মন্তব্য কলাম
বাজারে নতুন আলু উঠলেও দাম চড়া, কেজিতে ২০০ টাকা পুরোনো আলু নিয়ে বিপাকে ব্যবসায়ীরা আলু প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পের উদ্যোগ জরুরি আলু রফতানীতে কমপক্ষে লাখো কোটি টাকা আয় সম্ভব আলুর জাতের মান বৃদ্ধি এবং হিমাগার স্থাপনসহ রফতানীর ক্ষেত্রে সব বাধা দূর করে সরকারকে যথাযথ পৃষ্ঠপোষকতা করতে হবে।
, ২২ জুমাদাল ঊখরা শরীফ, ১৪৪৭ হিজরী সন, ১৫ সাবি’, ১৩৯৩ শামসী সন , ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রি:, ২৯ অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) মন্তব্য কলাম
বাজারে আগাম জাতের নতুন আলু উঠতে শুরু করেছে। তবে এসব আলু বিক্রি হচ্ছে চড়া দামে। প্রতি কেজি নতুন আলু খুচরা বাজারে মিলছে ২০০ টাকা দরে। যা দুইদিন আগেও ছিল ১৫০-১৬০ টাকা।
রংপুরের গঙ্গাচড়ায় আগাম জাতের নতুন আলু তোলা শুরু হয়েছে। মৌসুমের শুরুতেই পাইকাররা ক্ষেত থেকে প্রকারভেদে কেজিপ্রতি ৪৯ থেকে ৫২ টাকা দরে আলু কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। চাহিদা ভালো হলেও কৃষকদের দাবি গতবারের তুলনায় এবার দাম কম, ফলে লাভের পরিমাণও খুব বেশি হবে না।
কৃষকরা জানান, গত বছর একই সময় পাইকারি বাজারে নতুন আলুর দাম ছিল ৭৫ থেকে ৮৫ টাকা কেজি।
নতুন আলু বাজারে, পুরোনো আলু নিয়ে বিপাকে ব্যবসায়ীরা
পুরোনো আলুর দাম হিমাগার পর্যায়ে আরেক দফা কমে গেছে। ফলে হিমাগারে আলু রেখে বড় ধরনের লোকসানে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত ২০-২৫ দিনে পুরোনো আলুর দাম কেজিতে আট টাকা কমে গেছে। তাদের মতে, ‘নতুন আলু যেন পুরোনো আলুর কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দিল। ’
চাহিদার তুলনায় ২২ লাখ মেট্রিক টনেরও বেশি আলুর উৎপাদন হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। আর দেরিতে বাজারে আসায় পুরনো আলু আরো কিছুদিন হিমাগারে রাখার অনুরোধ করেছেন তিনি।
গত পরশু শুক্রবার সকালে রাজধানীর একটি কনভেনশন হলে আয়োজিত আলু উৎসবে উপদেষ্টা জানান, দেশে চলতি বছর রেকর্ড পরিমাণ আলু উৎপাদিত হয়েছে। দেশে রেকর্ড পরিমাণ এক কোটি বারো লক্ষ মেট্রিক টন আলু উৎপাদিত হয়েছে। যা চাহিদার তুলনায় প্রায় ২২ লক্ষ মেট্রিক টন বেশি।
প্রতি কেজি আলু উৎপাদন করে হিমাগার পর্যন্ত আনতে সব মিলিয়ে ২০ থেকে ২৫ টাকা খরচ হলেও তা আট থেকে ১৬ টাকা দরে বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছে কৃষক।
