তা’লীমুল মাসায়িল (১৮)
, ২৩ জুমাদাল ঊলা শরীফ, ১৪৪৭ হিজরী সন, ১৭ সাদিস, ১৩৯৩ শামসী সন , ১৫ নভেম্বর, ২০২৫ খ্রি:, ৩০ কার্তিক, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
যেসব ওজরের কারণে তাইয়াম্মুম জায়িয
১. যে ব্যক্তি পানি হতে এক মাইল দূরে থাকে, সে শহরে কিংবা শহরের বাইরে থাকুক, মুসাফির কিংবা মুক্বীম হোক, তার জন্য তাইয়াম্মুম করা জায়িয। আর তা অপেক্ষা কম দূরে পানি থাকলে তাইয়াম্মুম জায়িয হবে না। যদি পানির স্থানে পৌঁছতে পৌঁছতে নামাযের ওয়াক্ত ফউত হবার সম্ভাবনা থাকে, তবে তাইয়াম্মুম করে নামায পড়তে হবে এবং পানির নিকট উপস্থিত হয়ে অজু করে পুনরায় নামায আদায় করতে হবে।
২. যদি লক্ষণ কিংবা পরীক্ষা দ্বারা অথবা কোনো পরহেযগার মুসলমান চিকিৎসকের কথায় দৃঢ় ধারণা হয় যে, পানি ব্যবহার করলে পীড়া বৃদ্ধি কিংবা পীড়া উপশমে বিলম্ব হবে, তবে সেক্ষেত্রে তাইয়াম্মুম জায়িয হবে। যদি এরূপ আশঙ্কা না থাকে কিন্তু সে ব্যক্তি অজু করতে অক্ষম অথবা তথায় অজু করিয়ে দেয়ার লোক না থাকে, তবে তাইয়াম্মুম জায়িয হবে।
৩. যদি নাপাক ব্যক্তির অধিকাংশ শরীরে কিংবা অজুবিহীন ব্যক্তির অধিকাংশ অজু অঙ্গে জখম কিংবা বসন্ত থাকে, তবে তাইয়াম্মুম জায়িয হবে। যদি অধিকাংশ শরীর বা অঙ্গ সুস্থ থাকে আর কিছু অংশে জখম বা বসন্ত থাকে, তবে সুস্থ শরীর ও অঙ্গটি ধৌত করতে হবে এবং জখমি অংশে মাসেহ করতে হবে।
আর যদি মাসেহ করলেও ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে, তবে তার উপর পট্টি বেঁধে পট্টির উপর মাসেহ করতে হবে। যদি সুস্থ অঙ্গ ধৌত করার সময় জখমি অংশে পানি গড়িয়ে পড়ে এবং ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে, তবে এক্ষেত্রে শুধু তাইয়াম্মুম করলেই যথেষ্ট হবে।
৪. অজুর চারি অঙ্গের মধ্যে তিনটি অঙ্গে জখম হলে তাইয়াম্মুম জায়িয হবে। মাথা, মুখম-ল ও দু’হাতে জখম থাকলে, যদিও পরিমাণে জখমের মাত্রা অধিকতর না হয়, তবুও তাইয়াম্মুম করা জায়িয হবে। যদি দু’হাতে জখম থাকে, এক্ষেত্রে যদি মুখম-ল ও দু’পা পানিতে ধৌত করা সম্ভব হয়, তবে তাই করতে হবে, অন্যথায় তাইয়াম্মুম করতে হবে।
৫. যদি অতিরিক্ত শীতের কারণে কারো প্রাণ নাশ কিংবা পীড়া বৃদ্ধির সম্ভাবনা থাকে, কিংবা পানি গরম করতে, কিংবা হাম্মামের (যে গরম পানি করে দিবে) বেতন দিতে অক্ষম হয়, তবে তার জন্য তাইয়াম্মুম করা জায়িয হবে।
৬. যদি পানির নিকটে কোনো হিংস্র জন্তু বা শত্রু থাকে, যাতে প্রাণ বিনাশ বা অর্থ লুণ্ঠন হতে পারে, কিংবা সর্প দংশনের আশঙ্কা থাকে অথবা পানির নিকটে কোনো অসৎ লোক কিংবা দুশ্চিরিত্রা মহিলা থাকে, সেখানে গেলে সম্ভ্রমহানী বা অসৎ ক্রিয়ার আশঙ্কা হয়, তবে তাইয়াম্মুম জায়িয হবে।
৭. কারো নিকট পানি আছে, কিন্তু তা দ্বারা অজু করলে নিজে বা তার পালিত পশু অথবা দলভুক্ত কোনো সঙ্গী পিপাসার্ত হতে পারে, তবে সেক্ষেত্রে তাইয়াম্মুম করা জায়িয হবে।
৮. পানি সঙ্গে আছে কিন্তু তা দ্বারা অজু করলে আহারের রুটি বা ভাত ইত্যাদি তৈরি করা যায় না, আর ক্ষুধায় কাতর হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, এমতাবস্থায় তাইয়াম্মুম জায়িয আছে।
যদি কোনো মুসাফির কুয়ার নিকট উপস্থিত হয়ে পানি তোলার বালতি, রশি কিংবা পানি উঠানোর জন্য যা প্রায়োজন তা না পায়, তবে তাইয়াম্মুম জায়িয হবে।
৯. কোনো মুসাফিরের অজু ভঙ্গ হলো, তার কাপড়ও নাপাক, তার কাছে এ পরিমাণ পানি আছে যে, তা দ্বারা অজু অথবা কাপড় ধৌত করা যায়, এমতাবস্থায় ওই পানি দ্বারা সে কাপড় ধৌত করবে এবং তাইয়াম্মুম করে নামায পড়বে।
১০. যদি অজু করতে গেলে জানাযা অথবা ঈদের নামায ফউত হবার আশঙ্কা হয়, তবে তাইয়াম্মুম জায়িয হবে।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (২)
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যাকাত সম্পর্কিত আহকাম, মাসায়িল ও ফাযায়িল (২)
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পর্দা পালন করা পুরুষ-মহিলা সবার জন্য ফরজ
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত মুবারক করা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসীর জন্য ফরযে আইন
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের আলোকে ছিরাতুল মুস্তাক্বীম উনার ছহীহ তাফসীর- ০১
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
যেখানে প্রাণীর ছবি থাকে, সেখানে রহমতের ফেরেশতা প্রবেশ করেন না
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
যা খাওয়া হারাম করা হয়েছে
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ইবলিসের পরে দ্বিতীয় উলামায়ে সূ হলো বালয়াম বিন বাউরা
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পবিত্র ক্বাবলাল জুমুআহ্, বা’দাল জুমুআহ্ এবং সুন্নাতুল ওয়াক্ত নামায উনার শরঈ আহকাম (৪)
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)












