পবিত্র মাহে রমাদ্বান শরীফ উনার আহকাম (৬)
পবিত্র মাহে রমাদ্বান শরীফ উনার ফাযায়িল-ফযীলত
, ০৫ রমাদ্বান শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ২৮ ‘আশির, ১৩৯০ শামসী সন , ২৮ মার্চ, ২০২৩ খ্রি:, ১৪ চৈত্র, ১৪২৯ ফসলী সন, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
খালী চোখে চাঁদ দেখে পবিত্র রমাদ্বান শরীফ শুরু ও শেষ করা সম্মানিত শরীয়ত উনার নির্দেশ
বান্দার যাবতীয় ইবাদত-বন্দেগী, কর্মপদ্ধতি তথা সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার সর্বপ্রকার সম্মানিত আমলসমূহ আরবী মাসের তারিখ ও সময়ের সাথে সম্পৃক্ত। এক্ষেত্রে চাঁদের সংশ্লিষ্টতা অপরিহার্য। সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার বিশেষ বিশেষ দিবস এবং আমলসমূহ বিভিন্ন মাসের সাথে সংশ্লিষ্ট। যেমন: সম্মানিত নামায, রোযা, হজ্জ, যাকাত, ঈদ, আশূরা, লাইলাতুল ক্বদর, লাইলাতুল বরাত, লাইলাতুর রগাইব, সর্বোপরি সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ পবিত্র ঈদে বিলাদতে রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।
যেমন পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
حَضْرَتْ اَبَا الْبَخْتَرِيّ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ قَالَ اَهْلَلْنَا رَمَضَانَ وَنَـحْنُ بِذَاتِ عِرْقٍ فَاَرْسَلْنَا رَجُلًا اِلَى حَضْرَتْ اِبْنِ عَبَّاسٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ يَسْاَلُهُ فَقَالَ حَضْرَتْ اِبْنُ عَبَّاسٍ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِنَّ اللهَ تَعَالٰى قَدْ اَمَدَّهُ لِرُؤْيَـتِهِ فَاِنْ اُغْمِيَ عَلَيْكُمْ فَاَكْمِلُوا الْعِدَّةَ.
অর্থ : “হযরত আবুল বাখতারী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা যখন যাতু ‘র্ইক্ব নামক স্থানে অবস্থান করছিলাম তখন পবিত্র রমাদ্বান শরীফ উনার চাঁদ দেখতে পেলাম। অতঃপর আমরা এক ব্যক্তিকে হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার কাছে এ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করার জন্য পাঠালাম। হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বললেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি চাঁদ দেখার সাথে মাস নির্ধারণ করেছেন, যদি তোমাদের নিকট (চাঁদ) অপ্রকাশিত থাকে (মেঘের কারণে) তাহলে তোমরা (৩০ দিনে) মাস পূর্ণ করো।” (মুসলিম শরীফ : কিতাবুছ ছিয়াম : বাবু বায়াতি আন্নাহু লা’ তিবারা বি কুবরিল হিলালি ওয়া সিগারিহি ওয়া আন্নালাহু তায়ালা আমাদ্দাহু লির রুইয়াতি ফা ইন গুম্মা ফাল ইয়ুকমাল ছালাছুনা : হাদীছ শরীফ নং ১০৮৮, মিশকাত শরীফ)
উপরোল্লিখিত প্রতিটি দিবসই চাঁদের সাথে সংশ্লিষ্ট। চাঁদ উঠার মাধ্যমে মাস শুরু হওয়ার পরই এ সকল মহিমান্বিত দিবস এবং আমলসমূহের দিবস নির্ধারিত হয়ে থাকে। আর পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ দ্বারাই চাঁদ দেখে সংশ্লিষ্ট আমলসমূহ পালন করার নির্দেশ প্রমাণিত। সুতরাং পবিত্র রমাদ্বান শরীফ মাস অবশ্যই নির্ভুলভাবে চাঁদ দেখে শুরু ও শেষ করতে হবে।
যেমন এ প্রসঙ্গে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ اَبِـيْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ صُوْمُوا لِرُؤْيَـتِه وَأَفْطِرُوْا لِرُؤْيَـتِه فَاِنْ غُمَّ عَلَيْكُمْ فَاَكْمِلُوا عِدَّةَ شَعْبَانَ ثَلَاثِيْنَ.
অর্থ : “হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, তোমরা চাঁদ দেখে পবিত্র রমাদ্বান শরীফ উনার রোযা রাখো এবং (পবিত্র শাওওয়াল মাস উনার) চাঁদ দেখেই রোযা শেষ করো তথা ঈদ পালন করো। আর যদি আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকায় তোমরা চাঁদ দেখতে না পাও তবে পবিত্র শা’বান শরীফ মাস ৩০ দিনে পূর্ণ করো।” (বুখারী শরীফ : কিতাবুছ ছিয়াম : বাবু ক্বউলিন নাবীয়্যি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামা ইজা রআইতুমুল হিলালা ফা ছূমূ ওয়া ইজা রআইতুমুহু ফা আফত্বিরু : হাদীছ শরীফ নং ১৯০৯)
মূলত সব মাসের ক্ষেত্রে একই হুকুম। এক্ষেত্রে একদিন আগ-পিছ হলেই উক্ত আমলসমূহ আদায় শুদ্ধ ও গ্রহণযোগ্য হবে না। আরবী মাস ২৯ কিংবা ৩০ দিনে পূর্ণ হয়ে থাকে। সেক্ষেত্রে প্রতি মাসের ২৯ তারিখ শেষে চাঁদ তালাশ করে তারিখ নির্ধারণ করতে হয়। ২৯ তারিখে চাঁদ দেখা না গেলে সেই মাস ৩০ দিনে পূর্ণ হয়ে থাকে। তারপর থেকে পরবর্তী মাস গণনা শুরু করতে হয়।
সুতরাং এ থেকে বুঝা যায় যে, ইবাদতসমূহ ছহীহ-শুদ্ধভাবে আদায় করার জন্য চাঁদ দেখার গুরুত্ব অপরিসীম।
অতএব, প্রত্যেক এলাকা থেকে কিছু লোককে অবশ্যই চাঁদ তালাশ করতে হবে যা ওয়াজিবে কিফায়া। যদি কেউই তালাশ না করে তাহলে সকলেই ওয়াজিবে কিফায়া তরক করার কারণে কবীরা গুনাহে গুনাহগার হবে।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
অ্যান্টার্কটিকা নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় বিজ্ঞানীরা
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম (৪)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা অবশ্যই সত্যের মাপকাঠি; অস্বীকারকারীরা কাট্টা কাফির (১)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ শরীফ উনাদের আলোকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দু‘আ বা মুনাজাত (১১তম অংশ)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম (৩)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দুনিয়ার যমীনে অবস্থানকালীন সময়ে ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম শরীফ যে রোযা মুবারক রাখতেন সে রোযা মুবারক মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১২ই শরীফ উনার দিনে হওয়াটা ছিলো একটি বিরল ঘটনা (২)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত হাযির-নাযির শান মুবারক (১)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
প্রাণীর ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িজ
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
আল্লাহওয়ালী মহিলা উনাদের তিনটি বৈশিষ্ট্য-
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)












