সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার ইতিহাসে সমৃদ্ধশালী ও গুরুত্বপূর্ণ নৌবন্দরসমূহ (২)
, ০৯ শাওওয়াল শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ২০ হাদী আশার, ১৩৯১ শামসী সন , ১৯ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রি:, ০৬ বৈশাখ, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) ইতিহাস
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার ইতিহাসে সমুদ্র অভিযান, নৌ-যুদ্ধ, নৌ-বাণিজ্য গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে। আর এসবের পাশাপাশিসমূহ ঐতিহাসিক ঘটনার সাক্ষী হয়েছিলো তৎকালীন বিভিন্ন নৌবন্দরগুলো। যেগুলো মুসলমানগণ বিজয় করেছিলেন। এখন আমরা মুসলমানদের বিজয় করা নৌবন্দর সমূহের সংক্ষিপ্ত পরিচিত জানবো-
সুহার:
সুহার আম্মানের রাজধানী ও নৌবন্দর ছিলো। হিজরী চতুর্থ শতকে এই বন্দরটি স্বীয় প্রাচুর্য ও বর্ণাঢ্য বাণিজ্যকেন্দ্র হিসেবে ইয়েমের সানার চাইতেও উন্নত ছিলো। সমকালীন পর্যটকদের ভাষায়, সুহারের বাজারটি ছিলো অত্যন্ত জৌলুসময়। গোটা সমুদ্র উপকূল জুড়ে বিস্তৃত। সুউচ্চ ও রুচিময় ঘরদোর শালকাঠ ও ইট দ্বারা নির্মিত। উপকূলে মিঠা পানির নহর প্রবাহিত ছিলো।
জেদ্দা:
এ নৌবন্দরটি প্রাচীনকাল থেকেই আবাদ ছিলো। জাহিলী যুগেও এটি পবিত্র মক্কা শরীফ উনার নৌবন্দর ছিলো। অতঃপর আফ্রিকা, আবিসিনিয়া, সিন্ধু ও ইরানে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার অগ্রগতির সাথে সাথে এরও সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায়।
শহর কুলসুম:
লোহিত সাগরের তীরে অবস্থিত এক বিরাট শহর ও নৌবন্দরটি ছিলো এটি। বিশেষভাবে খাদ্য সরবরাহ কেন্দ্ররূপে ব্যবহৃত হতো। যেসব ব্যবসায়ীরা মিশর থেকে হিজাজ ও ইয়ামেনে খাদ্যশস্য সরবরাহ করতেন এই বন্দরটি তাদের প্রধান বাণিজ্যকেন্দ্র ছিলো। এখানে বিভিন্ন দেশের ব্যবসায়ীরা বসবাস করতেন।
ঈলা:
ঈলার বর্তমান নাম আকাবা। এটি ছিলো সিরিয়ার সুপ্রসিদ্ধ নৌবন্দর। ঈলা বন্দর লোহিত সাগরের পাড়ে সমৃদ্ধশালী শহর ছিলো। এখানে সিরিয়া, মিশর ও উত্তর আফ্রিকার বাণিজ্য জাহাজ যাতায়াত করত্ োঈলা ছিলো হরেক রকম পণ্যদ্রব্যের বাণিজ্যকেন্দ্র। উত্তর আফ্রিকার হজ্জযাত্রীগণ এই বন্দরেই অবতরণ করতেন।
মাসীনা:
মাসীনা ছিলো তৎকালীন ইতালির মুসলিম অধ্যুষ্যিত সিসিলীর সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক ও সামরিক বন্দর। এখানে পাশ্চাত্য ও প্রাচ্যের ব্যবসায়ীরা বাণিজ্যক পণ্যদ্রব্য লেনদেন করতো। মাসীনাতেই সিসিলির সর্ববৃহৎ জাহাজ নির্মাণ কারখানা স্থাপন করেছিলেন মুসলমানরা।
পালার্মো:
পালার্মো ছিলো সিসিলীর রাজধানী ও বিশাল নৌবন্দর। এখানেও যুদ্ধ জাহাজের একটি বিশাল কারখানা ছিলো। হাজার হাজার শ্রমিক-মিস্ত্রী এই কারখানায় কাজ করতেন।
মারীয়া:
মারীয়া স্পেনের সর্ববৃহৎ নৌবন্দর। এখান থেকে ব্যবসায়ীরা জাহাজে আরোহন করতেন। মস্তবড় বাণিজ্য ও যুদ্ধ জাহাজ নির্মাণ কারখানা ছিলো এখানে। স্বীয় বিশালত্ব ও যাতায়াত সুবিধার জন্য এটিকে স্পেনে প্রাচ্যের সিংহদ্বার বলা হতো। সাগরের পানি নগর দেয়ালে এসে আছড়ে পড়তো। এখানে উন্নতমানের রেশমী কাপড় তৈরী করা হতো।
বিজায়া:
বিজায়া ছিলো উত্তর আফ্রিকা ও মরক্কোর সর্বাধিক পরিচিত নৌবন্দর। আলজেরিয়া ও তিউনিসিয়ার মাঝখানে এটি অবস্থিত। প্রথমদিকে এটি অতি সাধারণ নৌবন্দর ছিলো। ৪৫৭ হিজরীতে স্থানীয় শাসক নাসির ইবনে আলনাস এটিকে উপযুক্ত নৌস্থল ভেবে এটিকে ভালোভাবে আবাদ করেন। ফলে ক্রমে ক্রমে এটি বিশাল নৌবন্দরে পরিণত হয়। এখান থেকে সবধরণের জাহাজ চলাচল করতো।
সাবতা:
এটি মরক্কোর বিখ্যাত নৌবন্দর ছিলো। স্পেনের উল্টো দিকে আফ্রিকার উপকূলে অবস্থিত এটি। এক সময় এটি পৃথিবীর উৎকৃষ্ট জাহাজ নির্মাণ কেন্দ্র ছিলো।
-মুহম্মদ শাহজালাল।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
কেমন ছিলো মোঘল সালতানাতের গোলন্দাজ এবং অশ্বারোহী বাহিনী
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
পান্থনিবাস ও সরাইখানা নির্মাণে মুসলমানদের অনবদ্য অবদান
২৬ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা (৩৯)
১৫ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
মুসলমানদের শিক্ষা-দীক্ষার বিরোধিতায় বিধর্মী-অমুসলিমরা
১৪ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী বাংলার হিন্দু ধনিক-বণিক, বেনিয়া শ্রেণী, ব্যাংকার প্রভৃতির সাথে এক গভীর ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে মুসলিম
১৪ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ইউরোপকে যেভাবে সমৃদ্ধ করেছেন আফ্রিকান মুসলমানরা
১২ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
গুজরাটের সুলতান মুজাফফর শাহের পরহেজগারিতা এবং ভ্রাতৃত্ববোধ
০২ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা (৩৭)
০১ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
কেমন ছিলেন ইসলামী ইতিহাসের প্রথম আইনশৃঙ্খলা বাহিনী
০১ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ঐতিহাসিক মুসলিমবাগ ঈদগাহ-ই কি আজকের ঢাকেশ্বরী মন্দির?
২৯ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
১২টি চন্দ্রমাসের নাম এবং নামকরণের সার্থকতা (২)
২৯ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ঐতিহাসিক খেমকারান যুদ্ধ: যেভাবে বাংলাদেশের জাতীয়তাবোধের উদ্ভব
২৫ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার)












