চিকিৎসকদের ‘উৎকোচ-উপহারেই’ বেশি ব্যয় করছে ওষুধ কোম্পানীগুলো
‘ওষুধ কোম্পানিগুলো বিয়ের খরচ পর্যন্ত দেয়। বিদেশে বেড়াতে যাওয়ার টিকিট দেয়’
, ১৩ই জুমাদাল ঊলা শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ০৯ সাবি’, ১৩৯০ শামসী সন, ০৮ই ডিসেম্বর, ২০২২ খ্রি:, ২৩ই অগ্রহায়ণ, ১৪২৯ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) দেশের খবর
ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর চিকিৎসকদের পেছনে লাখ লাখ টাকা ব্যয় করছে। নিয়মিত মাসোহারার লোভে কতিপয় চিকিৎসক ব্যবস্থাপত্রে লিখছে ‘মানহীন’ ও ‘অপ্রয়োজনীয়’ ওষুধ!
জানা গেছে, ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর ৫৮ ভাগ কর্মী বাজারজাতকরণ (মার্কেটিং) ও বিতরণের পেছনে কাজ করেন। প্রতিষ্ঠানগুলোর মোট আয়ের ২৭ ভাগেরও বেশি ব্যয় হয় তাদের পেছনে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ধরনের কর্মকা- চিকিৎসকদের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে।
স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিটের এক গবেষণায় দেখা গেছে, অতিরিক্ত এ ব্যয়ের কারণে দেশে চিকিৎসাসেবা বঞ্চিত থাকছেন ১৬ শতাংশ রোগী। কারণ প্রসঙ্গে তারা বলছেন, দেশের হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা নেওয়া ৯৭ শতাংশ রোগীই ওষুধ পান না। প্রয়োজনীয় ওষুধ তাদের কিনতে হয় বিভিন্ন ফার্মেসি থেকে। একইভাবে ৮৫.১ শতাংশ পরীক্ষা-নিরীক্ষা রোগীকে করতে হয় বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টারে। ফলে বেড়ে যায় রোগীর চিকিৎসাব্যয়। বিশেষ করে ক্যানসার, কিডনি ডায়ালাইসিস ও ডায়াবেটিসের মতো দীর্ঘমেয়াদি রোগের চিকিৎসায় নিঃস্ব হচ্ছেন রোগী ও তাদের স্বজনরা।
এ বিষয়ে ফার্মাসিউটিক্যালস মার্কেট সংশ্লিষ্ট কয়েকজনের সঙ্গে কথা হয়। তারা জানান, ব্যবস্থাপত্রে নিজ প্রতিষ্ঠানের ওষুধ লেখার বিষয়ে চিকিৎসকদের নগদ অর্থ দেওয়ার প্রক্রিয়াটি সর্বপ্রথম স্বল্প আঙ্গিকে শুরু করে ড্রাগ ইন্টারন্যাশনাল ও প্যাসিফিক ফার্মা। মূলত তাদের ক্রনিক কেয়ার ওষুধগুলো ব্যবস্থাপত্রে লেখার জন্য চিকিৎসকদের এ সুবিধা দেওয়া হয়।
মানুষ যদি একবার হার্টের ওষুধ খাওয়া শুরু করে, এটা চলতেই থাকবে। ব্লাড প্রেশার, ডায়াবেটিসের ওষুধ একবার খাওয়া শুরু করলে মৃত্যু পর্যন্ত সেটা চলতে থাকবে। ক্রনিক ওষুধগুলো সাধারণত চিকিৎসকরা সহজে লিখতে চান না, যতক্ষণ না তারা নিশ্চিত হন যে ওষুধগুলো যথেষ্ট কার্যকর। এ অবস্থায় নির্বাচিত বেশকিছু চিকিৎসকের সঙ্গে তারা যোগাযোগ করেন এবং টাকার বিনিময়ে তাদের হাত করে ফেলেন।
‘লেনদেনের কাজটা (চিকিৎসকদের অর্থ দেওয়া) আরও ব্যাপক মাত্রা পায় ২০০৬/২০০৭ সালের দিকে। এ সময় ইনসেপটার একটা গ্রুপ অপসোনিনে চলে আসে। তারা ইনসেপটাকে টপকাতে চিকিৎসকদের দ্বিগুণ টাকা দেওয়া শুরু করে। অসুস্থ এ প্রতিযোগিতার ফলে বর্তমানে চিকিৎসকের সঙ্গে একটি ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের মাসিক চুক্তি দাঁড়ায় লক্ষাধিক টাকার!’
চিকিৎসকদের মাসোহারা দেওয়া প্রসঙ্গে ইনসেপটা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের মিডিয়া কনসালটেন্ট জাহিদ রহমান বলেন, কোনো ওষুধ কোম্পানি যদি চিকিৎসকদের সঙ্গে অর্থনৈতিক কর্মকা- পরিচালনা করে, সেটা অনৈতিক। আমার জানা মতে ইনসেপটা ফার্মাসিউটিক্যালসের এমনটি করার কথা নয়।
কোম্পানির প্রমোশন সিস্টেম প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এগুলো আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ভালো বলতে পারবেন। তবে আমি যতটুকু বলতে পারি, আমাদের কোম্পানি চিকিৎসকদের নানা সাইন্টিফিক সেমিনারে অংশ নেয়। এটা আমাদের প্রমোশনের বড় মাধ্যম।
চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ চিকিৎসকদের:
শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আশরাফুল হক বলেন, চিকিৎসকদের এমন কর্মকা-ের বিষয়ে আগে যখন শুনতাম তখন খুবই বিব্রতবোধ করতাম। কিন্তু এখন আর হই না। কারণ, আমাদের আসলে লাজলজ্জা চলে গেছে। বলতে খারাপ শুনালেও সত্য যে আমরা এতটাই নগ্ন হয়ে গেছি, ওষুধ কোম্পানিগুলো এখন আমাদের কোনো মূল্যই দেয় না। আমার কলিগ তো তাদের কাছে সোল্ড-আউট (বিক্রি হয়ে গেছে) হয়েছে। তাহলে আমাকে মূল্য দিয়ে তাদের লাভ কী?
‘এমনও দেখেছি, ওষুধ কোম্পানিগুলো আমাদের অধ্যাপকদের ছেলে-মেয়েদের বিয়ের খরচ পর্যন্ত দেয়। বিদেশে বেড়াতে যাওয়ার টিকিট দেয়, বিদেশে বিভিন্ন কনফারেন্সে যাওয়ার খরচ দেয়। এভাবে আসলে তারা কোম্পানিগুলোর কাছে জিম্মি হয়ে যাচ্ছেন। এটা এখন অনেকটা ক্যান্সারের মতো ছড়িয়ে পড়েছে। কোনোভাবেই এটাকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হচ্ছে না।
কীভাবে প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে চিকিৎসকদের অনৈতিক চুক্তি হয় জানতে চাইলে আশরাফুল হক বলেন, “চিকিৎসকভেদে কোম্পানিগুলোর চুক্তিটা ভিন্ন হয়। এক্ষেত্রে যার রোগী বেশি, তাদের অর্থের অ্যামাউন্ট ও সুযোগ-সুবিধা বেশি। যাদের একটু কম, তাদের সুযোগ-সুবিধাও কম। যেমন- আমরা শুনেছি যে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের একজন অধ্যক্ষের বাসায় লিফটের ব্যবস্থা করে দিয়েছে একটা ওষুধ কোম্পানি। এভাবে চিকিৎসকদের পেছনে ওষুধ কোম্পানিগুলোর ‘লালন-পালনের’ যে খরচ সেটা তো ওষুধের দামের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে। এর ভুক্তভোগী কিন্তু আমি নিজেও। কারণ, আমি যখন প্রেশারের ওষুধ কিনতে যাই তখন দেখি এর দাম বাড়ছে তো বাড়ছেই। এটা নিশ্চয়ই আমার কোনো না কোনো কলিগের অবদানের কারণেই হচ্ছে!”
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
তুরস্কের অর্থনীতিতে রেকর্ড প্রবৃদ্ধি, পর্যটন খাতেও সর্বোচ্চ আয়
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
২৪ ঘণ্টার মধ্যে আইজিপিকে অপসারণে সরকারকে আইনি নোটিশ
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
পরীক্ষা না নেয়ায় প্রাথমিক শিক্ষকের মাথা ফাটালেন অভিভাবকরা!
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
‘খেলাপি ঋণ আদায়ে আইনে পরিবর্তন আনার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে’
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি যুবক নিহত
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
৯ হাজার কোটি টাকার ক্ষতিতে দুদকের সাবেক কমিশনারসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
খুলনা-১ আসনে জামাতের হিন্দু প্রার্থী কৃষ্ণ নন্দী!
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ঢাকা ও এর আশপাশে আবারও ভূমিকম্প
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
নতুন কর্মসূচি ঘোষণা বিএনপির
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
‘রুখে দাঁড়াও বাংলাদেশ’ পেজ থেকে উদ্দেশ্যমূলক অপতথ্য ছড়ানো শনাক্ত করেছে বাংলাফ্যাক্ট
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
‘ইউনূস পাকাপোক্ত জামাতের হয়ে কাজ করছে’
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার)












