ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা (৬)
, ৩ রা জুমাদাল ঊখরা শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ০৮ সাবি’, ১৩৯২ শামসী সন , ০৬ ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রি:, ২১ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) স্থাপত্য নিদর্শন
শয়তান যে মানুষকে নেক সুরতে ধোঁকা দেয়, এ বিষয়টি ভালভাবে অনুধাবন করেছিল শয়তানের অনুচর ইহুদী এবং খ্রিষ্টানরা। মুসলমানদের সোনালী যুগ এসেছিল শুধু ইসলামের পরিপূর্ণ অনুসরণের ফলে। শয়তানের চর ইহুদী খ্রিষ্টানরা বুঝতে পেরেছিল মুসলমানদের মধ্যে বিভেদ, অনৈক্য, সংঘাত সৃষ্টি করতে পারলেই ইসলামের জাগরণ এবং বিশ্বশক্তি হিসেবে মুসলমানদের উত্থান ঠেকানো যাবে। আর তা করতে হবে ইসলামের মধ্যে ইসলামের নামে নতুন মতবাদ প্রবেশ করিয়ে। শুরু হয় দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা; যার মূলে থাকে খ্রিষ্টীয় ব্রিটিশ সম্রাজ্যবাদ। জন্ম হয় ওহাবী মতবাদের। ওহাবী মতবাদ সৃষ্টির মূলে থাকে একজন ব্রিটিশ গুপ্তচর হেমপার। মিশর, ইরাক, ইরান, হেজাজ ও তুরস্কে তার গোয়েন্দা তৎপরতা চালায় মুসলমানদের বিভ্রান্ত করার জন্য ÒConfession of British Spy and British enmity against Islam”গ্রন্থ হচ্ছে হেমপারের স্বীকারোক্তি মূলক রচনা। যা মূল গ্রন্থ থেকে ধারাবাহিকভাবে অনুবাদ প্রকাশ করা হবে। ইনশাআল্লাহ!
(পূর্ব প্রকাশিতের পর)
তৃতীয় পাঠ:
আমার বন্ধুরা, আমার আগেই লন্ডনে ফিরে এসে মন্ত্রণালয় থেকে নতুন নির্দেশ লাভ করে। আমিও ফিরে আসার পর নতুন নির্দেশ পাই। তবে দুঃখজনকভাবে আমরা মাত্র ছয়জন ফিরে আসি।
সচিব বললেন, বাকী চারজনের একজন মুসলমান হয়ে মিশরেই রয়ে গেছে। তথাপি সচিব সন্তুষ্ট ছিল কারণ সে মিশরে রয়ে গেলেও বিশ্বাসঘাতকতা করে কোন গোপন তথ্য ফাঁস করেনি। দ্বিতীয়জন রাশিয়া চলে যায় এবং সেখানে থেকে যায়। জন্মগতভাবে সে ছিল রাশিয়ান। সচিব তার জন্য খুব দুঃখ পেল। সে রাশিয়া গিয়ে আর ফিরে আসেনি বলে দুঃখ পায়নি। দুঃখ পেয়েছিল এ কারণে যে, সে রাশিয়ার হয়ে উপনিবেশ মন্ত্রণালয়ের বিরুদ্ধে গুপ্তচরবৃত্তির চালিয়েছে এবং মিশন শেষে সে দেশে ফিরে গেছে। তৃতীয়জন, সচিব যা বললেন, বাগদাদের পাশ্ববর্তী শহর ‘ইমরায়’ প্লেগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। চতুর্থজন, ইয়েমেনের সানায় অবস্থানকালীন সময় পর্যন্ত মন্ত্রণালয়ের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে এবং বছরখানেক সময় ধরে মন্ত্রণালয়ে রিপোর্ট পাঠায়; পরবর্তীতে তার রিপোর্ট পাঠানো বন্ধ হয়ে যায় এবং হাজার চেষ্টা করেও তার কোন হদিস পাওয়া যায়নি। চারজনের এভাবে হারিয়ে যাওয়ার বিষয়টি ছিল মন্ত্রণালয়ের জন্য একটি বড় বিপর্যয়। কেননা, লোক সংখ্যায় আমরা কম হলেও দায়িত্ব পালনের দিক থেকে আমরা ছিলাম একটা জাতি। সে জন্যে প্রত্যেকের উপর আমাদের খুব হিসেব নিকেশ করে কাজ করতে হয়।
রিপোর্টের কিছু অংশ বিশ্লেষণ করার পর, আমাদের চারজনের রিপোর্ট পর্যালোচনার জন্য সচিব এক সভা আহবান করেন। আমার বন্ধুরা যখন তাদের রিপোর্ট দিল, তখন আমিও আমার রিপোর্ট পেশ করলাম। আমার রিপোর্ট থেকে তারা কিছু কিছু নোট নিলো। মন্ত্রী, সচিব ও অন্যান্য যারা সভায় যোগ দিয়েছিল সবাই আমার কাজের প্রশংসা করলো, কিন্তু শ্রেষ্ঠত্বের বিচারে আমি হলাম তৃতীয়। আমার বন্ধুদের মধ্যে জর্জ বেলকাউড হয়েছিল প্রথম এবং হেনরি ফেনস হয়েছিল দ্বিতীয়।
