বদ নযর বা কুদৃষ্টি এবং তার শরয়ী আহকাম (৪)
, ০১ রবীউছ ছানী শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ০৭ খ্বমিস , ১৩৯২ শামসী সন , ০৫ অক্টোবর , ২০২৪ খ্রি:, ২০ আশ্বিন, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
পরহেজগার-মুত্তাক্বী লোকেরও বদ নযর লাগতে পারে:
বদ লোকদের যেমন বদ নযর লাগতে পারে তেমনি পরহেজগার-মুত্তাক্বী লোক, উনাদের অজান্তে উনাদের বদ নযর লাগতে পারে। পবিত্র হাদীছ শরীফে বর্ণিত আছে-
عَنْ حضرت مُحَمَّدِ بْنِ أَبِي أُمَامَةَ بْنِ سَهْلِ بْنِ حُنَيْفٍ، أَنَّهُ سَمِعَ أَبَاهُ، يَقُولُ: اعْتَلَّ أَبِي سَهْلِ بْنِ حُنَيْفٍ، فَنَزَعَ جُبَّةً كَانَتْ عَلَيْهِ وَعَامِرُ بْنُ رَبِيعَةَ يَنْظُرُ، وَكَانَ سَهْلٌ رَجُلاً أَبْيَضَ حَسَنَ الْجِلْدِ، فَقَالَ لَهُ عَامِرٌ: مَا رَأَيْتُ كَالْيَوْمِ وَلاَ عَذْرَاءَ، فَوُعِكَ سَهْلٌ مَكَانَهُ، فَاشْتَدَّ وَعْكُهُ، فَأَتَى رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَأَخْبَرَهُ أَنَّ سَهْلاً وُعِكَ وَأَنَّهُ غَيْرُ قَادِرٍ أَنْ يَرْفَعَ رَأْسَهُ يَا رَسُولَ اللهِ، فَأَتَاهُ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَأَخْبَرَهُ سَهْلٌ بِالَّذِي كَانَ مِنْ شَأْنِ عَامِرٍ، فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: عَلاَمَ يَقْتُلُ أَحَدُكُمْ أَخَاهَ؟ فِي حَدِيثِ الْحَارِثِ أَلاَ بَرَّكْتَ؟ إِنَّ الْعَيْنَ حَقٌّ، تَوَضَّأْ فَرَاحَ سَهْلٌ مَعَ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَيْسَ بِهِ بَأْسٌ
অর্থ: হযরত মুহম্মদ ইবনে আবূ উমামা ইবনে সাহ্ল ইবনে হুনাইফ রহমতুল্লাহি আলাইহি। তিনি উনার সম্মানিত পিতা হযরত আবূ উমামা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে বলতে শুনেছেন। তিনি বলেন, একদিন আমার সম্মানিত পিতা হযরত সাহ্ল ইবনে হুনাইফ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি একটি ঝর্ণাধারায় গোসল করতে গেলেন। যখন তিনি জামা মুবারক খুললেন তখন সাইয়্যিদুনা হযরত আমির ইবনে রবীয়াহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি উনাকে দেখে ফেলেন। উল্লেখ্য যে, সাইয়্যিদুনা হযরত সাহ্ল ইবনে হুনাইফ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি ছিলেন অত্যন্ত খুবছূরত চেহারা মুবারকের অধিকারী। বদরী ছাহাবী সাইয়্যিদুনা হযরত আমির ইবনে রবীয়াহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি উনাকে দেখতে পেয়ে বললেন, এতো সুন্দর চেহারা মুবারকের অধিকারী আমি জীবনে কাউকে দেখিনি। এমনকি কোন কুমারী মেয়ের চেহারাও এতো সুন্দর নয়। সাইয়্যিদুনা হযরত আমির ইবনে রবীয়াহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু এ কথা বলার সাথে সাথে সাইয়্যিদুনা হযরত সাহ্ল ইবনে হুনাইফ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু সেখানে বেহুঁশ হয়ে পড়ে গেলেন। উনার শরীর মুবারকে জ্বর চলে আসলো। তিনি জ্বরের প্রকোপে ছটফট করতে লাগলেন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে এই অবস্থা জানানো হলো। খবর পেয়ে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনাকে দেখতে আসলেন। সাইয়্যিদুনা হযরত সাহ্ল ইবনে হুনাইফ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে হঠাৎ এমনটি হওয়ার কারণ জিজ্ঞাসা করলেন। তিনি পুরো ঘটনা খুলে বললেন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হযরত আমির ইবনে রবীয়াহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে লক্ষ করে ইরশাদ মুবারক করলেন, আপনারা কেন আপনাদের ভাইকে বদ নযর দিয়ে হত্যা করছেন? আপনি যখন উনাকে দেখলেন তখন বরকতের জন্য দোয়া করলেন না কেন? নিশ্চয়ই বদ নযর সত্য তথা তার প্রভাব আছে। অর্থাৎ দোয়া করলে বদ নযর লাগতো না। অতঃপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হযরত আমির ইবনে রবীয়াহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে বললেন, সাইয়্যিদুনা হযরত সাহ্ল ইবনে হুনাইফ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার সুস্থতার জন্য ওযু করুন। সাইয়্যিদুনা হযরত আমির ইবনে রবীয়াহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি ওযু করলেন। তারপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আদেশ মুবারকে সেই ওযুর পানি সাইয়্যিদুনা হযরত সাহ্ল ইবনে হুনাইফ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার শরীর মুবারকে ঢেলে দিলেন। মহান আল্লাহ পাক উনার রহমতে তিনি সুস্থ হয়ে উঠলেন। (মুয়াত্তা ইমাম মালিক-১৬৮১, রুকইয়াহ্-৭৪)
-আল্লামা সাইয়্যিদ মুহম্মদ আব্দুল হালীম।
a
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
“আন নি’মাতুল কুবরা আলাল আলাম” কিতাবের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে বিরোধিতাকারীদের আপত্তির জবাব
১৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ইসলামী শরীয়ত মুতাবিক- ছবি তোলা হারাম
১৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা (৩)
১৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে হালাল ও হারাম উভয়ের গুরুত্ব সম্পর্কে (১২)
১৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
১৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
গ্রীনিচকে ০ (শূন্য) ডিগ্রি দ্রাঘিমায় ধরে মূল মধ্যরেখা স্থির করার কোন ঐতিহাসিক গুরুত্ব নেই: পবিত্র কা’বা শরীফ উনার অবস্থান ০ (শূন্য) ডিগ্রি ০ (শূন্য) মিনিট ০ (শূন্য) সেকেন্ড ডিগ্রি দ্রাঘিমা ধরে ১৫ ডিগ্রি অন্তর অন্তর সময় অঞ্চলে ভাগ করাই সর্বোত্তম (১)
১৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
যে সকল ওলামায়ে সূ’রা মন্দির ও মূর্তি পাহারা দিয়েছে, পূজা করতে সাহায্য-সহযোগিতা করেছে এবং সমর্থন করেছে, তারা প্রত্যেকেই মূর্তিপূজারী ও মুশরিক (৯)
১৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সম্মানিত মুসলমান উনাদের সবচেয়ে বড় শত্রু কাফির-মুশরিকরা (৩)
১২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িজ
১২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)