এবার নতুন আলু পুরোদমে বাজারে আসতে আরও ১৫ দিন সময় লাগবে বলে মনে করেন কৃষি উপদেষ্টা। আপনারা জানেন এ বছর কিন্তু আলুর উৎপাদন অনেক বেশি হওয়ায় কৃষকরা কিন্তু এটার দাম পায়নি। এখন পর্যন্ত অনেক আলু রয়ে গেছে। আমি আরো অনুরোধ করছি ডিসেম্বর পর্যন্ত যেন আমাদের এই কোল্ড স্টোর মালিক অ্যাসোসিয়েশনদের যে তারা যেন কোল্ড স্টোরটা ডিসেম্বর পর্যন্ত, একত্রিশশে ডিসেম্বর পর্যন্ত খোলা রাখে।
তিনি অভিযোগ করেন, বিশ্বের সপ্তম এবং এশিয়ার তৃতীয় আলু উৎপাদনকারী দেশ হওয়া সত্ত্বেও বাংলাদেশে পরিকল্পিতভাবে আলুর চাষ হচ্ছে না। দুই পার্সেন্ট ফুড আলু প্রসেসিং এর মাধ্যমে উৎপাদিত হয়। অথচ দেশ, দেশে অন্যান্য দেশে এর পরিমাণ প্রায় সাত পার্সেন্ট।
বাংলাদেশ কোল্ডস্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশনের (বিসিএসএ) তথ্য বলছে, দেশের ৩৪০ হিমাগারে এখনও প্রায় ১৭ লাখ টন আলু অবিক্রীত অবস্থায় পড়ে আছে। বর্তমানে হিমাগারে আলুর দাম কেজিপ্রতি ৯ থেকে ১১ টাকা- যা উৎপাদন খরচেরও নিচে। কৃষকদের অভিযোগ, সরকার ২২ টাকা ন্যূনতম দাম ঘোষণার পর উল্টো দাম আরও কমে গেছে।
সাধারণত নভেম্বরের মাঝামাঝি সময় থেকে বাজারে নতুন আলু আসতে শুরু করে। আর হিমাগার থেকে ৩০ নভেম্বরের মধ্যে সব পুরোনো আলু বের করে দেওয়া হয়। এরপর হিমাগারের রক্ষণাবেক্ষণ কাজ শেষ করে ফেব্রুয়ারির শেষ দিক থেকে নতুন মৌসুমের আলু সংরক্ষণ শুরু হয়। কিন্তু এ বছর আলুর দাম কম থাকায় কৃষকেরা খুবই কম পরিমাণে আলু হিমাগার থেকে বের করছেন। অনেকে হিমাগারে যাওয়াও বন্ধ করে দিয়েছেন। তাতে নভেম্বরের মধ্যে সব আলু হিমাগার থেকে খালাস না হওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
জানা গেছে, হিমাগারে যারা আলু রেখেছেন, তাদের অনেকের পুঁজি ইতিমধ্যে শেষ হয়ে গেছে। ৩০ নভেম্বরের মধ্যে তারা আলু খালাস না করলে চুক্তি অনুসারে এসব আলু হিমাগারের মালিকেরা বিক্রি করে হিমাগারের খরচ তুলবেন। কিন্তু বাজারে আলুর দাম তো কম। ফলে সব আলু বিক্রি করেও হিমাগারের ভাড়া তোলা যাবে কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। সব মিলিয়ে আলুচাষি, ব্যবসায়ী ও হিমাগারের মালিক-সব পক্ষেরই লোকসানের শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
সরকার ঘোষিত ন্যূনতম দাম কার্যকর না হওয়া ও সময়মতো হস্তক্ষেপ না করায় কৃষকরা বড় ক্ষতির মুখে পড়েছেন। যদি সরকার সময়মতো উৎপাদনের অন্তত ১০ শতাংশ অর্থাৎ ১২ থেকে ১৫ লাখ টন-আলু নির্দিষ্ট দামে সংগ্রহ করত, তাহলে বাজার স্থিতিশীল থাকত। কিন্তু মাত্র ৫০ হাজার টন কেনার সিদ্ধান্ত কোনো প্রভাব ফেলেনি। বাজার স্থিতিশীল রাখতে রপ্তানি বাজার সম্প্রসারণ ও ঘোষিত ন্যূনতম দাম বাস্তবায়ন দরকার।
