জীবন বাঁচাতে হেঁটে চলে ওয়াকিং পাম গাছ
, ০২ ছফর শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ১০ ছালিছ, ১৩৯২ শামসী সন , ০৮ আগষ্ট, ২০২৪ খ্রি:, ২৪ শ্রাবণ, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) পাঁচ মিশালী
দক্ষিণ আমেরিকার গহীণ ক্রান্তীয় অরণ্যে ছড়িয়ে রয়েছে এমনই এক আশ্চর্য উদ্ভিদ প্রজাতি, যারা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে স্থান পরিবর্তন করতে সক্ষম। আর এই বিশেষ ক্ষমতার জন্যই সাধারণ মানুষের কাছে এই উদ্ভিদ প্রজাতি পরিচিত ‘ওয়াকিং পাম’ নামে। অবশ্য বিজ্ঞানের পরিভাষায় এই উদ্ভিদ প্রজাতির নাম ‘সক্রেটিয়া এক্সোরিজা’ বা ‘ক্যাশাপোনা’।
ইকুয়েডরের রাজধানী কুইটো থেকে ১০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত সুমাকো বায়োস্ফিয়ার। মূলত এই বায়োস্ফিয়ারেই বাস ক্যাশাপোনা পাম গাছের। সত্তরের দশকের শুরুর দিকে এই সংরক্ষিত অরণ্যে গবেষণা করতে গিয়ে আশ্চর্য এই উদ্ভিদ প্রজাতির সন্ধান পায় গবেষকরা। শুধু এই উদ্ভিদ প্রজাতিই নয়, সঙ্গে ব্যাঙ, আরশোলা-সহ একাধিক নতুন প্রাণী প্রজাতিরও অস্তিত্ব শনাক্ত করেছিলো তারা। সে সময় তারা দাবি করে, এই নতুন উদ্ভিদটি স্থান পরিবর্তন করতে সক্ষম।
১৯৮০ দশকে ইকুয়েডরের এই আমাজনিয়ান অরণ্যে পুনরায় একটি অভিযান চালায় জীববিজ্ঞানীরা। তারা দীর্ঘদিন এই অরণ্যে অবস্থান করে পর্যবেক্ষণ করে এই বিশেষ গাছের গতিবিধি এবং তাদের জীবনপদ্ধতি।
কিভাবে অবস্থান পরিবর্তন করে এই উদ্ভিদ? সাধারণভাবে ১৮-২০ মিটার বা ৬০-৭০ ফুট লম্বা হতে পারে এই উদ্ভিদ। অবশ্য ইকুয়েডরের এই উদ্ভিদ প্রজাতির বাহ্যিক গঠন অনেকটা বাংলার বুকে দেখা মেলে জাতীয় ম্যানগ্রোভ গাছের মতো। আসলে ম্যানগ্রোভ উদ্ভিদ হওয়ায় যেমন শ্বাসমূল দেখা যায় তাদের দেহে, তেমনই দেখা যায় ঠেস মূলের উপস্থিতিও। ‘ওয়াকিং পাম’-এর ক্ষেত্রেও ব্যাপারটা একইরকম।
ইকুয়েডরের এই বিশেষ অঞ্চলের মাটি আলগা হওয়ায় এবং সেখানে পানিধারণ ক্ষমতা খুব কম। পাশাপাশি গহিন অরণ্যে সবচেয়ে সূর্যালোক প্রবেশ করতে না পারায় অবস্থান পরিবর্তন করতে বাধ্য হয়। এই পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিতেই ‘ওয়াকিং পাম’-এর শিকড়ের দৈর্ঘ্য অন্যান্য গাছের থেকে বড়। আয়তন বা পরিধির দিক থেকেও তা যথেষ্ট মোটা। অনেকটা হাতির শুঁড়ের মতো। পাশাপাশি অত্যন্ত দ্রুত নতুন নতুন ঠেসমূল তৈরি করতে সক্ষম ‘ওয়াকিং পাম’। একদিকে যেমন এই উদ্ভিদ নতুন উদ্ভিদ তৈরি করে, তেমনই পুরানো ঠেসমূল বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় গাছের দেহ থেকে। অন্যদিকে গাছের মূল কা- ধীরে ধীরে সরে যায় তার মূল অবস্থান থেকে। এভাবেই প্রতিদিন অল্প অল্প করে স্থান পরিবর্তন করে এই গাছ।
পরিসংখ্যান ও গবেষণা বলছে, প্রতিদিন দেড় থেকে দু সেন্টিমিটার সরে যায় সেই গাছ। কখনও আবার দিনে ৩ সেন্টিমিটার পর্যন্তও অবস্থান পরিবর্তন করতে সক্ষম ওয়াকিং পাম। বছরের হিসাবে এই দূরত্ব কম নয় মোটেই। সাধারণত নিজের অবস্থান ২০ মিটার পর্যন্ত সরে যায় এই গাছ।
তবে শুধু ওয়াকিং পামই নয়, সুমাকো বায়োস্ফিয়ারে রয়েছে বেশ কিছু আশ্চর্য গিরগিটি এবং ব্যাঙের প্রজাতিও। যা এই অরণ্য ছাড়া দেখতে পাওয়া যায় না বিশ্বের আর কোনো প্রান্তেই। আর সেই কারণেই একুশ শতকেরও শুরুতে ইকুয়েডরের এই সংরক্ষিত অরণ্যকে ‘হার্ট অফ দ্য ইউনেস্কো’ তকমা দেয় ইউনেস্কো।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মানুষের গোশত খাওয়া নিয়ে পৈশাচিক ঘটনা!
১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ক্যানসার দূরে রাখে গাজরের জুস! ডায়াবেটিসও থাকে বশে
১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
জ্বর কমাতে শিশুদের কতবার প্যারাসিটামল সিরাপ বা সাপোজিটরি দেওয়া যাবে?
১২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
জাম্বুরা আসলে কতটা উপকারী
১২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
মশারা মানুষকে ট্র্যাক করতে ব্যবহার করে ইনফ্রারেড
১১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ইন্দোনেশিয়ার বাঁশের মসজিদ
০৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
আয়রনের ঘাটতি মেটায় গুড়ের শরবত
০৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
মাথার কাছে মোবাইল রেখে ঘুমালে যা হয়
০৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
বিশাল ভূগর্ভস্থ মহাসাগরের সন্ধান পেলো বিজ্ঞানীরা
০৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
জিবুতিতে দ্বীন ইসলাম ও মুসলিম শাসন
০৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
জন্মের পর নিজের ‘মা’ কে খেয়ে ফেলে যেসব প্রাণী
০৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
বিখ্যাত ৫ মুসলিম স্থাপত্য (২)
০৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)