সারাবিশ্বে একই দিনে ঈদ পালন ও রোযা শুরু করার কথা বলার উদ্দেশ্য পবিত্র ঈদ ও পবিত্র রোযাকে নষ্ট করা, যা মূলত মুনাফিকদের একটি ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত (৬৫)
, ২৮শে জুমাদাল ঊলা শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ০৩ সাবি’, ১৩৯২ শামসী সন , ০১ ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রি:, ১৬ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
“কম দূরত্বের কারণে সময়ের পার্থক্য যেহেতু মান্য করা ফরয, সেহেতু বেশি দূরত্বের কারণে দিনের পার্থক্য মেনে ভিন্ন ভিন্ন দিনে পবিত্র ঈদ পালন করা ও পবিত্র রোযা শুরু করা ফরযে আইন”
সারাবিশ্বে একই দিনে পবিত্র ঈদ পালন ও রোযা শুরু করার দাবিকারীরা দাজ্জাল ও কায্যাব, তাদের থেকে দূরে থাকা ফরয-ওয়াজিব:
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
وَاللهُ يَشْهَدُ إِنَّ الْمُنَافِقِينَ لَكَاذِبُونَ
অর্থ: মহান আল্লাহ পাক তিনি নিজেই সাক্ষ্য দিচ্ছেন যে, নিশ্চয়ই মুনাফিকরা অবশ্যই মিথ্যাবাদী। (পবিত্র সূরা মুনাফিকূন শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ-১)
পবিত্র হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ اَبِىْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَكُوْنُ فِي آخِرِ الزَّمَانِ دَجَّالُونَ كَذَّابُونَ يَأْتُونَكُمْ مِنَ الْأَحَادِيثِ بِمَا لَمْ تَسْمَعُوْا أَنْتُمْ وَلاَ آبَاؤُكُمْ فَإِيَّاكُمْ وَإِيَّاهُمْ لاَ يُضِلُّونَكُمْ وَلاَ يَفْتِنُونَكُمْ.
অর্থ: “হযরত আবূ হুরাইরা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আখিরী যামানায় কিছু সংখ্যক মিথ্যাবাদী দাজ্জাল বের হবে, তারা তোমাদের নিকট এমন সব (মিথ্যা-মনগড়া) কথা উপস্থাপন করবে, যা তোমরা কখনো শুননি এবং তোমাদের বাপ-দাদারাও শুনেনি। সাবধান! তোমরা তাদের থেকে দূরে থাকবে এবং তোমাদেরকে তাদের থেকে দূরে রাখবে। তবে তারা তোমাদেরকে গোমরাহ করতে পারবে না এবং ফেৎনায় ফেলতে পারবে না। ” (মুসলিম শরীফ, শরহুন নববী, ফতহুল মুলহিম)
দাজ্জালে কাযযাবের অর্থ-
خَلَّاطُوْنَ بَيْنَ الْحَقِّ وَالْبَاطِلِ مُمَوِّهُوْنَ.
অর্থ: যারা সত্যের সাথে সাথে মিথ্যাকে মিশ্রিত করে মানুষের সাথে প্রতারণা করে ও ধোঁকা দেয়।
আর পবিত্র হাদীছ শরীফে বর্ণিত দাজ্জালে কাযযাবের প্রকৃত অর্থ হলো- যারা পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার বিভ্রান্তিকর অর্থ ও অপব্যাখ্যা করে সর্বদা মুসলমানদের মাঝে ফেৎনা করে ও বিভ্রান্তি ছড়ায় তাদেরকে বলা হয় দাজ্জালে কাযযাব। মূলতঃ তারা মুনাফিক। তাই সারাবিশ্বে একই দিনে ঈদ পালন ও রোযা শুরু করার দাবিকারীরাও পবিত্র হাদীছ শরীফে বর্ণিত দাজ্জাল ও কাযযাবের অন্তর্ভুক্ত।
ধারাবাহিক আলোচনা.........
মাহবুব আরো লিখেছে-
(ঙ) পৃথিবীতে বর্তমানে বহু দেশ রয়েছে যার এক সীমান্ত থেকে অন্য সীমান্তের দূরত্ব ৪৮০ মাইলের চেয়েও অনেক বেশি। তাহলে প্রশ্নে বর্ণিত ৪৮০ মাইলের মূলনীতি মানতে হলে একই দেশের এক অঞ্চলে রোযা, ঈদ, কুরবানী হবে এবং অন্য অঞ্চলে হবে পরের দিন। যা রীতিমত হাস্যকর।
জাওয়াব: মিথ্যাচার করা, ইবারত চুরি করা, প্রতারণা করা, পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের অর্থ বিকৃতি করে অপব্যাখ্যা করা ইত্যাদি হাস্যকর নয় কি? যা মাহবুব ও শাহ আলমগংদের চরিত্রে প্রমাণিত হয়েছে! আসলে মুনাফিকদের কাছে হাস্যকর হলো শরীয়ত মান্য করা এবং পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ অনুসরণ করা। মূলতঃ মাত্বলা’ ভিত্তিক সারাবিশ্বে ভিন্ন ভিন্ন দিনে পবিত্র ঈদ পালন ও পবিত্র রোযা শুরু করাটাই যিনি খ¦ালিক যিনি মালিক যিনি রব মহান আল্লাহ পাক উনার এবং মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের সম্মানিত নির্দেশ মুবারক। যা আমরা বিস্তারিতভাবে প্রমাণ করে দিয়েছি। অতএব মা’রুফ ও মাহবুব গংদের মিথ্যাচার করা, ইবারত চুরি করা, প্রতারণা করা, পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের অর্থ বিকৃতি করে অপব্যাখ্যা করা ইত্যাদি শুধু হাস্যকর নয় বরং তা নিকৃষ্ট মুনাফিক্বী এবং কুফরীও বটে।
সে ৭৩ পৃষ্ঠায় আরো লিখেছে-
আমরা নতুন কোন ফতওয়া আবিষ্কার করিনি। এবং নতুন কোন গবেষণার ফলও বর্ণনা করিনি।
জাওয়াব: মাহবুবের এ কথাটি দিবালোকের ন্যায় ডাহা মিথ্যা। কেননা, বিগত চৌদ্দশত বৎসর যাবৎ কোন ছাহাবী, তাবেয়ীন, তাবে-তাবেয়ীন, আইম্মায়ে মুজতাহিদীনসহ কেউ যেমন সারাবিশ্বে একই দিনে পবিত্র ঈদ ও পবিত্র রোযা শুরু করার ফতওয়া দেন নাই। তেমনি উনারা তার বিপরীতে মাত্বলা’ ভিত্তিক আমল করেছেন আজীবন। সুতরাং সারাবিশ্বে একই দিনে পবিত্র ঈদ পালন ও পবিত্র রোযা শুরু করার দাবিটি চৌদ্দশত বৎসর পর নতুন আবিষ্কৃত কুফরী ফতওয়া। এবং একটি মিথ্যাচার, প্রতারণা, ইবারত চুরি এবং পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার অপব্যাখ্যামূলক গবেষণার নেফাকী ফসল।
সে ৭৪ পৃষ্ঠায় আরো লিখেছে-
প্রিয় পাঠকবৃন্দ আলোচিত মাসয়ালায় হানাফী, মালেকী, হাম্বলী মাযহাবের ঐক্যমত হলো, চাঁদ দেখার ভিন্নতা গ্রহণযোগ্য হবে না।
জাওয়াব: মাহবুবের এই কথাটিও তার স্বভাবজাত মিথ্যা কথা। আমরা ইতিপূর্বে সম্মানিত হানাফী, মালেকী মাযহাব উনার ঐক্যমতে এবং সম্মানিত হাম্বলী মাযহাব উনার অনেক ইমাম-মুজতাহিদগণ উনাদের মতে উদয়স্থলের ভিন্নতা গ্রহণযোগ্য হওয়ার বিষয়টি প্রমাণ করে দিয়েছি।
সে ৭৯ পৃষ্ঠায় আরো লিখেছে-
বিশে^ সর্ব প্রথম নতুন চাঁদ উদয়ের সংবাদ সংগ্রহের কেন্দ্র হিসেবে মধ্যপ্রাচ্যের সাথে সঠিক তারিখে ঈদ উদযাপন করতে কোন সমস্যা নাই।
জাওয়াব: পাঠকগণ মাহবুব ও শাহ আলমগংদের মিথ্যাচার ও প্রতারণা পড়তে পড়তে এত বিরক্ত হচ্ছেন যে, মাহবুবের উপরের কথাটি যে বরাবরের মত স্বভাবগত ডাহা মিথ্যা কথা, পাঠক মাত্রই তা বুঝতে মোটেও কষ্ট হচ্ছে না। যা আমরা অনেক আগেই অত্র কিতাবে বার বার প্রমাণ করে দিয়েছি। যার কারণে নতুন করে কিছু লিখে পাঠকগণকে বিরক্ত করছি না।
চলবে....
-মুহম্মদ মুফীদ্বুর রহমান।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
ইলিম অর্জন করার পর সে অনুযায়ী যে আমল করে না, তার তিনটি অবস্থার যে কোনো একটি হবেই-
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (৪)
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ঢিলা-কুলুখের বিধান
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
বেপর্দা হওয়া শয়তানের ওয়াসওয়াসাকে সহজ করার মাধ্যম
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
মহান আল্লাহ পাক উনার রাস্তায় খরচ করলে তা দ্বিগুণ-বহুগুনে বৃদ্ধি করে ফিরিয়ে দেয়া হয়
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
আসমাউর রিজাল, জারাহ ওয়াত তা’দীল, উছুলে হাদীছ শরীফ উনার অপব্যাখ্যা করে অসংখ্য ছহীহ হাদীছ শরীফ উনাকে জাল বলছে ওহাবী সালাফীরা (১)
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (৩)
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
পবিত্র হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ইসলামী শরীয়ত মুতাবিক- ছবি তোলা হারাম
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক করেন-
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার)












