জীবনী মুবারক
সাইয়্যিদুনা হযরত আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম (১)
বিলাদত শরীফ: ৫৬৬ খৃ: বিছাল শরীফ: ৩২ হিজরী (৬৫৩ খৃ:) বয়স মুবারক: ৮৮ বছর।
, ২১ জুমাদাল ঊখরা শরীফ, ১৪৪৭ হিজরী সন, ১৪ সাবি’, ১৩৯৩ শামসী সন , ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রি:, ২৮ অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
পরিচিতি:
নাম মুবারক- হযরত আবুল ফজল আব্বাস আলাইহিস সালাম, পিতার নাম- সাইয়্যিদুনা হযরত আবদুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম, মাতার নাম- হযরত নাতিলা বিনতু খাব্বাব আলাইহাস সালাম, তিনি ছিলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত চাচা। তিনি ছিলেন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত পিতা হযরত আবদুল্লাহ যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার বৈমাত্রেয় ভ্রাতা। আব্বাসী খিলাফত উনার সাথে সম্পর্কিত।
বিলাদত শরীফ ও শৈশবকাল:
হযরত আব্বাস আলাইহিস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার তিন বছর পূর্বে বিলাদত শরীফ গ্রহণ করেন।
শৈশবে একবার হযরত আব্বাস আলাইহিস সালাম হারিয়ে গিয়েছিলেন। তখন উনার মাতা মানত করেছিলেন যে, যদি তিনি শিশু পুত্রকে ফিরে পান, তবে পুরো কা’বা ঘরে গিলাফ পরাবেন। অতঃপর হযরত আব্বাস আলাইহিস সালাম উনাকে অক্ষত অবস্থায় ফিরে পেলেন। হযরত আব্বাস আলাইহিস সালাম তিনি পরিণত বয়সে উনার মাতার মানত পূর্ণ করেছিলেন। (আসমাউর রিজাল)
ইসলাম পূর্ব অবস্থা:
হযরত আব্বাস আলাইহিস সালাম ছিলেন একজন ব্যবসায়ী। আবু তালিব হাজীদের পানি পান করান ও আহার দানের দায়িত্বটি হযরত আব্বাস আলাইহিস সালাম উনাকে সমর্পন করেন।
হযরত আব্বাস আলাইহিস সালাম তিনি ছিলেন খুবই মর্যাদাসম্পন্ন, প্রভাবশীল, বুদ্ধিমান ও সুপুরুষ। তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে খুবই সম্মান করতেন। বনু হাশিমের নিঃস্ব ও অসহায় গরীবদের অন্ন, বস্ত্র ও অপরাপর প্রয়োজন নিবারণের দায়িত্ব তিনি বহন করতেন।
হযরত আব্বাস আলাইহিস সালাম তিনি সর্বদাই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সহযোগী ছিলেন। হযরত কা’ব ইবনে মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, যিনি আকাবার দ্বিতীয় বাইয়াতের একজন সদস্য ছিলেন। তিনি বলেন, “আমরা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অপেক্ষায় (আকাবায় বসা ছিলাম)। হঠাৎ তিনি উনার চাচা হযরত আব্বাস আলাইহিস সালাম উনার সাথে আমাদের নিকট আসলেন। ” হযরত আব্বাস আলাইহিস সালাম বললেন, “হে খাজরাযগণ! আপনারা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বংশ মর্যাদা মুবারক সম্পর্কে বেশ ভালোভাবেই অবগত আছেন। আমরা উনার বিরোধী আমাদের লোকদেরকে প্রতিহত করছি। তিনি এখানে সংরক্ষিত ও নিশ্চিন্তভাবে নিজ দেশে আছেন। যা হোক তিনি আপনাদের মধ্যে মদীনা শরীফে হিজরত করে যেতে চান। যদি আপনারা নিশ্চিত হতে পারেন (প্রতিশ্রুতি দিতে পারেন) যে, আপনারা উনাকে পরিপূর্ণভাবে সাহায্য ও নিরাপত্তা প্রদান করবেন, তবে আপনারা অঙ্গীকারাবদ্ধ হন। আর যদি হিজরতের পরে আপনারা উনাকে বিপদের সময় পরিত্যাগ করেন, তবে তা এখনই বলেন। ”
এই ঘটনা হতে বোঝা যায়, তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কিরূপ সহযোগী ছিলেন। তবে তিনি অন্তরে ইসলাম গ্রহণ করলেও বিভিন্ন কারণে লোকসম্মুক্ষে তা প্রকাশ করেননি। (রিজালুন হাওলার রসূল)
বদরের জিহাদে:
বদরের জিহাদে তিনি কুরাইশ নেতৃবৃন্দের চাপে কুরাইশদের পক্ষে অংশগ্রহণ করেছিলেন। উনাকে বন্দী করা হয় এবং পরে মুক্তি দেয়া হয়।
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, “হযরত আব্বাস আলাইহিস সালাম উনাকে যে ব্যক্তি বদরের জিহাদে বন্দী করেন উনার নাম হযরত আবুল ইয়াছার রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু। হযরত আবুল ইয়াছার রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু দুর্বল স্বাস্থ্য সম্পন্ন ছিলেন, আর হযরত আব্বাস আলাইহিস সালাম ছিলেন সবল স্বাস্থ্যের অধিকারী। ” নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, “হে আবুল ইয়াছার রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু! আপনি কিভাবে হযরত আব্বাস আলাইহিস সালাম উনাকে বন্দী করলেন?” হযরত আবুল ইয়াছার রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বললেন, “আয় মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! (উনাকে বন্দী করার ব্যাপারে) এমন এক ব্যক্তি আমাকে সাহায্য করেছেন, যাকে আমি পূর্বে ও পরে আর কখনো দেখিনি। সেই ব্যক্তির গঠন এইরূপ এইরূপ। ” (উক্ত ছাহাবী ওই ব্যক্তির শারীরিক গঠনের বর্ণনা দিলেন) নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, “আপনাকে একজন ফেরেশতা সাহায্য করেছেন। ” (দালায়েল, আবু নায়ীম) (অসমাপ্ত)
-আল্লামা সাঈদ আহমদ গজনবী।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ফুটবল-ক্রিকেটসহ সর্বপ্রকার খেলাধুলা করা, সমর্থন করা হারাম ও নাজায়িয (১)
১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
প্রাণীর ছবি তোলা শক্ত হারাম, রয়েছে কঠিন শাস্তি
১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
মহাসম্মানিত তিন যাত পাক উনাদেরকে মুহব্বত করা সমস্ত মাখলূক্বাতের জন্য ফরয
১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
আসমাউর রিজাল, জারাহ ওয়াত তা’দীল, উছুলে হাদীছ শরীফ উনার অপব্যাখ্যা করে অসংখ্য ছহীহ হাদীছ শরীফ উনাকে জাল বলছে ওহাবী সালাফীরা (২)
১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
আখেরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
১২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
পবিত্র ছোহবত মুবারক গ্রহণের ফাযায়িল-ফযীলত, গুরুত্ব-তাৎপর্য ও আবশ্যকতা:
১২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
যে নিজে পর্দা করে না ও অধীনস্থদের পর্দা করায় না সে দাইয়ূছ
১২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
হাক্বীক্বী মৃত্যুকে স্মরণ করার মধ্যেই শহীদী দরজা মিলে
১২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
শরীয়তের দৃষ্টিতে কোন রোগই ছোঁয়াচে নয়, ছোঁয়াচে বিশ্বাস করা কুফরী
১২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার)












