প্রতিক্ষেত্রে মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক উনার অনুসরণ করা যেমন ফরয; অনুরূপভাবে প্রতিক্ষেত্রেই কাফির- মুশরিকদের খিলাফ করাও ফরয-২
, ০২ যিলক্বদ শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ২৩ ছানী ‘আশার, ১৩৯০ শামসী সন , ২৩ মে, ২০২৩ খ্রি:, ১০ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) সুন্নত মুবারক তা’লীম
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ أَبِى هُرَيْرَةَ رَضِىَ الله تَعَالٰى عَنْهُ عَنِ النَّبِىِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ لاَ يَزَالُ الدِّينُ ظَاهِرًا مَا عَجَّلَ النَّاسُ الْفِطْرَ لأَنَّ الْيَهُودَ وَالنَّصَارَى يُؤَخِّرُونَ.
অর্থ: হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, মানুষ যতোদিন তাড়াতাড়ি পবিত্র ইফতার করবে ততোদিন সম্মানিত দ্বীন বিজয়ী থাকবে। কেননা ইহুদী, নাছারারা অনেক বিলম্বে ইফতার করে থাকে। (আবূ দাউদ শরীফ, ইবনে মাযাহ শরীফ)
এই কামিয়াবী বা বিজয়ের মূলেই রয়েছে বিধর্মীদের খিলাফ আমল। তিনি স্পষ্ট করেই বললেন, যতোদিন মুসলমানরা ইহুদী, নাছারা অর্থাৎ সকল বিধর্মীদের কার্যকলাপের বিপরীত আমল করতে থাকবে ততোদিন তারা বিজয় বেশে পৃথিবীতে অবস্থান করবে। আর যখনই তাদের সাদৃশ্যতা গ্রহণ করবে তখন তাদেরকে পরাজয়ের গ্লানী ভোগ করতে হবে। এমনকি একসময় তাদেরকে ইহুদী, নাছারাদের গোলামে পরিণত হতে হবে। নাঊযুবিল্লাহ!
কাজেই, ছোট-বড়, সকল কাজ-কর্মে, আচার-ব্যবহারে, কথা-বার্তায় ইহুদী, নাছারা অর্থাৎ সমস্ত বিধর্মীদের খিলাফ আমল করতে হবে। কোনোক্রমে তাদের সাথে কোনো ব্যাপারে সাদৃশ্যতা রাখা যাবে না।
যতো আশ্চর্যজনক কথা-বার্তাই হোক না কেনো, তা গ্রহণ করা যাবে না।
কাফির-মুশরিক, ইহুদী-নাছারাদের মতাদর্শের কোনো নিয়ম-কানুন গ্রহণ করা জায়িয নেই। তারা যতো আশ্চর্যজনক, নছীহতপূর্ণ কথাই বলুক না কেনো তা গ্রহণ করা যাবে না। কারণ, তাতেও রয়েছে খ¦লিক মালিক রব মহান আল্লাহ পাক এবং উনার মহাসম্মানিত হাবীব ও মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের নাফরমানী, অবাধ্যতা।
একদিন আমীরুল মু’মিনীন, খলীফাতুল মুসলিমীন সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত খিদমত মুবারকে আরজী করলেন, ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! ইহুদীদের নিকট অনেক কথাবার্তা শুনা যায়; যা খুবই নছীহতপূর্ণ মনে হয়। আমরা কি সেখান থেকে সংরক্ষণের জন্য কিছু লিখে রাখতে পারবো? একথা শুনে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন-
أَمُتَهَوِّكُونَ أَنْتُمْ كَمَا تَهَوَّكَتِ الْيَهُودُ وَالنَّصَارَى.
অর্থ: “তোমরাও কি ইহুদী, নাছারাদের মতো বিভ্রান্ত হতে চাও?
لَقَدْ جِئْتُكُمْ بِهَا بَيْضَاءَ نَقِيَّةً وَلَوْ كَانَ حَضْرَتْ مُوسَى عليه السلام حَيًّا مَا وَسِعَهُ إِلا اتِّبَاعِي .
অর্থ: “জেনে রেখ! আমি তোমাদের নিকট সম্পূর্ণ পরিষ্কার ও উজ্জ্বল সম্মানিত দ্বীন নিয়ে এসেছি। (ইহুদীদের নবী) সাইয়্যিদুনা হযরত মূসা কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনিও যদি যমীনে থাকতেন তাহলে উনাকেও আমার পবিত্র ইত্তিবা (অনুসরণ-অনুকরণ) করা ফরয-ওয়াজিব সাব্যস্ত হতো। (আহমদ শরীফ, বাইহাক্বী শরীফ)
কাফির-মুশরিক, ইহুদী-নাছারা অর্থাৎ বিধর্মীরা যেরূপ পোশাক-পরিচ্ছদ পরিধান করে সেরূপ পোশাক-পরিচ্ছদ পরিধান করা জায়িয নেই:
জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে আখিরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারই মহাসম্মানিত ইতায়াত (অনুসরণ-অনুকরণ) মুবারক করতে হবে। কাফির-মুশরিক,ইহুদী-নাছারা অর্থাৎ বিধর্মীদের সাথে তাশাব্বুহ বা সাদৃশ্যতা রেখে এমন কোনো কিছু গ্রহণ করা কিংবা পরিধান করা জায়িয নেই।
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو رَضِىَ الله تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ رَأَى النَّبِىُّ صلى الله عليه وسلم عَلَىَّ ثَوْبَيْنِ مُعَصْفَرَيْنِ فَقَالَ فَقَالَ إِنَّ هَذِهِ مِنْ ثِيَابِ الْكُفَّارِ فَلاَ تَلْبَسْهَا
অর্থ: হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা আখিরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমাকে কুসুম রঙের দু’টি কাপড় পরিহিত অবস্থায় দেখতে পেলেন। তখন তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, এগুলো কাফিরদের পোশাকের অন্তর্ভুক্ত। কাজেই, আপনি এগুলো পরবেন না। (মুসলিম শরীফ)
উল্লেখ্য যে, পোশাকের রঙ বা কাটিং অতি সাধারণ বিষয়। অথচ এ বিষয়েও পার্থক্য বজায় রাখার মহাসম্মানিত নির্দেশ মুবারক দিয়েছেন।
কাজেই, যে পোশাক, যে কাটিং, যে কাজ-কর্ম কাফির-মুশরিকদের মধ্যে প্রচলিত তা পরিহার করা এবং মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক অনুযায়ী আমল করা সকলের জন্য ফরয।
-আহমদ হুসাইন
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
ওযূ করার খাছ সুন্নতী তারতীব মুবারক ও মাসয়ালা-মাসায়িল (১)
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ইস্তিঞ্জার আদব ও ঢিলা-কুলুখ ব্যবহার করা সম্পর্কে (২)
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ইস্তিঞ্জার আদব ও ঢিলা-কুলুখ ব্যবহার করা সম্পর্কে (১)
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
প্রয়োজনে ছুরি এবং চাকু দিয়ে খাবার কেটে খাওয়াও মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
জুতা-মোজা ঝেড়ে পরিস্কার করে পরিধান করা খাছ সুন্নত মুবারক
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
চামড়ার মোজা পরিধান করা খাছ সুন্নত মুবারক
৩০ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
খাছ সুন্নতী না’লাইন বা স্যান্ডেলের বর্ণনা (০৩)
২৯ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
খাছ সুন্নতী না’লাইন বা স্যান্ডেলের বর্ণনা (০২)
২৮ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
খাছ সুন্নতী না’লাইন বা স্যান্ডেলের বর্ণনা (০২)
২৮ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী খাবার ‘পনির’
২৮ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
খাছ সুন্নতী না’লাইন বা স্যান্ডেলের বর্ণনা (০১)
২৭ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
মহাসম্মানিত খাছ সুন্নতী বিছানা মুবারক উনার বর্ণনা
২৬ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)












