নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির চাপে পিষ্ট সাধারণ ভোক্তারা।
দিশেহারা হয়ে মধ্যবিত্তরাও দাড়াচ্ছে টিসিবির লাইনে। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকার ও ব্যবসায়ী উভয়েরই দায়বদ্ধতা ও কর্তব্য আছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে চরম বিপর্যস্থ দেশের সাধারণ মানুষের জীবন-জীবিকা। নতুন করে দরিদ্র হয়েছে প্রায় ৬ কোটি মানুষ।
, ৪ঠা শাবান শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ২৭ তাসি, ১৩৯০ শামসী সন , ২৫শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ খ্রি:, ১১ই ফাল্গুন, ১৪২৯ ফসলী সন, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) দেশের খবর
এতদিন টিসিবি’র লাইনে সাধারণত স্বল্প আয়ের মানুষদেরই বেশি দেখা যেত। কিন্তু নিত্যপণ্যের বাজারে অস্থিরতার কারণে এখন চাকরিজীবী কিংবা মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষও টিসিবি’র লাইনে দাঁড়াচ্ছে। একটু কম দামে পণ্য পেতে টিসিবির পণ্যবাহী ট্রাক থামলেই হুড়োহুড়ি করে লাইনে দাড়িয়ে পড়ছে তারা। কখনো কখনো ট্রাকের পেছন পেছন দৌড়াতেও হচ্ছে তাদের। ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাড়াতে হচ্ছে। তবে ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়েও অধিকাংশ মানুষকেই ফিরতে হচ্ছে খালি হাতে। দীর্ঘলাইনে দাঁড়িয়ে গুটি কয়েক মানুষ পণ্য পেলেও বেশিরভাগ মানুষই পণ্য না পেয়ে অস্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছে।
টিসিবির লাইনে মধ্যবিত্তদের আসা মূলত নিত্যপণ্যের অতিমূল্যের চাপে। কিন্তু তাদের এই দুর্দশাকেই অন্য দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখা হচ্ছে। সম্প্রতি বাণিজ্যমন্ত্রী বলেছে, ‘ভালো ভালো পোশাক পরা মানুষদেরও এখন টিসিবির লাইনে দেখা যাচ্ছে।’ মন্ত্রীর এই উপলব্ধির মধ্যে কোনো হতাশা প্রকাশ পায়নি। একধরণের গর্বের বিষয় উপলব্ধি করা গেছে। অর্থাৎ মধ্যবিত্তদেরও টিসিবির লাইনে টেনে আনা গেছে। অথচ বিষয়টা তার ঠিক উল্টো। বিষয়টি অনেক অমানবিক।
মূলত দেশে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির যে সংস্কৃতি চালু হয়েছে তা দায়িত্বশীলদের অবহেলার কারণে। দেশের কর্তাব্যক্তিরা মনে করে থাকে যে, নিত্যপণ্যের দাম ১০/১৫ টাকা বাড়লে সেটা তেমন কিছু না। অথচ প্রত্যেকটি পণ্যে যখন ১০/১৫ টাকা করে বৃদ্ধি পায় তখন সেটা সামগ্রিকভাবে পুরো নিত্যপণ্যের বাজারকে অস্থির করে তোলে। যার মহাক্ষতিকর প্রভাব গিয়ে পড়ে সাধারণ জনগণের উপর। জনগণের পকেট ফাঁকা হতে থাকে। জনগণের ক্রয়ক্ষমতা ক্রমশ কমতে থাকে এবং কমছে।
অথচ, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কোনো কারণই নেই। নিত্যপণ্যের বাজারে শাক-সবজির পর্যাপ্ত সরবরাহ রয়েছে। প্রতিবছর খাদ্য উৎপাদনে রেকর্ড ভাঙছে দেশ। কিন্তু এরপরও বাজারে আগুন। পণ্য সরবরাহে সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম, চাঁদাবাজির কারণে ভোক্তা পর্যায়ে পণ্য আসতে আসতে দাম বেড়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে পরিবহন খরচ সাম্প্রতিক সময়ে বৃদ্ধি পেয়েছে। আবার আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বৃদ্ধির কথা বলে হঠাৎ করে বৃদ্ধি করা হয়েছে জ্বালানি তেলের দাম। যার প্রভাব পড়েছে পণ্য পরিবহন ব্যবস্থায়। এতে খরচও বেড়েছে। এছাড়া, প্রান্তিক পর্যায় থেকে রাজধানী পর্যন্ত নিত্যপণ্য আসতে পথে পথে পুলিশ এবং স্থানীয় চাঁদাবাজদের দৌরাত্মেও নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে যাচ্ছে। খোদ পুলিশের প্রতিবেদনেই বলা হয়েছে যে, হাইওয়েতে পুলিশের কতিপয় সদস্যের চাঁদাবাজির কারণে শাক-সবজিসহ নিত্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে।
দেশের নিত্যপণ্যের বাজার ব্যবস্থায় মূল্য নিয়ে সরকারের কোনো নিয়ন্ত্রণই নেই। সংশ্লিষ্টদের বিভিন্ন বক্তব্যেও সিন্ডিকেটের কথা উঠে এসেছে। সিন্ডিকেটের অস্তিত্ব স্বীকার করে বলা হয়েছে, যে কোনো সংকটের সুযোগ নিয়ে তারা দ্রব্যমূল্য বাড়ানোর চেষ্টা করে। কিন্তু এই ধরণের সিন্ডিকেট নির্মূলে কী করছে সরকার? সরকার ব্যবস্থা নেয়ার কথা ঘোষণা দিলেও তার কোনো ফলাফল দেখা যায়নি নিত্যপণ্যের বাজারে। অন্যান্য সময়ের মতো সেই ভোক্তাদেরই এর বোঝা বহন করতে হয়েছে। তাছাড়া, চিনি ও পেঁয়াজের মতো কিছু পণ্যের কথা বলা যায়, সরকার ব্যবসায়ীদের সঙ্গে পরামর্শ করে এসব পণ্য বিক্রির জন্য উপযুক্ত দাম নির্ধারণ করে, যেটি পরে ব্যবসায়ীরাও আর মেনে চলেনি। যদি পণ্যগুলো বিক্রি করে পাওয়া লাভের পরিমাণ ব্যবসায়ীদের কাছে যথেষ্ট মনে না হয়, তাহলে কীসের ভিত্তিতে দাম নির্ধারণ করা হয়েছিল? এসব প্রশ্নের কোনো উত্তর কখনই পাওয়া যায় না।
প্রসঙ্গত, নিত্যপণ্যের অতিমূল্যের কারণে প্রতিনিয়ত দেশে দরিদ্রের সংখ্যা বাড়ছে। জনগণ আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তাই এ বিষয়ে সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত কখনই দেশের জনগণের আর্থিক অবস্থার উন্নতি হবে না। তাই সরকার সংশ্লিষ্টদের উচিত হবে, দেশের স্বার্থে, দেশের মানুষের স্বার্থে নিত্যপণ্যের এই খড়গ থেকে জনগণকে রক্ষা করা। দেশের প্রান্তিক পর্যায় থেকে শহর পর্যন্ত পণ্য পরিবহন খরচ কমাতে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি থেকে সরে আসা। অন্যান্য দেশের মতো পরিবহন খরচ কিভাবে কমিয়ে আনা যায় সে বিষয়ে গবেষণা-অনুসন্ধান করা। নিত্যপণ্যের বাজারে থাকা সিন্ডিকেট ভেঙ্গে ফেলে প্রতিটি পণ্যের মূল্য মানুষের হাতের নাগালের মধ্যে নিয়ে আসা। অন্তত চাল, ডাল, আটা, তেল- এই চারটি পণ্যের দাম জরুরী ভিত্তিতে নিয়ন্ত্রণ করা হোক। প্রয়োজনে ভর্তুকি দিয়ে, প্রয়োজনে শুল্ক কাঠামোয় বদল এনে হলেও এই চার পণ্যের দাম আবশ্যিকভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখা হোক।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
পাহাড়ে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় ইন্ধন দিচ্ছেন এক নারী
২১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
দরজায় তালা দিয়ে বিএনপি নেতার ঘরে আগুন, ঘুমন্ত শিশুর মৃত্যু
২১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
নির্বাচন পেছানোর চেষ্টার বিষয়ে সতর্ক থাকার আহ্বান
২১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
শরিকদের আসন নিয়ে টানাপোড়েন, বিএনপি সরকারে গেলে মূল্যায়নের আশ্বাস
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
দেশের ৮১ শতাংশ মানুষ মুঠোফোন ব্যবহার করেন
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
প্রথম আলো-ডেইলি স্টার ভবনে আগুন-ভাঙচুর, আলামত সংগ্রহ করবে সিআইডি
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
টিকটক ভিডিওকে কেন্দ্র করে গৃহবধূকে হত্যা, স্বামী আটক
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
মুন্সীগঞ্জর ‘১৩১ বছর বয়সী’ সুফিয়া বেগম মারা গেছেন
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে মাঝারি কুয়াশার আভাস, বাড়বে শীতও
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
‘এনসিপির কমিটি থেকে আমার নাম কাটতে হবে, না হলে আইনি ব্যবস্থা’
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
নির্বাচন পেছাতে পরিকল্পিত অপকৌশল থাকতে পারে -সালাহউদ্দিন
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
‘নির্বাচন বানচালে ষড়যন্ত্রকারীরা সক্রিয়’
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার)












