আল ইহসান ডেস্ক:

প্রতিদিনের ন্যায় পবিত্র সুন্নতী জামে মসজিদে অনন্তকালব্যাপী জারীকৃত সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ উনার সম্মানে বিশেষ মাহফিল মুবারক অনুষ্ঠিত হয়। বাদ ইশা মহান মুর্শিদে আ’যম, সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম তিনি কুল-কায়িনাতের সকলের উদ্দেশ্যে নসীহত মুবারক পেশ করেন।

সাইয়্যিদুনা হযরত সুলতানুন নাছীর আলাইহিস সালাম তিনি বলেন,যে যতই কিছু বলুক যিকির আযকার ছাড়া কেউ ইছলাহ হাসিল করতে পারবে না। রুহ যদি না থাকে সেতো মুর্দা। একটা গাড়ীতে তেল না থাকলে সেই গাড়ী চলবে কিভাবে। হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা কাফির মুশরিকদের পরাজিত করেছেন রুহানী কুওওয়াত থাকার কারণেই। ধনবল জনবল দিয়ে উনারা কামিয়াবী হাসিল করেননি। ইয়ারমুকের জিহাদের সময় উনাদের বিজয়ের কারণ বর্ণনা করতে গিয়ে বলা হয়েছিলো- উনারা দিনে জিহাদ করেন, রাতে তাহাজ্জুদ নামাজ পড়েন, যিকির ফিকির করেন, হক্কুল্লাহ ও হক্কুল ইবাদ যথাযথ আদায় করেন। এছাড়া কামিয়াবীর মূল বিষয় হচ্ছে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে নিসবত মুবারক স্থাপন করা। এজন্য জিহাদে হোক আর সফরে হোক সর্বাবস্থায় যিকির আযকার ইবাদত বন্দেগী ও নিসবত মুবারক ঠিক রাখতে হবে।

সাইয়্যিদুনা হযরত সুলতানুন নাছীর আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, আমাদের যতগুলো কার্যক্রম রয়েছে সেগুলো মানুষকে বুঝিয়ে বলে করাতে হবে। মানুষ এখন দ্বীনদারী হতে শতভাগ গাফিল থাকে। মানুষকে দ্বীনের বিষয়টি বুঝানোর জন্য সারাবছর বিভিন্ন কাফেলা সফর করতে হবে। মানুষ পবিত্র রমাদ্বান শরীফ উনার গুরুত্ব দেয়ার চেষ্টা করে কিন্তু যেই মহান মাসের উছীলায় পবিত্র রমাদ্বান শরীফ উনার রহমত বরকত নাজাতের বিষয়টি পাওয়া গেলো সেই সাইয়্যিদুশ শুহুর মাহে রবিউল আউয়াল শরীফ উনার গুরুত্ব মর্যাদা বুঝেনা। এই মুবারক মাসের ফজিলত রহমত বরকত মানুষের গণনার মধ্যে নাই, হিসাব নিকাশের বহু উর্দ্ধে।

সাইয়্যিদুনা হযরত সুলতানুন নাছীর আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, যারা সফর করবে তারা কোন এলাকায় কখন কোন ফল ফসলের উশর হয় সেটা তালিকা করতে পারে। একই সাথে যেখানে কুফরী শেরকী পূর্ণ মুশরিকদের নাম স্থাপনা রয়েছে সেগুলোরও তালিকা করতে পারে। কাফির মুশরিকরা মুসলমানদের ঈমান আমল নষ্ট করার জন্য সবকিছুই করে বিপরীতে তাদের কুফরী চক্রান্ত মিটিয়ে দেয়ার জন্য মুসলমানদের কোন কর্মসূচি নাই।

সাইয়্যিদুনা হযরত সুলতানুন নাছীর আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, মানুষ এখন প্রতারক হয়ে গেছে। পবিত্র যাকাত দেয়া নিয়েও কঠিন প্রতারণা করে। পবিত্র যাকাত দিলে যে তার মাল বৃদ্ধি পাবে সেটা তারা বিশ্বাস করেনা। তারা মনে করে যাকাত দিলে তারা গরীব হয়ে যাবে, অথচ এমন বিশ্বাসের কারণে তারা কাফের হয়ে যাবে। স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক তিনি ওয়াদা করেছেন মানুষ যদি সঠিকভাবে পবিত্র যাকাত দেয় তাদের সম্পদ বৃদ্ধি করে দেয়া হবে, তাদেরকে সমৃদ্ধশীল করে দেয়া হবে। বেনিয়া ব্রিটিশগুলো আমাদের এসব দেশে পবিত্র যাকাত দেয়া বন্ধ করে দেয়ার জন্য ব্যবসা বাণিজ্যসহ বিভিন্নক্ষেত্রে হারাম সুদের প্রবর্তন করে। অথচ যারা ব্যবসা করবে তাদেরকে লাভ লোকসান দুটাই নিতে হবে। ব্যবসাতে সবসময় লাভ নিবে এমন করা হলে সেটাই সুদ হয়ে যাবে। খিলাফত ব্যবস্থা হলে তখন সুদ থাকবে না। ব্যাক্তিগত টাকা সম্পদ যাই থাকুক সেটার পবিত্র যাকাত অবশ্যই দিতে হবে। পবিত্র যাকাতের মাসয়ালাগুলো সবাইকে জানতে হবে এবং সবাইকে বুঝিয়ে জানানোর ব্যবস্থা করতে হবে।