মুসলমানগণ কোন বিষয়ের উপর ভিত্তি করে ঐক্যবদ্ধ হবেন (৬)
, ২৩ ছফর শরীফ, ১৪৪৭ হিজরী সন, ১৯ ছালিছ, ১৩৯৩ শামসী সন , ১৮ আগস্ট, ২০২৫ খ্রি:, ০৩ ভাদ্র, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
হযরত কাতাদাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, ‘আমাদেরকে বলা হয়েছে- তার কবরটিকে সত্তর হাত প্রশস্ত করে দেয়া হবে এবং (কিয়ামত পর্যন্ত সময়ের জন্য তা সবুজে ভরপুর করে দেয়া হবে)। ’ এরপর তিনি হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার পবিত্র হাদীছ শরীফে ফিরে আসেন। হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন-
قَالَ وَأَمَّا الْمُنَافِقُ وَالْكَافِرُ فَيُقَالُ لَهُ مَا كُنْتَ تَقُوْلُ فِيْ هَذَا الرَّجُلِ فَيَقُوْلُ لَا أَدْرِيْ كُنْتُ أَقُوْلُ مَا يَقُوْلُ النَّاسُ فَيُقَالُ لَا دَرَيْتَ وَلاَ تَلَيْتَ وَيُضْرَبُ بِمَطَارِقَ مِنْ حَدِيْدٍ ضَرْبَةً فَيَصِيْحُ صَيْحَةً يَسْمَعُهَا مَنْ يَّلِيْهِ غَيْرَ الثَّقَلَيْنِ
আর মুনাফিক ও কাফিরকে বলা হবে, ‘এই মহান ব্যক্তিত্ব মুবারক অর্থাৎ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্পর্কে (দুনিয়ায় থাকতে) তুমি কি বলতে?’ সে বলবে আমি কিছুই জানি না। মানুষ যা বলতো আমিও তাই বলতাম। তারপর তাকে বলা হবে, তুমি কি অনুধাবন করো নি! তুমি (আসমানী কিতাব) পাঠ করো নি!’ এরপর তাকে একটি লোহার হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করা হবে। তাতে সে এমন চিৎকার দিবে, যার আওয়াজ মানুষ ও জিন ছাড়া অন্য সকল সৃষ্টি শুনতে পাবে। (বুখারী শরীফ: হাদীছ শরীফ নং ১৩৭৪, ইছবাতু আযাবিল কবর ৩৪ পৃষ্ঠা)
পবিত্র হাদীছ শরীফে আরো বর্ণিত রয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالَى عَنْهُ أَنَّ نَبِيَّ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ إِنَّ الْعَبْدَ إِذَا وُضِعَ فِيْ قَبْرِهِ وَتَوَلَّى عَنْهُ أَصْحَابُهُ إِنَّهُ لَيَسْمَعُ قَرْعَ نِعَالِهِمْ فَيَأْتِيْهِ مَلَكَانِ فَيَقُوْلَانِ مَا كُنْتَ تَقُوْلُ فِيْ هَذَا الرَّجُلِ؟ يَعْنِيْ سَيِّدَنَا مُحَمَّدًا صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ فَأَمَّا الْمُؤْمِنُ فَيَقُوْلُ أَشْهَدُ أَنَّهُ عَبْدُ اللهِ وَرَسُوْلُهُ فَيُقَالُ لَهُ اُنْظُرْ إِلَى مَقْعَدِكَ فِي النَّارِ قَدْ أَبْدَلَكَ اللهُ مَقْعَدًا فِي الْجَنَّةِ فَيَرَاهُمَا جَمِيْعًا
অর্থ: হযরত আনাস ইবনে মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন- কোনো বান্দাকে কবরে রেখে যখন তার সঙ্গীরা চলে আসে, তখন সে তার সঙ্গীদের জুতার আওয়াজ শুনতে পায়। অতঃপর দু’জন হযরত ফেরেশতা আলাইহিমাস সালাম উনারা এসে তাকে প্রশ্ন করেন, ‘এই মহান ব্যক্তিত্ব মুবারক অর্থাৎ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্পর্কে (দুনিয়ায় থাকতে) তুমি কি বলতে?’ মু’মিন ব্যক্তি বলবে, ‘আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত হাবীব এবং রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।
তখন তাকে বলা হবে, ‘জাহান্নামে তোমার আসনটির দিকে তাকাও। মহান আল্লাহ পাক তিনি এটিকে জান্নাতে প্রতিস্থাপন করে দিয়েছেন। সে উভয়টিই দেখতে পাবে। ’ (মুসলিম শরীফ, ইছবাতু আযাবিল কবর ৩৩ পৃষ্ঠা)
উপরে উল্লেখিত পবিত্র হাদীছ শরীফসমূহ থেকে স্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে যে, কবরে যেই পরীক্ষা নেয়া হবে তা মূলত নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্পর্কেই নেয়া হবে। যারা দুনিয়াতে উনার প্রতি বিশুদ্ধ আক্বীদাহ পোষণ করবে, উনাকে মুহব্বত করবে, তা’যীম-তাকরীম করবে। শুধু তারাই এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারবে। তারাই নাজাত লাভ করবে। সুবহানাল্লাহ!
তাহলে ঐক্যের ভিত্তি কে হবেন? অবশ্যই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনিই হচ্ছেন একমাত্র ঐক্যের ভিত্তি। উনাকে যারা মুহব্বত করে, উনার প্রতি বিশুদ্ধ আক্বীদা পোষণ করে, উনাকে তা’যীম-তাকরীম করে তারাই হচ্ছে প্রকৃত মু’মিন মুসলমান। আর উনার প্রতি এই মুহব্বতকে কেন্দ্র করেই দুনিয়ার সমস্ত মুসলমানকে একত্রিত হতে হবে, ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। তাহলেই মুসলমানগণ সকল ক্ষেত্রে সফলতা অর্জন করতে পারবেন ইনশাআল্লাহ!
মহান আল্লাহ পাক তিনি মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার সম্মানার্থে দুনিয়ার সমস্ত মুসলমানদেরকে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত মুহব্বত মুবারক উনার উপর ভিত্তি করে একতাবদ্ধ হওয়ার তাওফীক্ব দান করুন। আমীন! (সমাপ্ত)
-হাফিয মুহম্মদ ইমামুল হুদা।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
খরচ করার ব্যাপারে মহান আল্লাহ পাক উনার ফায়সালা
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (৫)
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
মুসলমানদের সবচেয়ে বড় শত্রু কাফির-মুশরিকরা (১)
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ছবি তোলা হারাম, যা জাহান্নামী হওয়ার কারণ
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
বিজাতীয় বিধর্মী তথা ইহুদী-নাছারাদেরকে অনুসরণ করা ইসলামী শরীয়তে হারাম-নাজায়িয
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পবিত্র ‘ছলাতুল জুমুয়াহ’ উনার পূর্বে ৪ রাকায়াত সুন্নত নামায অর্থাৎ পবিত্র ‘ক্বাবলাল জুমুয়াহ’ নামায নিয়ে বাতিলপন্থিদের বিভ্রান্ত্রিকর ও মিথ্যা বক্তব্যের দলীলভিত্তিক জাওয়াব (৬)
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ইলিম অর্জন করার পর সে অনুযায়ী যে আমল করে না, তার তিনটি অবস্থার যে কোনো একটি হবেই-
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (৪)
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ঢিলা-কুলুখের বিধান
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
বেপর্দা হওয়া শয়তানের ওয়াসওয়াসাকে সহজ করার মাধ্যম
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার)












