চট্টগ্রাম বন্দরে বিদেশী প্রাধান্যের প্রতিবাদে পতাকা মিছিল
, ১৯ জুমাদাল ঊখরা শরীফ, ১৪৪৭ হিজরী সন, ১২ সাবি’, ১৩৯৩ শামসী সন , ১১ ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রি:, ২৬ অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) তাজা খবর
বাংলাদেশী পোর্ট অপারেটিং ইন্ডিাস্ট্রিকে ধ্বংস করার পরিকল্পনা এবং চট্টগ্রাম বন্দরে বিদেশী বন্দর অপারেটরদের প্রধান্য দেয়া ও যুক্ত করার প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘বাংলাদেশ ফার্স্ট’ পতাকা মিছিল করেছে স্টুডেন্টস ফর সভরেন্টি। গতকাল ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) টিএসসি থেকে শাহবাগে গিয়ে সমাবেশের মাধ্যমে মিছিলটি শেষ হয়।
স্টুডেন্টস ফর সভরেন্টি’র নেতৃবৃন্দ বলেন, বিডার নির্বাহী ও নৌ উপদেষ্টার কথাবার্তা ও আচরণে মনে হচ্ছে তারা যেন বিদেশী পোর্ট অপারেটরদের মার্কেটিং এজেন্ট! দেশের কৌশলগত বন্দর বিদেশীদের দেয়ার জন্য উনারা মরিয়া হয়ে উঠেছে! দেশ, দেশীয় প্রতিষ্ঠান এবং চট্টগ্রাম বন্দরে নিয়োজিত অপারেটরদের দুর্নাম করা এবং বিদেশী ও বিদেশী পোর্ট অপারেটরদের প্রশংসা করাই যেন বিডার নির্বাহী ও নৌ উপদেষ্টার মূল চাকুরীতে পরিণত হয়েছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই!
নেতৃবৃন্দ বলেন, দেশের পক্ষে কাজ করতে না পারলে উনাদের পদত্যাগ করা উচিত। এছাড়া বিদেশীদের হাতে বন্দর দেয়ার এখতিয়ার অন্তর্র্বতী সরকারের নেই। বন্দর কেন্দ্রীক দুর্নীতি, চাঁদাবাজী ও অনিয়ম-অব্যবস্থাপনা বিরুদ্ধে না নিয়ে এর ধোয়া তুলে বিদেশীদের হাতে চট্টগ্রাম বন্দর তুলে দেয়াকে জায়েজ বানাতে চাইছে অন্তর্র্বতী সরকার।
দ্বিতীয়ত:
মাল্টিলেটেরাল চুক্তির থাকায় ডিপি ওয়ার্ল্ডের হাতে চট্টগ্রাম বন্দর চলে গেলে মাল্টিলেটেরাল পার্টনার হিসেবে আরব আমিরাতের ঘণিষ্ঠ মিত্র ভারত, আমেরিকা ও ইজরাইলের পরোক্ষ উপস্থিতি, প্রভাব ও তাদের বার্গেইনিং পাওয়ার আমাদের চট্টগ্রাম বন্দরে নিশ্চিত হবে, যা বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বকে যে কোনো মুহূর্তে ঝুঁকিতে ফেলে দিতে পারে।
তৃতীয়ত:
বিদেশি কোম্পানিকে বন্দর পরিচালনার ভার দিলে বাংলাদেশের অর্থনীতি নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বর্তমানে নিউমুরিং টার্মিনালে কন্টেইনার প্রতি ধার্য আনুমানিক ১১৯ ডলার, যার পুরোটাই বাংলাদেশের রিজার্ভ তথা অর্থনীতিতে যুক্ত হয়। কিন্তু লালদিয়ার চরে এপিএম টার্মিনালস কর্তৃক নির্মিতব্য টার্মিনাল থেকে কন্টেইনার প্রতি সরকার পাবে মাত্র ২১ ডলার। পতেঙ্গার মত ডিপি ওয়ার্ল্ডের হাতে নিউমুরিং টার্মিনালও চলে গেলে প্রায় একই অবস্থা হবে। ফলে বাংলাদেশ প্রতিবছর মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার হারাবে এবং দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে বড় ধরণের চাপ সৃষ্টি হবে। এছাড়া বিদেশী কর্তৃক অন্যাহ্য ট্যারিফ বৃদ্ধির ফলে দেশের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও দৈনন্দিন পণ্যের দাম বেড়ে যাবে। তাছাড়া গোপন চুক্তিতে কী আছে সেটা তো আমরা এখনো জানতেই পারলাম না!
চতুর্থত:
দেশি-বিদেশি বিভিন্ন 'প্রোপাগান্ডা মেশিন' মিথ্যা তথ্য দিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করছে। যেমন তারা 'সিঙ্গাপুর ও ভিয়েতনামের বন্দরও বিদেশিরা চালায়' মর্মে প্রোপাগা-া ছড়াচ্ছে, অথচ বাস্তবে সিঙ্গাপুরের একটি কন্টেইনার টার্মিনালও বিদেশি অপারেটররা চালায় না। এমনকি ভিয়েতনামে কোনো টার্মিনাল এককভাবে কোনো বিদেশি কোম্পানিকে দেয়া হয় নি। এককভাবে বিদেশীদের দেয়া হয়েছে মূলত আফ্রিকান রাষ্ট্রগুলোতে ও কিছু ক্ষেত্রে ভারতে। অতএব, সিঙ্গাপুরের মডেলে না গিয়ে ভারত কিংবা আফ্রিকান মডেল এনে অন্তর্র্বতী সরকার বাংলাদেশকে কি আফ্রিকা বানাতে চায়?