কৃষকরা বাধ্য হচ্ছেন বীজ আলুও খাবার আলু হিসেবে বিক্রি করতে, যা আগামী মৌসুমে উৎপাদন কমিয়ে দেবে এবং ভবিষ্যতে বাজারে ঘাটতি সৃষ্টি করবে। ফলে দেশের খাদ্য নিরাপত্তাও হুমকির মুখে পড়বে। বলার অপেক্ষা রাখে না, কৃষি খাতের প্রতি রাষ্ট্রের দায়বদ্ধতা কেবল মৌখিক আশ্বাসে সীমাবদ্ধ থাকলে দেশের গ্রামীণ অর্থনীতি ধসে পড়বে।
উৎপাদনের উৎসাহ হারিয়ে ফেলবে কৃষক, যার ফল ভোগ করবে গোটা দেশ।
এখন শুধু সংরক্ষণ নয়, আলুর বহুমুখী ব্যবহার ও শিল্পায়নের দিকেও নজর দিতে হবে। আমাদের দেশে কোল্ডস্টোরেজগুলো এখনও কেবল সংরক্ষণের কাজেই সীমাবদ্ধ, কিন্তু আলু থেকে তৈরি করা যায় নানা প্রক্রিয়াজাত পণ্য- চিপস, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, আলুর গুঁড়া, আলুভিত্তিক স্ন্যাকস এবং স্টার্চ, যা শিল্প খাতে মূল্যবান কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত হয়। টেক্সটাইল, ওষুধ, কাগজ ও আঠাশিল্পে আলুর স্টার্চের চাহিদা বিশ্বজুড়ে দ্রুত বাড়ছে। সরকার ও বেসরকারি খাত যৌথভাবে যদি এই শিল্পে বিনিয়োগ করে, তাহলে কৃষকরা নতুন বাজার ও মূল্য সংযোজনের সুযোগ পাবেন।
তবে প্রক্রিয়াজাত বা রপ্তানিযোগ্য আলু উৎপাদনের জন্য মান ও সাইজের দিকেও নজর দিতে হবে। আমাদের দেশের আলু আন্তর্জাতিক বাজারে অনেক সময় গ্রহণযোগ্য হয় না- মূলত আকার, মান ও সংরক্ষণ প্রযুক্তির সীমাবদ্ধতার কারণে। আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী নির্দিষ্ট সাইজ, আর্দ্রতা, রঙ ও রোগমুক্ত আলুই রপ্তানির উপযুক্ত। এই মান রক্ষা করতে হলে কৃষককে বীজের গুণগত মান, সার ও কীটনাশকের সঠিক ব্যবহার এবং সংগ্রহ-পরবর্তী সংরক্ষণ পদ্ধতি সম্পর্কে প্রশিক্ষণ দিতে হবে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর সমন্বিত উদ্যোগে আলুর মান উন্নয়নে এখনই বিশেষ কর্মসূচি নেওয়া প্রয়োজন। বিশ্ববাজারে আলুর রপ্তানির সম্ভাবনা অনেক। ভারত, নেদারল্যান্ডস, চীন ও পোল্যান্ডের মতো দেশগুলো বছরে বিপুল পরিমাণ আলু ও আলুভিত্তিক পণ্য রপ্তানি করে। তাই দেশের আলুর যদি মানোন্নয়নের মাধ্যমে রপ্তানিযোগ্য করা যায়, তাহলে কৃষক লাভবান হবেন, বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন বাড়বে এবং দেশের কৃষি অর্থনীতি নতুন দিগন্তে প্রবেশ করবে।
পৃথিবীর অনেক দেশেই আলু প্রধান খাদ্য হিসেবে ব্যবহার হয়। আমাদের দেশে ভাতের বিকল্প হিসেবে আলু খেতে বলা হলেও তা খুব একটা জনপ্রিয়তা পায় না।
বিভিন্ন গবেষণা বিশ্লেষণে দেখা গেছে, বাংলাদেশে আলু উৎপাদনে নীরব বিপ্লব ঘটেছে। উৎপাদন বেড়েছে ২৬ গুণ। মাথাপিছু আলু খাওয়ার পরিমাণ বেড়েছে ১০ গুণ। বাংলাদেশের মানুষ বছরে মাথাপিছু ২৩ কেজি আলু খায়। ভারতের চেয়ে আট কেজি বেশি।
খাবার তালিকায় ভাতের পরেই আলুর স্থান। আলু বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম খাদ্যশস্য। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার সর্বশেষ পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে, আলু উৎপাদনে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান সপ্তম। আবার ইন্টারন্যাশনাল পটেটো কাউন্সিলের তথ্যমতে, বাংলাদেশ পৃথিবীর সপ্তম বৃহত্তম আলু উৎপাদনকারী দেশ এবং এশিয়া ও প্যাসিফিক অঞ্চলে বাংলাদেশের স্থান তৃতীয়। বিশ্বের অনেক দেশেই রুটি বা ভাতের বদলে আলু খাওয়ার প্রচলন আছে।
২০০৭ সালে 'বেশি করে আলু খান ভাতের ওপর চাপ কমান' স্লোগানে সরকার খাদ্য হিসেবে আলুর ব্যবহার বাড়াতে নানা প্রচার কার্যক্রম হাতে নেয়। কিন্তু সেই প্রচারণা বেশিদিন টেকেনি। অথচ পৃথিবীর ৪০টির বেশি দেশে আলু প্রধান খাদ্য হিসেবে ব্যবহূত হয়। আলু থেকে প্রস্তুত মুখরোচক খাদ্য বহুমূল্যে বিক্রি হয় বিদেশে। অথচ বাংলাদেশে আলুর তেমন বহুমুখী ব্যবহার নেই। উদ্বৃত্ত আলু কাজে লাগাতে রপ্তানি বাড়ানোর পাশাপাশি ত্রাণ কার্যক্রম, রেশনিং, ভিজিএফ কার্ড ও কাবিখা কর্মসূচিতে চাল কমিয়ে আলুর পরিমাণ বাড়ানোর কথা বলেছেন বিশেষজ্ঞরা।
তবে আমাদের দেশে আলু এখনো পরিপূরক বা সহায়ক খাবার। আলু ভাতের চেয়ে পুষ্টিকর। শর্করার জোগান দেওয়ার পাশাপাশি আলু নানা ধরনের ভিটামিন ও খনিজ লবণের চাহিদা মেটায়। পাশাপাশি খাদ্যে আঁশ থাকায় আলু হজমে সহায়ক এবং রক্তে শর্করার হার ঠিক রাখে।
হিমাগারে অবিক্রীত আলু ত্রাণ হিসেবে কাজে লাগানো যেতে পারে। বন্যায় ত্রাণ হিসেবে, দুস্থ ও অসহায়দের খাদ্যসহায়তা কর্মসূচিতে এমনকি বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের জন্য ত্রাণ হিসেবে আলু দেয়া যেতে পারে।
সরকারের বিভিন্ন ত্রাণ কর্মসূচি, বিভিন্ন বাহিনী ও বিভিন্ন সংস্থার রেশনের মধ্যে আলুকে সংযুক্ত করলে এই বিপুল পরিমাণ আলু বিক্রির খাত তৈরি হবে।
স্কুল ফিডিং কর্মসূচিতে আলু অন্তভুক্ত করা যায়। আলু দিয়ে বিকল্প খাদ্য তৈরির বিষয়ে প্রচার করা যায়। এসব বহুমুখী উদ্যোগ নিলে ন্যায্য দাম পেয়ে একদিকে কৃষকের প্রাণ বাঁচবে, উৎপাদিত আলু ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচলে কৃষকের দুশ্চিন্তা দূর হবে।
বিভিন্ন তথ্য বিশ্লেষণে জানা গেছে, দেশের সব হিমাগারে যে পরিমাণ আলু আছে তার আর্থিক মূল্য প্রায় হাজার কোটি টাকা দাঁড়াবে।
অপরদিকে রপ্তানিকারকদের কাছে শীতাতপনিয়ন্ত্রিত পরিবহন না থাকায় আলু রপ্তানি অলাভজনক এবং ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
