প্রত্যেক মুসলমানের জন্য সর্বক্ষেত্রে মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক উনার অনুসরণ করা ফরয
, ২৪ রবীউছ ছানী শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ৩০ খ্বমিস , ১৩৯২ শামসী সন , ২৮ অক্টোবর , ২০২৪ খ্রি:, ১২ কার্তিক, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) সুন্নত মুবারক তা’লীম
খ্বালিক মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত হাবীব ও মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে হায়াতের প্রতিটি ক্ষেত্রে ইতায়াত (অনুসরণ-অনুকরণ) করা, আর কাফির-মুশরিক, ইহুদী, নাছারা, মজুসী, অর্থাৎ তাবৎ বিধর্মীদের খিলাফ করা ফরয।
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সর্বক্ষেত্রে, সবসময় কাফির-মুশরিকদের খিলাফ বা বিপরীত আমল মুবারক করেছেন এবং উম্মতকে তাদের বিপরীত আমল করতে মহাসম্মানিত নির্দেশ মুবারক দিয়েছেন।
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
لَيْسَ مِنَّا مَنْ تَشَبَّهَ بِغَيْرِنَا.
অর্থ: যারা আমাদেরকে বাদ দিয়ে অন্য কারো সাথে সাদৃশ্য রাখে সে আমাদের অন্তর্ভুক্ত নয়। (তিরমিযী শরীফ)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
لاَ تَشَبَّهُوْا بِالْيَهُوْدِ وَلَا بِالنَّصَارٰى.
অর্থ: তোমরা ইহুদী-নাছারা অর্থাৎ কাফির-মুশরিকদের সাথে মিল রাখবে না। অর্থাৎ কোন অবস্থাতেই কাফির-মুশরিক, ইহুদী-নাছারা, বেদ্বীন-বদদ্বীনদের সাথে মিল রাখা যাবে না। মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنِ حَضْرَتِ ابْنِ عُمَرَ رَضِىَ الله تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ تَشَبَّهَ بِقَوْمٍ فَهُوَ مِنْهُمْ.
অর্থ: হযরত ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যে ব্যক্তি যে সম্প্রদায়ের সাথে তাশাব্বুহ বা সাদৃশ্যতা রাখবে সে তাদেরই অন্তর্ভুক্ত। (আবূ দাউদ শরীফ)
উদাহরণ স্বরূপ কয়েকটি বর্ণনা দেয়া হলোঃ
সালাম আদান-প্রদানের ক্ষেত্রে কাফির-মুশরিকদের খিলাফ করার নির্দেশ মুবারক: সালাম আদান-প্রদানের ক্ষেত্রে তাদের খিলাফ করার নির্দেশ মুবারক দেয়া হয়েছে। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন -
لاَ تَشَبَّهُوْا بِالْيَهُودِ وَلَا بِالنَّصَارٰى فَإِنَّ تَسْلِيمَ الْيَهُوْدِ الإِشَارَةُ بِالأَصَابِعِ وَتَسْلِيمَ النَّصَارَى الإِشَارَةُ بِالأَكُفِّ.
