ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা (৩৮)
, ১৬ জুমাদাল ঊলা শরীফ, ১৪৪৭ হিজরী সন, ১০ সাদিস, ১৩৯৩ শামসী সন , ০৮ নভেম্বর, ২০২৫ খ্রি:, ২৩ কার্তিক, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) স্থাপত্য নিদর্শন
শয়তান যে মানুষকে নেক সুরতে ধোঁকা দেয়, এ বিষয়টি ভালভাবে অনুধাবন করেছিল শয়তানের অনুচর ইহুদী এবং খ্রিষ্টানরা। মুসলমানদের সোনালী যুগ এসেছিল শুধু ইসলামের পরিপূর্ণ অনুসরণের ফলে। শয়তানের চর ইহুদী খ্রিষ্টানরা বুঝতে পেরেছিল মুসলমানদের মধ্যে বিভেদ, অনৈক্য, সংঘাত সৃষ্টি করতে পারলেই ইসলামের জাগরণ এবং বিশ্বশক্তি হিসেবে মুসলমানদের উত্থান ঠেকানো যাবে। আর তা করতে হবে ইসলামের মধ্যে ইসলামের নামে নতুন মতবাদ প্রবেশ করিয়ে। শুরু হয় দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা; যার মূলে থাকে খ্রিষ্টীয় ব্রিটিশ সম্রাজ্যবাদ। জন্ম হয় ওহাবী মতবাদের। ওহাবী মতবাদ সৃষ্টির মূলে থাকে একজন ব্রিটিশ গুপ্তচর হেমপার। মিশর, ইরাক, ইরান, হেজাজ ও তুরস্কে তার গোয়েন্দা তৎপরতা চালায় মুসলমানদের বিভ্রান্ত করার জন্য “Confession of British Spy and British enmity against IslamÓ গ্রন্থ হচ্ছে হেমপারের স্বীকারোক্তি মূলক রচনা। যা মূল গ্রন্থ থেকে ধারাবাহিকভাবে অনুবাদ প্রকাশ করা হবে। ইনশাআল্লাহ!
(পূর্ব প্রকাশিতের পর)
(পূর্বে বর্ণিত মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রদত্ত বইয়ের বর্ণনায়)
৫. মুসলিম দেশ এবং অটোম্যান রাষ্ট্রগুলোকে যতটা সম্ভব ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাষ্ট্রে ভেঙ্গে ফেলতে হবে এবং এমন ষড়যন্ত্র করতে হবে যাতে তারা সব সময় নিজেদের মধ্যে ঝগড়া বিবাদে ব্যস্ত থাকে। উদাহরণ হিসেবে আজকের ভারতের কথা বলা যায়। “বিভক্ত করো আর আধিপত্য বিস্তার করো এবং বিভক্ত করো আর ধ্বংস করো” এটাই হোক সাধারণ থিওরি।
৬. ইসলামের মূল সৌন্দর্যের মধ্যে ভেজাল আনতে হলে বিভ্রান্তিকর ধর্মীয় মতের সংযোজন এবং বিভিন্ন দল-উপদলের মিশ্রণ ঘটানো প্রয়োজন।
এটা বাস্তবায়িত করতে আমাদের অবশ্যই এমন একটা ধর্মের আবিস্কার করতে হবে যা তাদের নফসের ইচ্ছার সাথে খাপ-খাইয়ে যেতে পারে। শিয়া অধ্যুষিত দেশগুলোতে আমরা চার ধরণের ধর্মের প্রচলন করবো।
(ক) এমন এক ধর্ম যার ধর্মীয় নেতা হবেন ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম।
(খ) এমন এক ধর্ম যাদের ধর্মীয় নেতা হবেন ইমাম জাফর সাদিক আলাইহিস সালাম।
(গ) এমন এক ধর্ম যাদের ধর্মী নেতা হবেন ইমাম মাহদী আলাইহিস সালাম।
(ঘ) এমন এক ধর্ম যাদের নেতা হবেন হযরত আলী আলাইহিস সালাম। (আলী রিদা)
প্রথমটার জন্যে কারবালা হচ্ছে উপযুক্ত জায়গা, দ্বিতীয়টার জন্যে ইস্পাহান, তৃতীয়টার বেলায় সামারা আর চতুর্থটির জন্যে খোরাসানই হবে উপযুক্ত স্থান।
ইতোমধ্যে সুন্নীদের চার মাযহাবকে অবনমিত করে চারটি সম্পূর্ণ নতুন ধর্মে রূপান্তরিত করাতে হবে। এলক্ষ্যে নজদে আমরা একটি নূতন ইসলামী দলের প্রতিষ্ঠা করবো এবং সকল প্রুপের মধ্যে একটা রক্তক্ষয়ী দাঙ্গা হাঙ্গামা বাঁধিয়ে দেয়ার চেষ্টা করবো। চার মাযহাবের যাবতীয় বই-পত্র নষ্ট করে ফেলতে হবে যাতে করে প্রত্যেক দলের লোকেরা নিজেদেরকে একমাত্র বৈধ গ্রুপ বলে মনে করে এবং অন্যদেরকে মনে করে ধর্মবিরোধী, যাদেরকে কতল করে ফেলতে হবে।
৭. অনিষ্ট এবং বিদ্বেষের বীজ হিসেবে শত্রুতা, ব্যভিচার, শরাব, জুয়া ইত্যাদি মুসলমানদের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে হবে। সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর অমুসলিমদেরকেও এ ব্যাপারে কাজে লাগানো যেতে পারে। অভিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছার জন্য এরকম মানসিকতা সম্পন্ন লোকদের একটি সাংঘাতিক সৈন্যদল তৈরী করতে হবে।
৮. মুসলিম দেশগুলোর দুর্বিনীত, কলুষিত নেতাচক্র এবং নিষ্ঠুর দলপতিদের প্রশিক্ষণ ও শিক্ষাদানে আমরা চেষ্টার কোন ত্রুটি করবো না, করা উচিতও নয়।
এভাবে তাদেরকে ক্ষমতায় বসিয়ে শরীয়তকে মান্য করার ব্যাপারে নিষেধ জারির ব্যবস্থা করতে প্রয়োজনীয় আইন প্রণয়ন করবো। তাদেরকে এমনভাবে কাজে লাগাতে হবে যাতে উপনিবেশিক মন্ত্রণালয় যাই করতে আদেশ দেবে তারা তাই যেন বিনা দ্বিধায় সম্পন্ন করতে তৎপর হয়। তাদের মাধ্যমেই আমরা মুসলমানদের মধ্যে এবং মুসলিম দেশগুলোতে আইনী সহায়তায় আমাদের ইচ্ছাগুলোকে বাস্তবায়িত করতে সক্ষম হবো।
আমরা এমন একট জীবন ধারা ও পরিবেশ গড়ে তুলবো যেখানে শরীয়ত মান্য করা একটি অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে এবং ইবাদত করা হবে পশ্চাদমুখীতা। মুসলমানগণ যেন অমুসলিমদের মধ্য থেকে তাদের নেতা নির্বাচনে উৎসাহিত হয় আমরা সে কৌশলও অবলম্বন করবো। এসব করতে গিয়ে আমাদের কিছু ছদ্মবেশী এজেন্টকে উচ্চপর্যায়ে নিয়োগদান করবো, তারা মুসলমান এবং মুসলিম দেশগুলোতে ইসলামের আশা আকাঙ্খা প্রতিফলনের নামে আমাদের ইচ্ছাগুলোকেই বাস্তবায়িত করবে এবং এর জন্যে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সাহায্য নেয়া হবে।
৯. আরবী শিক্ষা বন্ধ করতে যথাসাধ্য চেষ্টা চালাবে। আরবী ভাষা বাদে অন্যান্য ভাষা যেমন ফার্সী, কুর্দিশ এবং পশতু এ সকল ভাষাসমূহকে জনপ্রিয় করার চেষ্টা করবে। আরব দেশসমূহে বিদেশী ভাষা প্রবেশ করিয়ে দেবে এবং কুরআন শরীফ ও হাদীছ শরীফের প্রাঞ্জল ভাষা ও তার সাহিত্যগুণকে নষ্ট করার লক্ষ্যে আঞ্চলিক ভাষাকে জনপ্রিয় করার চেষ্টা করবে।
ভাষান্তর : আবুল বাশার।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
অস্থায়ী হাসপাতাল নির্মাণে মুসলমানদের অবদান
২৩ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
মালয়েশিয়ার ঐতিহাসিক মসজিদ “মসজিদ নেগারা”
১৬ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
যে মসজিদ থেকে গভীর রাতে ভেসে আসতো যিকিরের আওয়াজ
০৯ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদ হযরত শাহ মখদুম রুপোশ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মাজার শরীফ
০২ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
বয়নশিল্প নিদর্শনে মুসলমানগণ (৬)
২৬ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
বয়নশিল্প নিদর্শনে মুসলমানগণ (৫)
১৯ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
বয়নশিল্প নিদর্শনে মুসলমানগণ (৪)
১২ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
বয়নশিল্প নিদর্শনে মুসলমানগণ (৩)
০৫ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
বয়নশিল্প নিদর্শনে মুসলমানগণ (২)
২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
স্থাপত্যশৈলীর অনন্য স্থাপনা মানিকগঞ্জের ‘ওয়াসি মহল’
২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
বয়নশিল্প নিদর্শনে মুসলমানগণ (১)
২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
মুসলমানদের শিল্পকলার এক অনন্য নিদর্শন ইসলামী মৃৎপাত্র (১১)
১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)












