জীবনী মুবারক
সাইয়্যিদুনা হযরত আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম (৩)
বিলাদত শরীফ: ৫৬৬ খৃ: বিছাল শরীফ: ৩২ হিজরী (৬৫৩ খৃ:) বয়স মুবারক: ৮৮ বছর।
, ২৩ জুমাদাল ঊখরা শরীফ, ১৪৪৭ হিজরী সন, ১৬ সাবি’, ১৩৯৩ শামসী সন , ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রি:, ৩০ অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
ফযীলত ও বুযূর্গী:
হযরত আব্বাস আলাইহিস সালাম তিনি পবিত্র মক্কা শরীফ বিজয়ে অংশগ্রহণ করেছিলেন। মক্কা শরীফ বিজয়ের পর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হাজীদের পানি পান করানোর বংশীয় দায়িত্বটি উনাকে প্রদান করেন।
হুনাইনের জিহাদে তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে একই বাহনে আরোহী ছিলেন। এই জিহাদে তিনি খুবই বীরত্বের পরিচয় দিয়েছিলেন এবং স্বীয় উচ্চ আওয়াজে যুদ্ধের গতি পাল্টিয়ে দিয়েছিলেন।
হযরত জাবির রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বর্ণনা করেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তায়েফ অভিযানের সময় হযরত হানজালা বিন রবি’ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে তায়েফের অধিবাসীদের নিকট পাঠালেন। তিনি তাদের সঙ্গে কথা বললেন। তারা উনাকে দূর্গের অভ্যন্তরে জোর করে নিয়ে যাওয়ার জন্য আক্রমণ করলো। এ সময় নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, “এদের মোকাবিলায় কে আসবে? যে তাদের প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আসবে তার জন্য আমাদের সমস্ত যোদ্ধাদের সম-পরিমাণ ছওয়াব লিখা হবে।” এ সময় একমাত্র হযরত আব্বাস আলাইহিস সালাম তিনি ব্যতীত আর কেউ দন্ডায়মান হলেন না।
হযরত আব্বাস আলাইহিস সালাম তিনি সেই তায়েফের অধিবাসী যারা ছিলো তাদের সম্মুখীন হলেন। তারা হযরত হানজালা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে দূর্গের অভ্যন্তরে নিয়ে যাচ্ছিলো। এ সময় তিনি উনাকে ধরে ফেললেন। হযরত আব্বাস আলাইহিস সালাম খুব শক্ত ও শক্তিশালী লোক ছিলেন। তিনি তাদের থেকে উনাকে ছিনিয়ে নিতে সক্ষম হলেন। এহেন অবস্থায় দূর্গের ভিতর থেকে হযরত আব্বাস আলাইহিস সালাম উনার উপর পাথর বর্ষিত হতে লাগলো। এদিকে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার জন্য খাছ দোয়া করলেন। অবশেষে তিনি হযরত হানজালা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট পৌঁছে দিলেন। (কান্জ, ইবনে আসাকির, হায়াতুছ ছাহাবা)
হযরত আবু উসাইদ আস-সা’দী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, আমি আমার দাদাকে বলতে শুনেছি যে, একবার নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হযরত আব্বাস আলাইহিস সালাম উনাকে বললেন, “আগামীকাল আপনি এবং আপনার ছেলেরা যেন কোথাও বের না হন, কারণ আপনাদের নিকট আমার একটি প্রয়োজন আছে।” অতঃপর হযরত আব্বাস আলাইহিস সালাম উনার ঘরে উনার সন্তানদেরকে একত্র করলেন। তৎপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তাশরীফ মুবারক রাখলেন এবং বললেন, “আপনাদের উপর শান্তি বর্ষিত হউক, আপনারা কেমন আছেন?”(ألسَّلَامُ عَلَيْكُمْ، كَيْفَ أَصْبَحْتُمْ) উনারা বললেন, “আমরা ভালো; মহান আল্লাহ পাক উনার প্রশংসা।” নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, “আপনারা নিকটবর্তী হোন, আপনারা নিকটবর্তী হোন।” পরপর দুইবার তিনি এই কথা বললেন।
অতঃপর সকলে যখন পরস্পর নিকটবর্তী হয়ে বসলেন, তিনি উনাদের উপর নিজের পবিত্র নূরুল মাগফিরাহ মুবারক (হাত মুবারক) প্রসার করে দিলেন এবং বললেন, “আয় মহান আল্লাহ পাক! ইনি আব্বাস, আমার চাচা, এবং উনারা আমার পরিজন। অতএব উনাদেরকে দোযখ হতে রক্ষা করুন, যেভাবে আমি আমার এই পবিত্র নূরুল মাগফিরাহ মুবারক (হাত মুবারক) দিয়ে উনাদেরকে বেষ্টন করেছি।” তারপর দরজার উপরিভাগ এবং ঘরের দেয়ালগুলি হতে তিন বার এই আওয়াজ শুনা গেলো, আমীন, আমীন, আমীন। (দালায়েলুন নুবুওয়াত)
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার চাচা হযরত আব্বাস আলাইহিস সালাম উনাকে খুব সম্মান দেখাতেন। উনার সামান্য কষ্টেও তিনি দারুণ দুঃখ পেতেন। যা উনার বেমেছাল বৈশিষ্ট্য মুবারকের একখানা বহিঃপ্রকাশ। (অসমাপ্ত)
-আল্লামা সাঈদ আহমদ গজনবী।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দুনিয়ার যমীনে অবস্থানকালীন সময়ে ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম শরীফ যে রোযা মুবারক রাখতেন সে রোযা মুবারক মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১২ই শরীফ উনার দিনে হওয়াটা ছিলো একটি বিরল ঘটনা (২)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত হাযির-নাযির শান মুবারক (১)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
প্রাণীর ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িজ
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
আল্লাহওয়ালী মহিলা উনাদের তিনটি বৈশিষ্ট্য-
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
পুরুষের জন্য কমপক্ষে একমুষ্ঠি পরিমাণ দাড়ি রাখা ফরয
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম (২)
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
মুসলমানদের সবচেয়ে বড় শত্রু কাফির-মুশরিকরা (২)
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পর্দা পালন করা নারী-পুরুষ সকলের জন্যই শান্তি ও পবিত্রতা হাছিলের কারণ
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সীমালঙ্ঘনকারী কাফির-মুশরিকদের বিরুদ্ধে জিহাদ করা মহান আল্লাহ পাক উনার নির্দেশ মুবারক
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পবিত্র ‘ছলাতুল জুমুয়াহ’ উনার পূর্বে ৪ রাকায়াত সুন্নত নামায অর্থাৎ পবিত্র ‘ক্বাবলাল জুমুয়াহ’ নামায নিয়ে বাতিলপন্থিদের বিভ্রান্ত্রিকর ও মিথ্যা বক্তব্যের দলীলভিত্তিক জাওয়াব (৭)
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)












