অনলাইনে উদ্বুদ্ধ হয়ে সন্ত্রাসবাদী সংগঠনে যোগ দিয়েছিলেন তারা -র্যাব
এডমিন, ১১ রবীউল আউওয়াল শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ২৯ রবি’ ১৩৯১ শামসী সন , ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রি:, ১২ আশ্বিন, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) তাজা খবর

নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজধানীর উত্তরা, বনানী, বনশ্রী ও যাত্রাবাড়ী এলাকায় ডিজিএফআই ও র্যাব যৌথ অভিযান চালিয়ে নিষিদ্ধ ঘোষিত সন্ত্রাসবাদী সংগঠন ‘আনসার আল ইসলামের’ ছয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে। অনলাইনে আফগানিস্তানসহ বিভিন্ন উগ্রবাদী নেতাদের বক্তব্যে উদ্বুদ্ধ হয়ে আনসার আল ইসলামে যোগ দেন তারা।
গতকাল ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছে র্যাব। গতকাল সোমবার রাতে এই যৌথ অভিযান চালানো হয়।
তাদের কাছ থেকে দুটি ল্যাপটপ, ছয়টি মোবাইল ফোন, উগ্রবাদে সহায়ক পুস্তক ও সাংগঠনিক কার্যক্রমসংক্রান্ত ডায়েরি ও নোট বই জব্দ করা হয়েছে।
র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, গ্রেপ্তারকৃতরা জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন, তারা বিভিন্ন সময়ে অনলাইনে বিভিন্ন উগ্রবাদী নেতাদের বক্তব্য দেখে উগ্রবাদে উদ্বুদ্ধ হয়ে আনসার আল ইসলামে যোগ দেয়। সংগঠনের খরচ চালানোর জন্য গ্রেপ্তারকৃতরা বিভিন্নভাবে মিথ্যা তথ্য দিয়ে নিজেদের আত্মীয়স্বজনের কাছ থেকে টাকা নিয়ে আসতো।
খন্দকার আল মঈন আরও বলেন, বিভিন্ন সময়ে সাংগঠনিক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে বিভিন্ন স্থানে সদস্যদের নিয়ে গোপন সভা পরিচালনা করতো।
তিনি আরও বলেন, গ্রেপ্তার মেজবাহ ওরফে আবু মাসরুর একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে অনার্স ও মাস্টার্স সম্পন্ন করে। পরে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের জন্য ইউরোপে যান। ২০১০ সাল থেকে ডেনমার্কে সপরিবারে বসবাস শুরু করে। ডেনমার্কে গ্রেপ্তার আশিকুরের মাধ্যমে আনসার আল ইসলামে যোগ দেন মেজবা। পরে ২০২২ সালের অক্টোবরে সংগঠনের শীর্ষ নেতাদের নির্দেশে বাংলাদেশে এসে সংগঠনের ঢাকা অঞ্চলের দাওয়াতি শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়। সে দেশে ও দেশের বাইরে থেকে সংগঠনের জন্য চাঁদা সংগ্রহ করতো বলে জানা যায়।
র্যাব কর্মকর্তা আল মঈন বলেন, গ্রেপ্তার আশিকুর রহমান এমবিবিএস সম্পন্ন করে একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরির পাশাপাশি এয়ারকন্ডিশনিং ব্যবসাও করতো। সে সংগঠনটির ঢাকা অঞ্চলের অন্যতম উপদেষ্টা ও অর্থের জোগানদাতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলো। সে বিভিন্ন সময়ে উগ্রবাদী ভিডিও কনটেন্ট সংগঠনের সদস্যদের পাঠাতো। গ্রেপ্তার সাদী জুলকার নাইন একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং সম্পন্ন করে গার্মেন্টস সেক্টরে চাকরি করতো।
তিনি বলেন, গ্রেপ্তার সাঈদ রিজভী পেশায় একজন চিকিৎসক। রাজধানীর একটি আবাসিক এলাকায় তার বাসা। সেই বাসায় প্রতি দুই মাস পর পর সংগঠনের সভা অনুষ্ঠিত হতো। ওই বাসায় নতুন সদস্যদের সংগঠনে যুক্ত করার আনুষ্ঠানিকতাও সম্পন্ন হতো। এ ছাড়া তার বাসায় সংগঠনের নতুন সদস্যদের শারীরিক কসরত প্রশিক্ষণ দেওয়া হতো।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে খন্দকার আল মঈন বলেন, সম্প্রতি ডিজিএফআই ও র্যাবের অভিযানে আনসার আল ইসলামের প্রায় ২০ জন সদস্যকে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সংগঠনটি মূলত কাট অব চেইনের পদ্ধতিতে কাজ করে। গ্রেপ্তার সন্ত্রাসবাদী মেজবাহের সঙ্গে আনসার আল ইসলামের নেতা আবু ইমরান সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একাধিকবার যোগাযোগ করে।
‘সেই সঙ্গে আনসার আল ইসলামের নেতা ও বরখাস্ত হওয়া মেজর জিয়ার বিষয়ে জামাআতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার আমিরকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে পারি, নাইক্ষ্যংছড়িতে একটি মাদ্রাসায় ২০২০ সালে তার সঙ্গে মেজর জিয়ার দেখা হয়েছিল। এরপর তার আর খোঁজ পাওয়া যায়নি।