পরিভাষা, শব্দ ও বানান আগ্রাসন (৭)
, ০৭ শাওওয়াল শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ১৮ হাদী আশার, ১৩৯১ শামসী সন , ১৭ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রি:, ০৪ বৈশাখ, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
![](https://www.al-ihsan.net/uploads/no-image.jpg)
ব্রিটিশ বেনিয়াদের পৃষ্ঠপোষকতায় ভারতবর্ষের সংস্কৃত ভাষার কথিত প-িতসম্প্রদায় তাদের ধর্মীয় ভাষা ‘সংস্কৃত’ কেন্দ্রীক বাংলা ভাষা, সাহিত্য, ব্যাকরণ এবং বাংলা পরিভাষা ও শব্দ তৈরি করে বাংলা ভাষাকে সংস্কৃতের মধ্যে ডুবিয়ে শেষ করে দিতে চেয়েছে। তারা বাংলা ভাষাকে বিপরীত লোকদের ভাষা অর্থাৎ মুসলমানদের ভাষা মনে করতো। এজন্য তারা বাংলাকে কখনও ভালো চোখে দেখেনি। বার বার তারা বাংলা ভাষাকে দাবিয়ে রাখার অপচেষ্টা করেছে। সেনযুগে বাংলা ভাষা নিষিদ্ধকরণ, ব্রিটিশ আমলে বাংলা ভাষার সংস্কৃতকরণ তথা বিকৃতিকরণসহ বাংলা ভাষার উপর নানান রকম নিপীড়ন তারা চালিয়েছে।
মুসলমানদের হাত ধরে বাংলা ভাষার জন্ম ও বিকশিত হওয়াই ছিল এর অন্যতম কারণ। প্রায় দেড় হাজার বছর যাবৎ আরবী ও ফারসী ভাষার সংস্পর্শে ও পাশাপাশি বেড়ে উঠেছে বাংলা ভাষা। এতে করে বাংলা ভাষা সমৃদ্ধ ও ধীরে ধীরে অনেকটা পূর্ণতায় পৌঁছেছিল। এই কারণে তারা বাংলা ভাষাকে শত্রুর ভাষা তথা মুসলমানের ভাষা আখ্যায়িত করে ব্রিটিশদের যোগসাজসে বাংলার উপর কথিত শুদ্ধি অভিযান চালিয়ে বাংলা ভাষাকে বিকৃত করার অপপ্রয়াস করেছে।
যুগ যুগ ধরে যেসব আরবী-ফারসী শব্দ, পরিভাষা এবং বানানরীতি বাংলা ভাষার প্রাণ হয়ে বাংলার মধ্যে একাকার হয়ে মিশেছিল, বাংলা ভাষাকে সমৃদ্ধ করেছিল। কলকাতার বি-রা সেসব আরবী-ফারসী শব্দ, পরিভাষা এবং বানানরীতিকে বেছে বেছে বের করে তার স্থলে সংস্কৃত শব্দ, পরিভাষা ও বানানরীতি প্রবেশ করিয়েছে। এর বিরুদ্ধে একসময় মুসলমান কবি-সাহিত্যিকরা কলম ধরলেও শতভাগ সংস্কৃতের আগ্রাসন ঠেকানো সম্ভব হয়নি। যার ফলে বাংলা ভাষায় এখনও প্রচুর সংস্কৃত শব্দ ও পরিভাষা চলমান রয়েছে, এবং কথিত মান্য বা প্রমিত বানানরীতির ব্যবহারও চলছে যা একদিকে বাংলা ভাষার উপর আগ্রাসন, অন্যদিকে মুসলমানদের ঈমান-আক্বীদার জন্য হুমকীস্বরূপ। বহিরাগত সংস্কৃতের আগ্রাসী ও ঈমানবিধ্বংসী সেসব শব্দ ও পরিভাষাগুলোর মধ্যে এখানে কিছু শব্দ ও পরিভাষা তুলে ধরা হয়েছে, এবং দুই একটা বানানরীতির ব্যবহার দেখানো হয়েছে যেগুলো ব্যবহার করা মানে বাংলা ভাষার বিকৃতিকে মেনে নেয়া।
এছাড়া এই তালিকায় এমন কিছু শব্দ ও পরিভাষা উল্লেখ করা হয়েছে যেগুলো ব্যবহার করা সরাসরি শিরক ও কুফরির অন্তর্ভুক্ত। নাঊযুবিল্লাহ! একজন মুসলমান কোনোক্রমেই এসব শব্দ ও পরিভাষা ব্যবহার করতে পারে না। মুসলমানকে অবশ্যই শরীয়তসম্মত শব্দ ও পরিভাষা ব্যবহার করতে হবে।
উল্লেখ্য, ভাষার প্রতি আমাদের কোনো বিদ্বেষ নেই। যে কোনো ভাষার শব্দ ও পরিভাষাই ব্যবহার করা যেতে পারে। আমরা কেবল দুই ধরণের শব্দ ও পরিভাষার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছি-
