আফ্রিকায় পানির বিশাল ভান্ডার মরুভূমির নিচে
এডমিন, ৩০ ছফর শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ১৮ রবি’ ১৩৯১ শামসী সন , ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রি:, ০১ আশ্বিন, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) বিদেশের খবর

মরুভূমিতে পানির অভাব, অথচ মাটির নিচেই প্রাচীন পানির আধার। সুদানসহ আফ্রিকার বড় কয়েকটি দেশে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ভূগর্ভস্থ পানির ভান্ডারের অস্তিত্ব রয়েছে। আধুনিক পদ্ধতি ও প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে সেই পানির সদ্বব্যবহারের চেষ্টা চলছে।
সুদানের যত উত্তরে যাওয়া যায়, সেদিকে জমি ততই শুষ্ক। কয়েক শ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে শুধুই মরুভূমি। অবিশ্বাস্য মনে হলেও মরুভূমির বালুর স্তূপের নিচে কিন্তু পানির বিশাল ভান্ডার রয়েছে। মিসর, সুদান থেকে চাদ ও লিবিয়া পর্যন্ত সেই পানির আধার বিস্তৃত। গত শতাব্দীর পঞ্চাশের দশকে খননের সময় ‘নিউবিয়ান স্যান্ডস্টোন অ্যাকুইফার’ নামের সেই ভান্ডার আবিষ্কার করা হয়েছিল।
ভূতত্ত্ববিদ হিসেবে আবদাল্লাহ ওমর ২০ বছর ধরে অ্যাকুইফার নিয়ে গবেষণা করছেন। কয়েকটি জায়গায় ভূপৃষ্ঠের কাছাকাছি পানির নাগাল পাওয়া যায়। ২০০৪ সালে খননের সময় ওমর এল গা-আব অঞ্চলে পানির একটি উৎস খুলে দেন।
ওমর বলেন, ‘সুদানের উত্তরের অংশে গভীরতা ৬০ মিটার অথবা আরও কম। ভাবতে পারেন? একটি সেচ প্রণালি দিয়ে ৫০ হেক্টর জমিতে সেচ করা সম্ভব। সেটা সত্যি অনন্য এক বিষয়। এতে পানির আধারের শক্তিশালী প্রবাহ স্পষ্ট হয়ে যায়।’
গা-আব এল-হাশার মতো মরুভূমির গ্রাম এই বিশাল পানির ভান্ডারের কারণে সবচেয়ে বেশি উপকৃত হয়েছে। ২০ বছর আগে সেই উৎস আবিষ্কারের পর থেকে মানুষ নিয়মিত পানির নাগাল পাচ্ছে।
আবদুল হাফিজ সাইদের মতো চাষি সেই সুযোগের পুরোপুরি সদ্বব্যবহার করছেন। তার নিজস্ব কয়েক শ হেক্টর খেতে তিনি নানা ধরনের শাকসবজি ও ফলমূল উৎপাদন করছেন। ফাভা বিনস, জোয়ার এবং আলফালফার পাশাপাশি চলতি বছর তিনি গম উৎপাদনে মনোযোগ দিয়েছেন।
আবদুল হাফিজ বলেন, ‘কৃষিকাজে পানি ঠিকমতো ব্যবহার করা উচিত। অর্থাৎ আমার মতে, উন্নত পদ্ধতি ও উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে পানির সাশ্রয় করা সম্ভব। কিন্তু প্রথাগত পদ্ধতি ব্যবহার করলে বেশি পানি লাগে।’
বেশ কয়েক বছর ধরে প্রাচীর গড়ে তোলার সুফল ভোগ করে আবদুল হাফিজ সাইদ নিয়মিত তার ক্ষেতে সেচের কাজ করতে পারছেন। প্রতিটি উৎসের জন্য তাঁর প্রায় সাড়ে চার শ ইউরোর মতো ব্যয় করতে হয়। কিন্তু তারপর গ্রামবাসী ও চাষিরা বিনা মূল্যে পানি পেতে পারেন।