স্থাপত্য-নিদর্শন
সাইয়্যিদ হযরত শাহ মখদুম রুপোশ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মাজার শরীফ
, ০২ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০:০০ এএম ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) স্থাপত্য নিদর্শন
সাইয়্যিদ শাহ মখদুম রুপোশ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার নছবনামা মুবারক: হযরত সাইয়্যিদ আব্দুল কুদ্দুস ওরফে হযরত শাহ্ সাইয়্যিদ শাহ মখদুম রুপোশ রহমতুল্লাহি আলাইহি, উনার পিতা (১) হযরত সাইয়্যিদ আজাল্লা শাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি, উনার পিতা হযরত (২) আব্দুল কাদের জিলানী রহমতুল্লাহি আলাইহি, উনার পিতা (৩) হযরত সাইয়্যিদ আবু আব্দুল্লাহ মুসা রহমতুল্লাহি আলাইহি, উনার পিতা (৪) হযরত সাইয়্যিদ আবু আবদুল্লাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি, উনার পিতা (৫) হযরত সাইয়্যিদ ইয়াহইয়া জাহেদ রহমতুল্লাহি আলাইহি, উনার পিতা (৬) হযরত সাইয়্যিদ মুহম্মদ রহমতুল্লাহি আলাইহি, উনার পিতা (৭) হযরত সাইয়্যিদ দাউদ রহমতুল্লাহি আলাইহি, উনার পিতা (৮) হযরত সাইয়্যিদ মুসা সানী রহমতুল্লাহি আলাইহি, উনার পিতা (৯) হযরত সাইয়্যিদ আবদুল্লাহ সানী রহমতুল্লাহি আলাইহি, উনার পিতা (১০) হযরত সাইয়্যিদ মুসা আল জোহন রহমতুল্লাহি আলাইহি, উনার পিতা (১১) হযরত সাইয়্যিদ আবদুল্লাহ আল মহজ রহমতুল্লাহি আলাইহি। উনার পিতা (১২) হযরত সাইয়্যিদ হাসানে মোসাল্লাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি, উনার মহাসম্মানিত পিতা (১৩) সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছানী মিন আহলে বাইতে রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, উনার মহাসম্মানিত পিতা (১৪) সাইয়্যিদুনা ইমামুল আউওয়াল হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহু আলাইহিস সালাম।
এইক্ষেত্রে লক্ষনীয় বিষয় হলো যে, সাইয়্যিদুনা হযরত বড়পীর ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার পিতৃকুলের দ্বাদশতম সূত্র এবং মাতৃকুলের চতুর্দশতম সূত্র সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহু আলাইহিস সালাম উনার সাথে মিলিত হয়েছে।
সাইয়্যিদ শাহ মখদুম রুপোশ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার বড় ভাই হযরত সাইয়্যিদ আহমদ তন্নুরী রহমতুল্লাহি আলাইহি হযরত বড়পীর ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার কাছ থেকে পাওয়া নির্দেশেই দিল্লী থেকে কতিপয় মুরীদসহ বাংলাদেশের পানডুয়া এলাকায় আসেন। পরে পানডুয়া থেকে পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে খিলাফ বিষয় নস্যাৎ করতে করতে নোয়াখালী জেলায় হাজির হন এবং সেখানে স্থায়ী খানকা শরীফ স্থাপন করেন। উনার পবিত্র মাজার শরীফ নোয়াখালীতে অবস্থিত।
সাইয়্যিদ হযরত শাহ মখদুম রুপোশ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ: বাগদাদ ছেড়ে যাওয়ার পর সাইয়্যিদ হযরত শাহ মখদুম রুপোশ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার পরিবার সিন্ধুতে অবস্থান করেছিলেন। সেখানে থাকাকালীন সময়ে বিখ্যাত সূফী জালাল উদ্দীন শাহ সুর রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মাদ্রাসায় তিনি ভর্তি হন এবং পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার উচ্চতর বিষয়ে পড়াশোনা শুরু করেন। উচ্চ শিক্ষাতেও তিনি অদম্য মেধার পরিচয় রাখেন। তিনি কাদেরিয়া তরীকার একজন বুযূর্গ ব্যক্তিত্ব মুবারক হিসেবে প্রসিদ্ধি লাভ করেন। সে সময় উনাকে “মখদুম” খেতাব দিয়ে ভূষিত করা হয়। পড়াশোনা শেষ করে তিনি উনার পিতার কাছে ফিরে যান।
ভারতবর্ষে আগমন: বাগদাদ থেকে হিজরত করে হযরত আযাল্লাহ শাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার পরিবার দিল্লীতে এসে বসবাস করেন। যখন তাতারীরা বাগদাদে নির্মমতা চালায় তখন দিল্লীর শাসক ছিলেন নাসিরুদ্দীন। তার শাসনামলে প্রকৃতপক্ষে রাজ্য শাসন করতেন গিয়াসউদ্দীন বলবন। উভয়ের সাথেই হযরত আযাল্লাহ শাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি এবং সাইয়্যিদ হযরত শাহ মখদুম রুপোশ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার ভালো সম্পর্ক ছিলো। দিল্লীতে বসবাসকালীন সময়ে সাইয়্যিদ আযাল্লাহ শাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার তিন পুত্র সাইয়্যিদ আহমেদ আলী তন্নরী ওরফে মিরান শাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি, সাইয়্যিদ হযরত শাহ মখদুম রুপোশ রহমতুল্লাহি আলাইহি এবং সাইয়্যিদ মনির আহমেদ শাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাদের পবিত্র তাছাউফ উনার জ্ঞান দান করে পবিত্র দ্বীন ইসলাম প্রচারের উদ্দেশ্যে বর্তমান বাংলাদেশে যাওয়ার আদেশ দান করেন।
বাংলাদেশে আগমন: সেই সময় বাংলার শাসক ছিলেন তুঘরিল খান। তিনি দিল্লীর সুলতানের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেন। বিদ্রোহ দমন করতে বৃদ্ধ বয়সে গিয়াসউদ্দীন বলবন ১২৭৮ খৃ: বাংলাদেশে আসেন। গিয়াসউদ্দীন বলবনের যুদ্ধযাত্রার সময় সাইয়্যিদ হযরত শাহ মখদুম রুপোশ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার তিন ভাই এবং শতাধিক অনুসারী নিয়ে বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে উনাদের অনুগামী হন। তখন সাইয়্যিদ হযরত শাহ মখদুম রুপোশ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার বয়স ছিলো ৬০ বছরেরও বেশি। গিয়াসউদ্দীন বলবন এর সাথে যুদ্ধে তুঘরিল খান পরাজিত হলে বোখরা খানকে সুলতান বানানো হয়। বোখরা খান হলেন গিয়াসউদ্দীন বলবনের পুত্র। বোখরা খান আলিম এবং সূফী, দরবেশ উনাদের খুব সম্মান ও তা’যীম তাকরীম করতেন। সেই সূত্রে তার সাথে সাইয়্যিদ হযরত শাহ মখদুম রুপোশ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার গভীর সম্পর্ক তৈরি হয় এবং তিনি গৌড়ে বসবাস শুরু করেন।
সাইয়্যিদ শাহ মখদুম রুপোশ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার রামপুরা বোয়ালিয়ায় (বর্তমানে দরগাপাড়া) আগমনঃ রামপুর বোয়ালিয়া (বর্তমানে দরগাপাড়া নামে পরিচিত) কে পূর্বে মহাকালগড় বলা হতো। এখানে মহাকাল দীঘি নামে একটা প্রকান্ড দীঘি ছিলো। এখানে ৩০/৪০ বিঘা জমির উপর বিধর্মীদের একটি বাড়ী ছিলো। তৎকালীন বির্ধমীরা এখানে এসে নরবলি দিতো। অনেক সময় নরবলি বিধর্মীয়ার জন্য মানুষ খরিদ করে আনতো। কখনও আবার অন্যায়ভাবে জোর করে ধরে আনতো। এখানে দু’জন বিধর্মী শাসক ছিলো। কয়েকজন মুসলমান সূফী দরবেশ এ অঞ্চলে পবিত্র দ্বীন ইসলাম প্রচারে আসলে উনাদেরকে ধরে নির্মমভাবে শহীদ করে এই বিধর্মীরা। নাউযুবিল্লাহ!
-মুহম্মদ নাইম।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
যে মসজিদ থেকে গভীর রাতে ভেসে আসতো যিকিরের আওয়াজ
০৯ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা (৩৮)
০৮ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
বয়নশিল্প নিদর্শনে মুসলমানগণ (৬)
২৬ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
বয়নশিল্প নিদর্শনে মুসলমানগণ (৫)
১৯ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
বয়নশিল্প নিদর্শনে মুসলমানগণ (৪)
১২ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
বয়নশিল্প নিদর্শনে মুসলমানগণ (৩)
০৫ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
বয়নশিল্প নিদর্শনে মুসলমানগণ (২)
২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
স্থাপত্যশৈলীর অনন্য স্থাপনা মানিকগঞ্জের ‘ওয়াসি মহল’
২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
বয়নশিল্প নিদর্শনে মুসলমানগণ (১)
২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
মুসলমানদের শিল্পকলার এক অনন্য নিদর্শন ইসলামী মৃৎপাত্র (১১)
১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
মুসলমানদের শিল্পকলার এক অনন্য নিদর্শন ইসলামী মৃৎপাত্র (১০)
২৮ আগস্ট, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
মুসলমানদের শিল্পকলার এক অনন্য নিদর্শন ইসলামী মৃৎপাত্র (৯)
২১ আগস্ট, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার)












