পবিত্র সুন্নত মুবারক উনার ইত্তিবা” তথা অনুসরণ-অনুকরণ করার গুরুত্ব-তাৎপর্য এবং বেমেছাল ফযীলত মুবারক (২)
, ০৬ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০:০০ এএম ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) সুন্নত মুবারক তা’লীম
যাঁরা একখানা সুন্নত মুবারক জিন্দা করবে, তারা জান্নাত লাভ করবে:
এ সম্পর্কে পবিত্র হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ اَنَسٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ اَحْيَا سُنَّتِـىْ فَقَدْ اَحْيَانِـىْ وَمَنْ اَحْيَانِـىْ فَهُوَ فِـى الْـجَنَّةِ.
অর্থ: “হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যে ব্যক্তি আমার একখানা পবিত্র সুন্নত মুবারক জিন্দা করলো, সে ব্যক্তি মূলত আমাকেই জিন্দা করলো। সুবহানাল্লাহ! আর যে ব্যক্তি আমাকে জিন্দা করলো, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। ” সুবহানাল্লাহ! (যাম্মুল কালাম ৪/২৩২)
যাঁরা বিলুপ্তপ্রায় পবিত্র সুন্নত মুবারক পুনঃপ্রচলন করবে, তাদের জন্য স্বয়ং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত সুসংবাদ মুবারক দান করেছেন:
এ সম্পর্কে পবিত্র হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ عَمْرِو بْنِ عَوْفٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِنَّ الدِّيْنَ لَيَاْرِزُ اِلَـى الْـحِجَازِ كَمَا تَاْرِزُ الْـحَيَّةُ اِلـٰى جُحْرِهَا وَلَيَعْقِلَنَّ الدِّيْنُ مِنَ الْـحِجَازِ مِعْقَلَ الْاُرْوِيَّةِ مِنْ رَاْسِ الْـجَبَلِ اِنَّ الدِّيْنَ بَدَاَ غَرِيْبًا وَّسَيَعُوْدُ كَمَا بَدَاَ فَطُوْبٰـى لِلْغُرَبَاءِ وَهُمُ الَّذِيْنَ يُصْلِحُوْنَ مَا اَفْسَدَ النَّاسُ مِنْۢ بَعْدِىْ مِنْ سُنَّتِـىْ.
অর্থ: “হযরত ‘আমর ইবনে ‘আউফ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, নিশ্চয়ই নিশ্চয়ই পবিত্র দ্বীন ইসলাম হিজায ভূমির দিকে ফিরে যাবেন, যেমন সাপ তার গর্তে ফিরে যায় এবং অবশ্যই অবশ্যই পবিত্র দ্বীন ইসলাম হিজায ভূমি থেকে উঁচু পাহাড়ে আরোহণ করবেন, যেমন পাহাড়ী মেষের আশ্রয়স্থল হয় পাহাড়ের চূড়ায়। নিশ্চয়ই পবিত্র দ্বীন ইসলাম শুরু হয়েছেন অল্প সংখ্যক লোক উনাদের মাধ্যমে। আর অতিশিঘ্রই পবিত্র দ্বীন ইসলাম অল্প সংখ্যক লোকের মধ্যেই ফিরে যাবেন। সেই অল্প সংখ্যক লোক উনাদের জন্যই রয়েছে সুসংবাদ মুবারক। আর উনারা হচ্ছেন ঐ সমস্ত ব্যক্তিত্ব; যাঁরা আমার পর আমার পবিত্র সুন্নত মুবারক উনাদের মধ্য থেকে যে সমস্ত সুন্নত মুবারক মানুষ বিলুপ্ত করে ফেলেছে, সেই সমস্ত সুন্নত মুবারক পুনঃপ্রচলন করবেন, পুনরুদ্ধার করবেন। ” সুবহানাল্লাহ! (তিরমিযী শরীফ, মিশকাত শরীফ, শরহুস সুন্নাহ লিল বাগবী ১/১২১, মা’রিফাতুছ ছাহাবা’ লি আবী না‘ঈম ১৪/২৩৭, আল ফাতহুল কাবীর ১/২৭৯, জাম‘উল জাওয়ামি’ ১/৬৩৩৪, জামি‘উল আহাদীছ ৭/২৬২, জামি‘উল উছূল ৯/৬৯৭৪, যাখীরাতুল হুফ্ফায ১/৫৫২, কানযুল ‘উম্মাল ১/২৩৮ ইত্যাদি)
যাঁরা পবিত্র সুন্নত মুবারক ইত্তিবা’ তথা অনুসরণ-অনুকরণ করবে, তাদেরকে অবশ্যই ইহ্কাল-পরকালের কঠিন যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি থেকে কুদরতময়ভবে হিফাযত রাখা হবে:
এ সম্পর্কে যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
مَنْ يُّطِعِ اللهَ وَرَسُوْلَهٗ يُدْخِلْهُ جَنّٰتٍ تَـجْرِىْ مِنْ تَـحْتِهَا الْاَنْـهٰرُ وَمَنْ يَّتَوَلَّ يُعَذِّبْهُ عَذَابًا اَلِيْمًا.
অর্থ: “যে বা যাঁরা মহান আল্লাহ পাক উনাকে এবং উনার মহাসম্মানিত রসূল, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে অর্থাৎ উনাদেরকে ইত্তিবা’ তথা অনুসরণ-অনুকরণ করবে, তাদেরকে এমন জান্নাতে প্রবেশ করানো হবে যার তলদেশ দিয়ে প্রবাহিত রয়েছে নহরসমূহ। সুবহানাল্লাহ! আর যারা ফিরে যাবে, (সুন্নত মুবারক ইত্তিবা’ তথা অনুসরণ-অনুকরণ করবে না,) তাদেরকে কঠিন যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি দেয়া হবে। ” নাঊযুবিল্লাহ! (পবিত্র সূরা ফাত্হ্ শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ১৭)
পবিত্র হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
قَالَ عَلَيْهِ الصَّلـٰوةُ وَالسَّلَامُ مَنْ تَـمَسَّكَ بِسُنَّتِـىْ وَثَبَتَ نَـجَا وَمَنْ اَفْرَطَ مَرَقَ وَمَنْ خَالَفَ هَلَكَ.
অর্থ: “নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যে ব্যক্তি আমার একখানা পবিত্র সুন্নত মুবারক দৃঢ়তার সাথে আঁকড়ে ধরে থাকবে, সে নাজাত লাভ করবে অর্থাৎ জান্নাতী হবে। সুবহানাল্লাহ! আর যে ব্যক্তি সীমালংঘন করবে, সে অবাধ্য হিসেবে সাব্যস্ত হবে। নাঊযুবিল্লাহ! আর যে ব্যক্তি পবিত্র সুন্নত মুবারক উনার খিলাফ করবে, বিরোধিতা করবে, সে ব্যক্তি হালাক হয়ে যাবে, ধ্বংস হয়ে যাবে। অর্থাৎ জাহান্নামী হবে। ” নাঊযুবিল্লাহ! (আল ইবানাতুল কুবরা লি ইবনে বাত্ত্বাহ ১/৩০৯)
যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
وَمَاۤ اٰتٰىكُمُ الرَّسُوْلُ فَخُذُوْهُ وَمَا نَـهٰىكُمْ عَنْهُ فَانْتَهُوْا وَاتَّقُوا اللهَ اِنَّ اللهَ شَدِيْدُ الْعِقَابِ.
অর্থ: “মহাসম্মানিত রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তোমাদের নিকট যা নিয়ে এসেছেন, তা আঁকড়িয়ে ধরো এবং যা থেকে বিরত থাকতে বলেছেন, তা থেকে বিরত থাকো। আর তোমরা মহান আল্লাহ পাক উনাকে ভয় করো। নিশ্চয়ই তিনি কঠিন শাস্তিদাতা। ” নাঊযুবিল্লাহ! (পবিত্র সূরা হাশর শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৭) (অসমাপ্ত)
-০-
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
ইস্তিঞ্জার আদব ও ঢিলা-কুলুখ ব্যবহার করা সম্পর্কে (২)
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ইস্তিঞ্জার আদব ও ঢিলা-কুলুখ ব্যবহার করা সম্পর্কে (১)
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
প্রয়োজনে ছুরি এবং চাকু দিয়ে খাবার কেটে খাওয়াও মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
জুতা-মোজা ঝেড়ে পরিস্কার করে পরিধান করা খাছ সুন্নত মুবারক
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
চামড়ার মোজা পরিধান করা খাছ সুন্নত মুবারক
৩০ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
খাছ সুন্নতী না’লাইন বা স্যান্ডেলের বর্ণনা (০৩)
২৯ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
খাছ সুন্নতী না’লাইন বা স্যান্ডেলের বর্ণনা (০২)
২৮ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
খাছ সুন্নতী না’লাইন বা স্যান্ডেলের বর্ণনা (০২)
২৮ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী খাবার ‘পনির’
২৮ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
খাছ সুন্নতী না’লাইন বা স্যান্ডেলের বর্ণনা (০১)
২৭ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
মহাসম্মানিত খাছ সুন্নতী বিছানা মুবারক উনার বর্ণনা
২৬ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
চেয়ার-টেবিল ব্যবহার করা মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক উনার খিলাফ তো অবশ্যই বরং হারাম-নাজায়িযের অন্তর্ভুক্ত
২৫ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)












