ঐতিহাসিক সম্মানিত বদর জিহাদ (পর্ব-৪৬)
, ১৭ জুমাদাল উলা শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ০৩ সাবি’ ১৩৯১ শামসী সন , ০২ ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রি:, ১৬ অগ্রহায়ণ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) আইন ও জিহাদ
পূর্ব প্রকাশিতের পর
ঐতিহাসিক বদর ময়দানে কুরাইশ মুশরিকরা মুসলিম বাহিনীকে দ্বিগুণ বহুগুণ দেখেছিল
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ১৭ই রমাদ্বান ইয়াওমুল জুমুয়াহ শরীফ ৩১৩ জন মুসলিম বাহিনীকে নিয়ে ভোর বেলায় জিহাদের ময়দানে তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করলেন এবং মুজাহিদ বাহিনীকে সুশৃঙ্খলভাবে সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করালেন। অপরদিকে মুশরিকরাও এক হাজার সৈন্য নিয়ে টিলার পিছন দিক থেকে বদর ময়দানে এসে উপস্থিত হলো। তখন মুসলিম বাহিনীর সংখ্যা কম হওয়ায় এবং নিজেদের সংখ্যা বেশী হওয়ার কারণে কাফিরেরা অত্যন্ত গর্বিত, অতিশয় অহংকার ও দাম্ভিকতার সাথে ময়দানে আত্মপ্রকাশ করে।
বদর জিহাদের ময়দানে মুখোমুখি দুইটি দল। উভয় দল সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে। এই অবস্থাটা মহান আল্লাহ্ পাক উনার নিদর্শন মুবারক। একদিকে মুজাহিদ বাহিনী, অপরদিকে সত্য প্রত্যাখ্যানকারী মুশরিক বাহিনী। হে মুশরিকদের দল! দেখ সম্মানিত নুবুওওয়াত মুবারক উনার নিদর্শন মুবারক এবং প্রমাণ মুবারক কিভাবে প্রকাশিত হয়েছে।
মুসলিম বাহিনীর সংখ্যা ও অস্ত্র-সস্ত্রের সার সংক্ষেপ:
মহান আল্লাহ্ পাক উনার রাস্তায় জিহাদকারী মুসলমানদের সংখ্যা: ৩১৩ জন।
হযরত মুহাজির ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের সংখ্যা- ৭৭ থেকে ৮০ জন।
হযরত আনছার ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের সংখ্যা- ২৩৩ থেকে ২৩৬ জন। সর্বমোট = ৩১৩ জন। শাহাদাতী শান মুবারক গ্রহণ করেন ১৪ জন।
* বদর জিহাদে মুসলিম বাহিনী উনাদের অস্ত্রের বিবরণ: (ক) ঘোড়া = ৩ টি। (খ) উট = ৭০ টি। (গ) বর্ম = ০৬ টি। (ঘ) তরবারী = ০৮টি।
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বাহন মুবারকে ছিলেন সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল আউওয়াল কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম এবং সাইয়্যিদুনা হযরত যায়িদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু। আর অন্যান্য হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা একটি উটে কয়েক জন আরোহণ করে বদর জিহাদে তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করেন। প্রায় সকলেই ছিলেন পদাতিক।
মুশরিক বাহিনীর সংখ্যা ও অস্ত্র-সস্ত্রের সার সংক্ষেপ:
১০০০ জন যোদ্ধা, সকলেই বর্মধারী, সঙ্গে যুদ্ধের উন্মাদনা সৃষ্টিকারী গায়িকা নর্তকী। ঘোড়া = ৫০০টি। উট = ৭০০টি। যুদ্ধ সম্ভারের প্রাচুর্যে আকাশ চুম্বী অহংকার-গর্ব। সেনাপতি ছিলো উতবা।
* কাফির নিহত হয় = ৭০ জন। আর বন্দী হয় = ৭০ জন। আর ১৪ জন প্রধান কুরাইশ নেতার মধ্যে ১১ জনই বদর জিহাদে নিহত হয়।
যখন উভয় পক্ষের দল সারিবদ্ধভাবে মুখোমুখি দাঁড়িয়ে ছিল। তখন প্রথম দিকে কাফিররা দেখেছিল মুসলিম বাহিনীর সংখ্যা অনেক কম। এই অবস্থা তাদেরকে উদ্ধুদ্ব করে তুললো। কিন্তু জিহাদ শুরু হওয়ার পর কুরাইশরা দেখলো মুসলিম বাহিনীর সংখ্যা দ্বিগুণ-বহুগুণ, অধিক, অত্যাধিক। যেমন এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
قَدْ كَانَ لَكُمْ اٰيَةٌ فِيْ فِئَتَيْنِ اِلْتَقَتَا فِئَةٌ تُقَاتِلُ فِيْ سَبِيْلِ اللهِ وَأُخْرٰى كَافِرَةٌ يَّرَوْنَهُمْ مِّثْلَيْهِمْ رَأْيَ الْعَيْنِ وَاللهُ يُؤَيِّدُ بِنَصْرِهٖ مَنْ يَّشَاءُ إِنَّ فِيْ ذٰلِكَ لَعِبْرَةً لِّأُوْلِي الْأَبْصَارِ
