সাইয়্যিদুল আওলিয়া, মাহবূবে সুবহানী, কুতুবে রব্বানী, গাউছুল আ’যম, মুজাদ্দিদুয যামান, সুলত্বানুল আরিফীন, মুহিউদ্দীন, আওলাদে রসূল,
সাইয়্যিদুনা হযরত বড়পীর ছাহিব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সাওয়ানেহ উমরী মুবারক (১৩)
, ১৮ শাওওয়াল শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ১৮ হাদি আশির, ১৩৯২ শামসী সন , ১৭ এপ্রিল, ২০২৫ খ্রি:, ৪ বৈশাখ, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা

শিক্ষকতা:
শায়খুল উলামা ওয়াল মাশায়িখ, হযরত আবু সাঈদ মুবারক মাখযূমী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি মাদরাসায়ে নিযামিয়া-এর অন্যতম সুযোগ্য মুয়াল্লিম বা অধ্যাপক ছিলেন। সাইয়্যিদুল আওলিয়া, ইমামে রব্বানী, মাহবূবে সুবহানী, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা হযরত বড়পীর ছাহিব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ছাত্র অবস্থায় উনার সেই মাদরাসায়ে নিযামিয়া উনার শিক্ষার্থী হিসেবে যোগদান করলেন। হযরত আবু সাঈদ মুবারক মাখযূমী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনাকে অত্যন্ত স্নেহ ও যতœ করতেন এবং উনার তা’লীম-তরবিয়ত বা শিক্ষা-দীক্ষার প্রতি বিশেষ নজর রাখতেন। তিনি ছিলেন তৎকালীন বাগদাদ শরীফ উনার একজন শ্রেষ্ঠ আলিম, খ্যাতনামা শিক্ষাবিদ এবং অত্যন্ত কামিল বুযূর্গ। পরবর্তীতে তিনি নিজে একটি মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করে নিজেই তাতে শিক্ষা দান করতেন।
ছাত্র অবস্থায় সাইয়্যিদুল আওলিয়া, ইমামে রব্বানী, মাহবূবে সুবহানী, সাইয়্যিদুনা হযরত বড়পীর ছাহিব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার তীক্ষ¥ ধীশক্তি, অপরিসীম যোগ্যতা, কর্মদক্ষতা, কর্তব্যপরায়ণতা, দৃঢ়তা এবং অদম্য আগ্রহ-উদ্দীপনার পরিচয় পেয়ে হযরত আবু সাঈদ মুবারক মাখযূমী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি নিজের এই সুযোগ্য ছাত্রটির প্রতি অত্যন্ত সুধারণা এবং উচ্চাকাঙ্খা পোষণ করে আসছিলেন যে, তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার হাবীব, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অত্যন্ত নৈকট্যপ্রাপ্ত হবেন। উনারই মাধ্যমে ইলম উনার সিলসিলা ক্বিয়ামত পর্যন্ত জারি থাকবে। এবার সেই ছাত্রই যখন বাগদাদ শরীফ উনার বাহির থেকে অধিকতর যোগ্যতাসম্পন্ন হয়ে ফিরে আসলেন, তখন তিনি উনার হাতে স্বীয় মাদরাসার শিক্ষকতা ও পরিচালনার সম্পূর্ণ দায়িত্বভার আগ্রহের সাথে তুলে দিলেন। সাইয়্যিদুল আওলিয়া, ইমামে রব্বানী, মাহবূবে সুবহানী, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা হযরত বড়পীর ছাহিব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনিও এ জাতীয় একটি কাজের জন্য অতীব আগ্রহান্বিত ছিলেন। কারণ শিক্ষকতা বা শিক্ষাদান, যেটা আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খাছ সুন্নত। উপরন্তু তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন-
ان الله وملئكته واهل السماوات والارض حتى نملة فى حجرها حتى حوت فى جوفها يصلون على معلم الناس الخير.
অর্থ: “নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা, আসমানবাসী, যমীনবাসী এমনকি গর্তের পিপীলিকা এবং সমুদ্রের মাছ পর্যন্ত সবাই শিক্ষাদানকারীর প্রতি ছলাত-সালাম পাঠ করেন। ”
অতএব, তিনি দ্বীন ইসলাম উনার কিছু খিদমত করার সুযোগ পেয়ে খুবই খুশি হলেন। এ মাদরাসায় শিক্ষকতার মাধ্যমেই উনার কর্মময় মুবারক জীবন শুরু হলো।
উস্তাদ প্রদত্ত মাদরাসার ভারপ্রাপ্ত হয়ে তিনি গভীর মনোযোগ ও অত্যন্ত দক্ষতার সাথেই উনার শিক্ষকতা এবং পরিচালনার দায়িত্ব পালন করতে লাগলেন। তৎকালীন সময়ে উনার ইলিম-হিকমত, তাক্বওয়া-পরহেযগারীতা এবং কর্মদক্ষতার সাথে তুলনা করার মতো আর কেউ ছিলো না। তাই একাধারে যেমন মাদরাসার শিক্ষার্থীবৃন্দ উনার মতো অতুলনীয় শিক্ষক লাভ করে ধন্য হয়েছিলো। তেমনি বাগদাদবাসীগণ দীর্ঘদিন পরে তাদের প্রাণের লোক উনাকে ফিরে পেয়ে আনন্দে আপ্লুত হয়ে পড়লেন।
সাইয়্যিদুল আওলিয়া, ইমামে রব্বানী, মাহবূবে সুবহানী, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা হযরত বড়পীর ছাহিব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার জ্ঞান লাভ কেবল মাদরাসায় অধ্যয়নের ভিতরই সীমাবদ্ধ ছিলো না। বরং উনার ইলিম ও পবিত্র হিকমত বিকশিত হয়েছিলো আলোক রশ্মির মূল উৎস স্থল থেকে। যেখানে সকল জ্ঞান ও সত্যের উৎস মুখ, সেখান থেকেই উনার হৃদয়ে ইলিম ও হিকমতের অমিয়ধারা প্রবাহিত হয়েছিলো। মহান আল্লাহ পাক এবং উনার হাবীব সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের থেকে তিনি খাছভাবে তা’লীম-তরবিয়ত পেয়েছেন তথা ইলমে লাদুন্নী পেয়েছেন। ফলে উনার শিক্ষাদান পদ্ধতি যে ছাত্র মহলে কত ব্যাপক ও গভীরভাবে সাড়া জাগিয়েছিলো, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। তিনি প্রাচীন শিক্ষানীতিকে পরিবর্তন ও পরিবর্ধন করে তা এক নতুন ছাঁচে ঢেলে সাজিয়েছিলেন। মাত্র অল্প কিছুদিনের মধ্যেই উনার সুনাম-সুখ্যাতি বিভিন্ন দেশে স্রোতধারার ন্যায় ছড়িয়ে পড়লো। ফলে পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চল থেকে জ্ঞানান্বেষী, শিক্ষার্থীগণ এবং মহান আল্লাহ পাক উনার মুহব্বত-মা’রিফাত তালাশীগণ দলে দলে উনার মাদরাসায়, উনার ছোহবতে এসে হাজির হলেন। সকলে উনার নিকট বাইয়াত হয়ে উনার নিকট পবিত্র ইলিম ও হিকমত তালাশ করাকে পরম গৌরবের বিষয় বলে মনে করছিলো।
ছাত্রজীবনে সাইয়্যিদুল আওলিয়া, ইমামে রব্বানী, মাহবূবে সুবহানী, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা হযরত বড়পীর ছাহিব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি যে ১৩টি বিষয়ে গভীর ব্যুৎপত্তি অর্জন করেছিলেন, সেই ১৩টি বিষয়েরই তিনি অধ্যাপনা করতেন। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত তিনি পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র তাফসীর শরীফ, ফিক্বাহ, উছূল, সাহিত্য, ক্বাওয়ায়িদ বা ব্যাকরণ এবং মুয়ামিলাত-মুয়াশিরাত বা লেনদেন, জীবন-যাপন পদ্ধতি শিক্ষাদান করতেন। আবার যোহরের পর থেকে ইশা পর্যন্ত তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ উনার অনুবাদ, তাওহীদ (একত্ববাদ), বিভিন্ন মাসয়ালা-মাসায়িল এবং অন্যান্য জরুরী বিষয়সমূহ শিক্ষা দিতেন। এমনিভাবে তিনি শিক্ষার্থীদেরকে বিভিন্ন বিষয়ে তা’লীম-তরবিয়ত দানের মাধ্যমে আদর্শ মানুষ, আদর্শ আলিম হিসেবে গড়ে তুলতে লাগলেন। (অসমাপ্ত)
-আল্লামা মুফতী সাইয়্যিদ মুহম্মদ আব্দুল হালীম।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সম্মানিত ক্বদমবুছী মুবারক খাছ সুন্নাত মুবারক
১১ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পর্দা পালন করা পুরুষ মহিলা সবার জন্য ফরজ
১১ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১১ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
যে সকল ওলামায়ে সূ’রা মন্দির ও মূর্তি পাহারা দিয়েছে, হিন্দুদের পূজায় গিয়েছে, তাদেরকে পূজা করতে সাহায্য-সহযোগীতা করেছে, সমর্থন করেছে, সম্মতি প্রকাশ করেছে, তাদের সাথে মুছাফাহা ও মুয়ানাক্বা করেছে, তাদেরকে সম্মান করেছে, তা’যীম করেছে, তাদের সম্পর্কে সম্মানসূচক শব্দ ব্যবহার করেছে এবং সম্মানসূচক শব্দ দ্বারা সম্বোধন করেছে, বাহ বাহ দিয়েছে এবং বেশী বেশী মূর্তি তৈরী করতে বলেছে এবং বেশী বেশী পূঁজা করতে বলেছে তারা প্রত্যেকেই মূর্তিপূজারী ও মুশরিক হয়ে কাট্টা কাফির ও মুরতাদ হয়েছে (৯)
১১ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
১১ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
খাযিনু কামালিল্লাহ, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের বেমেছাল মুহব্বত মুবারক
১১ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
উলামায়ে সূ’ ধর্ম ব্যবসায়ীদের পরিচিতি ও হাক্বীক্বত (৭)
১০ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িজ
১০ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১০ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
পর্দা রক্ষা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া ব্যভিচারের সমতুল্য
০৯ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৯ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
যে সকল ওলামায়ে সূ’রা মন্দির ও মূর্তি পাহারা দিয়েছে, হিন্দুদের পূজায় গিয়েছে, তাদেরকে পূজা করতে সাহায্য-সহযোগীতা করেছে, সমর্থন করেছে, সম্মতি প্রকাশ করেছে, তাদের সাথে মুছাফাহা ও মুয়ানাক্বা করেছে, তাদেরকে সম্মান করেছে, তা’যীম করেছে, তাদের সম্পর্কে সম্মানসূচক শব্দ ব্যবহার করেছে এবং সম্মানসূচক শব্দ দ্বারা সম্বোধন করেছে, বাহ বাহ দিয়েছে এবং বেশী বেশী মূর্তি তৈরী করতে বলেছে এবং বেশী বেশী পূজা করতে বলেছে তারা প্রত্যেকেই মূর্তিপূজারী ও মুশরিক হয়ে কাট্টা কাফির ও মুরতাদ হয়েছে (৮)
০৯ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার)