সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার দৃষ্টিতে লেবাস বা পোশাকের হুকুম-আহকাম (৬)
, ২৬ জুমাদাল ঊখরা শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ০১ ছামিন, ১৩৯২ শামসী সন , ২৯ ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রি:, ১৩ পৌষ , ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
“মিরকাত’ ও ‘আত তালীকুছ ছবীহ’ নামক কিতাবে উল্লেখ আছে-
قال السيو طى فيه ان جيب قميصه كان على الصدر كما هو المعتاد الان فظن من لا علم عنده انه بدعة.
অর্থ: “হযরত ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ূতী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ক্বমীছ মুবারক-এর গেরেবান মুবারক বুক মুবারকের দিকে ছিলো। যে রকম আমরা বর্তমানে পরিধান করে থাকি। যাদের ইলম নেই, মূর্খ; তারাই এটাকে বিদয়াত বলে ধারণা করে থাকে। ” (অনুরূপ ‘শরহুল মানাবী মিছরী শরহে শামায়িল’ নামক কিতাবে আছে)
উল্লেখিত হাদীছ শরীফ এবং তার ব্যাখ্যার মাধ্যমে প্রমাণিত হলো যে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যিররুন তথা কাপড়ের গুটলীওয়ালা ক্বমীছ তথা কোর্তা ব্যবহার করতেন। গুটলী ছিলো কাপড়ের তৈরী। গুটলীও ক্বমীছের একটি অংশ। তাই স্পষ্ট হলো কাপড়ের তৈরী গুটলীই খাছ সুন্নত। প্লাষ্টিকের বোতাম, বিভিন্ন ধাতুর চেইন ইত্যাদি দিয়ে গেরেবান আটকানো সুন্নত নয়। আরো প্রমাণিত হলো যে, পুরুষের জন্যে ক্বমীছের গেরেবান বুকের দিকে থাকে।
“মিরকাত শরহে মিশকাত” উনার ‘কিতাবুল লিবাস’ অধ্যায়ে উল্লেখ আছে-
الـمذ كور فى الـمغرب ان الثوب ما يلبسه الناس من الكتان والقطن والصوف.
অর্থ: “মাগরিব’ কিতাবে উল্লেখ আছে, মানুষেরা যে পোশাক পরিধান করে তা হবে সুতি, তুলার তৈরি, পশমী, সুতা জাতীয়। ”
“আল মাওয়াহিবুল লাদুন্নিয়া আলাশ শামায়িলিল মুহম্মদিয়া” নামক কিতাবে আছে-
والظاهر ان الـمراد فى الـحديث القطن والكتان دون الصوف.
অর্থ: “হাদীছ শরীফ থেকে প্রকাশ্য কথা হলো, ক্বমীছ হবে সুতি কাপড়ের, তুলার তৈরী সুতার, কিন্তু পশমী হবে না। ”
“রদ্দুল মুহতার” উনার কিতাবুল হাযর ওয়াল ইবাহাহ উনার মধ্যে উল্লেখ আছে-
اعلم ان الكسوة منها فرض وهو مايستر العورة ويدفع الـحر والبرد والاولى كونه من القطن اوالكتان اوالصوف على وفاق السنة بان يكون ذيله لنصف ساقه وكمه لرؤوس اصابغه وفمه قدر شبر.
অর্থ: “(হযরত ইবনে আবিদীন শামী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন) জেনে রাখুন, পোশাক পরিধান করা ফরয। যা ছতর আবৃত করে এবং ঠান্ডা ও গরম নিবারণ করে। পোশাক তুলার সুতার, সুতা জাতীয় অথবা পশমী কাপড়ের হওয়া উত্তম। এর দৈর্ঘ্য নিসফুস সাক্ব পর্যন্ত। আস্তিন আঙ্গুলের অগ্রভাগ পর্যন্ত এবং আস্তিনের পরিধি এক বিঘত হওয়া সুন্নত।
উপরোক্ত ইবারতগুলো থেকে প্রমাণিত হলো যে, পুরুষ-মহিলার ক্বমীছ হবে সুতি, তুলার সুতার বা সুতা জাতীয়। এছাড়া অন্যান্য পোশাক পশমী হওয়াতে অসুবিধা নেই। তবে পুরুষদের জন্য রেশমী কাপড় পড়া হারাম, মহিলাদের জন্য জায়িয।
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সাদা রংয়ের পোশাক পরিধান করতেন এবং উম্মতগণকে পরিধান করতে নির্দেশ মুবারক করেছেন। যেমন “বুখারী শরীফ” ২য় খ- ৮৬৭ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে- হযরত আবু যর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন। আমি একবার হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কাছে আসলাম, তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শরীর মুবারকে সাদা পোশাক ছিলো। ”
“মাজমাউয যাওয়াইদ” ৫ম খ- ১২৮ পৃষ্ঠা ও “আল লিবাসু ওয়ায যীনাহ” ৫৫৬ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে- হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমা উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেছেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি জান্নাতকে সৃষ্টি করেছেন সাদা রংয়ের করে। আর মহান আল্লাহ পাক উনার কাছে অধিক পছন্দনীয় হচ্ছে সাদা রংয়ের বস্তু। ”
প্রমাণিত হলো যে, সাদা রংয়ের পোশাক (ক্বমীছ, পাগড়ী, টুপি, লুঙ্গি ইত্যাদি) খাছ সুন্নত মুবারক।
-০-
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
খরচ করার ব্যাপারে মহান আল্লাহ পাক উনার ফায়সালা
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (৫)
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
মুসলমানদের সবচেয়ে বড় শত্রু কাফির-মুশরিকরা (১)
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ছবি তোলা হারাম, যা জাহান্নামী হওয়ার কারণ
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
বিজাতীয় বিধর্মী তথা ইহুদী-নাছারাদেরকে অনুসরণ করা ইসলামী শরীয়তে হারাম-নাজায়িয
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পবিত্র ‘ছলাতুল জুমুয়াহ’ উনার পূর্বে ৪ রাকায়াত সুন্নত নামায অর্থাৎ পবিত্র ‘ক্বাবলাল জুমুয়াহ’ নামায নিয়ে বাতিলপন্থিদের বিভ্রান্ত্রিকর ও মিথ্যা বক্তব্যের দলীলভিত্তিক জাওয়াব (৬)
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ইলিম অর্জন করার পর সে অনুযায়ী যে আমল করে না, তার তিনটি অবস্থার যে কোনো একটি হবেই-
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (৪)
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ঢিলা-কুলুখের বিধান
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
বেপর্দা হওয়া শয়তানের ওয়াসওয়াসাকে সহজ করার মাধ্যম
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার)












