিআম, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল ফাতহ মুবারক উনার বরকত ও ফযীলত (৪)
১৩ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে ফানা সারা কায়িনাত
১২ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুত তাসি’ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ই’জায শরীফ
১১ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে সিবতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, জান্নাতী ইমাম, সাইয়্যিদুল উমাম সাইয়্যিদুনা হযরত শাহনাওয়াসা আর রবি’ আলাইহিস সালাম উনার বেমেছাল শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক
১১ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
এক নযরে সিবতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আছ ছানী আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র পরিচিতি মুবারক
১১ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুল খুলাফা, আবুল খুলাফা, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিস সালাম তিনি সারা পৃথিবীতে, সারা কায়িনাতে সম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ্ মুবারক প্রতিষ্ঠা করবেনই করবেন ইনশাআল্লাহ
১০ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে ফানা সারা কায়িনাত
১০ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার মহাসম্মানিত হাবীব মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে কোনো স্থানেই সরাসরি বরকতময় ইসিম বা নাম মুবারক দ্বারা সম্বোধন মুবারক করেননি।
১০ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার)