স্থাপত্য-নিদর্শন
অস্থায়ী হাসপাতাল নির্মাণে মুসলমানদের অবদান
, ০১ জুমাদাল ঊখরা শরীফ, ১৪৪৭ হিজরী সন, ২৫ সাদিস, ১৩৯৩ শামসী সন , ২৩ নভেম্বর, ২০২৫ খ্রি:, ০৮ অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) স্থাপত্য নিদর্শন
সম্মানিত ইসলামী সভ্যতায় হাসপাতাল বা বিমারিস্তান তৈরি মুসলমানদের অনন্য কীর্তি। স্থায়ী হাসপাতালের পাশাপাশি অস্থায়ী হাসপাতাল নির্মাণেও মুসলমানরা নজীর সৃষ্টি করেছিলেন।
তবে অস্থায়ী হাসপাতাল নির্মাণ সর্বপ্রথম নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নির্দেশ মুবারকে খন্দকের যুদ্ধের সময় তৈরি করা হয়েছিলো। সেই বিশেষ অস্থায়ী হাসপাতালের নাম ছিলো ‘খিমাতু রুফাইদা’। আজকের পৃথিবীর ভ্রাম্যমাণ হাসপাতাল ও চিকিৎসার ধারণাটি এখান থেকেই মানুষ নিয়েছে।
পরবর্তীতে হযরত খুলাফায়ে রাশেদীন আলাইহিমুস সালাম এবং মুসলিম সালতানাতগুলোতেও এই ভ্রাম্যমাণ চিকিৎসা সেবা চালু ছিলো। উমাইয়া শাসক আবদুল মালিক বিন মারওয়ান বিপুল অর্থ ব্যয়ে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে এক বিশাল হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করেন। এরপর তার ছেলে আল ওয়ালিদ ইবনে মালিক পৃথিবীর ইতিহাসে প্রথম মানসিক হাসপাতাল নির্মাণ করেন। আব্বাসীয় শাসক হারুন অর রশিদ বাগদাদে সাধারণ হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করেন। এই হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার অল্প কিছুদিনের মধ্যে তৎকালীন মুসলিম বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় ৩০টির বেশি এমন হাসপাতাল প্রতিষ্ঠিত হয়।
৮৭২ সালে মিশরের কায়রোতে প্রথম হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করেন আহমদ ইবনে তুলুন। এভাবেই মুসলিম শাসনামলে বিশ্বব্যাপী উন্নত হাসপাতাল ব্যবস্থা ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে। তৎকালীন যুগে শুধু স্পেনের কর্ডোভা শহরেই গড়ে উঠেছিলো ৫০টির বেশি হাসপাতাল। তার মধ্যে কোনো হাসপাতাল ছিলো সামরিক বাহিনীর জন্য নির্দিষ্ট। বর্তমান বিশ্বের সামরিক বাহিনীর জন্য প্রতিষ্ঠিত হাসপাতালের ধারণাটিও মুসলমানদের।
মুসলিম শাসনামলে ভারতবর্ষেও অনেক হাসপাতাল প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলো। ভারতে মুসলিম শাসক ফিরোজ শাহ তুঘলকের হাসপাতালকে বলা হতো ‘সিহহতখানা’। সেখানে হাসপাতালের পক্ষ থেকেই রোগীদের খাবার সরবরাহ করা হতো। এ ছাড়া আহমেদাবাদে হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করেছিলেন সুলতান আলাউদ্দিন বিন সুলতান আহমদ শাহ বাহামানি। এরপর ৮৪৯ হিজরীতে মালোয়ার শাসক মাহমুদ খিলজি শাদিয়াবাদে একটি হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করেন।
মোগল বাদশাহদের মধ্যে জাহাঙ্গীর সর্বপ্রথম হাসপাতাল প্রতিষ্ঠায় মনোযোগী হন। গুরুত্বের সঙ্গে হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার নির্দেশ দেন। সেকালের একজন বিখ্যাত চিকিৎসক হেকিম আলী প্রতিবছর দরিদ্রদের মধ্যে প্রায় ৬ হাজার ওষুধ বিলি করতেন। এভাবেই মুসলিমদের হাত ধরে দুনিয়াব্যাপী চিকিৎসাব্যবস্থা ও হাসপাতালের বিস্তার ঘটেছে। কারণ মুসলমানরা বিশ্বাস করে, সেবা রোগীর অধিকার।
-মুহম্মদ নাইম।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
মালয়েশিয়ার ঐতিহাসিক মসজিদ “মসজিদ নেগারা”
১৬ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
যে মসজিদ থেকে গভীর রাতে ভেসে আসতো যিকিরের আওয়াজ
০৯ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা (৩৮)
০৮ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদ হযরত শাহ মখদুম রুপোশ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মাজার শরীফ
০২ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
বয়নশিল্প নিদর্শনে মুসলমানগণ (৬)
২৬ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
বয়নশিল্প নিদর্শনে মুসলমানগণ (৫)
১৯ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
বয়নশিল্প নিদর্শনে মুসলমানগণ (৪)
১২ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
বয়নশিল্প নিদর্শনে মুসলমানগণ (৩)
০৫ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
বয়নশিল্প নিদর্শনে মুসলমানগণ (২)
২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
স্থাপত্যশৈলীর অনন্য স্থাপনা মানিকগঞ্জের ‘ওয়াসি মহল’
২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
বয়নশিল্প নিদর্শনে মুসলমানগণ (১)
২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
মুসলমানদের শিল্পকলার এক অনন্য নিদর্শন ইসলামী মৃৎপাত্র (১১)
১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)