পঞ্চমত:
বাংলাদেশের অর্থনীতিকে যদি আমরা ট্রিলিয়ন ডলারে উন্নীত করতে চাই এবং বন্দর ব্যবস্থাপনার সমস্যা (জট, সিন্ডিকেট, দুর্নীতি ইত্যাদি) দূর করতে চাই, তাহলে আমাদেরকে অবশ্যই বন্দর বিকেন্দ্রীকরণ করতে হবে। এক্ষেত্রে সাগর ও নদী ভিত্তিক চীনের মডেল দেখা যেতে পারে। কিন্তু সরকর কর্তৃক সম্প্রতি গৃহীত ভারত কিংবা আফ্রিকান মডেল গ্রহণ করলে ক্ষতি ছাড়া কোনো লাভ হবে না বাংলাদেশের।
বাংলাদেশের নানাপ্রান্তে নতুন নতুন সমুদ্র বন্দর তৈরীর পাশাপাশি বাংলাদেশের ভিতর দিয়ে যাওয়া নদী কেন্দ্রীক প্রচুর বন্দর তৈরী করার উদ্যোগ নিতে হবে সরকারকে। নদীশূণ্য এলাকায় পণ্য পরিবহণে রেল লাইনের সংযোগ দিতে হবে। এতে খরচ কমবে, সবকিছুর দাম কমবে, দেশের জেলায় জেলায় শিল্প ও কর্মসংস্থান তৈরী হবে, আমদানী-রপ্তানীতে জোয়ার সৃষ্টি হবে এবং দেশের তৃণমূল থেকেই আন্তর্জাতিক ট্রেডিং হবে।
এছাড়া, সরকারকে গুরুত্বসহ বিবেচনায় নিতে হবে যে, “পোর্ট অপারেটিং” বাংলাদেশের একটি অন্যতম বৃহৎ ইন্ডাস্ট্রি বা শিল্প। বিদেশীদের নিয়ে আসার নামে দেশীয় এই ইন্ডাস্ট্রি নষ্ট করার পায়তারা বন্ধ করে বরং এটিকে আন্তর্জাতিকীকরণ করতে হবে। বিভিন্ন দেশের বন্দর পরিচালনার কাজ পেতে সহযোগিতা করতে হবে।
অতএব, সরকারের কাছে আমাদের দাবী হচ্ছে-
১. নিউমুরিং টার্মিানাল ডিপি ওয়ার্ল্ডের সাথে লিজ প্রক্রিয়া বাতিল করতে হবে,
২. এপিএম টার্মিনালস ও মেডলগের সাথে লালদিয়ার চর ও পানগাও টার্মিনাল চুক্তি বাতিল করতে হবে।
৩. বন্দর বিকেন্দ্রীকর করতে হবে। অর্থাৎ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে একাধিক সমুদ্র বন্দরের পাশাপাশি প্রচুর নদী বন্দর তৈরির উদ্যোগ নিতে হবে।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
চুক্তি লঙ্ঘন অব্যাহত থাকলে যুদ্ধবিরতি এগিয়ে নেয়া সম্ভব হবে না -হামাস
১১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সচিবালয়ে ভাতা দাবিতে অর্থ উপদেষ্টা অবরুদ্ধ
১১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সেনাপ্রধানের উপস্থিতিতে মিলিটারি ইঞ্জিনিয়ার সার্ভিসের সম্মেলন শুরু
১১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
বিচারবহির্ভূত হত্যা ও হেফাজতে মৃত্যু থামেনি বাংলাদেশে
১১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পদত্যাগ করেছে উপদেষ্টা মাহফুজ ও আসিফ
১১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
‘উপদেষ্টার নাম ভাঙিয়ে’ জায়গা ইজারা দিলো বন্দর
১১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
গণ-অভ্যুত্থানের প্রভাব খাটিয়ে দুর্নীতিতে জড়িয়েছে বিজয়ী পক্ষ -টিআইবি
০৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের গৃহঋণ পরিশোধে অযাচিত চাপ
০৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
কোরিয়ার সহায়তায় নদীর পানির মান যাচাইয়ে স্বয়ংক্রিয় মনিটরিং ব্যবস্থা চালু করবে সরকার
০৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
রাজনীতি সম্পূর্ণ ধনিক শ্রেণীর দখলে চলে গেছে
০৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সুপ্রিম কোর্ট ও আশপাশে সব ধরনের সমাবেশ নিষিদ্ধ করলো ডিএমপি
০৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
তফসিলের পর অনুমোদনহীন সমাবেশ-আন্দোলন নিয়ন্ত্রণে কঠোর হবে সরকার
০৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)












