আল ইহসান ডেস্ক:

প্রতিদিনের ন্যায় পবিত্র সুন্নতী জামে মসজিদে অনন্তকালব্যাপী জারীকৃত সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আইয়াদ শরীফ উনার সম্মানে বিশেষ মাহফিল মুবারক অনুষ্ঠিত হয়। বিগত ১১ই মুহররমুল হারাম শরীফ ১৪৪৭ হিজরী সাইয়্যিদুনা মামদুহ হযরত মুরশিদ কিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বাদ ইশা কুল কায়িনাতের সকলের উদ্দেশ্যে বিশেষ নছীহত মুবারক করেন।

সাইয়্যিদুনা হযরত সুলতানুন নাছীর আলাইহিস সালাম তিনি বলেন- নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে যারা বাতিল ফিরকা আছে তারা কিন্তু মুহব্বত করে না। তারা উনাকে মনে করে তাদের মতোই। নাউজুবিল্লাহ! তারা নিজেরাই জানে যে, তারা কতবড় ফাসেক জালেম। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যে শুধু মহান আল্লাহ পাক তিনি না -এটাই বিশ্বাস করতে হবে। কিন্তু এসব ফাসিক জালিম মানুষতো এটা বিশ্বাসও করে না বুঝেও না। অথচ মহান আল্লাহ পাক তিনি নিজেই ইরশাদ মুবারক করেন- নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি নিজে ও হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারকে ছলাত মুবারক পেশ করে যাচ্ছেন অনন্তকালের তরে দায়েমীভাবে। আর এটাই হচ্ছে সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আইয়াদ শরীফ। সুবহানাল্লাহ!

সাইয়্যিদুনা হযরত সুলতানুন নাছীর আলাইহিস সালাম তিনি বলেন- মহান আল্লাহ পাক স্বয়ং যিনি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারকে অনন্তকালের তরে দায়েমীভাবে ছলাত মুবারক পেশ করেন তাহলে তিনি কে, কত সুমহান উনার শান মুবারক সেটাতো ফিকির করতে হবে। অথচ ফতোয়া দিয়ে দেয়া হলো- জীবনে একবার দরুদ শরীফ পাঠ করা ফরজ। নাউজুবিল্লাহ। অথচ এমন অনেক পবিত্র হাদীস শরীফ আছে, যেখানে বলা হয়েছে- যার সামনে সুমহান পবিত্র নাম মুবারক আসলো, কেউ শুনলো অথচ সে দরুদ শরীফ পড়লো না তাহলে তার জন্য ধংস হালাকী। এরপরও কিভাবে এমন ফতোয়া দেয়া হলো। মূলত ইবলিশের ওয়াসওয়াসায় এমন ফতোয়া দেয়া হয়েছে। জাহিল, জালেম ও ফাসিকরা এই ফতোয়ার উপরই ইস্তেকামত রয়েছে। নাউজুবিল্লাহ! এরা বলে বেড়ায়- আমরা যে সুমহান শান মুবারকে এত ছানা-ছিফত করি, এতে আমরা নাকি শেরক করি। তাহলে কি মহান আল্লাহ পাক তিনি অনন্তকালের তরে দায়িমীভাবে ছলাত মুবারক পেশ করে শেরেক করতেছেন। নাউজুবিল্লাহ! তারা আসলে এমন ফতোয়াই দিবে যেহেতু তারা হক্ব বিষয়টা কখনোই গ্রহণ করতে পারবে না।

সাইয়্যিদুনা হযরত সুলতানুন নাছীর আলাইহিস সালাম তিনি বলেন- আসলে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছানা-ছিফত মুবারক ২৪ ঘন্টাই করার দরকার ছিলো। এটা সহজেই পারবে যদি সবসময় আমল আখলাকে সুন্নত মুবারক পালন করা হয়। ফাসেকরা এখন সুন্নত মুবারক পালন করা ফরজ এই ফতোয়ার দলীল খোঁজে। অথচ হযরত ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি যখন এই ফতোয়া দিলেন তখনতো খায়রুল কুরুন ছিলো। তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ সুরা হাশর হতে দলীল দিলেন। মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন- নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যা এনেছেন তা গ্রহণ করো, আর যা থেকে বিরত থাকতে বলেন তা থেকে বিরত থাকো। এই আয়াত শরীফ তিলাওয়াতের সাথে সাথে উপস্থিত ইমাম মুজতাহিদ সবাই বললেন আমরা এবার বুঝতে পেরেছি, সত্যিই সুন্নত মুবারক পালন করা ফরজ। সুবহানাল্লাহ!

সাইয়্যিদুনা হযরত সুলতানুন নাছীর আলাইহিস সালাম তিনি বলেন- কাট্টা কাফির আবু জাহিল, আবু লাহাবের সুন্নত পালন করতে হলেতো এমন বিদ্বেষী ফাসিক জাহিল জালেম লোক থাকতে হবে। এ ধরনের চুচেরা কিল ও কাল করার লোক কিয়ামত পর্যন্ত থাকবে। পাছে লোকে কত কিছু বলবে যেভাবে রাস্তায় কুকুর ক্যাঁও ক্যাঁও করে। আসল কথা হলো- দায়েমীভাবে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছানা-ছিফত মুবারক করা ফরজ। দায়েমীভাবে উনার অনুসরণ অনুকরণ করা ফরজ। আমাদেরতো এই বিষয়ে পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র হাদীস শরীফ উনাদের থেকে দলীল আছে। আমাদের কোন আমলটা পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র হাদীস শরীফ উনাদের খিলাপ সেটা তারা প্রমাণ করে দিক আমরা সাথে সাথে তওবা করে মেনে নিবো। কিন্তু তাদেরতো সবটাই ভুল, তাদেরটা ধরে দিলে তারাতো তওবা করে যাবতীয় হারাম কুফরী শেরকী আমলের ভুল ছেড়ে দেয় না। প্রত্যেক হাদীর পিছনে একজন শয়তান থাকে আর শয়তানকে হিদায়েত করার জন্য মহান আল্লাহ পাক তিনি একজন হাদী পাঠান। প্রত্যেক হযরত নবী রাসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের শত্রু ছিলো জিন ইনসানদের মধ্যে শয়তান প্রকৃতির যারা তারা। এরা মানুষদেরকে ওয়াসওয়াসা দেয়। ইবলিশ শয়তানের এগুলো বরদাশত হচ্ছে না । সেতো তার কাজ বন্ধ করেনি। সেতো ওয়াদা করেই আসছে সব আদম সন্তানকে গুমরাহ করে ফেলবে। এখন ইবলিশ সরাসরি আসতে না পারলেও মানুষরুপী কারো মাধ্যম দিয়ে আসে। নাউজুবিল্লাহ!

সাইয়্যিদুনা হযরত সুলতানুন নাছীর আলাইহিস সালাম তিনি বলেন- ইবলিশের যেহেতু মাথা ঠিক নাই, তার মাথা অসুস্থ, সেজন্য সে মুনাফিক দ্বারা কাজ করায়। শেষবার যখন আমি ইবলিশকে দেখলাম- ইবলিশ তার একটা চেলা নিয়ে আমার কাছে আসলো। তারা দুটা বড় বাঁশ নিয়ে আমার সাথে মারামারি করার জন্য আসলো। তখন আমি তাদের দুটাকেই কব্জা করে ফেলি। আমার পাশে শাহ নাওয়াসী আলাইহিমুস সালাম উনারা ছিলেন। উনারা বললেন- নানাজান! ছোট ইবলিশটাকে আমাদের দিয়ে দেন। উনারা তাকে মেরে ফেললো। বড়টাকে আমি মাটিতে শোয়ায়ে বাম পা দিয়ে তার মাথায় চাপা দিয়ে রাখছি, সে আমাকে সিজদা দিয়ে রাখছে। তাকে বললাম, তুই তওবা কর নয়তো তোকে আজকে মেরেই ফেলবো। সে বলে তাকে মারা যাবে না, তাকে মহান আল্লাহ পাক তিনি কিয়ামত পর্যন্ত হায়াত দিয়ে রাখছেন। তাইলে তুই তওবা কর, বলে সে তওবা করতে পারবে না, কারণ তার উপর লানত পড়ে গেছে। তাকে আমি বাম পা দিয়ে জোরে ছাপ দিয়ে রাখছিলাম। সে রক্ত বমি করে, পুরো এলাকা ভাসায়া ফেলছে। আমি বললাম, তাহলে তুই এই এলাকায় জীবনেও আর আসবি না। আমি পা তোলার সাথে সাথেই সে চোখের পলকে দেখি গায়েব হয়ে গেলো। এখন সে তারা কাজগুলো করে মুনাফিক দ্বারা, খারেজী রাফেজী ওলামায়ে ছু দ্বারা। মহান আল্লাহ পাক তিনি যখন চান কারো বেশী প্রচার হোক তখন শত্রু মুনাফিক লাগিয়ে দেন। কারণ নিজের লোকেরা যতবেশী প্রচার করে শত্রুরা তারচে বেশী প্রচার প্রসার করে। ভুল ত্রুটি থাকার পরও যদি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুহব্বতে সব খিদমত গোলামী আনজাম দেয়ার কোশেশ করো, তাহলে মহান আল্লাহ পাক তিনি কবুল করে নিবেন ও নাজাতের জন্য এটাই যথেষ্ট হয়ে যাবে। সুবহানাল্লাহ!