সুন্নত মুবারক তা’লীম
দস্তরখানায় খাদ্য খাওয়ার বেমেছাল ফযীলত মুবারকসমূহ
, ০৮ ছফর শরীফ, ১৪৪৭ হিজরী সন, ০৪ ছালিছ, ১৩৯৩ শামসী সন , ০৩ আগস্ট, ২০২৫ খ্রি:, ২০ শ্রাবণ, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) সুন্নত মুবারক তা’লীম
দস্তরখানায় খাদ্য খাওয়ার ফযীলত মুবারক সম্পর্কে মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ اُمِّ الْمُؤْمِنِيْنَ الثَّالِثَةِ الصِّدِّيْقَةِ عَلَيْهَا السَّلَامُ قَالَتْ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ تُصَلِّي الْمَلَائِكَةُ عَلَى الرَّجُلِ مَا دَامَتْ مَائِدَتُهٗ مَوْضُوْعَةً.
অর্থ: সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন, হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা ঐ ব্যক্তির উপর ততক্ষণ পর্যন্ত পবিত্র রহমত মুবারক উনার দোয়া মুবারক করতে থাকেন, যতক্ষণ পর্যন্ত দস্তরখানা বিছানো থাকে। অর্থাৎ দস্তরখানায় খাবার খাওয়া পর্যন্ত হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা তার জন্য পবিত্র রহমত মুবারক কামনা করতে থাকেন। সুবহানাল্লাহ! (তাফসীরে কুরতুবী শরীফ-৬/৩৭৪)
সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন চিশ্তী আজমেরী সানজেরী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার “আনিসুল আরওয়াহ্” নামক বিশ্ববিখ্যাত কিতাবের ৮ম মজলিসের মধ্যে চামড়ার খয়েরী রঙের দস্তরখানায় আহার করার বেমেছাল ফযীলত মুবারক উল্লেখ করেছেন। নি¤েœ তা উল্লেখ করা হলো-
১. দস্তরখানায় খাবার খেলে প্রতি লোকমার ফযীলত মুবারক: নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “যে ব্যক্তি খয়েরী রঙের চামড়ার দস্তরখানায় এক লোকমা খাবার খাবে, তার প্রতিটি লোকমার প্রতিদানে তাকে ১০০টি করে ছওয়াব দেয়া হবে। সুবহানাল্লাহ! প্রতিটি লোকমার প্রতিদানে তার জন্য সম্মানিত জান্নাতে ১০০টি বালাখানা মুবারক নির্মাণ ও সুসজ্জিত করা হবে। সুবহানাল্লাহ! সে ব্যক্তি দায়েমীভাবে সম্মানিত জান্নাত উনার মধ্যে সমস্ত হযরত নবী ও রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের অফুরন্ত ছলাত এবং সালাম মুবারক লাভ করবে। সুবহানাল্লাহ!
২. দস্তরখানায় পড়ে যাওয়া খাবার উঠিয়ে খাওয়ার ফযীলত মুবারক: যে ব্যক্তি দস্তরখানায় খাবার খাবে এবং দস্তরখানায় পড়ে যাওয়া খাবার টুকে টুকে উঠায়ে বা তুলে খাবে, ক্বিয়ামতের দিন তার ডান হাতে আমলনামা দেয়া হবে, পেটের পীড়া দূরীভূত হবে, নেক সন্তান হবে, চোখের জ্যোতি ও স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পাবে। সুবহানাল্লাহ!
৩. দস্তরখানায় খাবার খাওয়া শেষ করার ফযীলত মুবারক: দস্তরখানায় আহার করে তা শেষ করার সাথে সাথেই মহান আল্লাহ পাক তিনি সে ব্যক্তির জীবনের গুনাহসমূহ মাফ করে দেন। সুবহানাল্লাহ!
৪. দস্তরখানায় আহার করার ফযীলত মুবারক: যে ব্যক্তি দস্তরখানায় আহার করবে, সে ব্যক্তি ১টি উমরাহ হজ্জের ছওয়াব পাবে এবং ১ হাজার ক্ষুধার্তকে পেট ভরে খাদ্য খাওয়ানোর ছওয়াব লাভ করবে। সে ব্যক্তি এতো বেশি ছওয়াব লাভ করবে, যেন সে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উম্মতের মধ্যে ১ হাজার বন্দীকে মুক্ত করে দিল। সুবহানাল্লাহ!
৫. দস্তরখানায় নিয়মিত খাবার খাওয়ার ফযীলত মুবারক: যে ব্যক্তি চামড়ার দস্তরখানায় সবসময় খাবার খাবে, রোজ হাশরের দিনে হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি তাকে সম্মানিত জান্নাতী পোশাক পরিয়ে বোরাকে করে উপস্থিত করবেন এবং এই অবস্থায় তাকে সম্মানিত জান্নাতে প্রবেশ করিয়ে দিবেন। সুবহানাল্লাহ!
৬. দস্তরখানায় মেহমানকে খাদ্য খাওয়ানোর ফযীলত মুবারক: যে ব্যক্তি কোন মেহমানকে খয়েরী রংয়ের চামড়ার দস্তরখানায় খাবার খাওয়াবে, সে প্রতিটি দানার প্রতিদানে ১ হাজার করে নেকী বা ছওয়াব লাভ করবে। সুবহানাল্লাহ! যে ব্যক্তি খয়েরী রংয়ের চামড়ার দস্তরখানায় খাদ্য খাবে, মেহমানকে খাওয়াবে মহান আল্লাহ পাক তিনি তাকে দয়া-রহমত মুবারক ও ক্ষমার কুদরতী নজর মুবারকে দেখবেন এবং তাকে সম্মানিত জান্নাতে প্রবেশ করাবেন এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তাকে মহাসম্মানিত শাফাআত মুবারক করে সাথে নিয়ে সম্মানিত জান্নাতে প্রবেশ করবেন। সুবহানাল্লাহ!
৭. দস্তরখানায় গরীব-দুঃখীকে খাদ্য খাওয়ানোর ফযীলত মুবারক: যে ব্যক্তি দস্তরখানায় কোন গরীব দুঃখীকে আহার করাবে, তাকে সর্বশ্রেষ্ঠ মর্যাদায় সমাসীন করা হবে। সুবহানাল্লাহ!
-আহমদ হুসাইন
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
ওযূ করার খাছ সুন্নতী তারতীব মুবারক ও মাসয়ালা-মাসায়িল (১)
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ইস্তিঞ্জার আদব ও ঢিলা-কুলুখ ব্যবহার করা সম্পর্কে (২)
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ইস্তিঞ্জার আদব ও ঢিলা-কুলুখ ব্যবহার করা সম্পর্কে (১)
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
প্রয়োজনে ছুরি এবং চাকু দিয়ে খাবার কেটে খাওয়াও মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
জুতা-মোজা ঝেড়ে পরিস্কার করে পরিধান করা খাছ সুন্নত মুবারক
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
চামড়ার মোজা পরিধান করা খাছ সুন্নত মুবারক
৩০ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
খাছ সুন্নতী না’লাইন বা স্যান্ডেলের বর্ণনা (০৩)
২৯ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
খাছ সুন্নতী না’লাইন বা স্যান্ডেলের বর্ণনা (০২)
২৮ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
খাছ সুন্নতী না’লাইন বা স্যান্ডেলের বর্ণনা (০২)
২৮ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী খাবার ‘পনির’
২৮ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
খাছ সুন্নতী না’লাইন বা স্যান্ডেলের বর্ণনা (০১)
২৭ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
মহাসম্মানিত খাছ সুন্নতী বিছানা মুবারক উনার বর্ণনা
২৬ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)