সন্দেহ নেই যে, তুর্কী ও আরবী ভাষা, কুরআন ও শরীয়ত শিখে আমি বড় সফলতা অর্জন করি কিন্তু অটোম্যান সম্রাজ্যের দূর্বল দিকগুলো নিয়ে মন্ত্রণালয়কে কোন রিপোর্ট দিতে পারিনি। দু’ঘণ্টা ধরে সম্মেলন চলার পর সচিব আমার ব্যার্থতার কারণ জানতে চাইলে, আমি বললাম, “আমার প্রধান কাজ ছিল ভাষা, কুরআন এবং শরীয়ত শিক্ষা করা। আমি অতিরিক্ত কিছুর জন্য কোন সময় ব্যয় করতে পারিনি। কিন্তু আপনি যদি আমার উপর আস্থা রাখেন তবে এবার আপনাকে খুশি করতে পারবো। ”
সচিব বললেন যে, তুমিও সফলতা অর্জন করেছো তবে তিনি আশা করেছিলেন আমি প্রথম হবো। তিনি বলতে লাগলেন, শোন হেমপার, পরবর্তী মিশনে তোমাকে দু’টো কাজ করতে হবে।
(১) মুসলিমদের দূর্বল জায়গাগুলো খুজে বের করতে হবে। যার মাধ্যমে আমরা তাদের দেহে প্রবেশ করে তাদের শরীরের জোড়াগুলো আলাদা করে ফেলবো। নিশ্চয়ই, শত্রুকে আঘাত করার এটাই পথ।
(২) যেই মুহূর্তে এসব দূর্বল অবস্থানগুলো শনাক্ত করতে পারবে এবং যেভাবে বললাম সেভাবে কাজ করতে পারবে (অন্যভাবে বলতে গেলে মুসলমানদের মধ্যে অনৈক্যের বীজ বপন করে তাদের পরস্পরের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিতে পারবে), তখন তুমি হবে সবচেয়ে সফল এজেন্ট এবং মন্ত্রণালয় থেকে মেডেল অর্জন করবে।
ভাষান্তর : আবুল বাশার।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
মুসলমানদের শিল্পকলার এক অনন্য নিদর্শন ইসলামী মৃৎপাত্র (২)
০৩ জুলাই, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
মুসলমানদের শিল্পকলার এক অনন্য নিদর্শন ইসলামী মৃৎপাত্র
১৮ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
দিল্লীর কুতুব মিনার গড়ে উঠেছিলো যে ঐতিহাসিক মসজিদকে ঘিরে
০৪ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মুসলমানদের শাসনামলে কাঠ শিল্প
২৮ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মসজিদের নগরী ঢাকার ঐতিহাসিক ৪টি মসজিদ
২৬ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
ঐতিহ্যবাহী গোর-এ-শহীদ ঈদগাহ ময়দান
২১ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
চট্টগ্রামে ঐতিহাসিক বদর আউলিয়া রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার দরগাহ (২)
১৪ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
চট্টগ্রামে ঐতিহাসিক বদর আউলিয়া রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার দরগাহ (১)
০৭ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
২০০ বছরের প্রাণ ৪০০ মণ আম!
০১ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
বন্দরের ঐতিহাসিক নিদর্শন বাবা সালেহ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মাজার শরীফ
৩০ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
আরবের লিপিশিল্প: আরবি লিপিশিল্পে ব্যবহৃত উপকরণ, কলাকৌশল ও বৈশিষ্ট্য
২১ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মুঘল আমলের নিরাপত্তা নিদর্শন হাজীগঞ্জ দুর্গ
০৬ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)