ছহিবু সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, আস সাফফাহ, আল জাব্বারিউল আউওয়াল, আল ক্বউইউল আউওয়াল, হাবীবুল্লাহ, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মাওলানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
দুনিয়ার বুরায়ী বা খারাবী (৩১)
, ৯ই শা’বান শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ১২ তাসি’, ১৩৯২ শামসী সন , ০৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রি:, ২৬ মাঘ, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
তখন সেই মহান আল্লাহ পাক উনার ওলী উনি বললেন, তাহলে এক কাজ করো হে জল্লাদ, তুমি বাদশাহ্কে বাঁধ, শক্ত করে বাঁধ, বাদশাহ্কে মৃত্যুদন্ড দেয়া হবে।
যখন এ কথা বলা হলো, জল্লাদ বাদশাহ্কে বাঁধলো। সমস্ত উযীর-নাযীর যারা ছিল, তারাতো চিন্তা-পেরেশানীর মধ্যে পড়ে গেল। কি ব্যাপার হলো? উনি বুযুর্গ, মহান আল্লাহ পাক উনার ওলী জানি, উনি এখানে আসলেন, বাদশাহকে বাঁধালেন, কি ব্যাপার? এবং বাদশাহ্কে মৃত্যুদন্ড দিয়ে উনি কি রাজত্ব দখল করবেন? এই কি উনার খেয়াল অন্তরে? নানান চু-চেরা, কিল ও কাল তাদের মনে চলতে থাকলো।
বাদশাহ্’র মনেও নানান চিন্তা-ফিকির। উনি মহান আল্লাহ পাক উনার ওলী, বুযুর্গ। উনি কেন আমাকে বাঁধলেন আর কেনই আমাকে মৃত্যুদন্ড দিবেন।
কিন্তু সেই বুযুর্গ ব্যক্তি, মহান আল্লাহ পাক উনার ওলী উনি ঘোষণা করলেন, জল্লাদ! তুমি তরবারী নিয়ে দাঁড়িয়ে থাক। আর বাদশাহও মাথা নিচের দিকে বাঁকা করে দাঁড়িয়ে রইলো। তার মাথার উপরে তরবারী নিয়ে সে জল্লাদ দাঁড়িয়ে রইলো।
মহান আল্লাহ পাক উনার ওলী বললেন যে দেখ, আমি এক থেকে বিশ পর্যন্ত গুনবো, এক থেকে বিশ পর্যন্ত। যখন আমার গোনা শেষ হয়ে যাবে তখন তুমি বাদশাহ্র গর্দানে তরবারী চালিয়ে দিবে এবং তার পূর্বে কখনো করবে না। বিশ না গোনা পর্যন্ত তরবারী তুমি চালাবে না। জল্লাদ বললো, ঠিক আছে।
সেই মহান আল্লাহ পাক উনার ওলী উনি গুনতেছেন আস্তে আস্তে করে। এক, দুই এরকম করে উনি আস্তে আস্তে গুনতে লাগলেন।
১২-১৪ হয়ে গেল, মানুষতো অস্থির হয়ে গেল। বাদশাহ্র যেহেতু স্বাস্থ্য ভাল। বাদশাহ্র শরীর ঘেমে সমস্ত দরবার ভিজে গেল। সেখানে যা ছিল- বিছানাপত্র, কার্পেট যা ছিল সব ভিজে গেল। বাদশাহ অস্থির হয়ে গেল। যখন পনের-ষোলতে গোনা হলো তখন বাদশাহ যেহেতু অস্থির সে বেঁহুশ হয়ে যাওয়ার মত অবস্থা হলো।
তখন সেই মহান আল্লাহ পাক উনার ওলী বললেন জল্লাদকে যে, তোমার তরবারী নিয়ে তুমি চলে যাও।
সকলে সস্থির নিঃশ্বাস ফেললো। কি ব্যাপার এখন। তখন বাদশাহ্র যারা খাছ খাদিম ছিল, তাদেরকে ডাকা হলো। ডেকে বলা হলো, তোমরা এদিকে আস। বাদশাহকে নিয়ে যাও। দৈনিক তোমরা বাদশাহ্কে যেভাবে তা’যীম-তাকরীমের সাথে গোসল করায়ে থাক শাহী কায়দায়, ঠিক আজকে সেই শাহী কায়দায় তোমরা গোছল করায়ে নিয়ে আস।
