ইসরায়েলি আগ্রাসনে অনাথ গাজার ৩৮ হাজার শিশু, শিক্ষাবঞ্চিত ৭ লাখ
, ২৬শে রজবুল হারাম শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ৩০ ছামিন, ১৩৯২ শামসী সন , ২৭ জানুয়ারী, ২০২৫ খ্রি:, ১৩ মাঘ, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) বিদেশের খবর
আল ইহসান ডেস্ক:
যুদ্ধ শেষ হলেও গাজার আকাশে কালো মেঘের ঘনঘটা ক্রমেই বেড়ে চলেছে। যুদ্ধের ১৫ মাসে প্রতিদিন হাজার হাজার পরিবার তাদের প্রিয়জন হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছেন। যুদ্ধের ভয়াবহতার মধ্যে মানবিক ক্ষয়ক্ষতির ক্ষত ফুটে না উঠলেও যুদ্ধ শেষে ইসরায়েলি হামলার দগদগে ক্ষত নতুন করে উদ্ভাসিত হয়েছে। ২০২৩ সালের অক্টোবরে শুরু হওয়া এই যুদ্ধ কেবল গাজার শিশুদের শারীরিক ক্ষতিই করেনি, বরং তাদের মনেও গভীর আঘাত হেনেছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি আগ্রাসনে গাজায় ৩৮ হাজারের বেশি শিশু অনাথ, তারা এখন একা। তাদের চোখে, মনে প্রতিটি দিন যেন এক নতুন বিভীষিকা। একেকটি শিশু, যারা কিছুদিন আগ পর্যন্ত মা-বাবার আদর-ভালোবাসায় বেড়ে উঠছিল, আজ তাদের মুখে শুধু শূন্যতা, দুঃখ এবং ভয়।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা জাহের আল-ওয়াহিদি বলেন, প্রায় ৩২ হাজার ১৫১ শিশু তাদের বাবা হারিয়েছে, ৪ হাজার ৪১৭ শিশু মা হারিয়েছে, আর ১ হাজার ৯১৮ শিশু বাবা-মা দুজনকেই হারিয়েছে। তারা এখন তীব্র শূন্যতা আর একাকিত্বের মধ্যে জীবন কাটাচ্ছে।
গাজার শিক্ষা ব্যবস্থা আগে ফিলিস্তিনিদের আশা এবং উন্নতির প্রতীক এক আশ্রয়স্থল হিসেবে বিবেচিত হলেও এখন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। জাতিসংঘের রিলিফ এজেন্সি ইউএনআরডব্লিউএ জানাচ্ছে, প্রায় ৬ লাখ ৬০ হাজার শিশু এখন স্কুলে যেতে পারছে না, আর ১৪ হাজার ৫০০ শিশুর জীবনযুদ্ধ চিরতরে থেমে গেছে। ভবিষ্যতের সঞ্চয়, আশার আলো সবকিছুই এখন অস্পষ্ট হয়ে পড়েছে।
গাজার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদনে আরও উঠে এসেছে, প্রায় ১৫ হাজার শিশুর মৃত্যু অথবা নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার তথ্য। এই বিষয়টি শিশুদের পরিবারগুলোর জন্য এক চরম কষ্টের বাস্তবতা। গাজার ৯৫ শতাংশ স্কুলে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এর ফলে প্রায় ৮৫ শতাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পুরোপুরি অকার্যকর হয়ে পড়েছে। একে একে ধ্বংস হয়েছে ১৪০টি একাডেমিক ও প্রশাসনিক ভবন। শিক্ষা ব্যবস্থা পুরোপুরি বিপর্যস্ত।
তবে সবচেয়ে বড় ক্ষতিটা হলো মানসিক। গাজার শিশুদের মধ্যে এক ভয়ংকর মানসিক সংকট তৈরি হয়েছে। ইউনিসেফ জানিয়েছে, গাজার প্রায় ১১ লাখ শিশু এখন দুঃস্বপ্ন, ভয় এবং আতঙ্কের মধ্যে বেঁচে রয়েছে। তাদের মনে পাথরের মতো চাপ, প্রতি মুহূর্তে মনে হয় তাদের মৃত্যু আসছে। প্রায় ৯৬ শতাংশ শিশু মনে করে, তাদের মৃত্যু অনিবার্য। এর মধ্যে অনেক শিশু মৃত্যু কামনা করছে, যেন এই দুঃস্বপ্নের জীবনের থেকে মুক্তি পায়।
এই অবস্থা শুধু গাজার যুদ্ধের ফলস্বরূপ নয়, এটি একটি নতুন প্রজন্মের জন্য এক দীর্ঘমেয়াদি মানসিক আঘাতের সূচনা। মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই শিশুদের যন্ত্রণা আগামী প্রজন্ম পর্যন্ত অনুভূত হবে। যুদ্ধের ক্ষতি শুধু শারীরিক নয়, এটি শিশুদের মনের গভীর কোণে এমন দাগ রেখে যাচ্ছে, যা কখনো মুছে ফেলা সম্ভব নয়।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা এড়াতে শেয়ার বেচছে টিকটক - চুক্তি চূড়ান্তের লক্ষ্য ২২ জানুয়ারি
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সন্ত্রাসী ইসরায়েলের সঙ্গে গোপন চুক্তিতে ২৮ হাজার কোটি টাকার অস্ত্র কিনছে আমিরাত
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
১ ট্রিলিয়ন ডলারের প্রতিরক্ষা বিল স্বাক্ষর ট্রাম্পের
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
২০২৬ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য গাজার চিকিৎসকরা মনোনীত
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
তাইওয়ানে শক্তিশালী ভূমিকম্পের আঘাত
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
দাম্পত্য কলহ ও মানসিক সংকটে সন্ত্রাসী সেনারা
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সৌদিতে শিল্পখাতের বিদেশি কর্মীদের ইকামা ফি বাতিল
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
দক্ষিণ এশিয়ায় ভয়াবহ স্বাস্থ্য সংকট: দূষিত বাতাসে বছরে প্রাণ হারাচ্ছে ১০ লাখ মানুষ
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
শীতকালীন ঝড়ে গাজায় মানবিক বিপর্যয় চরমে
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ভারতকে স্থায়ী শিক্ষা দিয়েছে পাকিস্তান -শেহবাজ
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
জন্মহার বাড়াতে চীনে অভিনব সব ব্যবস্থা
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
যোদ্ধাদের সাধারণ অস্ত্রের সামনেই টিকতে পারেনি দখলদারদের কোটি কোটি টাকার সামরিক যান।
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার)