অর্থ: “দুইটি দলের পরস্পর সম্মুখীন হওয়ার মধ্যে আপনাদের জন্য মহান নিদর্শন ছিলো। একটি দল মহান আল্লাহ্ পাক উনার রাস্তায় জিহাদ করছিলেন। আর অন্যদলটি ছিলো কাফির। (আর এই কাফির দলটি) তারা উনাদেরকে চোখের দেখায় দ্বিগুণ দেখেছিলো। আর মহান আল্লাহ্্ পাক তিনি যাকে ইচ্ছা করেন তাকে নিজ সাহায্য মুবারক দ্বারা শক্তিশালী করেন। নিশ্চয়ই ইহাতে অন্তর্দৃষ্টি-সম্পন্ন ব্যক্তিদের জন্য ইবরত, নছীহত ও শিক্ষনীয় বিষয় রয়েছে”। সুবহানাল্লাহ! (পবিত্র সূরা আলে ইমরান শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ-১৩)
উক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ উনার ব্যখ্যায় “তাফসীরে মাযহারী” কিতাবে উল্লেখ আছে, যুদ্ধের প্রথম দিকে কুরাইশরা দেখেছিল মুসলমানদের সংখ্যা অনেক কম। এই অবস্থা তাদের মনোবল যেন বাড়িয়ে দিল। কিন্তু জিহাদ শুরু হওয়ার পর তারা দেখলো, মুসলমানদের সংখ্যা দ্বিগুণ-বহুগুণ বেশী। তখন কুরাইশ মুশরিকরা ভীত হলো, মুষড়ে পড়লো। পরিশেষে কুরাইশরা পরাজয় বরণ করলো। অপরদিকে কুরাইশদের সংখ্যা কম দেখতে পেয়ে মুসলিম বাহিনী আরো বেশী দৃঢ়চিত্ত হলেন। আর দৃঢ়চিত্ততার ফল স্বরূপ উনারা বিজয় লাভ করলেন। আর উনাদের দৃঢ়চিত্ততার মূল কারণ মহান আল্লাহ্্ পাক উনার ওয়াদা মুবারক, প্রতিশ্রুতি মুবারক। সুবহানাল্লাহ!
-আল্লামা মুহম্মদ জাহাঙ্গীর হুসাইন।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, রহমাতুল্লিল আলামীন, ক্বয়িদুল মুরসালীন, রউফুর রহীম, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত মহাপবিত্র জীবনী মুবারক (২৩০১)
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (১)
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
হযরত আবয়াদ্ব ইবনে হাম্মাল রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ছাহিবু লাওলাক, ছাহিবু ক্বাবা কাওসাইনি আও আদনা, ছাহিবে কাওছার, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিরুদ্ধে মুনাফিকদের গভীর ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তের প্রামাণ্য ইতিহাস (৪)
২৯ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, রহমাতুল্লিল আলামীন, ক্বয়িদুল মুরসালীন, রউফুর রহীম, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত মহাপবিত্র জীবনী মুবারক (২৩০০)
২৮ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিভিন্ন জিহাদে ব্যবহৃত মহাসম্মানিত মহাপবিত্র সমরাস্ত্রসমূহ এবং বাহন মুবারক উনাদের পরিচিতি মুবারক (৩)
২৩ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিভিন্ন জিহাদে ব্যবহৃত মহাসম্মানিত মহাপবিত্র সমরাস্ত্রসমূহ এবং বাহন মুবারক উনাদের পরিচিতি মুবারক (২)
১৬ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
উসওয়াতুন হাসানাহ, খুলুকুন আযীম, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার গাযওয়া বা অভিযান মুবারক
১৫ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ছাহিবু লাওলাক, ছাহিবু ক্বাবা কাওসাইনি আও আদনা, ছাহিবে কাওছার, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিরুদ্ধে মুনাফিক্বদের গভীর ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তের প্রামাণ্য ইতিহাস (১)
০৮ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
উসওয়াতুন হাসানাহ, খুলুকুন আযীম, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার গাযওয়া বা অভিযান মুবারক
০৮ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, রহমাতুল্লিল আলামীন, ক্বয়িদুল মুরসালীন, রউফুর রহীম, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত মহাপবিত্র জীবনী মুবারক (২২৯৯)
০৭ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
উসওয়াতুন হাসানাহ, খুলুকুন আযীম, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার গাযওয়া বা অভিযান মুবারক
০১ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার)