১. অন্য ধর্মের ধর্মীয় শব্দ ও পরিভাষা,
২. বাংলার উপর আগ্রাসনমূলক শব্দ ও পরিভাষা।
এই দুটি দৃষ্টিকোণকে বিবেচনায় নিয়েই আমরা শব্দ ও পরিভাষা ব্যবহার করবো। সেটা সংস্কৃত ভাষা, ইংরেজি ভাষা কিংবা অন্য যেকোনো ভাষার থেকে আগত শব্দ কিংবা পরিভাষা হোক না কেন।
অশুদ্ধ ও শুদ্ধ পরিভাষা, শব্দ এবং বানানের তালিকা
অশুদ্ধ: (বলা/লেখা যাবে না) শুদ্ধ: (বলতে/লিখতে হবে)
১৭ সাধন/সিদ্ধ/সিদ্ধি কামেল, কামিল, কামালিয়ত, তরক্কী ইত্যাদি
১৮ স্নান গোসল
১৯ ‘নিমন্ত্রণ, আমন্ত্রণ’ (না বলা উত্তম) দাওয়াত, জিয়াফত (বলা উত্তম)
২০ আপামর আম জনতা, আওয়ামুন নাস, সকলে ইত্যাদি
২১ আলিঙ্গন মোলাকাত, কোলাকুলি, মুয়ানাকা
২২ উৎসর্গ (না বলা উত্তম) কুরবান, ত্যাগ, নিবেদন, নজরানা, হাদিয়া, তোহফা ইত্যাদি
২৩ উপাস্য ইলাহ, মা’বুদ ইত্যাদি।
২৪ উপাসনা, পুজা ইবাদত, বন্দেগী
২৫ ঈশ্বর, ঈশ্বরী ইলাহ, মা’বুদ ইত্যাদি।
২৬ একেশ্বরবাদ তাওহীদ, ওয়াহিদিয়াত, ওয়াহদানিয়াত, একক ও অদ্বিতীয় সত্ত্বা মুবারক, একত্ববাদ
২৭ ঐশীবাণী ওহী, আসমানী কালাম
২৮ ঐশীশক্তি খোদায়ী শক্তি
২৯ ঐশ্বরিক, ঔশী খোদায়ী
৩০ ঐশ্বর্য (ঐশ্বর্য শব্দের সন্ধি বিচ্ছেদ: ঈশ্বর+য) শান-মান, মর্যাদা-মর্তবা, আভিজাত্য ইত্যাদি
৩১ অভুক্ত (না বলা উত্তম) ক্ষুধার্ত, না খাওয়া লোক ইত্যাদি
৩২ আহার/অনাহার (না বলা উত্তম) খাদ্য, খাবার, খাওয়া/ক্ষুধার্ত, না খাওয়া ইত্যাদি
৩৩ উপোস, উপবাস সিয়াম, রোযা
৩৪ আচার্য রঈস, চ্যান্সেলর/সভাপতি
৩৫ উপাচার্য নায়িবে রঈস, ভাইস /সহসভাপতি
৩৬ অধ্যক্ষ (না বলা উত্তম) মুহতামিম/ পরিচালক/তত্ত্বাবধায়ক ইত্যাদি
৩৭ কীর্তন বা গুণ-কীর্তন তারীফ, প্রশংসা, ছানা-ছিফত ইত্যাদি
(চলবে)
-মুহম্মদ জিয়াউল হক্ব।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
ছবি তোলা শক্ত হারাম, রয়েছে কঠিন শাস্তি
২৭ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
তরজমাতুল মুজাদ্দিদিল আ’যম আলাইহিস সালাম
২৭ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২৭ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
২৭ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
কাফির-মুশরিক, বেদ্বীন-বদদ্বীনদের সঙ্গে কখনই মুহব্বত করা ও সাদৃশ্য রাখা যাবে না
২৬ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
অন্যায়কে ঘৃণা না করলে ঈমানদার থাকা যায় না
২৬ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
তা’বীয ও ঝাড় ফুঁক সম্পর্কে শরয়ী ফায়সালা (৪)
২৬ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২৬ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২৬ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২৬ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২৬ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২৬ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার)