ঐতিহাসিক সম্মানিত বদর জিহাদ (পর্ব-৪৩)
, ২৪ রবীউছ ছানী শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ১১ সাদিস ১৩৯১ শামসী সন , ০৯ নভেম্বর, ২০২৩ খ্রি:, ২৪ কার্তিক, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) আইন ও জিহাদ
গত ২৫শে শাহরুল আ’যম শরীফের পর
প্রসিদ্ধ তারিখ ও সীরত গ্রন্থে উল্লেখ রয়েছে, হযরত ইবনে ইসহাক্ব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বর্ণনা করেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আবূ জেহেলকে সন্ধান করার জন্য নির্দেশ মুবারক দিয়ে বলে দিয়েছিলেন যে, আবূ জেহেলকে শনাক্ত করতে যদি আপনাদের অসুবিধা হয় তাহলে আপনারা তার হাঁটুতে একটা পুরাতন যখমের চিহ্ন দেখবেন। ঘটনা হচ্ছে, বাল্যকালে আমি এবং আবূ জেহেল একদিন আব্দুল্লাহ ইবনে জাদআনের বৈঠকখানায় কোনো একটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে থাকি। একপর্যায়ে সে আমার সম্পর্কে এলোমেলো কথা বলে। কথার একপর্যায় তাকে ধাক্কা দিলে সে উপুড় হয়ে পড়ে যায় এবং তার এক হাঁটুর চামড়া ছিঁড়ে যায়। সেই যখমের চিহ্ন তার হাঁটুতে আজ পর্যন্ত রয়েছে। ফক্বীহুল উম্মত হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, “আমি বদর ময়দানে আবূ জেহেলকে দেখে চিনলাম। তখনো তার প্রাণ শেষ হয়ে যায়নি। আমি তার ঘাড়ের উপর পা রাখলাম। আমি তাকে সম্বোধন করে বললাম, হে মহান আল্লাহ পাক উনার দুশমন! মহান আল্লাহ পাক তিনি তোমাকে লাঞ্ছিত করেছেন। আবূ জেহেল আমাকে জিজ্ঞেস করলো, আজকের বিজয় কোন দলের? আমি বললাম, মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের জন্যই আজকের বিজয়।
অন্য বর্ণনায় রয়েছে, হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি যখন আবূ জেহেলকে হত্যা করে তার মাথা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কাছে নিয়ে আসলেন, তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি জিজ্ঞেস করলেন, “এটা কার মাথা”? আমি বললাম, আবূ জাহিলের মাথা। তার কথা-বার্তাও আমি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট পৌঁছে দিলাম। তিনি তাকবীর ধ্বনি মুবারক দিলেন এবং বললেন, “এ ছিলো আমার এবং আমার উম্মতের মাঝে ফিরআউন। যার অপকর্ম ও ফিতনা হযরত কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার সময়ের ফিরআউনের অপকর্ম ও ফিতনা থেকে অনেক বেশি। ফিরআউন সে তার মৃত্যুকালে কালিমা শরীফ পড়তে চেয়েছিলো কিন্তু এ উম্মতের ফিরআউন সে তার মৃত্যু কালেও কুফরী ও অহংকারের বাক্য উচ্চারণ করেছে। এই কাট্টা কাফির আবূ জাহিল মূলত কুফরী ও অপকর্মে সমস্ত উম্মত অপেক্ষা অগ্রগামী। মৃত্যুকালে তার জ্ঞানচক্ষু খুলেনি। মৃত্যু যন্ত্রণায় তার কুফরী ও অহংকারে কাঁপন ধরেনি, বরং মৃত্যুর সময় তার কুফরী ও অহংকার বৃদ্ধি পেয়েছিলো”। নাউযুবিল্লাহ!
উল্লেখ্য যে, আবূ জেহেলের প্রকৃত নাম ছিলো আবুল হাকাম। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তাকে আবূ জাহিল বলে সম্বোধন করেছিলেন। তখন থেকে সে আবূ জেহেল বা মূর্খের পিতা নামে মশহূর হয়। যতদিন সে জীবিত ছিলো, তার থেকে সর্বপ্রকার মূর্খতা ও কুফরীর জন্ম নিয়েছিলো। নাউযুবিল্লাহ!
-আল্লামা মুহম্মদ জাহাঙ্গীর হুসাইন।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
প্রসঙ্গ: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার সনদ (৩)
১২ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সম্মানিত বনু কায়নুকার জিহাদ (৪)
১১ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সম্মানিত বনু কায়নুকার জিহাদ (৩)
১০ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সম্মানিত বনু কায়নুকার জিহাদ (২)
০৯ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ বিজয় (৯)
০৬ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সম্মানিত বানূ কায়নুকার জিহাদ (১)
০৫ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
প্রসঙ্গ: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার সনদ (২)
০৪ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ বিজয় (৮)
২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
প্রসঙ্গ: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার সনদ (১)
২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দয়া-ইহসান মুবারক এবং সাইয়্যিদুনা হযরত আবূ সুফিয়ান আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত ঈমান মুবারক প্রকাশ:
২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মহাসম্মানিত দুমাতুল জানদালের জিহাদ মুবারক
২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হাররার ঘটনা এবং ইয়াযীদ লা’নাতুল্লাহি আলাইহির কুফরী কাজের ফিরিস্তি (৮)
২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার)