মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ্ মুবারক (১)
, ১৩ ই জুমাদাল ঊলা শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ১৯ সাদিস, ১৩৯২ শামসী সন , ১৬ নভেম্বর, ২০২৪ খ্রি:, ৩১ কার্তিক, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
وَعَدَ اللهُ الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا مِنْكُمْ وَعَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ لَيَسْتَخْلِفَنَّهُمْ فِى الْاَرْضِ كَمَا اسْتَخْلَفَ الَّذِيْنَ مِنْ قَبْلِهِمْ
অর্থ: “মহান আল্লাহ পাক তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ওয়াদা মুবারক দিচ্ছেন যে, যাঁরা ঈমান আনবেন এবং আমলে ছলেহ্ করবেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি উনাদেরকে অবশ্যই অবশ্যই দুনিয়ার যমীনে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ্ মুবারক হাদিয়া করবেন, যেমন তিনি পূর্ববর্তী উনাদেরকে হাদিয়া করেছিলেন। ” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা নূর শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৫৫)
মূলত সম্মানিত মুসলমান উনাদের একমাত্র শাসন ব্যবস্থা হচ্ছে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ্ মুবারক। সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বিছালী শান মুবারক উনার পর একজন হযরত ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি এসে সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনাকে সংবাদ দিলেন যে, হযরত সা’দ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার তত্ত্বাবধানে কয়েকজন আনছার ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনারা মহাসম্মানিত খলীফা মনোনীত করার ব্যাপারে আলোচনা করেছেন। সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি বিষয়টি সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনাকে অবহিত করলেন। সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনাকে এবং হযরত আবূ উবাইদাহ্ ইবনুল জাররাহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনাকে অর্থাৎ উনাদেরকে সাথে নিয়ে সেখানে গেলেন এবং জিজ্ঞাসা করলেন যে, কী হয়েছে? আপনারা কী আলোচনা করছেন? উনারা বললেন, আমরা মহাসম্মানিত খলীফা মনোনীত করার ব্যাপারে আলোচনা করছি। এ ব্যাপারে আমাদের পরামর্শ হলো- হযরত আনছার ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদের থেকে একজন এবং হযরত মুহাজির ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদের থেকে একজন মহাসম্মানিত খলীফা মনোনীত হোক। একথা শুনে সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, আমি নিজ কান মুবারক-এ শুনেছি, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন,
الأَئِمَّةُ مِنْ قُرَيْشٍ
“মহাসম্মানিত খলীফা মনোনীত হবেন কুরাইশগণ উনাদের মধ্য থেকে। ” সুবহানাল্লাহ! (মুসনাদে আহমদ, মুসনাদে বাযযার, মুসনাদে আবী ইয়া’লা, মুস্তাদরাকে হাকিম, আল মু’জামুল কাবীর, মুছন্নাফে ইবনে আবী শায়বা ইত্যাদি)
অতঃপর সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, “আমার ডান পাশে রয়েছেন এমন একজন মহান ব্যক্তিত্ব মুবারক যাঁর মুবারক শানে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেছেন,
لو كان بعدي نبي لكان حضرت عمر بن الخطاب عليه السلام
“আমার পরে যদি কেউ নবী হতেন, তাহলে সেই ব্যক্তিত্ব মুবারকই হতেন হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি। ” সুবহানাল্লাহ! (তিরমিযী শরীফ, মিশকাত শরীফ)
আর বাম পাশে রয়েছেন,
أمين الله وأمين رسوله صلى الله عليه وسلم حضرت أبو عبيدة بن الجراح رضى الله تعالى عنه
“মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের ‘আমীন’ অর্থাৎ বিশ্বস্ত ব্যক্তিত্ব হলেন হযরত আবূ উবাইদাহ্ ইবনুল জাররাহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি। ” সুবহানাল্লাহ!
অতএব এই দুইজন উনাদের একজনকে আপনারা মহাসম্মানিত খলীফা হিসেবে মনোনীত করতে পারেন।
এ কথা মুবারক শুনে সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূকে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, এ ব্যাপারে আমার কিছু কথা রয়েছে। তিনি বললেন, সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার ন্যায় ব্যক্তিত্ব মুবারক- যাঁর মুবারক শানে স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার একখানা সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে তিনখানা ফযীলত মুবারক বর্ণনা করেছেন। মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
ثَانِيَ اثْنَيْنِ إِذْ هُمَا فِي الْغَارِ إِذْ يَقُولُ لِصَاحِبِهِ لَا تَحْزَنْ إِنَّ اللَّهَ مَعَنَا
অর্থ: “দুই জনের দ্বিতীয়, উনারা দু’জন যখন (ছাওর) গুহায় অবস্থান মুবারক করছিলেন, তখন তিনি উনার ছহিব, সঙ্গী, খাদিম, সাথী উনাকে বললেন, আপনি চিন্তিত হবেন না। মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদের সাথে রয়েছেন। ” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা তাওবা শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৪০)
কাজেই এরূপ ব্যক্তিত্ব মুবারক উপস্থিত থাকতে অন্য কেউ মহাসম্মানিত খলীফা হতে পারেন না। একথা বলে সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি বাইয়াত হওয়ার জন্য নিজ হাত মুবারক খলীফাতু রসূলিল্লাহ সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার হাত মুবারক-এ রাখলেন এবং বাইয়াত করার জন্য অনুরোধ করলেন। সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার দেখা দেখি সেখানে উপস্থিত সকলেই সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার হাত মুবারক-এ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র খিলাফত মুবারক উনার বাইয়াত গ্রহণ করেন। পরের দিন বাইয়াতে আম অনুষ্ঠিত হয় এবং পর্যায়ক্রমে সকলেই সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার হাত মুবারক-এ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র খিলাফত উনার বাইয়াত গ্রহণ করেন। এভাবেই খলীফাতু রসূলিল্লাহ সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি মহাসম্মানিত খলীফা মনোনীত হন। সুবহানাল্লাহ!
-মুহাদ্দিছ মুহম্মদ আমীন।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে ফানা ও বাক্বা সারা কায়িনাত (৩৩)
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ইজতিহাদ সংক্রান্ত মওযূ হাদীছ ও তার খন্ডনমূলক জবাব (৮)
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্মানিত সম্বোধন মুবারক করার বিষয়ে কতিপয় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র লফ্য বা পরিভাষা মুবারক
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ মাহফিল উনার ইন্তিজামকারী বিনা হিসাবে সম্মানিত জান্নাতে প্রবেশ করবেন
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে ফানা ও বাক্বা সারা কায়িনাত (৩২)
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ইজতিহাদ সংক্রান্ত মওযূ হাদীছ ও তার খন্ডনমূলক জবাব (৭)
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে ফানা ও বাক্বা সারা কায়িনাত (৩১)
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ইজতিহাদ সংক্রান্ত মওযূ হাদীছ ও তার খন্ডনমূলক জবাব (৬)
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক শানে ব্যবহৃত একখানা শব্দ মুবারক পবিত্র “নূরুন নাজাত” মুবারক উনার ব্যাপকতা ও বিশালতা
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারকে মানহানীকারীদের যুগে যুগে ভয়াবহ পরিণতি (৩০)
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ইজতিহাদ সংক্রান্ত মওযূ হাদীছ ও তার খন্ডনমূলক জবাব (৫)
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্মানিত সম্বোধন মুবারক করার বিষয়ে কতিপয় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র লফ্য বা পরিভাষা মুবারক
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার)












