হাজার বছরের ইতিহাসের সাক্ষী ঐতিহাসিক উমাইয়া মসজিদ (পর্ব- ০৩)
, ২৪শে রজবুল হারাম শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ১৮ তাসি, ১৩৯০ শামসী সন , ১৬ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ খ্রি:, ০২ ফাল্গুন, ১৪২৯ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) স্থাপত্য নিদর্শন
বরং স্বাভাবিক অবস্থাতেই আমি মহান মালিক উনার সামনে গিয়ে দাড়াতে অধিক যুক্তিযুক্ত মনে করি। কারণ আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে, তিনিই আমার সর্বোত্তম রক্ষক ও প্রতিপালক। ষড়যন্ত্রকারী খৃষ্টানরা উনার এই মহানুভবতার কথা জানতে পেরে একরাত্রে তিনি মসজিদে আছেন জেনে গভীর রাতে মসজিদের চতুর্পাশে আগুন লাগিয়ে দেয়। কিন্তু ঘটনাক্রমে সে রাত্রে তিনি মসজিদে উপস্থিত ছিলেন না। কিন্তু চতুর্দিক থেকে আগুন লাগাবার ফলে একমাত্র মিনার ব্যতিত পুরো মসজিদই ভস্মিভূত হয়। ১১৬৯ খৃ: সংঘটিত এই খৃষ্টানদের চক্রান্তের পর ন্যায় পরায়ন সুলতান নুরুদ্দিন জঙ্গী রহমতুল্লাহি আলাইহি উমাইয়া মসজিদ পূর্বের তুলনায় পাঁচগুণ বড় আয়তনে পূণঃনির্মাণ করেন। (সীরাতে হালাবিয়া-৩য় খ-)
প্রখ্যাত ঐতিহাসিক ও পর্যটক ইবনে যুবায়ের ৫৮০ হিজরী মোতাবেক ১১১৮ খৃ: এই মসজিদ পরিদর্শনের পর তাঁর বিখ্যাত ভ্রমণ কাহিনীতে বলেন, আমি মুসলিম বিশ্বের বহু মসজিদ পরিদর্শন করেছি, কিন্তু জামে উমাইয়া হালাব আল কাবীর এর ন্যায় এতো সুন্দর মসজিদ আর দেখিনি। এর সুপ্রশস্ত আঙ্গিনা, বিশাল নামায ঘর, কারুকার্যময় মিহরাব ও মিম্বর আমাকে ভীষণভাবে মুগ্ধ করেছে। এর অসাধারণ সুন্দর ও কারুকার্যময় মিম্বরটি দেখতে অবিকল মসজিদুল-আকসার' মিম্বরের ন্যায়। জামে উমাওয়ী হালাব আল কাবীর-এর উল্লেখযোগ্য নির্মাণ সমূহঃ দরজাঃ এই মসজিদের ৪টি প্রধান প্রবেশ দ্বার রয়েছে, যথা- ১. বাব আস-শিমালী বা দক্ষিণ গেট যা মিনার সংলগ্ন ।
২. বাব আল-গারবী বা পশ্চিম গেট যা মিসমার রোড সংলগ্ন।
৩. বাব আশ-শারকী বা পূর্ব গেট যা মানাদীল বাজার সংলগ্ন
৪. বাব আল-জুনুবী বা উত্তর গেট। যা আল নুহাস বাজার সংলগ্ন আলেপ্পো গ্রেট মসজিদের আঙ্গিনা: নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ও হযরত খোলাফায়ে রাশেদীন আলাইহিমুস সালাম পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার স্বর্ণযুগে পবিত্র মসজিদ উনাকে সকল দ্বীনি উনার কর্মকা-ের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করেছিলেন। সেমতে পবিত্র দ্বীন ইসলামী খিলাফত উনার প্রথম ও প্রধান কার্যালয় ছিল মসজিদে নববী শরীফ, এই পবিত্র মসজিদ মুবারক ও উনার আঙ্গিনা থেকেই তৎকালীণ মুসলিম বিশ্বের সকল কর্মকা- পরিচালিত হতো। এ ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতায় পরবর্তী এক হাজার বছরে উমাইয়া, ফাতেমী, আব্বাসী, আইয়ুবী, উসমানী মামলুকী ও মাহ্দী খেলাফত যুগে যত কেন্দ্রীয় মসজিদ নির্মিত হয়েছে, তার সবগুলোতেই মসজিদে নববী উনার অনুকরণে আঙ্গিনা দেখতে পাই। ঐতিহাসিক উমাইয়া মসজিদ ও এর ব্যতিক্রম নয়। তিন দিকে মসজিদ ও একদিকে সুউচ্চ প্রাচীর বেষ্টিত এ মসজিদেও সুপ্রশস্ত ও সুসজ্জিত আঙ্গিনা রয়েছে অত্যান্ত মূল্যবান হালকা নীল ও কালো পাথরের টাইলস দিয়ে মোড়ানো অত্যাধুনিক স্থাপত্যশৈলীতে নির্মিত এই আকর্ষণীয় আঙ্গিনাটি উসমানীয় খেলাফতকালে সর্বশেষ সংস্কার করা হয়। আঙ্গিনাটির চতুর্পাশে সুসজ্জিত বারান্দা রয়েছে ও মাঝখানে একটি গোলাকৃতির অযুখানা রয়েছে, যার ছাদের গম্বুজটিও অত্যান্ত আকর্ষণীয়।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
মুঘল আমলের নিরাপত্তা নিদর্শন হাজীগঞ্জ দুর্গ
০৮ মে, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সারাদিন এসিতে থাকলে কি হয়?
০৫ মে, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
তাজ-উল-মসজিদ ভারতের সর্ববৃহৎ মসজিদ
২৭ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
পবিত্র মসজিদে জুমুয়াহ
২১ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ইসলামী স্থাপত্য দূর্গ “কসর আল-খারানা”
০১ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নওগাঁয় ২০০ বছরের পুরোনো মসজিদের সন্ধান
০৩ মার্চ, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
খুলনার ঐতিহাসিক মসজিদকুড় মসজিদ (২)
১৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
খুলনার ঐতিহাসিক মসজিদকুড় মসজিদ (১)
১৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সীতাকুন্ডের পৌঁনে পাঁচশো বছরের ঐতিহাসিক হাম্মাদিয়া মসজিদ
২৩ জানুয়ারি, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
বাগেরহাটের ঐতিহাসিক বিবি বেগনি মসজিদ
০৮ জানুয়ারি, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
ঐতিহ্যবাহী সিংদহ আউলিয়া জামে মসজিদ
০৩ জানুয়ারি, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
বাগেরহাটের রণবিজয়পুরে ঐতিহাসিক এক গম্বুজ মসজিদ
২৮ ডিসেম্বর, ২০২৩ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার)