নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ইত্তিবা বা অনুসরণ করার ক্ষেত্রে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের কোন মেছাল নেই
, ১৬ জুমাদাল ঊখরা শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ০১ সামিন, ১৩৯১ শামসী সন , ৩০ ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রি:, ১৫ পৌষ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ
এ প্রসঙ্গে পবিত্র হাদীছ শরীফে বর্ণিত রয়েছে, একদিন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি একবার উনার সম্মানিত না’লাইন (জুতা) মুবারকসহ মসজিদে নামায পড়ছিলেন, এমন সময় হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম বললেন, “ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনার না’লাইন মুবারকে নাপাকী রয়েছে।” তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি না’লাইন মুবারক খুলে ফেললেন। সাথে সাথে উপস্থিত সকল হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ উনারাও না’লাইন মুবারক খুলে ফেললেন। তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, “এ হুকুম আপনাদের জন্য নয়, এটা আমার জন্য খাছ।”
উল্লেখ্য যে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে যা করতে দেখতেন হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ উনারা তাই করতেন। তিনি যা বর্জন করতেন, উনারা তাই বর্জন করতেন, কখনো কি ও কেন প্রশ্ন করতেন না। যেমন, “হযরত ইমাম বুখারী রহমতুল্লাহি আলাইহি হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেন, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি একটি স্বর্ণের আংটি ব্যবহার করতেন, হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ উনারাও স্বর্ণের আংটি বানিয়ে ব্যবহার করা শুরু করলেন। কিন্তু যখন স্বর্ণ ব্যবহার পুরুষের জন্য সম্পূূর্ণ হারাম হয়ে যায়, তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আংটিটি খুলে ছুঁড়ে ফেলে দিলেন এবং বললেন, “আমি আর কখনো এটা ব্যবহার করবো না।” তখন হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ উনারা সকলেই উনাদের আংটিগুলো খুলে ছুঁড়ে ফেলে দিলেন। এটা ছিল হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে অনুসরণের নমুনা। এ রকম হাজারো লাখো ঘটনার দ্বারা প্রমাণ করা সম্ভব যে, হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ উনারা সব ব্যাপারে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে অনুসরণ-অনুকরণ করেছেন। কেবলমাত্র যেসব বিষয়ে নিষেধ করা হয়েছে, ঐ নিষেধ মানাও অনুসরণ-অনুকরণের অন্তর্ভুক্ত।
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন্ নাবিয়্যীন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সময় হযরত আবূ দাজানা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু নামের একজন ছাহাবী ছিলেন। তিনি একদিন ফজরের নামায (জামায়াতে) আদায় করে মুনাজাতে শরীক না হয়ে দ্রুতবেগে মসজিদ হতে বের হয়ে গেলেন। পরবর্তীতে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হযরত আবূ দাজানা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করেন যে, (আপনি কেন মুনাজাতে শরীক না থেকে তাড়াতাড়ি চলে গেলেন?) হযরত আবূ দাজানা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু আদবের সাথে উত্তর দিলেন, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমার প্রতিবেশীর একটি খেজুর গাছ রয়েছে, রাত্রি বেলায় ঝড়ে উক্ত গাছের খেজুর আমার সীমানায় পড়ে। আমার সন্তানগণ ঘুম থেকে উঠার পূর্বেই আমি সেখানে পৌঁছে যাই এবং উক্ত খেজুরগুলো কুড়িয়ে তার সীমানায় পৌঁছে দেই। (যেন আমার সন্তানগণ উক্ত খেজুর খেয়ে অপরের হক্ব নষ্ট না করে) অতঃপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হযরত আবূ দাজানা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার উত্তর শুনে উক্ত খেজুর গাছের মালিককে বললেন, তোমার খেজুর গাছটি বেহেশ্তী লাল্, সোনালী ও সবুজ, হলুদ শিকড় ও সাদা মুতি-জহরতের ডালা বিশিষ্ট দশটি খেজুর গাছের বিনিময়ে আমার নিকট বিক্রি করে দাও। সে ব্যক্তি বললো, আমার বিদ্যমান গাছটিকে অদৃশ্য গাছের বিনিময়ে বিক্রি করবো না। তখন খলীফাতু রসূলিল্লাহ, আফদ্বালুন নাস বা’দাল আম্বিয়া হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম বললেন, তাহলে আমার অমুক স্থানে দশটি খেজুর গাছের বিনিময়ে, এই খেজুর গাছটি (আবূ দাজানা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার জন্যে) কিনে নিলাম ......।” সুবহানাল্লাহ! (নুযহাতুল্ মাজালিস লি আবদিল্ হক্ব মুহাদ্দিছ দেহলবী রহমতুল্লাহি আলাইহি)
এখানেও হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা নিজেদের মাল-জান সর্বস্ব ব্যয় করে আর্থিক খিদমত মুবারকের আনজাম দিয়েছেন, উনারা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে যেমন সর্বোচ্চ পন্থায় ইত্তেবা বা অনুসরণ-অনুকরণ করেছেন, অনুরূপ নিজেদের মাল-সম্পদ অকাতরে হাদিয়া মুবারক করে খিদমত মুবারকের আনজাম দানে বেমেছাল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। যা পরবর্তী উম্মতদের জন্য ইবরত-নছীহতস্বরূপ।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
আজ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১১ই যিলক্বদ শরীফ
২০ মে, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, রহমাতুল্লিল আলামীন মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনাকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ উনার মহাসম্মানিত মাক্বাম মুবারক হাদিয়া
২০ মে, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম উনাদের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করা কুফরী
১৯ মে, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
আখাছ্ছুল খাছ মহাসম্মানিত মুহব্বত মুবারক এবং বিশেষ নৈকট্য মুবারক উনার বহিঃপ্রকাশ মুবারক
১৯ মে, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
খ্বালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হিসেবে, উনার মাহবূব, মুরাদ ও সমগ্র কায়িনাতের মালিক হিসেবে সৃষ্টি মুবারক করেছেন (৪)
১৯ মে, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সাথে আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম,
১৮ মে, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
খ্বালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হিসেবে, উনার মাহবূব, মুরাদ ও সমগ্র কায়িনাতের মালিক হিসেবে সৃষ্টি মুবারক করেছেন (৩)
১৮ মে, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
এক নযরে সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি আলাল আলামীন, আফযালুন নাস ওয়ান নিসা বা’দা রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আস সাবি‘আহ্ আত্বওয়ালু ইয়াদান আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র পরিচিতি মুবারক
১৭ মে, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মহাসম্মানিত সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করার ফযীলত
১৭ মে, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার তরফ থেকে সম্মানিত কুরবানী মুবারক দেয়া প্রত্যেক উম্মতের জন্য ফরযে আইন (৫)
১৬ মে, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
খ্বালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হিসেবে, উনার মাহবূব, মুরাদ ও সমগ্র কায়িনাতের মালিক হিসেবে সৃষ্টি মুবারক করেছেন (১)
১৬ মে, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
আজ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ৬ই যিলক্বদ শরীফ
১৫ মে, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)