বেমেছাল মহাসম্মানিত বুলন্দী শান মুবারক

উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুন নাজাত মুবারক বা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুশ শিফা মুবারক যাঁরা পান করতে পেরেছেন উনারা প্রত্যেকেই সর্বোচ্চ জান্নাতী:

নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত উহুদ জিহাদ মুবারক-এ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল ইস্তিক্বামত মুবারক (জিহাদে আহত হওয়া শান মুবারক) প্রকাশ করার পর হযরত মালিক বিন সিনান রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি উনার জিহ্বা মুবারক দিয়ে ঐ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুন নাজাত মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রক্ত মুবারক) পান করেন। তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-

لَنْ تُصِيْـبَهُ النَّارُ

‘উনাকে কখনো দোযখের আগুন স্পর্শ করবে না। ’ সুবহানাল্লাহ! (মুস্তাদরাকে হাকিম ৩/৬৩৮, মা’রিফতুছ ছাহাবা লি আবী নাঈম ১১/৪৬৮, দারু কুতনী ১/২২৮ ইত্যাদি)

হযরত উমাইমাহ্ বিনতে রুক্বাইক্বাহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহা তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার একখানা কাঠের পাত্র মুবারক ছিলেন, যাতে রাতের বেলায় তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুশ শিফা মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ছোট ইস্তিঞ্জা মুবারক) করে চকি মুবারক উনার নিচে রেখে দিতেন। সুবহানাল্লাহ! এক রাতে তিনি ঐ পাত্র মুবারক-এ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুশ শিফা মুবারক করে পাত্র মুবারক যথা স্থানে রেখে দেন। সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আল ঊলা আলাইহাস সালাম তিনি এসে তা পান করে ফেলেন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তা তালাশ করেন; কিন্তু তা পেলেন না। তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারকে বলা হলো, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আল ঊলা আলাইহাস সালাম তিনি তা পান করেছেন। সুবহানাল্লাহ! তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-

لَقَدِ احْتَظَرَتْ مِنَ النَّارِ بِـحِظَارٍ

‘নিঃসন্দেহে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আল ঊলা আলাইহাস সালাম তিনি অবশ্যই একটি বিশাল রক্ষাকবচ দিয়ে নিজেকে জাহান্নাম থেকে মুক্ত করেছেন’। ” সুবহানাল্লাহ! (আল বিদায়াহ্ ওয়ান নিহায়াহ্)

মহাসম্মানিত শরীয়ত উনার মাসআলা হচ্ছে- মানুষের ইস্তিঞ্জা ও রক্ত নাপাক এবং তা খাওয়া বা পান করা হারাম। কেউ যদি তা হালাল মনে করে পান করে, সে কাট্টা কাফির হয়ে চিরজাহান্নামী হবে। না‘ঊযুবিল্লাহ! কিন্তু নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল মুজাসসাম মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র শরীর মুবারক) উনার মধ্যে যা কিছু ছিলেন, সমস্ত কিছু পূত-পবিত্র থেকে পূত-পবিত্রতম এবং মেশক-আম্বরসহ অন্যান্য সুগন্ধি থেকে কোটি কোটি গুণ বেশি সুগন্ধিময়। শুধু তাই নয়; যাঁরা উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুন নাজাত মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রক্ত মুবারক) অথবা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুশ শিফা মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ছোট ইস্তিঞ্জা মুবারক) পান করতে পেরেছেন উনারা প্রত্যেকেই সর্বোচ্চ জান্নাতী। স্বয়ং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনাদেরকে সম্মানিত জান্নাত মুবারক উনার সুসংবাদ মুবারক হাদিয়া করেছেন। সুবহানাল্লাহ!

তাহলে মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান ও পবিত্রতা মুবারক কত বুলন্দ থেকে বুলন্দতর করেছেন, সেটা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলের চিন্তা ও কল্পনার ঊর্ধ্বে। এক কথায় তিনি শুধু মহান আল্লাহ পাক তিনি নন; এছাড়া সমস্ত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান ও পবিত্রতা মুবারক উনাদের অধিকারী হচ্ছেন তিনি। সুবহানাল্লাহ! (আক্বাইদু হযরত সুলত্বানিন নাছীর আলাইহিস সালাম, মহাসম্মানিত বেমেছাল বুলন্দী শান মুবারক)

তিনি মুত্ত্বলা’ আলাল গ¦ইব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম:

মহান আল্লাহ পাক তিনি হচ্ছেন আলিমুল গ¦ইব আর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হচ্ছেন মুত্ত্বলা’ আলাল গইব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। সুবহানাল্লাহ! মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,

عٰلِمُ الْغَيْبِ فَلَا يُظْهِرُ عَلٰى غَيْبِهٖ اَحَدًا اِلَّا مَنِ ارْتَضٰى مِنْ رَّسُوْلٍ

অর্থ: “মহান আল্লাহ পাক তিনি আলিমুল গ¦ইব। তিনি উনার গ¦ইব সম্পর্কিত ইলিম মুবারক উনার মনোনীত সম্মানিত রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের নিকট ব্যতীত কারো নিকট প্রকাশ করেন না। ” (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা জিন শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ২৬-২৭)

নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,

اُعْطِيْتُ جَوَامِعَ الْعِلْمِ

অর্থ: “আমাকে সমস্ত প্রকার ইলিম মুবারক হাদিয়া মুবারক করা হয়েছে। ” সুবহানাল্লাহ! (সুনানে দারে কুত্বনী ৫/২৫৪, দায়লামী শরীফ ১/৪০০)

অন্য বর্ণনায় এসেছেন,

بُعِثْتُ بِجَوَامِعِ الْكَلِمِ

অর্থ: “আমি সমস্ত ইলিম-কালাম মুবারকসহ প্রেরিত হয়েছি। ” সুবহানাল্লাহ! (বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ, নাসায়ী শরীফ, মুসনাদে আহমাদ ২/২৬৪, মুসনাদে বাযযার ১৪/২১৪, দালাইলুন নুবুওওয়াহ্ ৫/৪৭১, মিশকাত শরীফ)

হযরত হুযাইফা রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি বলেন,

قَامَ فِيْنَا رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَقَامًا مَا تَرَكَ شَيْئًا يَكُوْنُ فِىْ مَقَامِهِ ذٰلِكَ إِلَى قِيَامِ السَّاعَةِ

অর্থ: “একবার নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমাদের মাঝে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল কুওওয়াত মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দাঁড়ানো শান মুবারক) প্রকাশ করে ক্বিয়ামত পর্যন্ত যা কিছু হবে তার সবকিছুই বর্ণনা করে দিলেন, কোনো কিছুই বাদ দিলেন না। ” সুবহানাল্লাহ! (মুসলিম শরীফ, মুসনাদে আহমাদ)

কাজেই, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হচ্ছেন- মুত্ত্বলা’ আলাল গ¦ইব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। সুবহানাল্লাহ! উনাকে মহান আল্লাহ পাক তিনি সমস্ত ইলিম-কালাম মুবারক উনাদের মালিক বানিয়েছেন। তিনি সমস্ত সৃষ্টির নিকট ইলমে গ¦ইবের সংবাদ মুবারক প্রকাশ করেছেন। এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,

وَمَا هُوَ عَلَى الْغَيْبِ بِضَنِيْنَ

অর্থ: “(নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তিনি গ¦ইব উনার সংবাদ প্রকাশে অত্যন্ত ছখী ছিলেন। অর্থাৎ তিনি সমস্ত প্রকার গ¦ইবের সংবাদ মুবারক দান করেছেন। ” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা তাকভীর শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ২৪)

-মুহাদ্দিছ মুহম্মদ আল আমীন।