বাণিজ্যিকভাবে দেশে আলুর বহুমুখী ব্যবহার নেই। রপ্তানির ক্ষেত্রে যে ধরনের আলুর চাহিদা রয়েছে সেটির উৎপাদন এখনো নিশ্চিত করা যায়নি। ফলে আলুর বাম্পার ফলন এবং চাহিদা মিটিয়ে প্রতিবছর প্রচুর উদ্বৃত্ত থাকলেও এ থেকে কৃষক ও দেশের অর্থনীতি কাক্সিক্ষত সুফল পাচ্ছে না।
অথচ এডিবির এক গবেষণায় বলা হয়, শুধু দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোয় বছরে গড়ে চার কোটি ১০ লাখ ডলারের আলু আমদানি হয়। সেখানে বাংলাদেশ প্রতিবছর গড়ে আলু রপ্তানি করে আয় করে আট লাখ ডলার। মোট উৎপাদনের মাত্র শূন্য দশমিক ৩৬ শতাংশ আলু রপ্তানি হচ্ছে। কৃষি অর্থনীতিবিদরা জানান, মোট উৎপাদনের মাত্র ২২ শতাংশ আলু হিমাগারে সংরক্ষণ করা যায়। ফলে বেশিরভাগ আলুর গুণগত মান ঠিক থাকে না।
প্রসঙ্গত, আজ থেকে ৫০ বছর আগেও বাংলাদেশে এত আলু উৎপাদিত হতো না। দেশে ব্যবহৃত আলুবীজের শতকরা ৮০ ভাগ আসত বিদেশ থেকে। বর্তমানে ৮০ ভাগ আলুবীজই দেশেই উৎপাদিত হয়। টিস্যুকালচার পদ্ধতিতে উৎপাদিত এসব বীজের গুণগত মান এবং ভাইরাসমুক্ত প্রয়োজনীয় আলুবীজ উৎপাদন এবং ৯০টির মতো উচ্চ ফলনশীল জাত উদ্ভাবনের ফলে দেশে হেক্টরপ্রতি আলুর ফলন অনেক বেড়েছে। আলুর উৎপাদন বৃদ্ধির ধারা অব্যাহত রাখা এবং আলুর ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে হলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
রপ্তানি উপযোগী জাত উদ্ভাবন, উৎপাদন এবং বিদেশে রপ্তানির ওপর জোর দিতে হবে। হিমাগারগুলোতে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। আলু থেকে স্টার্চ উৎপাদনের জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। প্রয়োজনে বিদেশ থেকে স্টার্চ আমদানি বন্ধ করতে হবে। আলু উৎপাদন অঞ্চলের অর্থনৈতিক এলাকাগুলোতে আলু প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প-কারখানা গড়ে তুলতে হবে। আলু চাষের জন্য শতকরা ৪% সুদে ঋণ প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। একই জমি থেকে বছরে দুবার আলু উৎপাদনের লাভজনক প্রযুক্তি উদ্ভাবন করতে হবে। আখের সঙ্গে সাথী ফসল হিসেবে আলু চাষের ওপর জোর দিতে হবে। বর্তমানে যে পরিমাণ জমিতে আলুর চাষ হয় তার এক-তৃতীয়াংশ জমিতে আলুর পরিবর্তে পেঁয়াজ ও রসুনের চাষ করা যেতে পারে। এতে অতিরিক্ত আলু বিনষ্টের হাত থেকে রক্ষা পাবে এবং দেশের পেঁয়াজ রসুনের চাহিদাও পূরণ হবে। আলুর বহুমুখী ব্যবহার বাড়াতে হবে। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আলু ও আলুর উৎপাদিত পণ্যের মেলার আয়োজন করতে হবে।
