উপমহাদেশে আইন ব্যবস্থার গোড়াপত্তন
-মুহম্মদ আতিকুজ্জামান।
, ০৬ই রজবুল হারাম শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ৩১ সামিন, ১৩৯০ শামসী সন, ২৯শে জানুয়ারি, ২০২৩ খ্রি:, ১৫ মাঘ, ১৪২৯ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) আইন ও জিহাদ
বাংলাদেশের আইন ব্যবস্থা একদিনে গড়ে উঠেনি। বাংলাদেশের আইনব্যবস্থা কয়েক শতক ধরে ক্রমান্বয়ে বিকাশ লাভ করেছে। আঠারো শতকে ব্রিটিশ শাসন প্রতিষ্ঠার পূর্বে বাংলা অঞ্চল মুঘল শাসনাধীনে ছিল। তেরো শতকের সূচনা থেকে তুর্কি-আফগান সুলতানগণ এদেশ শাসন করেন এবং সতেরো শতকের প্রথমদিকে মুঘলরা তাদের কাছ থেকে ক্ষমতা দখল করে নেয়। তুর্কি-মুঘল শাসনামলে এ দেশটি (বাংলাদেশ) ছিল সুবাহ বাংলার পূর্বাংশ। ব্রিটিশ শাসন আমলে বাংলা প্রদেশের পূর্বাংশ হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। এর পরবর্তী সময়ে ইংরেজ কোম্পানি আইন ব্যবস্থা, ব্রিটিশ আইন ব্যবস্থা, পাকিস্তান আইন ব্যবস্থা এবং সর্বশেষ বর্তমান বাংলাদেশ আইন ব্যবস্থায় সম্মানিত মুসলমানদের অবদান অনস্বীকার্য।
ইংরেজ ব্রিটিশ কোম্পানির আইন ব্যবস্থা:
১৭৫৭ সালে পলাশীর যুদ্ধে বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজ-উদ-দৌলার পরাজয়ের পর প্রাদেশিক শাসনকর্তা বা নাজিমের ক্ষমতা হ্রাস পায়। ১৭৭২ সালে কোম্পানির তৎকালীন গভর্নর প্রথমবারের মতো প্রতি জেলায় রাজস্ব সংগ্রহ ও দেওয়ানি বিচার প্রশাসনের জন্য ইংরেজ কালেক্টর করেন। কালেক্টররা প্রাপ্ত ক্ষমতাবলে মুসলিম উলামা অর্থাৎ তৎকালীন ইসলামী আইন সংক্রান্ত পন্ডিতগণ উনাদের সাহায্যে বিবাদমান পক্ষসমূহের বিচার করতেন, তবে জেলার ফৌজদারি বিচার বিষয়ে কাজীর ক্ষমতায় কোনো হস্তক্ষেপ করতেন না। কালেক্টরদের হাতে পুলিশ বাহিনী নিয়ন্ত্রণের এবং অপরাধীকে গ্রেপ্তারের ক্ষমতা ছিল। গ্রেপ্তারকৃতদের বিচারের জন্য কাজীর ফৌজদারি আদালতে প্রেরণ করা হতো।
কোম্পানি আইন ব্যবস্থায় তৎকালীন গভর্ণর লর্ড কর্নওয়ালিস কালেক্টরদের বিচারিক ক্ষমতা রহিত করে। সেই স্থানে ইংরেজ কর্মকর্তাদের জেলা দেওয়ানি আদালতে বিচারক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। তবে কাজীর ফৌজদারি বিচারিক ক্ষমতা অক্ষুন্ন রেখে প্রতি বিভাগে সার্কিট দায়রা আদালত প্রতিষ্ঠা করা হয়। এধরনের দায়রা আদালতে ইংরেজ কর্মকর্তারা কাজী এবং মুফতীর সহায়তায় গুরুতর মামলা নিষ্পত্তি করতো। জেলা দেওয়ানি আদালতের সিদ্ধান্তের ওপর আপীল গ্রহণের জন্য সে বিভাগীয় আদালত স্থাপন করে। এ সকল আদালতে সার্কিট দায়রা আদালতের নিয়মে বিচারক নিয়োগ করা হতো। বিভাগীয় আদালতসমূহ মুসলিম উলামা উনাদের সহায়তায় মামলা নিষ্পত্তি করত। জেলা দেওয়ানি আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে বিচারকগণ ছোটখাটো অপরাধের বিচার করতেন। মুন্সেফগণ ছোটখাটো দেওয়ানি মামলা নিষ্পত্তি করতেন। ব্রিটিশ প্রশাসক হেস্টিংস কালেক্টরদের হাতে ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা অর্পণ করে এবং সদর আমিন নামে স্থানীয় বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের জেলা দেওয়ানি আদালতে নিয়োগ দান করে। কোম্পানির স্থাপিত আদালতগুলো প্রবিধান দ্বারা এবং পরবর্তীকালে আইন প্রণয়নকারী সংস্থা হিসেবে গভর্ণর জেনারেল-ইন-কাউন্সিল কর্তৃক প্রণীত আইন দ্বারা সংশোধিত ইসলামী আইন অনুসারে বিচারকার্য পরিচালনা করত। ব্রিটিশ প্রশাসক উইলিয়ম বেন্টিঙ্ক জেলা দেওয়ানি আদালতে মুখ্য সদর আমিনের পদ সৃষ্টি করে। মুখ্য সদর আমিন জেলা বিচারকদের সকল ক্ষমতা প্রয়োগ করার অধিকারী হন এবং তাকে মুন্সেফ ও অতিরিক্ত বিচারকদের সিদ্ধান্তের ওপর আপিলের শুনানি গ্রহণ করার ক্ষমতা প্রদান করা হয়।
এভাবে দেখা যায় যে, ব্রিটিশ কোম্পানির আইন ব্যবস্থা প্রচলনের পরও সম্মানিত ইসলামী আইন ব্যবস্থার যথেষ্ট প্রভাব বিদ্যমান ছিলো। শুধু তাই নয় বরং আইন প্রণয়ণ ও বিচার ব্যবস্থায় মুসলিম উলামা অর্থাৎ তৎকালীন ইসলামী আইন সংক্রান্ত পন্ডিতগণ উনাদের আবদান অনস্বীকার্য।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (১)
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
হযরত আবয়াদ্ব ইবনে হাম্মাল রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ছাহিবু লাওলাক, ছাহিবু ক্বাবা কাওসাইনি আও আদনা, ছাহিবে কাওছার, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিরুদ্ধে মুনাফিকদের গভীর ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তের প্রামাণ্য ইতিহাস (৪)
২৯ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, রহমাতুল্লিল আলামীন, ক্বয়িদুল মুরসালীন, রউফুর রহীম, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত মহাপবিত্র জীবনী মুবারক (২৩০০)
২৮ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিভিন্ন জিহাদে ব্যবহৃত মহাসম্মানিত মহাপবিত্র সমরাস্ত্রসমূহ এবং বাহন মুবারক উনাদের পরিচিতি মুবারক (৩)
২৩ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিভিন্ন জিহাদে ব্যবহৃত মহাসম্মানিত মহাপবিত্র সমরাস্ত্রসমূহ এবং বাহন মুবারক উনাদের পরিচিতি মুবারক (২)
১৬ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
উসওয়াতুন হাসানাহ, খুলুকুন আযীম, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার গাযওয়া বা অভিযান মুবারক
১৫ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ছাহিবু লাওলাক, ছাহিবু ক্বাবা কাওসাইনি আও আদনা, ছাহিবে কাওছার, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিরুদ্ধে মুনাফিক্বদের গভীর ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তের প্রামাণ্য ইতিহাস (১)
০৮ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
উসওয়াতুন হাসানাহ, খুলুকুন আযীম, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার গাযওয়া বা অভিযান মুবারক
০৮ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, রহমাতুল্লিল আলামীন, ক্বয়িদুল মুরসালীন, রউফুর রহীম, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত মহাপবিত্র জীবনী মুবারক (২২৯৯)
০৭ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
উসওয়াতুন হাসানাহ, খুলুকুন আযীম, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার গাযওয়া বা অভিযান মুবারক
০১ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, রহমাতুল্লিল আলামীন, ক্বয়িদুল মুরসালীন, রউফুর রহীম, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত মহাপবিত্র জীবনী মুবারক (২২৯৮)
৩১ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার)












