নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সুমহান বুলন্দী শান মুবারক প্রকাশ:
‘উম্মী’ শব্দ নিয়ে বাতিলপন্থীদের মিথ্যাচারের চূড়ান্ত জবাব (৫)
, ১৭ ই জুমাদাল ঊলা শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ২৩ সাদিস, ১৩৯২ শামসী সন , ২০ নভেম্বর, ২০২৪ খ্রি:, ০৫ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ
উম্মী অর্থ নিরক্ষর হলে হযরত মুসা কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম কি নিরক্ষর ছিলেন? কাল কিয়ামতের ময়দানে নিরক্ষর বলে সবার সামনে কি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মানহানী করা হবে? নাউযুবিল্লাহ! নাউযুবিল্লাহ! নাউযুবিল্লাহ!
হযরত সাইয়্যিদুনা মুসা কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাকে মহান আল্লাহ পাক যখন তাওরাত শরীফ দান করেন তখন বলেন-
وَكَتَبْنَا لَهُ فِي الْأَلْوَاحِ مِن كُلِّ شَيْءٍ مَّوْعِظَةً وَتَفْصِيلًا لِّكُلِّ شَيْءٍ فَخُذْهَا بِقُوَّةٍ وَأْمُرْ قَوْمَكَ يَأْخُذُوا بِأَحْسَنِهَا ۚ سَأُرِيكُمْ دَارَ الْفَاسِقِينَ
অর্থ: আর আমি আপনাকে ফলকে লিখে দিয়েছি সর্বপ্রকার উপদেশ ও বিস্তারিত সব বিষয়। অতএব, এগুলোকে দৃঢ়ভাবে ধারণ করুন এবং স্বজাতিকে এর কল্যাণকর বিষয়সমূহ দৃঢ়তার সাথে পালনের নির্দেশ দিন। (পবিত্র সূরা আ’রাফ শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ১৪৫)
এ পবিত্র আয়াত শরীফ থেকে আমরা জানতে পারলাম, হযরত সাইয়্যিদুনা মুসা কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাকে ফলকে লিখিত তাওরাত শরীফ দেয়া হয়েছিলো। অর্থাৎ তিনি উনার উম্মতকে সে লিখিত কপি থেকে পড়ে শোনাতেন। এ থেকে বোঝা গেলো তিনি লেখা পড়তে পারতেন।
এবার একটা হাদীছ শরীফ দেখুন-
عَنْ أَبِي أُمَامَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ:" إِذَا كَانَ يَوْمُ الْقِيَامَةِ قَامَتْ ثُلَّةٌ مِنَ النَّاسِ يَسُدُّونَ الْأُفُقَ، نُورُهُمْ كَالشَّمْسِ فَيُقَالُ: النَّبِيَّ الْأُمِّيَّ، فَيَتَحَسَّسُ لَهَا كُلُّ نَبِيٍّ فَيُقَالُ: مُحَمَّدٌ وَأُمَّتُهُ، ثُمَّ تَقُومُ ثُلَّةٌ أُخْرَى تَسُدُّ مَا بَيْنَ الْأُفُقِ، نُورُهُمْ كَالْقَمَرِ لَيْلَةَ الْبَدْرِ، فَيُقَالُ: النَّبِيَّ الْأُمِّيَّ، فَيَتَحَسَّسُ لَهَا كُلُّ نَبِيٍّ، فَيُقَالُ: مُحَمَّدٌ وَأُمَّتُهُ، ثُمَّ تَقُومُ ثُلَّةٌ أُخْرَى تَسُدُّ مَا بَيْنَ الْأُفُقِ نُورُهُمْ مِثْلُ كَوْكَبٍ فِي السَّمَاءِ، فَيُقَالُ: النَّبِيَّ الْأُمِّيَّ، فَيَتَحَسَّسُ لَهَا كُلُّ نَبِيٍّ، فَيُقَالُ: مُحَمَّدٌ وَأُمَّتُهُ، ثُمَّ يَحْثِي حَثْيَتَيْنِ، فَيَقُولُ: هَذَا لَكَ يَا مُحَمَّدُ، وَهَذَا مِنِّي لَكَ يَا مُحَمَّدُ، ثُمَّ يُوضَعُ الْمِيزَانُ، وَيُؤْخَذُ فِي الْحِسَابِ"
অর্থ: হযরত আবু উমামা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত- নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন- যখন কিয়ামতের দিন হবে একদল মানুষ দাঁড়াবে, তাদের নূর সূর্যের ন্যায় দিগন্ত ঢেকে ফেলবে, অতঃপর বলা হবে; উম্মী নবী, প্রত্যেক হযরত নবী আলাইহিমুস সালাম এ ডাকে সাড়া দেয়ার জন্য প্রস্তুত হবেন। অতঃপর বলা হবে; নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও উনার উম্মত। অতঃপর একদল দাঁড়াবে তাদের নূর চৌদ্দ তারিখের চাঁদের ন্যায় দিগন্তের মধ্যবর্তী সব ঢেকে ফেলবে, বলা হবে; উম্মী নবী, প্রত্যেক হযরত নবী আলাইহিমুস সালাম এ ডাকে সাড়া দেয়ার জন্য প্রস্তুত হবেন, অতঃপর বলা হবে; নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও উনার উম্মত। অতঃপর একদল দাঁড়াবে তাদের নূর আসমানের তারকার ন্যায় দিগন্তের মধ্যবর্তী সব ঢেকে ফেলবে, বলা হবে; উম্মী নবী, প্রত্যেক হযরত নবী আলাইহিমুস সালাম এ ডাকে সাড়া দেয়ার জন্য প্রস্তুত হবেন, অতঃপর বলা হবে; নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও উনার উম্মত। অতঃপর দু’ মুষ্টি উঠাবেন ও বলবেন- এটা আপনার জন্য হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও এটা আমার পক্ষ থেকে আপনার জন্য হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। অতঃপর মীযান কায়েম করা হবে এবং হিসাব আরম্ভ হবে”। (মুজামুল কবীর তাবরানি ৮/১৭৩; হাদীছ ৭৭২৩)