বিশ্বের অনেক দেশে গুদামজাতকরণ ব্যবস্থা উন্নতকরণ এবং প্রক্রিয়াজাত শিল্প গড়ে তোলা হয়েছে। গত প্রায় তিন দশকে বিশ^ব্যাপী আলুর চাহিদা বেড়েছে প্রায় ৪০ শতাংশ। জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে পণ্যটির ব্যাপক বাজার চাহিদাকে গুরুত্ব দিয়ে তা কাজে লাগাতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করেছে ভারত। তার সুফলও পেয়েছে তারা।
আর বাংলাদেশ শুধু উৎপাদন বৃদ্ধির দিকে দৃষ্টি দিয়েছে। ফলে প্রতি বছরই বিপুল পরিমাণ আলু অবিক্রীত থাকছে ও নষ্ট হচ্ছে। ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন কৃষক। কৃষি মন্ত্রণালয়কে তাই বিপণন, বিকল্প ব্যবহার, রপ্তানি ও প্রক্রিয়াজাত জোরদার করার উদ্যোগ নিতে হবে।
-আল্লামা মুহম্মদ ওয়ালীউর রহমান আরিফ।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
প্রশাসন খবর না রাখলেও প্রচ- শীতে মারা যায় হাজার হাজার লোক। চরম ভোগান্তিতে পড়ে কোটি কোটি লোক। সরকারি সাহায্যের হাত এখনও না বাড়ানো মর্মান্তিক। তবে শুধু লোক দেখানো উদ্যোগ গ্রহণই নয়; প্রকৃত সমাধানে চাই সম্মানিত ইসলামী চেতনার বিস্তার। তাহলে ৯৮ ভাগ মুসলমান অধ্যুষিত এদেশে কোনো আর্তেরই আহাজারি উচ্চারণ হবার নয়।
১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ভীনদেশী অ্যাপের ফাঁদে পড়ে বিপথে যাচ্ছে দেশের তরুণ প্রজন্ম। বাড়ছে নারীপাচার, দেশে বাড়ছে অশ্লীলতা ও পর্ণোগ্রাফির প্রচার। কিশোর-কিশোরীদের টার্গেট করেই একটি মহল এসব অপসংস্কৃতির প্রচার ও প্রসার ঘটাচ্ছে। এসব অপসংস্কৃতি নির্মূলে দ্বীন ইসলামই একমাত্র সমাধান।
১২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
বাংলাদেশ ব্যাংকের ‘উচ্চ সুদহার ব্যবসায়ীরা আর সহ্য করতে পারছেন না। ‘অগ্রিম আয়কর (এআইটি) এবং উৎসে কর কর্তন (টিডিএস) ব্যবসায়ের ওপর অতিরিক্ত চাপ তৈরি করছে। এআইটি ও টিডিএস আসলে ট্যাক্স টেরোরিজম বা কর-সন্ত্রাস। ব্যবসায়ীরা ‘কর-সন্ত্রাস’ থেকে মুক্তি চান। ব্যবসায়ীরা অগ্রিম আয়কর ও উৎসে করের চাপ থেকে মুক্তি চান।
১১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
দেশে মজুদ খনিজ সম্পদের অর্থমূল্য প্রায় ৫০ ট্রিলিয়ন ডলারেরও বেশি কিন্তু উত্তোলনে বিনিয়োগ নাই বললেই চলে অথচ দেশ থেকে অর্থ পাচারের পরিমাণ ২০ লাখ কোটি টাকা সরকারের ঋণের পরিমাণ প্রায় ২০ লাখ কোটি টাকা
১০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমেছে, দেশে কেন উল্টো বেড়েছে? বিশ্ববাজারে জ্বালানি সহ খাদ্যপণ্যের দাম কমলেও বাংলাদেশে ভোক্তা বাড়তি দামে কিনছে বিশ্বে জ্বালানীসহ খাদ্য পণ্যের দাম ধারাবাহিকভাবে কমছে, কিন্তু বাংলাদেশে সুফল মিলছে না কেন? প্রতিবেশীরা স্বস্তিতে, বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতির চাপ বাড়ছে কেনো?
০৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩ লাখ ৬৮ হাজার ৩৫২ কোটি টাকা ‘আইএমএফের চাপে’ নতুন করের বোঝা বাড়ছে ৫৫ হাজার কোটি টাকা আইএমএফের শর্ত মানতে গিয়ে সরকারকে জ্বালানি, সার, বিদ্যুৎ এবং সামাজিক খাতে ভর্তুকি কমাতে হয়। এতে সমাজের নিচের স্তরের মানুষের ওপর চাপ বাড়ে।
০৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সম্মানিত দ্বীন ইসলামে কী প্রকৃতির মুহব্বত ও ঋতু প্রিয়তার কথা নেই? নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কাছে শীতকাল যে কত প্রিয় তা অনেকেরই অজানা। শীতে আছে গণীমত (পর্ব -২)
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সম্মানিত দ্বীন ইসলামে কী প্রকৃতির মুহব্বত ও ঋতু প্রিয়তার কথা নেই? নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কাছে শীতকাল যে কত প্রিয় তা অনেকেরই অজানা। শীতে আছে গণীমত (পর্ব -১)
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সন্ত্রাসবাদ নয়; জিহাদী যোগ্যতা অর্জন করা পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ অনুযায়ী ফরয। ৯৮ ভাগ মুসলমান অধ্যুষিত দেশে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় সব নাগরিকের জন্য সামরিক প্রশিক্ষণ বাধ্যতামূলক করতে হবে। উন্নত প্রশিক্ষন, যুদ্ধকৌশল, সামরিক সক্ষমতা এবং আন্তর্জাতিক র্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এখন সাফল্যের শীর্ষে। সরকারের উচিত- দেশের মর্যাদা বুলন্দ ও দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ত্বকে সমুন্নত রাখতে সেনাবাহিনীর প্রতি সকল প্রকার পৃষ্ঠপোষকতা নিশ্চিত করা।
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম এর তথ্যানুযায়ী বেনিয়া বৃটিশগুলো মুসলিম ভারত থেকে লুট করেছে ১২ হাজার লক্ষ কোটি টাকা প্রকৃতপক্ষে তারা লুট করেছে লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
রামপাল তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র এখনও বন্ধ করলে যা লাভ হবে চালু রাখলে তার চেয়ে অনেক বেশী ক্ষতি হবে ৫৩টি পরিবেশবাদী সংগঠনের দাবী অবিলম্বে রামপাল তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ করে সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্র করা হোক কিন্তু তাদের উপেক্ষা করে পরিবেশ উপদেষ্টা প্রমাণ করছে তার পরিবেশবাদী তৎপরতা অন্য পরিবেশবাদীদের সাথে সাংঘর্ষিক এবং তার পরিবেশবাদী প্রচারণা কার্যকলাপ আসলে দেশ ও দেশের মানুষের জন্য নয় বরং বিশেষ প্রভুর নির্দেশনায় (প্রথম পর্ব)
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
জুয়ার নেশায় বুদ হচ্ছে শিশু-কিশোররা-শিক্ষার্থীরা অধিকাংশ সাইটই পরিচালিত হয় দেশের বাইরে থেকে অনলাইনে জুয়ায় ছোট ছোট বাজির টাকা দিন শেষে একটি বড় অঙ্কের অর্থ হয়ে দেশ থেকে ডলারের মাধ্যমে পাচার হচ্ছে প্রতিদিন এসব খেলা স্বাভাবিক গেমের মতো হওয়ায় প্রকাশ্যে খেলা হলেও আশপাশের মানুষ তা বুঝতে পারেন না কেবলমাত্র ইসলামী মূল্যবোধের উজ্জীবনেই জুয়া বন্ধ সম্ভব ইনশাআল্লাহ
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)












