সুন্নত মুবারক তা’লীম
পবিত্র হামদ্ শরীফ, পবিত্র না’ত শরীফ ও পবিত্র ক্বাছীদাহ শরীফ লেখা, পাঠ করা ও শোনা খাছ সুন্নত মুবারক। গান-বাজনা করা, শোনা হারাম ও কুফরীর অন্তর্ভুক্ত (৪)
, ১৬ই রবিউছ ছানী শরীফ, ১৪৪৭ হিজরী সন, ১০ খমীছ, ১৩৯৩ শামসী সন , ০৯ অক্টোবর, ২০২৫ খ্রি:, ২৫ আশ্বিন, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) সুন্নত মুবারক তা’লীম
পূর্ব প্রকাশিতের পর
পবিত্র সামা শরীফ সম্মানিত শরীয়তসম্মত তো অবশ্যই বরং মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক উনার অন্তর্ভুক্ত:
ভারতের আজমীর শরীফ-এ শুয়ে আছেন ৭ম হিজরী শতকের মুজাদ্দিদ, সুলত্বানুল হিন্দ, খাজা গরীবে নেওয়াজ হাবীবুল্লাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি (৫৩৬-৬৩৩ হিজরী) এবং দিল্লীতে রয়েছেন ৮ম হিজরী শতকের মুজাদ্দিদ, মাহবূব-ই-ইলাহী হযরত নিযামুদ্দীন আউলিয়া রহমতুল্লাহি আলাইহি (৬৩৫-৭২৫ হিজরী) উনারা। এই মহান মুজাদ্দিদদ্বয় রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক উনার অনুসরণে পবিত্র হামদ-নাত শরীফ ও ক্বাছীদা শরীফ শুনতেন এবং পবিত্র সামা শরীফ উনার মাহফিলের আয়োজন করতেন। আজকে উনাদের পবিত্র মাযার শরীফ প্রাঙ্গনে আয়োজিত কাওয়ালী অনুষ্ঠান দিয়ে উনাদের সামা শরীফ শোনার বিষয়টি যেমনি উপলব্ধি করা সম্ভব নয়, তেমনি কিছু কিতাবী ইলম দিয়ে মুজাদ্দিদগণ উনাদের পরিচয় পাওয়া সম্ভব নয়। তবুও আমরা মুজাদ্দিদগণ উনাদের উপর কিছুটা আলোচনা করবো যাতে বোঝা যায় উনাদের পক্ষে কাওয়ালী শোনা কী আদৌ সম্ভব ছিল কিনা। যদিও এ রকম ধারণা করাও আদবের খিলাফ কিন্তু আমাদের লেখার স্বচ্ছতা এবং সাধারণের উপলব্ধিকে শানিত করার লক্ষ্যেই এই চেষ্টা।
মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হাদীছে কুদছী শরীফ উনার মধ্যে রয়েছে, যা আবূ দাউদ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে যে, “প্রত্যেক হিজরী শতকের শুরুতে মহান আল্লাহ পাক তিনি একজন মুজাদ্দিদ পাঠাবেন, যিনি সম্মানিত দ্বীন উনার তাজদীদ মুবারক করবেন। ” একজন মানুষ কষ্ট সাধনা করে ওলীআল্লাহ হতে পারেন কিন্তু মুজাদ্দিদ হিসেবে আসা মানুষের ইচ্ছার উপর নির্ভরশীল নয়। মুজাদ্দিদগণ উনারা বিশেষভাবে মনোনীত। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যে সম্মানিত দ্বীন মুবারক রেখে গেছেন, মুজাদ্দিদগণ উনারা হচ্ছেন প্রকৃত ওয়ারিছ। উনারা হুবহু সেই দ্বীনকে আবার জাগরিত করেছেন, করে যাচ্ছেন এবং করবেন। সামান্য কমও নয়, বেশিও নয়।
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের যুগের পর প্রথম মুজাদ্দিদ হিসেবে আসেন সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামে আ’যম আবূ হানিফাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি (৮০-১৫০ হিজরী)। এভাবে ৭ম হিজরী শতকের মুজাদ্দিদ ছিলেন সুলত্বানুল হিন্দ খাজা গরীব নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি (৫৩৬-৬৩৩ হিজরী) এবং ৮ম হিজরী শতকের মুজাদ্দিদ ছিলেন মাহবুব-ই ইলাহী হযরত নিযামুদ্দীন আউলিয়া রহমতুল্লাহি আলাইহি (৬৩৫-৭২৫ হিজরী)।
মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بُعِثْتُ لِكَسْرِ الْمَزَامِيْرِ وَالْأَصْنَامِ.
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,“আমি প্রেরিত হয়েছি বাদ্যযন্ত্র ও মূর্তি ধ্বংস করার জন্য।
সুতরাং মুজাদ্দিদগণ উনারা কিভাবে বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে কাওয়ালী শোনার বা গাওয়ার অনুমতি দেবেন? এসব বলা এবং ভাবাও চরম পর্যায়ের বেয়াদবি ও কুফরী। উনাদের অন্তরের পবিত্রতা সাধারণ মানুষের উপলব্ধির বাইরে। কিন্তু যারা নফসের অনুসরণ করে তারাই অবলীলায় বলতে পারে- ভারতে শুয়ে থাকা এই মহান মুজাদ্দিদদ্বয় উনারা বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে সামা, কাওয়ালী শুনতেন। নাউযুবিল্লাহ! নাউযুবিল্লাহ! নাউযুবিল্লাহ!
মুজাদ্দিদগণ উনারা সূক্ষ¥াতিসূক্ষ¥ সুন্নত মুুবারক উনার আমল করেন এবং সেই সময়ের অবলুপ্ত সুন্নত মুবারকসমূহ জিন্দা করে থাকেন। পবিত্র ক্বাছীদাহ শরীফ শোনা, লেখা, পাঠ করা, শোনার আয়োজন করা, উৎসাহ দিয়ে লিখানো সবই খাছ সুন্নত মুবারক উনার অন্তর্ভুক্ত। নুরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র মসজিদে নববী শরীফ উনার মধ্যে একটি আলাদা মিম্বর শরীফ বানিয়ে দিয়েছিলেন যেখানে বসে বিশিষ্ট ছাহাবী হযরত হাসসান বিন ছাবিত রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি পবিত্র ক্বাছীদাহ শরীফ পরিবেশন করতেন।
পাশের মহাসম্মানিত মিম্বর শরীফ উনার মধ্যে বসে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তা শ্রবণ মুবারক করতেন এবং কখনো আওড়াতেন। মূলত, ৭ম এবং ৮ম হিজরী শতকের মুজাদ্দিদগণ উনারা সেই সুমহান সুন্নত মুবারক উনার হুবহু অনুসরণে পবিত্র ক্বাছীদাহ শরীফ বা সামা শরীফ শোনার আয়োজন করতেন। যা সম্পূর্ণ শরীয়তসম্মত এবং খাছ সুন্নত মুবারক উনার অন্তর্ভুক্ত। (অসমাপ্ত)
-আহমদ হুসাইন
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
বিবাহের ক্ষেত্রে কুফু বা সমকক্ষতা রক্ষা করা পবিত্র সুন্নত মুবারক উনার অন্তর্ভুক্ত
১০ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
বিবাহের প্রস্তাব দেয়া এবং সম্মতি জ্ঞাপন করার মহাসম্মানিত সুন্নতী তরীক্বাহ
০৯ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
বিবাহ-শাদীর গুরুত্ব-ফযীলত ও খাছ সুন্নতী তারতীব (৩)
০৮ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
বিবাহ-শাদীর গুরুত্ব-ফযীলত ও খাছ সুন্নতী তারতীব (২)
০৭ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম সুন্নত মুবারক অনুসরণে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের বেমেছাল দৃষ্টান্ত
০৭ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক জিন্দা করার বেমেছাল ফযীলত
০৭ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
বিবাহ-শাদীর গুরুত্ব-ফযীলত ও খাছ সুন্নতী তারতীব (১)
০৬ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
মহাসম্মানিত সুন্নতী আসবাবপত্রের পরিচয় ও ব্যবহার করার গুরুত্ব-ফযীলত মুবারক
০৫ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
অত্যন্ত বরকতময় মহাসম্মানিত সুন্নতী খাদ্য “সিরকা” (৪)
০৪ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
অত্যন্ত বরকতময় মহাসম্মানিত সুন্নতী খাদ্য “সিরকা” (৩)
০৩ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
পবিত্র সুন্নত মুবারক উনার ইত্তিবা” তথা অনুসরণ-অনুকরণ করার গুরুত্ব-তাৎপর্য এবং বেমেছাল ফযীলত মুবারক (৬)
০৩ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
অত্যন্ত বরকতময় মহাসম্মানিত সুন্নতী খাদ্য “সিরকা” (২)
০২ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)