এই হাদীছ শরীফখানার সনদ হাসান।
পবিত্র হাদীছ শরীফখানা লক্ষ্য করুন- কিয়ামতের ময়দানে যখন উম্মী নবী বলা হবে তখন প্রত্যেক হযরত নবী আলাইহিমুস সালাম সে ডাকে সাড়া দেয়ার প্রস্তুতি নিবেন। প্রত্যেক হযরত নবী আলাইহিমুস সালাম উনাদের মধ্যে হযরত সাইয়্যিদুনা মুসা কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনিও আছেন। আমরা দেখেছি তিনি তাওরাত পড়তে পারতেন। তাহলে এখানে উম্মী মানে যদি নিরক্ষর হয় তাহলে হযরত সাইয়্যিদুনা মুসা কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম কি নিরক্ষর সম্বোধন শুনে আহবানে সাড়া দেয়ার জন্য প্রস্তুত হবেন? নিরক্ষর দাবিকারীদের ভাষ্য অনুযায়ী তো উম্মী মানে নিরক্ষর, লেখাপড়া না জানা হয় তাহলে হযরত মুসা কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনিতো নিরক্ষর ছিলেন না। তাহলে এই উম্মী মানে কি?
আর কাল কিয়ামতের ময়দানে যেখানে মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সকল মর্যাদা প্রকাশ করা হবে, হামদের পতাকা উনার হাতে থাকবে, শাফায়াতে কুবরার মালিক হবেন, মাকামে মাহমুদে আসীন হবেন, সকলে যখন চিন্তিত পেরেশানগ্রস্থ হবে; নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তখন থাকবেন সকলের সুপারিশকারী নাজাতের উছিলা, সর্বোচ্চ সম্মানের অধিকারী থাকবেন তিনি। সুবহানাল্লাহ!
এখন ফিকির করুন- সর্বোচ্চ সম্মানের আসনে বসিয়ে সৃষ্টিজগতের সবার সামনে আল্লাহ পাক উনার প্রিয়তম হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে নিরক্ষর বলে সম্মোধন করে মানহানী করবেন? আর কি কোন বিশেষণ নেই?
নাকি এখানে উম্মী মানে অন্য কিছু?
বাতিল ফিরকার লোকদের কাছে এগুলোর জবাব চাই!
-খাজা মুহম্মদ নুরুদ্দীন।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে ফানা ও বাক্বা সারা কায়িনাত (৩২)
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ইজতিহাদ সংক্রান্ত মওযূ হাদীছ ও তার খন্ডনমূলক জবাব (৭)
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে ফানা ও বাক্বা সারা কায়িনাত (৩১)
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ইজতিহাদ সংক্রান্ত মওযূ হাদীছ ও তার খন্ডনমূলক জবাব (৬)
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক শানে ব্যবহৃত একখানা শব্দ মুবারক পবিত্র “নূরুন নাজাত” মুবারক উনার ব্যাপকতা ও বিশালতা
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারকে মানহানীকারীদের যুগে যুগে ভয়াবহ পরিণতি (৩০)
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ইজতিহাদ সংক্রান্ত মওযূ হাদীছ ও তার খন্ডনমূলক জবাব (৫)
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্মানিত সম্বোধন মুবারক করার বিষয়ে কতিপয় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র লফ্য বা পরিভাষা মুবারক
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনি তিনজন উনাদের মুহব্বত ফরয করে দিয়েছেন-
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ মেহমানদারী করার মাধ্যমে উদযাপনে শাফায়াত মুবারক লাভ
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে ফানা ও বাক্বা সারা কায়িনাত (৩০)
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ইজতিহাদ সংক্রান্ত মওযূ হাদীছ ও তার খন্ডনমূলক জবাব (৪)
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)