অর্থ: তোমরা ইহুদী ও নাছারাদের সাথে কোন ব্যাপারে সাদৃশ্য রাখবে না। ইহুদীদের সালাম হলো অঙ্গুলীর ইশারায় আর খ্রিস্টানদের সালাম হলো হাতের তালুর ইশারায়। কাজেই তোমরা সেভাবে সালাম দিও না। (তিরমিযী শরীফ, মিশকাত শরীফ)
বর্তমান সমাজে অনেক মুসলমানকে দেখা যায়, দুই আঙ্গুল উঁচু করে ও হাতের তালু দিয়ে ইশারার মাধ্যমে সালাম দেয়, স্বাগতম ও বিদায় জানায়। যা সম্মানিত শরীয়ত সম্মত নয়।
রোযার ক্ষেত্রে কাফির-মুশরিকদের খিলাফ করার নির্দেশ মুবারক: রোযার ক্ষেত্রে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইহুদী-নাছারাদের সাথে সাদৃশ্যতা না রাখার নির্দেশ মুবারক দিয়েছেন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যখন মহাপবিত্র মক্কা শরীফ থেকে মহাসম্মানিত হিজরত মুবারক করে মহাসম্মানিত মহাপবিত্র মদীনা শরীফ-এ মহাসম্মানিত তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করলেন, তখন উনার মহাসম্মানিত খিদমত মুবারকে আরজী পেশ করা হলো- ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! ইহুদীরাও পবিত্র আশূরা শরীফ উপলক্ষে একটি রোযা রেখে থাকে। এ কথা শুনে তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন-
لَئِنْ بَقِيتُ إِلٰى قَابِلٍ لَأَصُوْمَنَّ التَّاسِعَ.
অর্থ: যদি আমি আগামী বছর দুনিয়াতে মহাসম্মানিত অবস্থান মুবারক করি তাহলে ৯ তারিখেও পবিত্র রোযা মুবারক রাখবো। অর্থাৎ আমরা তাদের খিলাফ করণার্থে দু’দিন পবিত্র রোযা মুবারক রাখবো। (মিশকাত শরীফ)
পবিত্র সাহরী ও পবিত্র ইফতারীতে কাফির-মুশরিকদের খিলাফ করার নির্দেশ মুবারক: সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার প্রতিটি বিষয়ে কাফির- মুশরিক, ইহুদী-নাছারাদের খিলাফ আমল করার নির্দেশ মুবারক দেয়া হয়েছে। সেটা যতো ছোট বা ক্ষুদ্র বিষয়ই হোক না কেনো। কারণ কাফির- মুশরিক, ইহুদী-নাছারা এরা সবাই লা’নতগ্রস্ত বা অভিশপ্ত। কাজেই, তাদের সাথে যারা সাদৃশ্যতা রাখবে তারাও তাদের সেই লা’নতের শামিল হবে।
-আহমদ হুসাইন
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
মহাসম্মানিত খাছ সুন্নতী মিম্বর শরীফ উনার বর্ণনা
১৬ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ঘরে চন্দন কাঠ পোড়ানো এবং ধূপ জ্বালানো সম্মানিত সুন্নত মুবারক উনার অর্ন্তভূক্ত
১৫ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
মহান আল্লাহ পাক এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের মহাসম্মানিত সন্তুষ্টি মুবারক হাছিলের উদ্দেশ্যেই নিকাহ বা বিবাহ করতে হবে
১৪ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার একখানা মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক হচ্ছে, বিবাহ-শাদী করা। যার দ্বারা রিযিক বৃদ্ধি পায়
১৩ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
মহাসম্মানিত মহাপবিত্র সুন্নতী তরীক্বায় বিবাহের মোহর
১২ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
বিবাহের পূর্বে বরকে ও কনেকে দেখার সম্মানিত শরয়ী অর্থাৎ মহাসম্মানিত সুন্নতী তরীক্বাহ
১১ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
বিবাহের ক্ষেত্রে কুফু বা সমকক্ষতা রক্ষা করা পবিত্র সুন্নত মুবারক উনার অন্তর্ভুক্ত
১০ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
বিবাহের প্রস্তাব দেয়া এবং সম্মতি জ্ঞাপন করার মহাসম্মানিত সুন্নতী তরীক্বাহ
০৯ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
বিবাহ-শাদীর গুরুত্ব-ফযীলত ও খাছ সুন্নতী তারতীব (৩)
০৮ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
বিবাহ-শাদীর গুরুত্ব-ফযীলত ও খাছ সুন্নতী তারতীব (২)
০৭ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম সুন্নত মুবারক অনুসরণে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের বেমেছাল দৃষ্টান্ত
০৭ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক জিন্দা করার বেমেছাল ফযীলত
০৭ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার)












