ঐতিহাসিক সম্মানিত খন্দকের জিহাদ (২৪)
, ৪ঠা শাবান শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ২৭ তাসি, ১৩৯০ শামসী সন , ২৫শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ খ্রি:, ১১ই ফাল্গুন, ১৪২৯ ফসলী সন, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) আইন ও জিহাদ
বনু কুরায়যাকে শাস্তিদানের ব্যাপারে রায় দানকারী ছাহাবী হযরত সা‘দ ইবনে মুয়ায রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার সংক্ষিপ্ত জীবনী মুবারক:
পূর্বে আলোচিত বিষয়গুলো পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মাঝেও বিশদভাবে বর্ণিত হয়েছে-
عَنْ حضرت ام المؤمنين الصديقة الثالثة عليها السلام قَالَتْ أُصِيْبَ حضرت سَعْدٌ رضى الله تعالى عنه يَوْمَ الْخَنْدَقِ رَمَاهُ رَجُلٌ مِنْ قُرَيْشٍ يُقَالُ لَهُ حِبَّانُ بْنُ الْعَرِقَةِ وَهُوَ حِبَّانُ بْنُ قَيْسٍ مِنْ بَنِيْ مَعِيْصِ بْنِ عَامِرِ بْنِ لُؤَيٍّ رَمَاهُ فِي الْأَكْحَلِ فَضَرَبَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم خَيْمَةً فِي الْمَسْجِدِ لِيَعُوْدَهُ مِنْ قَرِيْبٍ فَلَمَّا رَجَعَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم مِنَ الْخَنْدَقِ وَضَعَ السِّلَاحَ وَاغْتَسَلَ فَأَتَاهُ حضرت جِبْرِيْلُ عَلَيْهِ السَّلَام وَهُوَ يَنْفُضُ رَأْسَهُ مِنَ الْغُبَارِ فَقَالَ قَدْ وَضَعْتَ السِّلَاحَ وَاللهِ مَا وَضَعْتُهُ اخْرُجْ إِلَيْهِمْ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَأَيْنَ فَأَشَارَ إِلَى بَنِيْ قُرَيْظَةَ فَأَتَاهُمْ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَنَزَلُوْا عَلَى حُكْمِهِ فَرَدَّ الْحُكْمَ إِلَى حضرت سَعْدٍ رضى الله تعالى عنه قَالَ فَإِنِّيْ أَحْكُمُ فِيْهِمْ أَنْ تُقْتَلَ الْمُقَاتِلَةُ وَأَنْ تُسْبَى النِّسَاءُ وَالذُّرِّيَّةُ وَأَنْ تُقْسَمَ أَمْوَالُهُمْ قَالَ هِشَامٌ فَأَخْبَرَنِيْ أَبِيْ عَنْ حضرت ام المؤمنين الصديقة الثالثة عليها السلام أَنَّ سَعْدًا قَالَ اللهُمَّ إِنَّكَ تَعْلَمُ أَنَّهُ لَيْسَ أَحَدٌ أَحَبَّ إِلَيَّ أَنْ أُجَاهِدَهُمْ فِيْكَ مِنْ قَوْمٍ كَذَّبُوْا رَسُوْلَكَ وَأَخْرَجُوْهُ اللهُمَّ فَإِنِّيْ أَظُنُّ أَنَّكَ قَدْ وَضَعْتَ الْحَرْبَ بَيْنَنَا وَبَيْنَهُمْ فَإِنْ كَانَ بَقِيَ مِنْ حَرْبِ قُرَيْشٍ شَيْءٌ فَأَبْقِنِيْ لَهُ حَتَّى أُجَاهِدَهُمْ فِيْكَ وَإِنْ كُنْتَ وَضَعْتَ الْحَرْبَ فَافْجُرْهَا وَاجْعَلْ مَوْتَتِيْ فِيْهَا فَانْفَجَرَتْ مِنْ لَبَّتِهِ فَلَمْ يَرُعْهُمْ وَفِي الْمَسْجِدِ خَيْمَةٌ مِنْ بَنِيْ غِفَارٍ إِلَّا الدَّمُ يَسِيْلُ إِلَيْهِمْ فَقَالُوْا يَا أَهْلَ الْخَيْمَةِ مَا هَذَا الَّذِيْ يَأْتِيْنَا مِنْ قِبَلِكُمْ فَإِذَا حضرت سَعْدٌ رضى الله تعالى عنه يَغْذُوْ جُرْحُهُ دَمًا فَمَاتَ مِنْهَا رَضِيَ اللهُ عَنْهُ.
অর্থ: সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, খন্দকের জিহাদে হযরত সা‘দ ইবনে মুয়ায রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি আহত হয়েছিলেন। কুরাইশ গোত্রের হিববান ইবনু আরেকা নামক এক ব্যক্তি উনার উভয় বাহুর মধ্যবর্তী রগে তীর বিদ্ধ করেছিল। নিকট থেকে উনার খোঁজ-খবর রাখার জন্য সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মসজিদে নববী শরীফে একটি তাঁবু তৈরি করেছিলেন। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি খন্দকের জিহাদ থেকে ফিরে এসে যখন হাতিয়ার রেখে গোসল শেষ করলেন তখন হযরত জিবরাঈল আলাইহিস সালাম তিনি নিজ মাথার ধূলাবালি ঝাড়তে ঝাড়তে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কাছে হাজির হলেন এবং বললেন, আপনি অস্ত্র রেখে দিয়েছেন, কিন্তু মহান আল্লাহ পাক উনার কসম! আমি এখনো তা রেখে দেইনি। চলুন তাদের দিকে। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনাকে জিজ্ঞেস করলেন কোথায়? তিনি বনী কুরাইযা গোত্রের প্রতি ইশারা করলেন। তখন সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বনু কুরাইযার মহল্লায় এলেন। অবশেষে তারা সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ফায়সালা মুবারক মান্য করে দূর্গ থেকে নিচে নেমে এল। কিন্তু তিনি ফায়সালার ভার হযরত সা‘দ ইবনে মুয়ায রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার উপর ন্যস্ত করলেন। তখন হযরত সা‘দ ইবনে মুয়ায রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বললেন, তাদের ব্যাপারে আমি এই ফায়সালা দিচ্ছি যে, তাদের যোদ্ধাদেরকে হত্যা করা হবে, নারী ও সন্তানদেরকে বন্দী করা হবে এবং তাদের ধন-সম্পদ বণ্টন করা হবে। বর্ণনাকারী হিশাম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, আমার পিতা “সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম” উনার থেকে আমার কাছে বর্ণনা করেছেন যে, হযরত সা‘দ ইবনে মুয়ায রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার কাছে দু‘আ করেছিলেন, আয় মহান আল্লাহ পাক! আপনি তো জানেন, আপনার সন্তুষ্টির জন্য তাদের বিরুদ্ধে জিহাদ করার চেয়ে কোন কিছুই আমার কাছে অধিক প্রিয় নয়। যে সম্প্রদায় আপনার রসূল সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে মিথ্যারোপ করেছে এবং হিজরত মুবারকের পরিস্থিতি সৃষ্টি করে দিয়েছে। আয় মহান আল্লাহ পাক! আমি মনে করি (খন্দক যুদ্ধের পর) আপনি তো আমাদের ও তাদের মধ্যে যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটিয়েছেন। যদি এখনো কুরাইশদের বিরুদ্ধে কোন যুদ্ধ বাকী থেকে থাকে তাহলে আমাকে বাঁচিয়ে রাখুন, যাতে আমি আপনার রাস্তায় তাদের বিরুদ্ধে জিহাদ করতে পারি। আর যদি যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটিয়ে থাকেন তাহলে ক্ষত হতে রক্ত প্রবাহিত করুন আর তাতেই আমার শাহাদাত দিন। এরপর উনার ক্ষত থেকে রক্তক্ষরণ হয়ে তা প্রবাহিত হতে লাগল। মসজিদে বনী গিফার গোত্রের একটি তাঁবু ছিল। তাদের দিকে রক্ত প্রবাহিত হতে দেখে তারা বললেন, হে তাঁবুবাসীগণ! আপনাদের দিক থেকে এসব কী আমাদের দিকে আসছে? পরে উনারা জানলেন যে, হযরত সা‘দ ইবনে মুয়ায রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার ক্ষতস্থান থেকে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। এ জখমের কারণেই তিনি ইনতিকাল করেন, মহান আল্লাহ পাক উনার উপর সন্তুষ্ট থাকুন। (মুসলিম শরীফ, হাদীছ শরীফ নং-১৭৬৯, আহমদ শরীফ হাদীছ শরীফ নং- ২৪৩৪৯)
-মুহম্মদ নাজমুল হুদা ফরাজী।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, রহমাতুল্লিল আলামীন, ক্বয়িদুল মুরসালীন, রউফুর রহীম, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত মহাপবিত্র জীবনী মুবারক (২৩০১)
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (১)
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
হযরত আবয়াদ্ব ইবনে হাম্মাল রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ছাহিবু লাওলাক, ছাহিবু ক্বাবা কাওসাইনি আও আদনা, ছাহিবে কাওছার, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিরুদ্ধে মুনাফিকদের গভীর ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তের প্রামাণ্য ইতিহাস (৪)
২৯ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, রহমাতুল্লিল আলামীন, ক্বয়িদুল মুরসালীন, রউফুর রহীম, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত মহাপবিত্র জীবনী মুবারক (২৩০০)
২৮ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিভিন্ন জিহাদে ব্যবহৃত মহাসম্মানিত মহাপবিত্র সমরাস্ত্রসমূহ এবং বাহন মুবারক উনাদের পরিচিতি মুবারক (৩)
২৩ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিভিন্ন জিহাদে ব্যবহৃত মহাসম্মানিত মহাপবিত্র সমরাস্ত্রসমূহ এবং বাহন মুবারক উনাদের পরিচিতি মুবারক (২)
১৬ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
উসওয়াতুন হাসানাহ, খুলুকুন আযীম, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার গাযওয়া বা অভিযান মুবারক
১৫ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ছাহিবু লাওলাক, ছাহিবু ক্বাবা কাওসাইনি আও আদনা, ছাহিবে কাওছার, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিরুদ্ধে মুনাফিক্বদের গভীর ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তের প্রামাণ্য ইতিহাস (১)
০৮ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
উসওয়াতুন হাসানাহ, খুলুকুন আযীম, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার গাযওয়া বা অভিযান মুবারক
০৮ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, রহমাতুল্লিল আলামীন, ক্বয়িদুল মুরসালীন, রউফুর রহীম, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত মহাপবিত্র জীবনী মুবারক (২২৯৯)
০৭ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
উসওয়াতুন হাসানাহ, খুলুকুন আযীম, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার গাযওয়া বা অভিযান মুবারক
০১ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার)