যখন বলে দেয়া হলো, তখন সেই খাদিমরা নিয়ে গেল বাদশাহকে। শাহী কায়দায় গোছল করায়ে, আতর-গোলাপ মাখিয়ে, নতুন কাপড় পরায়ে, আর দরবারে যা ভিজে গিয়েছিল সেগুলি মুছে পরিষ্কার করে নতুন বিছানা দিয়ে আবার বাদশাহকে এনে বসানো হলো।
মানুষ তো সব চিন্তার মধ্যে রয়ে গেল, কি ব্যাপার হচ্ছে।
এর মধ্যে যখন এসে পৌঁছলো, তখন সেই বুযুর্গ ব্যক্তি, মহান আল্লাহ পাক উনার ওলী, পীর ছাহেব জিজ্ঞাসা করলেন, “বাদশাহ, তুমি কি এখন বলতে পারবে, তোমার কেমন মনে হয়েছিল?”
বাদশাহ বললো যে, হুযূর! আর কি বলবো- এটা বলার মত নয়, যে কি অবস্থায় গিয়ে পৌঁছায়েছিলাম, এটা বলার ভাষা আমার নেই।
তখন সেই মহান আল্লাহ পাক উনার ওলী বললেন যে “দেখ, হাক্বীক্বত তোমার রাজত্ব আমি দখল করতে আসিনি। আমার এই রাজত্ব দরকার নেই। এর চাইতে অনেক বড় রাজত্ব মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাকে দান করেছেন। তোমার এই দুনিয়াবী রাজত্ব আমার কোন জরুরত নেই। আমি শুধু এসেছিলাম, তুমি আমাকে বলেছিলে- তুমি এক হাজার দানার একটা তছবিহ তৈরী করেছ, প্রতিদিন তো মৃত্যুকে এক হাজার বার স্মরণ করে থাক, তোমার এটা যেহেতু শুদ্ধ নয়, তোমাকে বাস্তবভাবে যদি আমি না বুঝিয়ে দেই, তুমি সেটা বুঝতে পারবে না। সেটা বুঝাবার জন্য আমি এসেছিলাম। আজকে তুমি যেভাবে মৃত্যুকে স্মরণ করলে, ঠিক এ রকমভাবে যদি কেউ বিশ বার মৃত্যুকে স্মরণ করতে পারে, তাহলে হাক্বীক্বত যেমন শহীদি দরজা সে পাবে, তদ্রুপ তার অন্তর থেকে দুনিয়ার মুহব্বতও দূর হয়ে যাবে। ” সুবহানাল্লাহ!
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত ৩টি স্তর
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
আসমাউর রিজাল, জারাহ ওয়াত তা’দীল, উছুলে হাদীছ শরীফ উনার অপব্যাখ্যা করে অসংখ্য ছহীহ হাদীছ শরীফ উনাকে জাল বলছে ওহাবী সালাফীরা (৩)
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া কবীরা গুনাহ
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
হযরত আব্বাস ইবনে মিরদাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যাকাত সম্পর্কিত আহকাম, মাসায়িল ও ফাযায়িল (৪)
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
প্রাণীর ছবি তোলা হারাম ও নাফরমানীমূলক কাজ
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
অ্যান্টার্কটিকা নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় বিজ্ঞানীরা
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম (৪)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা অবশ্যই সত্যের মাপকাঠি; অস্বীকারকারীরা কাট্টা কাফির (১)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)












